Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Election Commission of India

ভোটকর্মীর করোনা-মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

‘এক্স গ্রাশিয়া’ ক্ষতিপূরণ হিসাবে সেই টাকা সংশ্লিষ্ট মৃতের পরিবারকে দেওয়ার জন্য দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রশাসনিক কর্তার কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে কমিশন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৫:৫৬
Share: Save:

করোনাকে সঙ্গী করে ভবিষ্যতে দেশের নির্বাচন! সেই কঠিন বাস্তবকে স্বীকার করে করোনায় মৃত্যুকে ক্ষতিপূরণের আওতাধীন করার সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। সেই মর্মে দেশের সব কটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিব এবং মুখ্য নির্বাচনী অফিসারদের (সিইও) নির্দেশ দিল কমিশন। বলা হয়েছে, নির্বাচনী কর্তব্যে থাকাকালীন নিরাপত্তারক্ষী বা ভোটকর্মীর কোভিড-১৯-এ মৃত্যু হলে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবে মৃতের পরিবার। একইসঙ্গে, নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তারক্ষীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য আগেভাগে প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করে রাখতে হবে জেলা নির্বাচন অফিসারকে। এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত হবেন ভোটযন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বেল) এবং ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল)-এর ইঞ্জিনিয়াররাও।

ভোটের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিংসাত্মক হামলায়, অসামাজিক কাজকর্মে ( রাস্তায় মাইন, বোমা বিস্ফোরণ, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা) মৃত্যু হলে এতদিন ক্ষতিপূরণ পেতেন ভোটকর্মী বা নিরাপত্তারক্ষীরা। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল করোনাও। ‘এক্স গ্রাশিয়া’ ক্ষতিপূরণ হিসাবে সেই টাকা সংশ্লিষ্ট মৃতের পরিবারকে দেওয়ার জন্য দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের প্রশাসনিক কর্তার কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে কমিশন।

সাধারণত, একটি জায়গাতেই ভোট নিতে যান ভোটকর্মীরা। কখনও দু'জায়গাতেও যেতে হয় তাঁদের। কিন্তু বিভিন্ন দফায় নির্বাচন হলে অনেক জায়গাতে বুথের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলান একই নিরাপত্তারক্ষী। ফলে তাঁদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ভোটের দায়িত্বে থাকাকালীন কেন্দ্রীয় বা রাজ্য পুলিশের কর্মীরা সংক্রমিত হলে তাঁদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য প্রশাসনকেই। এ কাজে পদক্ষেপ করবেন জেলা নির্বাচন অফিসার। সংশ্লিষ্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা ও নিভৃতবাসের বন্দোবস্ত রাখতে হবে, তা-ও জানিয়েছে কমিশন।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ‍্যাট)-এর ফার্স্ট লেভেল অব চেকিং (এফএলসি), কমিশনিং-এর কাজ করতে হয় বেল এবং ইসিআইএল'র ইঞ্জিনিয়ারদের। এমনকি, ভোটগ্রহণ এবং ফলাফলের দিনও যন্ত্র ত্রুটিবিহীন রাখতে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। সে কারণেই কোভিড-১৯ পর্বে তাঁদেরও বিনামূল্যে চিকিৎসার বন্দোবস্ত রাখার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিব ও সিইও'দের নির্দেশ পাঠিয়েছে কমিশন।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দেশে প্রায় ১১ লক্ষ বুথে নির্বাচন হয়েছিল। করোনা প্রতিরোধের অন্যতম শর্ত দূরত্ববিধি। কোভিড-১৯ আবহে ভোটেও তা স্বাভাবিক নিয়মেই মান্যতা পাবে। তাই বুথের সংখ্যা কিছুটা বাড়বে। ফলে আরও বেশি ভোটকর্মী লাগতে পারে। সাধারণত, একটি বুথে ভোট নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন চারজন ভোট কর্মী। অন্তত, দু'জন নিরাপত্তারক্ষী বুথ পাহারায় থাকেন। সেই সংখ্যা বাড়েও। এছাড়াও ভোটের সামগ্রী দেওয়া-নেওয়া, গণনা কেন্দ্র ও সেক্টর অফিসে কাজ করেন বহু ভোট কর্মী। ফলে ভোটের কাজে নিযুক্ত এক কোটির মতো মানুষ এ বার কোভিড-১৯ সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণের অন্তর্ভুক্ত হলেন, তা বলাই যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Commission of India Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE