শবরীমালা মন্দির চত্বর। ছবি- পিটিআই।
মাত্র দু’দিন পরেই দু’মাসের জন্য খুলছে শবরীমালার মন্দিরের দরজা। প্রচুর ভক্ত সমাগম হওয়ার কথা এই সময়ে। সেই সঙ্গে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ও। ১০ থেকে ৫০ বছরের মহিলাদেরও আয়াপ্পার বিগ্রহ দর্শন করতে দিতে হবে। এই অবস্থায় কেরল সরকারের কাছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয়। তাই আজই বিধানসভায় বিষয়টি নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিন ঘণ্টার বৈঠকের মাঝেই কক্ষত্যাগ করেন বিরোধী কংগ্রেস এবং বিজেপির বিধায়কেরা। কারণ, বৈঠকের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, শীর্ষ আদালতের রায় মানতে বাধ্য তাঁর সরকার।
শবরীমালা রায় পুনর্বিবেচনা করার একাধিক আর্জি ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। আগামী ২২ জানুয়ারি সেই সব আর্জি শোনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কেরলের বিরোধী দলগুলি আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছিল, ওই শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকর না করতে। অর্থাৎ ১০ থেকে ৫০ বছরের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে না দিতে। কিন্তু বিরোধী দলগুলির সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন জানিয়েছেন, যত ক্ষণ না পর্যন্ত কোর্ট নিজের দেওয়া রায়ে স্থগিতাদেশ দিচ্ছে, তত ক্ষণ সরকারের ক্ষমতা নেই সেই রায়কে অগ্রাহ্য করা। ফলে আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে সব বয়সের মহিলারা যাতে শবরীমালায় ঢুকতে পারেন, সেই বন্দোবস্ত রাজ্য সরকারকে করতে হবে। যাঁরা মহিলাদের বাধা দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে সরকার। বিজয়নের কথায়, ‘‘সরকার কোনও জেদ নিয়ে চলছে না। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতে আমরা বাধ্য। ভবিষ্যতে আদালত যদি অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে আমরা সেটা মানতেও বাধ্য।’’ তবে মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তি মানতে রাজি নয় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস ও বিজেপি। বিধানসভার বিরোধী নেতা রমেশ চেন্নিথালা বলেন, ‘‘আদালতের রায় নিয়ে সরকার অনড়। ভক্তদের কাছে এটা একটা চ্যালেঞ্জ।’’ রাজ্য বিজেপির প্রধান পি এস শ্রীধরন পিল্লাইয়ের মন্তব্য, ‘‘সর্বদল বৈঠক সময়ের অপচয় ছাড়া কিছু ছিল না।’’
কালই আবার নারী আন্দোলন কর্মী ত্রুপ্তি দেশাই জানিয়েছিলেন, আগামী শনিবারই ছ’জন মহিলাকে নিয়ে শবরীমালা মন্দিরে আয়াপ্পার বিগ্রহ দর্শন করতে যাবেন তিনি। এর আগে বিভিন্ন মন্দির বা দরগায় মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে আন্দোলন করতে দেখা গিয়েছে ত্রুপ্তিকে। তালিকায় রয়েছে শনি সিঙ্গনাপুর মন্দির, হাজি আলি দরগা, মহালক্ষ্মী মন্দির। মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর সুরক্ষার ব্যবস্থা করে রাখতে বলেছেন ত্রুপ্তি। সেই সঙ্গেই তাঁর সাফ কথা, ‘‘বিগ্রহ দর্শন না করে আমাদের মহারাষ্ট্র ফেরার প্রশ্নই নেই।’’
এর মধ্যেই বৈদ্যুতিন যান তৈরির একটি সংস্থা আজ জানিয়েছে, শবরীমালা মন্দিরে ভক্তদের পৌঁছতে দশটি বাস নামাচ্ছে তারা। দূষণমুক্ত বাসগুলি পাহাড়ের উপরে ভক্তদের নিয়ে যাতায়াত করবে।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy