Advertisement
E-Paper

গরিবের নয়, ধনীদের আরও ‘অচ্ছে দিন’ 

সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে, ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকের আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থিক চেহারা নিয়ে একটি রিপোর্ট এ বারও প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতে ফুটে উঠেছে আর্থিক বৈষম্যের সেই পুরনো ছবিটাই। 

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত একটা রিপোর্ট। আর তাতে উঠে আসা কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান।

সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে, ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠকের আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থিক চেহারা নিয়ে একটি রিপোর্ট এ বারও প্রকাশিত হয়েছে। আর তাতে ফুটে উঠেছে আর্থিক বৈষম্যের সেই পুরনো ছবিটাই।

এ বারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের জাতীয় সম্পদের ৫১.৫৩ শতাংশ রয়েছে মাত্র ১ শতাংশ ধনীর হাতে! মোট সম্পদের ৭৭ শতাংশেরও বেশির মালিক মাত্র ১০ শতাংশ ধনী! দারিদ্রসীমার নীচে থাকা ৬০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে মোট জাতীয় সম্পদের মাত্র ৪.৮ শতাংশ। আর দেশের ৫০ শতাংশ জনতার মোট সম্পদের পরিমাণ যত, এ দেশের মাত্র ৯ জন ধনীর মোট সম্পদ ততটাই! রিপোর্টেই বলা হচ্ছে, দেশের ১ শতাংশ ধনীর দৈনিক আয় গড়ে ২২০০ কোটি টাকা! শুধু গত বছরেই ভারতের এক শতাংশ ধনীর সম্পত্তি এক লাফে ৩৯ শতাংশ বেড়েছে!

আরও পড়ুন: বছরে ৭১২ লক্ষ কোটি টাকা ‘বেতন’ মার যাচ্ছে মহিলাদের!

শতাংশের এ সব শুকনো হিসেব বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গোটা দেশের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা খাতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলি মিলিত ভাবে যে টাকা বরাদ্দ করে, একা মুকেশ অম্বানীর আয় তার থেকেও বেশি!

সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ডব্লিউইএফ-এর ৫ দিনের বৈঠক। তার ঠিক আগে এই রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অধিকাররক্ষা সংগঠন ‘অক্সফ্যাম’। তাতেই ধরা পড়েছে ভারতের এই ভয়াবহ বৈষম্যের ছবি।

আরও পড়ুন: হিন্দু বাঙালিদের নিয়ে কেন্দ্রের বিশেষ ভাবনা

বিশ্বের অন্য বড় দেশগুলির ছবিটা অবশ্য ভারতের থেকে আলাদা নয়। এ প্রসঙ্গে এসেছে আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বোজেসের কথা। সাড়ে ১১ কোটি জনসংখ্যার ইথিওপিয়ায় স্বাস্থ্য খাতে যত টাকা ব্যয় হয়, তা জেফের মোট সম্পদের ১ শতাংশ!

বৈষম্যের এই কথা অবশ্য নতুন নয়। বছরে বছরে বদলে যায় শুধু তথ্য-পরিসংখ্যান। এই বৈষম্য থেকেই ৮ বছর আগে, ২০১১-র সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্ক কেঁপে উঠেছিল ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ আন্দোলনে। যার মূল স্লোগানই ছিল, ‘‘আমরাই ৯৯ শতাংশ।’’ তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি মোটেই।

বৈষম্যের এমন চেহারায় উদ্বিগ্ন অক্সফ্যামের ইন্টারন্যাশনাল এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর উইনি বায়ানিমা। তিনি বলেন, ‘‘এক শতাংশ ধনীর সঙ্গে বাকি জনসংখ্যার আয় এবং সম্পত্তির ব্যবধান কমাতে না পারলে এবং ভারসাম্য আনতে না পারলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই ভেঙে পড়বে।

অক্সফ্যামের ভারতীয় সিইও অমিতাভ বেহারের কথাতেও উদ্বেগের সুর। তিনি বলেন, ‘‘সরকার এক দিকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমাচ্ছে, অন্য দিকে ধনীদের কর ছাড় দিয়ে বৈষম্য বাড়াচ্ছে। আর সেই বোঝা চাপছে গরিব এবং মধ্যবিত্তদের ঘাড়েই।’’

অর্থনীতিবিদদের একাংশ বেশ কয়েক বছর ধরেই বলছেন, যত দিন যাচ্ছে, অর্থনৈতিক বৈষম্য তত বাড়ছে। ভারতের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও দ্রুত খারাপ হচ্ছে বলে মত তাঁদের। এ দিনের রিপোর্ট দেখে অনেকে বলছেন, যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, ‘অচ্ছে দিন’ আসে শুধু বড়লোকদের!

OXFAM Report Diversity Rich Poor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy