পুলিশ দেখে পালানোর বদলে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন ডাইনি অপবাদে বলির ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রামবাসীরা। চিৎকার করে তারা জানায়— ডাইনি বেঁচে থাকলে গ্রামের অমঙ্গল। তাই গ্রামে ডাইনি থাকলে, তাকে মারা হবেই। আজ সকাল থেকে ম্যাটাডর বোঝাই হয়ে গ্রামবাসীরা জড়ো হয় বালিচাং থানায়। বেশির ভাগই মহিলা। তাদের বক্তব্য— খুন করেছি, বেশ করেছি!
গত কাল শোণিতপুর জেলার বিশ্বনাথ চারিয়ালি পুলিশ জেলার অন্তর্গত ১ নম্বর ভীমাজুলি গ্রামে ডাইনি অপবাদে ৬৩ বছর বয়সী পনি ওঁরাওকে বলি দিয়েছিল জনতা। তার জেরে পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়া যুবকদের ছাড়ানোর জন্য থানায় ঝামেলা ও নিজেদের হত্যাকারী হিসেবে দাবি করায় ৯ মহিলাকে আটক করা হয়।
এ দিন সংবাদমাধ্যম ওই গ্রামে গেলে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ উগরে দেন। সকলের অপবাদ, পনি ডাইনিবিদ্যা চর্চা করত। তাই গ্রামের মানুষের কারও পেটে পাখি ঢুকে যেত, কারও পেট থেকে বের হত ছাগলের চামড়া বা গজাল। এমন বিপজ্জনক মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না। এ দিন নিহতের বাড়ি যান স্থানীয় বিধায়ক প্রবীণ হাজরিকা। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামে বহু মানুষ অন্ধবিশ্বাসের কবলে রয়েছে। শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দফতরকে আরও সক্রিয় হতে হবে।’’
গ্রামের মহিলারা এ দিন থানা ঘেরাও করে। এই নৃশংস খুনের ঘটনায় যে ৭ যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের বিনা শর্তে মুক্তির দাবি করা হয়। পুলিশের সামনেই গ্রামের মহিলারা দাবি করেন, ডাইনিকে না মারলে গ্রামের ক্ষতি হতো। পুলিশ ৯ জন মহিলাকে আটক করে।
কিন্তু, কেন পনিকে ডাইনি মনে করছে সকলে? গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ভীমাজুলিতে অসুখ লেগেই থাকে। তেজপুর এমনকী গুয়াহাটিতে ডাক্তার দেখিয়েও লাভ হয় না। ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, কারও কোনও রোগ নেই। কিন্তু, কয়েক দিন পরেই রোগীর মৃত্যু হয়।
এসপি মানবেন্দ্র দেব রাই জানান, গ্রামপ্রধান জানিয়েছেন এর আগেও তিন বার গ্রামে এ নিয়ে সালিশি সভা বসেছে। তিনি কোনও মতে হত্যা ঠেকিয়েছেন। কিন্তু, গত কাল তিনি গ্রামে না থাকায় স্বঘোষিত ‘লক্ষ্মীদেবীর অবতার’ অনিতা রংহাংপির প্ররোচনায় গ্রামবাসীরা ওই মহিলাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy