নিরুদ্দেশ স্ত্রী। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন এইমসের ডাক্তার কমল বেদী। পুলিশকে এ-ও বলেছিলেন, সেন্ট্রাল দিল্লির কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন স্ত্রী প্রিয়া। সেই সূত্র ধরে খুঁজতে খুঁজতেই পুলিশ হানা দেয় পাহাড়গঞ্জের একটি হোটেলে। আর তার একটি ঘরের দরজা ভেঙে মিলল কমলের স্ত্রী, এইমসের চিকিৎসক প্রিয়ার রক্তাক্ত দেহ। হাতের শিরা কেটে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। সঙ্গে একটি সুইসাইড নোট— সমকামী স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এই পদক্ষেপ।
৩১ বছরের প্রিয়া ওই চিঠিতে জানিয়েছেন, বিয়ের পরই জানতে পারেন, কমল সমকামী। যদিও স্বামীর যৌন প্রবণতাকে মেনে নেন তিনি। কিন্তু কমল বিষয়টিকে মানতে পারেননি। সুইসাইড নোটের পাশাপাশি গত কাল দুপুরে ফেসবুকেও একটি পোস্ট করেন প্রিয়া। তাতেও তিনি অভিযোগ করেন, স্বামী যে সমকামী, সে কথা জানার পর থেকেই কমল তাঁর উপর অত্যাচার শুরু করেন। সে সঙ্গে নিত্যনতুন পণ চেয়ে চাপ দিতে থাকেন প্রিয়ার উপর। দিনের পর দিন বেড়ে চলা এই নির্যাতন আর সহ্য করতে পারেননি তিনি।
প্রিয়ার ওই চিঠি-ফেসবুক পোস্টের ভিত্তিতে এইমসের কর্মী আবাসন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ডাক্তার কমল বেদীকে। ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সেন্ট্রাল দিল্লি) পরমাদিত্য জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ (নৃশংসতা) এবং ৩০৪বি (পণ নেওয়া) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে কমলের বিরুদ্ধে।
পুলিশি অভিযোগে কমল জানান, শনিবার সকাল থেকে তাঁর স্ত্রী এইমসের চিকিৎসক প্রিয়া নিখোঁজ। সেন্ট্রাল দিল্লির নবি করিম এলাকার কোথাও থাকতে পারেন, অভিযোগে এ-ও জানান তিনি। এর পরই বিভিন্ন হোটেলে হানা দেয় পুলিশ। খবর আসে পাহাড়গঞ্জ এলাকার একটি হোটেলে গত কালই প্রিয়া নামে এক মহিলা উঠেছেন। ছুটে যায় পুলিশ। কিন্তু বারবার ডাকাডাকি করা হলেও ঘরের ভিতর থেকে কেউ সাড়া দেয়নি। এর পর দরজা ভাঙতেই পুলিশ দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন প্রিয়া।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ হোটেলে এসে ওঠেন প্রিয়া। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছিলেন। ফেসবুকে পোস্ট করেন শনিবার দুপুর নাগাদ। একটি সুইসাইড নোটও লেখেন। আত্মঘাতী হন মাঝরাতে। প্রিয়ার মা-বাবাও পুলিশের কাছে কমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন।
পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল প্রিয়া-কমলের। দু’জনেই এইমসের ডাক্তার। প্রিয়া ছিলেন অ্যানাসথেটিস্ট। আর কমল ত্বক বিশেষজ্ঞ। বিয়ের পর দক্ষিণ দিল্লিতে এইমসের কর্মী আবাসনে থাকতেন দু’জনে। কিছু দিনের মধ্যেই প্রিয়া জানতে পারেন স্বামী সমকামী। আর তার পর থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। ফেসবুকে প্রিয়া লিখে গিয়েছেন, ‘‘কমল বেদী। তোমার থেকে আমি কিচ্ছু চাইনি। কিন্তু যৌন প্রবণতার জন্যই তুমি শুধু ভেবে গেলে আমি তোমার থেকে যৌনতা চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy