Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শীলার শেষ নালিশ শোনেনি দল, ক্ষোভ

দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি পদে শীলাকে নিয়োগ করেছিলেন রাহুল গাঁধীই। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে থেকেই শীলার সঙ্গে প্রাক্তন সভাপতি অজয় মাকেন ও দলের সাধারণ সম্পাদক পি সি চাকোর বিবাদ চলছিল।

মৃত্যুর তিন দিন পরে সামনে এল শীলার সেই শেষ চিঠি।

মৃত্যুর তিন দিন পরে সামনে এল শীলার সেই শেষ চিঠি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৬
Share: Save:

ইস্তফা প্রত্যাহারের অনুরোধ নিয়ে রাহুল গাঁধীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন শীলা দীক্ষিত। দিল্লির বিষয়ে আলোচনাও করার ছিল। রাহুল দেখা করেননি। রাহুল ‘অধরা’ থাকায় শেষ পর্যন্ত সনিয়া গাঁধীকেই চিঠি লিখেছিলেন। মৃত্যুর তিন দিন পরে সামনে এল শীলার সেই শেষ চিঠি।

দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি পদে শীলাকে নিয়োগ করেছিলেন রাহুল গাঁধীই। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে থেকেই শীলার সঙ্গে প্রাক্তন সভাপতি অজয় মাকেন ও দলের সাধারণ সম্পাদক পি সি চাকোর বিবাদ চলছিল। মূলত, অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে। শীলা ছিলের জোটের বিপক্ষে, মাকেন-চাকো পক্ষে। রাহুল গাঁধী কেজরীর সঙ্গে ‘জোট করবেন’ বলেও শেষে শীলার কথাই মেনে নেন। কংগ্রেস ভোটে জেতেনি, কিন্তু দিল্লিতে তিন নম্বর থেকে দুই নম্বরে চলে এসেছিল। রাহুল গাঁধী সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণার পর চাকো-মাকেন জোট ফের শীলাকে চেপে ধরেন।

শীলা-ঘনিষ্ঠ নেতাদের মতে, সেই ক্ষোভই রাহুলকে জানাতে চেয়েছিলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ইস্তফার পর রাহুল দলের কাজে নাক গলাতে চাননি। অগত্যা ৮ জুলাই সনিয়া গাঁধীকেই চিঠি লেখেন। শীলা লিখেছিলেন, দিল্লিতে দলকে শক্ত করতে তিনি সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কিন্তু চাকোকে বিভ্রান্ত করছেন অজয় মাকেন। জেনেবুঝে তাঁর সিদ্ধান্তে বাধা তৈরি করছেন। এত দলেরই লোকসান হচ্ছে। সনিয়াকে শীলার আবেদন, ‘‘হাইকমান্ড নিরপেক্ষ হয়ে তদন্ত করুক সকলের ভূমিকা। তাতে প্রমাণ হয়ে যাবে, কার কথা সত্যি?’’ কংগ্রেসের এক সূত্রের মতে, সনিয়া গাঁধী চিঠি পেয়ে নিজের ঘনিষ্ঠ নেতাকে সকলের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু পদক্ষেপের ‘আশ্বাস’ দেওয়া ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। কারণ, দল এখন ‘মাথাহীন’। শীলা শিবিরের এক ক্ষুব্ধ নেতা আজ বলেন, ‘‘মৃত্যুর ক’দিন আগে চাকো শীলাকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, তাঁকে কোনও কাজ করতে হবে না। কারণ, শীলা অসুস্থ। বাকিরা কাজ করে তাঁকে জানিয়ে দেবেন। কারও অসুস্থতা নিয়ে এমন কথা প্রকাশ্যে বলার পরেও গাঁধী পরিবার থেকে হস্তক্ষেপ হয়নি!’’

রাজ্যে রাজ্যে এখন কংগ্রেসের অন্দরে চূড়ান্ত অরাজকতা। কর্নাটকেও দলের জোট সরকার পড়ে গেল। তার উপর সামনেই কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট। এমন সঙ্কটের সময়েও রাহুল গাঁধীর বিদেশ যাত্রা নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। আগে এক নেতা জানিয়েছিলেন, সোমবার অর্থাৎ গত কাল রাহুলের ফিরে আসার কথা। কিন্তু আজ তিনি বলেন, ‘‘দুপুর পর্যন্ত রাহুলের ফেরার কথা শোনা যায়নি। যে কারণে শীলার শেষকৃত্যে সনিয়া গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, রবার্ট বঢরারা থাকলেও রাহুল ছিলেন না। আজ সংসদেও তাঁকে দেখা যাননি।’’

কর্নাটকে সরকার ফেলে দেওয়ার প্রতিবাদে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস গোটা দেশেই আন্দোলন শুরু করছে। সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা কে সি বেণুগোপাল এই নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু দলেই প্রশ্ন উঠছে, ‘‘এত দিন পর কেন? আর রাহুল গাঁধীই বা কোথায়? তাঁর ছেড়ে দেওয়া পদে নতুন সভাপতি নিয়োগই বা হচ্ছে না কেন?’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sheila Dikshit Congress Rahul gandhi Sonia Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE