সটান ইন্ডিয়া গেটের সামনে শুয়ে যোগাসন করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। দুনিয়া জেনেছিল, প্রধানমন্ত্রী যোগাভ্যাস করেই ৫৬ ইঞ্চি ছাতি ধরে রাখেন।
রাহুল গাঁধী এত দিন উল্টো পথের পথিক ছিলেন। ‘শো অফ’-এ বিশ্বাস করতেন না। বলতেন, ‘আমি যেমন, তেমনই থাকব।’ কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে বদলাচ্ছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি মেনে রাহুলের জাপানি মার্শাল আর্ট আইকিডো অনুশীলনের ছবি হাজির। মানুষ এও জানতে পারছেন, নির্ভয়ার ভাইকে কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে পাইলট হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন তিনি।
এ ভাবেই উদয় হচ্ছে এক নতুন রাহুলের। কংগ্রেসের এক নেতার যুক্তি, ‘‘নির্ভয়ার ভাই বা বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ উপলক্ষ মাত্র। পরিবর্তন হতেই হতো!’’ ভরা সভায় বিজেন্দ্রর প্রশ্নের উত্তরেই রাহুল বলেছিলেন, তিনি আইকিডোতে ব্ল্যাক বেল্ট। ছবির আবদারও বিজেন্দ্ররই। নির্ভয়ার মা-ও এখন তাঁর ছেলের জীবনে রাহুলের অবদান জানিয়েছেন। কিন্তু ওই নেতা বলছেন, ‘‘এঁরা না থাকলেও রাহুল মানুষ হিসেবে কেমন, তাঁর পছন্দ-অপছন্দ কী, জানাতেই হতো। না হলে মানুষ রাহুলকে বুঝবেন কী করে?’’
২০১৪-য় সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে মোদী যখন আজ গল্ফ খেলার ছবি, কাল চা বেচার ইতিহাস বেচতেন, রাহুল বলতেন, ‘আমার লড়াই একটা হলোগ্রামের সঙ্গে।’ সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে নীল জিনস পরে গালে আলসে দাড়ি নিয়ে হাজির হতেন। মনে হতো, তাঁর রাজনীতিতে মন নেই।
দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের নেতারা রাহুলকে বলেন, মোদীর মতো পুরোপুরি সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর হওয়ার দরকার নেই। কিন্তু একেবারে অন্তর্মুখী হয়ে থাকাও ঠিক নয়। মাঝামাঝি জায়গায় আসা দরকার। রাহুলও তা মেনে নেন।
ভাবমূর্তির পাশাপাশি রাহুল তাই আক্রমণের ভাষাও বদলেছেন। ‘স্যুট-বুট কি সরকার’ বা ডালের দাম নিয়ে ‘অড়হর মোদী’-র পরে তাঁর ঝুলি থেকে বেরিয়েছে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’। আজ গুজরাতে আদিবাসীদের জমি দখল নিয়ে বলেছেন, বিজেপি নেতারা মহাভারতের দুর্যোধনের মতো। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়েন না। কাল সেলফি তুলেছেন, আজ রায়বরেলীতে গিয়ে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে জড়িয়ে ধরেছেন। মানুষকে সরাসরি কাছে টেনে নেওয়া এ ভাবেই শুরু করেছেন রাহুল।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও রাহুলের ছবি, টুইট ভাইরাল হচ্ছে। বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ সৌভিক মিশ্রর বিশ্লেষণ, ‘‘গত কিছু দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেসের উত্থান নজর কাড়ার মতো। এটা কিন্তু এমনি এমনি হয় না। এর জন্য লগ্নি করতে হয়। ২০১৪-য় এ বিষয়ে বিজেপির ধারেকাছে কেউ ছিল না। এ বার কংগ্রেসও যে সেটা করছে তা স্পষ্ট।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy