Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকাকে খুন করে ধর্ষণ ‘তান্ত্রিক’-এর, নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে বাবা-মা

ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতের। বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার বীভৎসতায় চমকে উঠেছে তারাও। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাবালিকার বাবা মাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ১৬:০৩
Share: Save:

অর্থের লোভে নিজের মেয়েকে বিক্রির নজির ভূরি ভূরি। এ বার অর্থ পাওয়ার লোভে নিজের নাবালিকা মেয়েকে বলি দিতেও পিছপা হলেন না বাবা মা। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় আচরণের দোহাই দিয়ে হত্যার পরে মৃতদেহের উপর চলল পাশবিক অত্যাচার। আর সবটাই বাবা মায়ের চোখের সামনেই। এমনই নারকীয় ঘটনার সাক্ষী রইল উত্তরপ্রদেশের কনৌজ। ঘটনার কথা সামনে আসতে রীতিমতো শিউরে উঠেছেন এলাকার মানুষও।

ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতের। বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার বীভৎসতায় চমকে উঠেছে তারাও। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাবালিকার বাবা মাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই নাবালিকার নাম কবিতা। বয়স বছর পনেরো। তার বাবা মহাবীর প্রসাদ সোনা ব্যবসায়ী। দীর্ঘ দিন ধরেই মন্দা চলছিল তাঁর ব্যবসায়। আর্থিক চাপে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন বলেই জানিয়েছেন বছর পঞ্চাশের মহাবীর এবং তাঁর স্ত্রী পুষ্পা। এই দুর্দশা থেকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে তাঁদেরই গাড়িচালক। নাম কৃষ্ণ শর্মা। সে আবার ‘স্বঘোষিত’ তান্ত্রিকও বটে। ব্যবসা বাঁচাতে ওই গাড়িচালক ওরফে তান্ত্রিকের বিধান ছিল নানা ধর্মীয় উপাচারে কবিতাকে বলি দেওয়া। বলির ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মিলবে ‘গুপ্তধন’ ৫ কিলোগ্রাম সোনা। সোনার লোভে নিজের মেয়েকেও বলি দিতে রাজি হয়ে যান মহাবীর ও পুষ্পা।

এর পরের ঘটনা ভয়ানক। ঠিক কী ঘটেছিল ওই দিন?

পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে, তান্ত্রিকের কথামতো কবিতাকে নিয়ে অন্নপূর্ণা মন্দিরে যান মহাবীর ও পুষ্পা। তার আগে কবিতাকে কোনও নেশার জিনিস খাইয়ে অচৈতন্য করে রাখা হয়েছিল। গোটা ব্যাপারটারই তদারকি করছিল ওই স্বঘোষিত তান্ত্রিক ওরফে কৃষ্ণ। এর পর পিপারিয়া ও বাঢোসা গ্রামের মাঝে একটি অশ্বত্থ গাছের কাছে নানা তান্ত্রিক উপাচার শুরু হয়। প্রথমেই বলি দেওয়ার নামে কবিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ওই তান্ত্রিক। ধর্মীয় বিধির দোহাই দিয়ে মৃতদেহকে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের একটি মাঠে। দেহ লোকানোর সময় সেখানেই মৃতদেহ ধর্ষণ করে ওই তান্ত্রিক ওরফে কৃষ্ণ। এর পর গলা কেটে সেই রক্ত নিয়ে এসে ফের পুজো দেওয়া হয়। গোটা ঘটনাটাই ঘটে মহাবীর ও পুষ্পার চোখের সামনেই। মেয়ের এই দুর্দশা দেখেও মুখে কুলুপ এঁটে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। সমস্যা শুরু হয় এর পরেই। বলি দিয়ে ততক্ষণে গা ঢাকা দিয়েছে তান্ত্রিক। এ দিকে সোনা পাওয়ারও আশা নেই দেখে নিজেরাই পুলিশের কাছে গিয়ে মেয়ের অপহরণের গল্প ফাঁদেন মহাবীর। অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হয় পুলিশের। তদন্তে নেমে সামনে আসে এই ভয়ানক সত্য। ওই দম্পতির আরও একটি মেয়ে আছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: দূরসম্পর্কের ভাইঝিকে বিয়ের ‘শাস্তি’, পঞ্চায়েতের নির্দেশে পিটিয়ে, গুলি করে খুন যুবককে

এর পরেই ওই তান্ত্রিকের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। বুধবার নিজের গ্রাম থাতিয়া থেকে ওই ‘স্বঘোষিত’ তান্ত্রিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE