চিনের দাপটে এশিয়ার কূটনৈতিক দাঁড়িপাল্লা এক দিকে ঝুঁকে পড়েছে। ভারসাম্য আনতে বিদেশ মন্ত্রক তাই দৌত্য শুরু করল টোকিওর সঙ্গে। আজ থেকে টোকিওয় শুরু হল ভারত-জাপান কৌশলগত আলোচনা। তিন দিনের সফরে সে দেশে পৌঁছেছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বৈঠক করেছেন জাপানের বিদেশমন্ত্রী তারো কোনো-র সঙ্গে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচলে স্বাধীনতা, অবাধ পণ্য পরিবহণ, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সমস্যার মতো বিষয়গুলি গুরুত্ব পেয়েছে এই সংলাপে।
সুষমার সফর নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি ছাড়া দু’দেশেরই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীর মধ্যে।’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক সংস্কার শুরু হয়— এমনটাই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক। সে সময়ই রচিত হয় দ্বিপাক্ষিক বিশেষ কৌশলগত সম্পর্ক। গত বছর সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ভারতে এসে আরও গতি দিয়েছেন দু’দেশের এই আদানপ্রদানে। কৌশলগত বোঝাপড়া ছাড়াও পরমাণু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি সহযোগিতা, হাই-স্পিড ট্রেন প্রকল্পের মতো বিষয়গুলি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। গত তিন বছরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে ভারতে জাপানি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের মাত্রাও।
এটা ঘটনা যে কৌশলগত ভাবে চিনের মোকাবিলা করতে ভারতের যেমন মিত্র প্রয়োজন, ঠিক তেমন ভাবেই জাপানেরও দরকার রয়েছে চিন-বিরোধী শক্তিকে মজবুত করার। চিন-জাপান সম্পর্ক ক্রমাবনতির পথে। দক্ষিণ চিন সাগরে জলসীমার দখল নিয়ে দু’দেশের বিবাদ এই তিক্ততার অন্যতম কারণ। প্রযুক্তি এবং অর্থনীতিতে জাপান প্রবল উন্নতি করলেও, সামরিক শক্তিতে তারা চিনের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে। চিনের মোকাবিলার পাশাপাশি নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে জাপানেরও প্রয়োজন দক্ষিণ এশিয়ায় কোনও শক্তিশালী মিত্র দেশকে। সে ক্ষেত্রে ভারত তাদের অন্যতম সেরা পছন্দ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy