Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
এসি কোচ আর আধুনিক সুবিধার সুফল

যাত্রী বেড়েছে রেলের, সেই সঙ্গে রোজগারও

যাত্রী টেনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছিল কম ভাড়া নেওয়া বিমান সংস্থাগুলি। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী পরিবহণ করেছে রেল। যাত্রী বেড়েছে প্রায় দু’কোটির মতো। আয় বেড়েছে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ, দুই ক্ষেত্রেই।

চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে রেলের রাজস্ব বেড়েছে মোট ১০%। প্রতীকী ছবি।

চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে রেলের রাজস্ব বেড়েছে মোট ১০%। প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ১১:০০
Share: Save:

গত পাঁচ বছর ধরেই যাত্রী পরিবহণের সূচক ছিল নিম্নমুখী। যাত্রী ট্রেনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছিল কম ভাড়া নেওয়া বিমান সংস্থাগুলি। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী পরিবহণ করেছে রেল। যাত্রী বেড়েছে প্রায় দু’কোটির মতো। আয় বেড়েছে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ, দুই ক্ষেত্রেই।

রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, এই তিন মাসে রাজস্ব বেড়েছে মোট ১০%। রেলের ঘরে ঢুকেছে প্রায় ৪৩ হাজার কোটি টাকা। যা গত বারের চেয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বেশি। যাত্রী ভাড়া বাবদ আয় ২ হাজার কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। বাকিটা বেড়েছে পণ্য পরিবহণে।

গত এক বছরে দেশীয় বিমান ক্ষেত্রে যাত্রী বেড়েছে ১৯%। এর মধ্যেও যাত্রী খাতে রেলের এই আয় বৃদ্ধিকে ‘অত্যন্ত শুভ লক্ষণ’ আখ্যা দিয়েছেন রেল বোর্ডের সদস্য মহম্মদ জামশেদ। বিশেষ করে ‘ফ্লেক্সি’ ভাড়ার কারণে রেলে টিকিটের দাম যে ভাবে বাড়ছিল এবং কিছু ক্ষেত্রে বিমান ভাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিল, তাতে রেল কর্তাদের একটি বড় অংশ যাত্রী হারানোর ভয় করছিলেন। কিন্তু সেই আশঙ্কা অমূলক প্রমাণিত হওয়ায় স্বস্তিতে রেল মন্ত্রক।

যাত্রী ও আয় বৃদ্ধির রহস্যটা কী? মূলত দু’টি কারণের কথা বলছেন রেল-কর্তারা। তেজস, হামসফর বা উদয় এক্সপ্রেসের মতো নতুন কিছু ট্রেন চালানো। যাত্রীদের চাহিদা বুঝে এই সব ট্রেনের কোচ ও তার ভিতরের খোলনলচে পাল্টে ফেলা হয়েছে। মিলছে ওয়াইফাই-ইন্টারনেট ও পছন্দমতো খাবার। থাকছে বায়ো-টয়লেটও। বাতানুকূল শ্রেণিতে ভ্রমণের আগ্রহ বৃদ্ধি। জামশেদের কথায়, ‘‘সম্প্রতি দেখা গিয়েছে থ্রি-এসির টিকিটের চাহিদা ভীষণ ভাবে বেড়ে গিয়েছে।’’

মন্ত্রকের কাছে রেলের আয় বৃদ্ধির পিছনে এই থ্রি-এসির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী বা দুরন্তের মতো ট্রেনে খাবার দেওয়া হয়। এগুলির থ্রি-এসি কোচ থেকে লাভ না হলেও, খরচ পুরো উঠে আসে। আর অন্যান্য দূরপাল্লার ট্রেনের থ্রি-এসি কোচ থেকে টিকিট পিছু প্রায় ৭% লাভ করে রেল। আর সেই কারণেই হামসফরের মতো দূরপাল্লার ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। যে ট্রেনের গোটাটাই থ্রি-এসি। চলতি বছরে প্রায় ডজন খানেক এমন ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে স্লিপার ক্লাসের কোচ। চলতি বছরে থ্রি-এসি কোচের উৎপাদনও দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। এই কোচ বছরে গড়ে ৪০০-৫০০টি তৈরি হতো। চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজারটি। রেলের শীর্ষ এক অফিসারের কথায়, ‘‘আগামী দিনে স্লিপার কামরা কমিয়ে থ্রি-এসি কামরা আরও বাড়ানো হবে। দরকারে দূরপাল্লার ট্রেনে অর্ধেক কোচই হবে থ্রি-এসি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE