Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মুডিজের পর এ বার ওয়ার্নিং বেল দিলেন রাজন, নারায়ণমূর্তি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লক্ষ্য করে আরও একটি তির! এ বার ছুঁড়লেন খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৫ ১৩:১০
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লক্ষ্য করে আরও একটি তির! এ বার ছুঁড়লেন খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন।

সুদ কমানো ইস্যুতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে মতবিরোধের দীর্ঘ পর্বেও যিনি ‘সহিষ্ণুতা’র পরিচয় দিয়েছেন, সেই রাজন আজ বলেছেন, ‘‘খুব বেশি রাজনৈতিক বেড়ি-বাঁধন অর্থনীতিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে দেয় না। অর্থনীতির রথের চাকা বসিয়ে দেয়। খুব বেশি বিনিয়ন্ত্রণ যেমন ভাল নয়, তেমনই খুব বেশি নিয়ন্ত্রণও কাম্য নয়। দু’টিই হাল খারাপ করে অর্থনীতির।’’

এর পরেই ‘সহিষ্ণুতা’র পক্ষে সওয়াল করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। বলেছেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা জারি করে কিছু হয় না। তা আলোচনা ও বিতর্কের পরিবেশকে নষ্ট করে দেয়। মানুষ তার মতামত প্রকাশ করতে ভয় পায়। তা অপছন্দের হলে যদি তাতে তার কোনও অনিষ্ট হয়! এর চেয়ে অনেক ভাল, এমন একটা পরিবেশ গড়ে তোলা, যেখানে একে অপরকে মর্যাদা দেন। একে অপরের মতামত মেনে নেওয়ার চেষ্টা করে সহিষ্ণুতার পরিচয় দেন।’’

দিল্লি আইআইটি-তে এক অনুষ্ঠানে এ দিন তাঁর ভাষণে রাজন জোর সওয়াল করেন নাগরিকের প্রশ্ন তোলার অধিকারের পক্ষেও। বলেছেন, ‘‘ভারতকে যদি দ্রুত এগিয়ে যেতে হয়, তা হলে নাগরিকদের প্রশ্ন করার অধিকার দিতে হবে। প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনে চ্যালেঞ্জ জানানোর অধিকার দিতে হবে। মনস্তত্ত্ব বলে, মানুষকে অপমান করার নেশাটাকে প্রশ্রয় দেওয়া হলে, পরে তার রাশ টেনে ধরাটা খুব সহজ হয় না।’’

ও দিকে, ‘দলকে সামলান, না হলে মুখ পুড়বে সরকারের’! ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো ‘মুডিজ’-এর ওই সতর্ক বার্তার পরের দিনে, শনিবার মুখ খুলেছেন ‘ইনফোসিস’-এর প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তিও।

ভারতে যে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তার প্রতিবাদে। হালে দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে যে ভয় আর অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার প্রতিবাদে।

একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নারায়ণমূর্তি বলেছেন, ‘‘দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এখন যথেষ্টই ভয় আর অস্বস্তিতে রয়েছেন। প্রতি মূহুর্তে তাঁরা তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছেন। অবিলম্বে এটা দূর করা দরকার। না হলে কিছুতেই দেশ অর্থনৈতির প্রগতির পথে হাঁটতে পারবে না।’’

দেশে ‘অসহিষ্ণুতা’র প্রতিবাদে শিল্প মহল থেকে ‘ইনফোসিস’-এর প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তিই প্রথম সরব হলেন।

কাল বিশ্বের প্রথম সারির অর্থনৈতিক রেটিং ও বিশ্লেষক সংস্থা ‘মুডিজ অ্যানালিটিক্স’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সতর্ক বার্তা পাঠিয়ে বলেছে, ‘‘দলের নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করুন। না হলে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে আপনার সরকার।’’ ‘মুডিজ’-এর এই রিপোর্টে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে ‘অসহিষ্ণুতা’র অভিযোগে যথেষ্টই বেকায়দায় পড়ে যাওয়া মোদী সরকার।

‘মুডিজ’-এর রিপোর্ট বলছে, নতুন সরকারকে ঘিরে ‘ইউফোরিয়া’-র ধাক্কায় শেয়ার সূচক যেখানে উঠে গিয়েছিল, ইতিমধ্যেই সেখান থেকে তা প্রায় ১১ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। জরুরি আর্থিক সংস্কার রূপায়ণে একের পর এক ধাক্কা সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।

মোদী সরকারের জমি বিল বা পণ্য-পরিষেবা কর বিল হোঁচট খেয়েছে। শ্রম আইনের সংস্কারও বিরোধিতার মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ‘মুডিজ’-এর মতে, সংস্কারের এই গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি পাশ হলে আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়বে। কারণ, এই সব সংস্কারের ফলে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে। ফলে বৃদ্ধির হার ৭.৬ শতাংশে পৌঁছতে পারে। এই বিলগুলি চলতি বছরে আর পাশ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু ২০১৬-য় সেই সম্ভাবনা রয়েছে।

এত দিন মোদী সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সুদ কমানোর দাবি তুলছিল। মূল্যবৃদ্ধির হার কমায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমিয়েছে। কিন্তু শুধু মূল্যবৃদ্ধি বা সুদ কমলেই যে অর্থনীতির রথ ছুটতে শুরু করবে, এমনটা মনে করছেন না বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, এতে স্বল্প মেয়াদে কিছু লাভ হলেও আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষমতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে সংস্কার জরুরি। আর সেখানেই ব্যর্থ হচ্ছে মোদী সরকার।

ফের সহিষ্ণুতার কথা মনে করালেন রাষ্ট্রপতি

‘বিফ’ তথ্যচিত্র ছাঁটাই হল দিল্লি ফেস্টিভ্যালে

কেন্দ্রকে মুডি’জ-এর হুঁশিয়ারি, সংস্কারেও বাধা গোমাংস বিতর্ক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nr narayanmurthi it pm modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE