বাদল অধিবেশনে সৌগত রায়। ফাইল চিত্র।
নিজের ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থানকে লঘু না-করে সুকৌশলে কংগ্রেস নেতৃত্বের ব্যর্থতাকেই তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদের ভোটাভুটিতে শাসক দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আজ ভোট দিল তাঁর দল। অথচ রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে তিনি নিজে প্রার্থী দিলেন না। দিনের শেষে বুঝিয়ে দিলেন যে কংগ্রেসের ম্যানেজারদের তৎপরতার অভাবেই হারতে হল বিরোধী পক্ষকে। স্পষ্ট হয়ে গেল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী ঐক্যের ফাটল।
সব মিলিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের বার্তা স্পষ্ট, বিরোধী ঐক্য মসৃণ করতে হলে মমতাকে আগাগোড়া সঙ্গে রেখে এবং যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই তা করতে হবে। রাহুল কর্মসূচি স্থির করে দেবেন এবং তৃণমূল তা অনুসরণ করবে এমন শর্তে আদৌ পা দিতে চান না মমতা।
অন্য দিকে, কংগ্রেস শিবিরের যুক্তি, এই বিষয়ে প্রথম থেকেই সমস্ত বিরোধী দলকে তারা সঙ্গে নিয়ে চলেছে। ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী কে হবেন তা ঠিক করতে যে প্যানেল তৈরি হয়, তাতেও তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিরোধী দলের রাজ্যসভার নেতারা ছিলেন। মমতাকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অনুরোধও করা হয়েছিল প্রার্থী দেওয়ার জন্য।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, কংগ্রেস নেতৃত্বের শেষ মুহূর্তের উদ্যোগে সংখ্যা সঙ্গে না-নিয়েই ভোটের লড়াইয়ে নেমে মুখ পোড়াতে মমতা রাজি ছিলেন না। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, যতটা তৎপর হওয়ার কথা ছিল, তা আদৌ হননি কংগ্রেসের ম্যানেজাররা। ‘তৎপর’ হওয়ার অর্থ ব্যাখ্যা করে তৃণমূল সূত্র বলছে, প্রত্যেকটি দলনেতার সঙ্গে ফোন করে পৃথক ভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল কংগ্রেসের। যেটা করা হয়নি। মমতার সঙ্গে যদি অনেক আগে থেকে আলোচনা করা হত, তা হলে আপকে তিনি ভোট দিতে রাজি করাতে পারতেন। বিজেডি-কেও বোঝাতে উদ্যোগী হতে পারতেন। তাতে পরাজয় এড়ানো সম্ভব হত কিনা তা তর্কসাপেক্ষ। কিন্তু লড়াইটা সম্মানজনক হত। তৃণমূলের বক্তব্য, মানস ভুঁইয়া দলীয় কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য আসতে পারেননি ঠিকই কিন্তু নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ানো হয়েছে তৃণমূলের উদ্যোগেই।
তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে মমতা অবশ্য এই ভোটকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এটি রাজ্যসভার ভিতরের একটি অঙ্কের খেলা মাত্র। এটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন নয়। এই ফলাফলে বিজেপি নেতৃত্বের উল্লসিত হওয়ার কোনও কারণই নেই। কারণ বাইরে লোকসভা ভোটের লড়াইয়ে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy