নাসার মার্স অরবাইটার থেকে পাঠানো ছবি।
লাল গ্রহে গিয়ে কেউ যদি প্রশ্ন করেন, ‘একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন’? তার উত্তরে এবার একেবারেই নিরাশ হতে হবে না। জলের অস্তিত্বের সম্ভাবনা প্রমাণ মিলেছিল আগেই। তবে শুধু জলই নয়, লাল গ্রহ মঙ্গলে আস্ত একটা হ্রদ (লেক) থাকার সম্ভাবনার কথা জানালেন বি়জ্ঞানীরা।
মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠে দক্ষিণ দিক বরাবর ‘সাদার্ন আইস শিট’-এর মাঝেই নাকি লুকিয়ে রয়েছে তরল জলে ভর্তি একটি ২০ কিলোমিটার হ্রদ। ১.৫ কিলোমিটার পুরু বরফের আস্তরণের নিচেই নাকি রয়েছে এই হ্রদ। আর এই হ্রদের হদিশ মেলার পর আরও একবার জোরাল হল প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা।
ইতালির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের প্ল্যানেটারি সায়েন্স বিশেষজ্ঞ রবের্তো ওরোসেই বলেন, ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার অরবাইটিং মার্স এক্সপ্রেস স্পেসক্র্যাফ্টের মাধ্যমে তিন বছরের পর্যবেক্ষণের পর এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
আরও খবর: শুক্রবার চার ঘণ্টার চন্দ্রগ্রহণ, কোথা থেকে কেমন দেখতে পাবেন, জেনে নিন
মার্স এক্সপ্রেসের ২০১৪-২০১৫ সালের পাঠানো এই তথ্য নিয়ে ওরোসেই ও তাঁর সহযোগীদের গবেষণাপত্রটি ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে পুরদুয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রায়োনি হরগ্যান বলেন, ‘এটা একটা অভাবনীয় তথ্য।’ মার্সিস নামে একটি যন্ত্রের সাহায্যে (মার্স অ্যাডভান্স র্যাডার ফর সাবসারফেস অ্যান্ড আয়োনোস্ফিয়ার সাউন্ডিং) বরফের আস্তরণের নিচে এই তরল জলের হ্রদের অস্তিত্বের সন্ধান মিলেছে।
এর আগে লাল গ্রহে কিছু খনিজ বস্তুও পাওয়া গিয়েছে যা কেবলমাত্র জলের সংস্পর্শেই তৈরি হয়। নাসার কিউরিওসিটি যানও এর আগে বেশ কিছু তথ্য পাঠিয়েছিল। সেখানে মঙ্গলের একটি পাহাড়ের জন্মরহস্য ভেদ করতে গিয়েই নাসার মঙ্গলযান বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন যে জলের সন্ধান মিলেছে লাল গ্রহে। এবার র্যাডারের ওয়েবের মাধ্যমে মার্সিস দেখিয়েছে, প্রতিফলনের ঔজ্জ্বল্য অত্যন্ত বেশি। বরফ বা খনিজ পাথর নয়, বরফের মাঝে একমাত্র তরল জলের অস্তিত্ব থাকলেই এমনটা প্রতিফলন দেখাবে র্যাডারের ওয়েভ।
২০১২ সালের মে মাস থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, বরফের আস্তরণের নিচে এই হ্রদের তাপমাত্রা হওয়ার কথা মাইনাস ৬৮ ডিগ্রি। বিশুদ্ধ জলও সেখানে জমাট বেঁধেই থাকার কথা। তবে এক্ষেত্রে জলে সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়ামের লবণ মিশে থাকার দরুণ হ্রদের জল জমাট বাঁধেনি বলেই মনে করা হচ্ছে। নাসার প্ল্যানেটারি প্রোটেকশন অফিসার লিসা প্র্যাট এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এটা অভাবনীয়, তবে এই প্রসঙ্গে আরও গবেষণা জরুরি।’’
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারে আরও খানিকটা দিশা মিলল। তবে এ ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে হলে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: পৃথিবীতে এক দিন আর কোনও গ্রহণই হবে না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy