হরিয়ানার ফরিদাবাদে শোনপেড় গ্রামে দুই দলিত শিশুকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল।
এ দিকে, শোনপেড়ের পরিস্থিতি এখনও যথেষ্টই থমথমে। পুলিশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে গোটা গ্রাম। আগুনে পুড়ে মৃত দু’টি শিশুর দেহ এ দিন বিকেল পর্যন্ত দাহ করতে দেননি গ্রামবাসীরা। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার ও তাদের বিচার শুরুর দাবিতে আজ সকাল থেকে দীর্ঘ ক্ষণ ফরিদাবাদ-বল্লভগড় জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ওই দু’টি শিশুর দেহ নিয়ে দিল্লি-আগ্রা সড়কেও যান মিছিল করে। পরে, পুলিশ গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে শিশুদু’টির দেহ দাহ করাতে রাজি করায়।
এ সবের মধ্যেই আজ সকালে দিল্লির অদূরে হরিয়ানার শোনপেড় গ্রামে গিয়ে ওই দলিত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সহ- সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি এই ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। রাহুল বলেন, ‘‘গরিব হলেই তার ওপর অত্যাচার কর, এটাই প্রধানমন্ত্রী মোদী চান। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী চান। বিজেপি, আরএসএস চায়। এরা গরিবদের কিছুতেই বাঁচতে দেবে না।’’ বিজেপি-শাসিত হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারেরও যাওয়ার কথা শোনপেড় গ্রামে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ওই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছেন। তিনি আজ সকালে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তবে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত মোট ১১ জনের মধ্যে মাত্র তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা এখনও পলাতক।
মূলত ঠাকুর সম্প্রদায়ের গ্রাম শোনপেড়ে সোমবার গভীর রাতে এক দলিত দম্পতির বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই দম্পতির আড়াই বছরের ছেলে বৈভব আর এগারো মাসের মেয়ে দিব্যার। তাদের মায়ের অবস্থাও সঙ্কটজনক। তাঁর শরীরের ৭০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁর স্বামী জিতেন্দ্রও রয়েছেন দিল্লির সফদরজঙ হাসপাতালে।
জিতেন্দ্র হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই ওই গ্রামের এক রাজপুত পরিবারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি জানান, ওই পরিবারের লোকজন অনেক দিন ধরেই তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে খুন করার হুমকি দিত। জিতেন্দ্রর পরিবারকে গ্রাম-ছাড়া করারও হুমকি দেয় তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত এক বছর ধরেই উত্তেজনা রয়েছে শোনপেড়ে। মূলত ঠাকুরদের ওই গ্রামে রয়েছে সামান্য কয়েকটা দলিত পরিবার। তাই কয়েক মাস ধরে পুলিশ পিকেটও বসানো হয়েছিল শোনপেড়ে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পর, কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে আট জন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy