Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিজ্ঞানমেলায় আলো ছড়ালেন বাঙালিরাই

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে এসেছিলেন গবেষক মনীষা মণ্ডল ও অঙ্কিতা কুণ্ডু। শহরের আবর্জনা-সমস্যার সমাধানে তাঁরা তৈরি করেছেন একটি মেশিন।

লখনউয়ে বিজ্ঞান মেলায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ছবি: পিটিআই।

লখনউয়ে বিজ্ঞান মেলায় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। ছবি: পিটিআই।

সুপ্রিয় তরফদার
লখনউ শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৫
Share: Save:

বিজ্ঞানের মঞ্চে কেবলই মোদী সরকারের প্রচার কেন, কেনই বা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারে মেয়েদের হেঁশেলে পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠছে, সেই সব প্রশ্ন আর বিতর্কে সরগরম ছিল লখনউয়ে এ বারের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানমেলা। তারই মধ্যে দেশ-বিদেশে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের আসরে নজর কাড়লেন পশ্চিমবঙ্গের গবেষকেরা। ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালে পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞানীরা জানান, বিজ্ঞানের সুফল সাধারণ মানুষের অন্দরমহলে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই তাঁদের গবেষণা।

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে এসেছিলেন গবেষক মনীষা মণ্ডল ও অঙ্কিতা কুণ্ডু। শহরের আবর্জনা-সমস্যার সমাধানে তাঁরা তৈরি করেছেন একটি মেশিন। এই মেশিন রাস্তার নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে স্বয়ংক্রিয় ভাবে আবর্জনা তুলে জঞ্জালের গাড়িতে ফেলে আসবে। রোজ রোজ পুরসভার কর্মীদের দোরে দোরে ঘুরতে হবে না। এই যন্ত্র তৈরিতে মনীষা-অঙ্কিতাকে সাহায্য করেন তাঁদের শিক্ষক রাজকুমার দত্ত।

যাঁরা চোখে দেখতে পান না বা যাঁরা কথা বলতে পারেন না, তাঁদের জন্য দুর্গাপুরের এক গবেষক তৈরি করেছেন ‘হেল্পার অ্যাপ’। হাতে বিশেষ প্রযুক্তির দস্তানা পরে আঙুল নাড়িয়ে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন ওই প্রতিবন্ধীরা। তাঁদের প্রয়োজনের কথা বলে দেবে মোবাইল। টিভি-র রিমোটের সাহায্যে ঘরের সব কিছু চালানোর রাস্তা দেখিয়েছেন আর এক দল বাঙালি গবেষক। বাঙালি গবেষকদের এই সব কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন দেশ-বিদেশের গবেষক-প্রতিনিধিরা।

সোমবার, মেলার শেষ দিনে বাঙালি গবেষক-বিজ্ঞানীদের প্রশংসায় গলা মেলালেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও। তিনি জানান, জগদীশচন্দ্র বসু মানুষের জন্য গবেষণা করতেন। পেটেন্ট পেতে বা জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করতে নয়। বহু বাঙালি বিজ্ঞানীর উল্লেখ করে হর্ষ বর্ধন বলেন, ‘‘আজকের প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের জগদীশচন্দ্রের পথ অবলম্বন করা উচিত।’’ বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং গবেষণায় উৎসাহ দিতেই যে এই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানমেলার
উদ্যোগ, তা স্মরণ করিয়ে দেন হর্ষ বর্ধন। এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ীও। তিনি বলেন ‘‘আমাদের দেশে বিকল্প শক্তি বা অপ্রচলিত শক্তির ভান্ডার প্রচুর। এই শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের পেট্রল-ডিজেলের উপরে ভরসা করতে হবে না।’’

উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে বিজ্ঞানমেলাকে ঘিরেই বৃহস্পতিবার থেকে ছিল উৎসবের বাতাবরণ। বিজ্ঞাননগরীর সাজে সেজে উঠেছিল লখনউ নগরী। এক অটোচালক জানান, শুধু গোমতীনগর এলাকায় অটো চালিয়ে অন্য সময়ের থেকে দ্বিগুণ আয় হয়েছে তাঁদের। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে ক্যাম্প করেছিল ডিআরডিও। ফৌজিদের জুতো, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, ঠান্ডায় হাত গরম করার ক্রিমের প্রদর্শনী ছিল। প্রচুর উৎসাহীর ভিড় হয় সেখানে। ইসরোর ক্যাম্পে ভিড় ছিল স্কুলপড়ুয়াদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Science festival lucknow West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE