রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
প্রশ্নটি যে সিলেবাসের বাইরে ছিল, জবাবেই তা স্পষ্ট। তা না হলে ‘বণক্কম (নমস্কার) পুদুচেরি’ বলে কথাটা এড়িয়ে যেতেন না প্রধানমন্ত্রী। আর সেটাকে চেপে ধরতে পারতেন না রাহুল গাঁধীও।
ঘটনাটি গত সপ্তাহের। দিল্লি থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সব ক্ষেত্রে প্রশ্নগুলি আগে থেকে সাজানো থাকে বলে বিজেপির কর্মীরাই স্বীকার করেন। সেদিন কিন্তু এক কর্মী পুদুচেরি থেকে বলে বসলেন: ‘‘দেশ বদলের জন্য যে কাজ করছেন, ভাল। কিন্তু মধ্যবিত্তরা মনে করেন, তাঁদের থেকে শুধু নানা ধরনের করই নেওয়া হয়। সরকার তাঁদের খেয়াল রাখে না।’’
এ দিকে মধ্যবিত্ত সমাজকে নিজের চিরাচরিত ভোটব্যাঙ্ক বলে মনে করে বিজেপি। কিন্তু নোটবন্দি, জিএসটির পর এই শ্রেণির রোষ যে বেড়েছে, গত কয়েকটি ভোটে তা স্পষ্ট। এমন দুর্বল জায়গায় ঘা দিয়ে দলেরই কর্মী প্রশ্নটি করে ফেলায় অপ্রস্তুতে পড়ে যান মোদী। বলেন, ‘‘আপনি ব্যবসায়ী, ব্যবসার কথা বলবেন স্বাভাবিক। আমরা মানুষের খেয়াল রাখি। আশ্বাস দিচ্ছি রাখব।’’ এর পরেই মোদীর পাশ থেকে কেউ ফিসফিস করে কিছু বললেন। প্রধানমন্ত্রী ‘বণক্কম পুদুচেরি’ বলে থেমে গেলেন।
রাহুল আজ এই নিয়েই চেপে ধরে টুইট করেছেন, ‘‘বণক্কম পুদুচেরি! সেটাই কষ্টে থাকা মধ্যবিত্তদের প্রতি ‘নমো’র জবাব। সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা তো ছেড়েই দিন, নিজের দলের কর্মীদের প্রশ্নের সামনেও টিকতে পারেন না।’’
ঘটনা হল, সেদিন মোদী বিড়ম্বনায় পড়ার পর বিজেপি এখন কর্মীদের সব প্রশ্নও ভাল করে যাচাই করে নিচ্ছে। দলের কর্মীদের মতে, প্রধানমন্ত্রীকে করা প্রশ্ন আর তাঁর জবাব, দুটোই আগে তৈরি থাকে। যিনি প্রশ্ন করছেন, তাঁর বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী দফতরকে আগে জানানো হয়। সে কারণেই পুদুচেরির ঘটনায় মোদী বলতে পেরেছিলেন, ‘আপনি ব্যবসায়ী’। কিন্তু প্রশ্নকর্তার প্রশ্নটি সেদিন কী করে ছাড়পত্র পেয়েছিল, সেটিই বিস্ময়। ওই একই টুইটে রাহুল এদিন কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘প্রশ্ন আগে থেকে যাচাই করা তো দারুণ ব্যাপার। এ বার থেকে আগে উত্তর যাচাই করার কথাও ভাবুন।’’
বিজেপি অবশ্য ক্ষত মেরামতে আপাতত অন্যত্র ভিডিয়ো কনফারেন্সে মধ্যবিত্তদের জন্য মোদী কী বলেছেন, সেই ভিডিয়ো প্রচার করছে। যেখানে মোদী দাবি করছেন, কংগ্রেস জমানার তুলনায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, গৃহের স্বপ্ন নাগালে এসেছে, চিকিৎসার খরচ কমেছে, আয়করে ছা়ড় মিলেছে, গাড়ি-বাড়ি-শিক্ষার ঋণের সুরাহা হয়েছে। এ ছাড়া যত রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর হচ্ছে, সবই মধ্যবিত্তের জন্য সুখবর। কিন্তু কংগ্রেস আজ জানিয়ে রাখল, তাদের ইস্তাহারে মধ্যবিত্তের জন্য বিশেষ প্যাকেজ থাকবে। বারবার বদল করা জিএসটিও নতুন করে আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy