Advertisement
E-Paper

সঙ্ঘের গাঁধী ভজনা, সরব সব বিরোধী

বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, বিজেপি-আরএসএস শুধু নিজেদের গাঁধীর উত্তরসূরি হিসেবে মেলে ধরতেই চাইছে না, আরএসএস তাদের বিরুদ্ধে গাঁধী হত্যার কালিমাও ঘোচাতে চাইছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৮
গাঁধীর মূল্যবোধই অনুসরণ করে এগোচ্ছে আরএসএস দাবি করলেন মোহন ভাগবত।—ছবি পিটিআই।

গাঁধীর মূল্যবোধই অনুসরণ করে এগোচ্ছে আরএসএস দাবি করলেন মোহন ভাগবত।—ছবি পিটিআই।

মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যার পিছনে আরএসএসের লোক ছিলেন— এই মন্তব্য করায় মামলা হয়েছে রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে। গাঁধী নন, ‘গডসে-পন্থী’ বলেও আরএসএসকে আক্রমণ করে বিরোধীরা। এমন এক অবস্থায় সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত দাবি করলেন, গাঁধীর মূল্যবোধই অনুসরণ করে এগোচ্ছে আরএসএস। আর সঙ্ঘের শাখায় গিয়েও খুশি হয়েছিলেন গাঁধী। গাঁধী সম্পর্কে আরএসএসের এই নতুন অবস্থান প্রচারকে আজ তুলোধোনা করলেন সনিয়া গাঁধী থেকে বিরোধী শিবিরের অন্য নেতারা।

গাঁধীর ১৫০তম জন্মদিনের আগে ভাগবত একটি নিবন্ধে লিখেছেন, ‘‘গাঁধী গ্রেফতার হওয়ার পর ১৯২২ সালে নাগপুরে কংগ্রেস একটি সভার আয়োজন করেন। (সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম) হেডগেওয়ার সেই সভায় বলেছিলেন, গাঁধীর মূল্যবোধ আমাদের জীবনে অনুসরণ করাই একমাত্র পথ।’’ ভাগবত আরও বলেন, ‘‘১৯৩৬ সালে ওয়ার্ধার কাছে সঙ্ঘের একটি শিবিরে এসেছিলেন গাঁধী। দিল্লির কাছে একটি শাখাতেও গিয়েছেন তিনি। স্বয়ংসেবকদের শৃঙ্খলা ও জাতপাত নিয়ে বিভাজনের ভাবনা না-দেখে তিনি খুশি হয়েছিলেন।’’

বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, বিজেপি-আরএসএস শুধু নিজেদের গাঁধীর উত্তরসূরি হিসেবে মেলে ধরতেই চাইছে না, আরএসএস তাদের বিরুদ্ধে গাঁধী হত্যার কালিমাও ঘোচাতে চাইছে। সে কারণে ভাগবত বোঝাচ্ছেন, আরএসএসকে সমর্থন করেছেন গাঁধী। আরএসএসও চলছে গাঁধীরই পথে। আজ রাজঘাটেই সনিয়া গাঁধী বলেন, ‘‘ভারত ও গাঁধী পরিপূরক, যদিও আজকাল কিছু লোক এটিকে উল্টে দেওয়ার জেদ ধরে আছেন। তাঁরা চান, গাঁধীজি নন, ভারতের প্রতীক হোক সঙ্ঘ। তাঁদের আমি সাফ বলতে চাই, আমাদের দেশে গাঁধীজির দেখানো সংস্কৃতি, সভ্যতা, সমাজ কখনও তাঁদের ভাবনা হতে পারে না।’’

কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের বক্তব্য, ‘‘যে আদর্শ গাঁধীকে হত্যা করেছে, তার বাহকরাও আজ পদযাত্রা করছে! আমার প্রশ্ন, তারা গাঁধীর পক্ষে না গডসের?’’ মল্লিকার্জুন খড়্গেও বলেন, ‘‘এত দিন যাঁরা শুধু গডসের নাম নিতেন, ভোট পেতে তাঁরা গাঁধীর নাম নেওয়া শুরু করেছেন।’’ এমনকি বন্দি অবস্থায় মেহবুবা মুফতিও টুইট করেন, ‘‘গাঁধীর ১৫০তম জন্মদিনে আমাদের প্রশ্ন করা উচিত, তাঁর মানবতা, সত্য, অহিংসার প্রতি কি সুবিচার হচ্ছে? মুসলিম ও সংখ্যালঘুদের যেখানে উইপোকার মতো দেখা হয়, সেটি কি গাঁধীজির ভারত না গডসের?’’

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘হিন্দু মহাসভার সভাপতি হিসেবে প্রথম ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের কথা বলেন হেডগেওয়ার। সেটিই পরে জিন্নার দ্বিজাতি তত্ত্ব হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো স্পষ্ট বলছেন, মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না। তাঁদের একটাই কর্মসূচি— অসহিষ্ণু ফ্যাসিবাদী হিন্দুরাষ্ট্র তৈরি করা।’’ সিপিআইয়ের ডি রাজার মতে, ‘‘নরেন্দ্র মোদী বলছেন, যুদ্ধ নয়, ভারত বুদ্ধ দিয়েছে। মোহন ভাগবত তো বৌদ্ধরাষ্ট্রের কথা বলছেন না। বলছেন হিন্দুরাষ্ট্র হবেই।’’

Mahatma Gandhi RSS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy