Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Mileage

বেশি মাইলেজ পাবার ২০টি টিপস!

একটু বুঝে চালালে, একটু গাড়ির যত্ন নিলেই সাধারণের থেকে বেশি মাইলেজ পাবেন আপনি।

জয়দীপ সুর
শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৫৪
Share: Save:

তেলের দাম যত বাড়ছে, গাড়ি চালানোর খরচা তত বেড়েই চলেছে। তেলের দামের ওপর গাড়ি চালকেরবা মালিকের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও গাড়ির ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকেই। একটু বুঝে চালালে, একটু গাড়ির যত্ন নিলেই সাধারণের থেকে বেশি মাইলেজ পাবেন আপনি। নীচে দেওয়া রইল২০ খানা টিপস, আপনার গাড়ির মাইলেজ বাড়ানোর।

১. চাকার হাওয়ার প্রেসার দেখে নিন

গাড়ির চাকার হওয়ার প্রেসার ঠিক থাকা খুব দরকার। ১পিএসআই পরিমাণ হওয়া কম থাকলে তার জন্য প্রায় ৩ শতাংশ অবধি গাড়ির মাইলেজ কমে যেতে পারে। সব সময় গাড়ির হাওয়া চেক করে নেবেন চালানোর আগে।

২. সার্ভিস করান ইঞ্জিনের

গাড়ির ইঞ্জিনের টিউনিং করিয়ে রাখলে প্রায় ৪ শতাংশ অবধি আপনার গাড়ির মাইলেজ বাড়তে পারে। নিয়মিত সার্ভিসিং এবং টিউনিং শুধু মাইলেজ নয়, আপনার গাড়ির স্বাস্থ্যের জন্যেও ভাল।

৩. স্মুথ ড্রাইভিং

কী ভাবে গাড়ি চালাবেন তার উপরেও মাইলেজ নির্ভর করে। খুব বেশি ব্রেক এবং অ্যাক্সেলারেশনগাড়ির মাইলেজ ৩৩% অবধি কমিয়েদিতে পারে।একটা নির্দিষ্ট স্পিডে গাড়ি চললে অনেক বেশি মাইলেজ পাওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুন: প্রিয়জনকে উপহার দিন ওয়াইফাই স্মার্ট সুইচ, জেনে নিন এর কার্যকারিতা​

৪. বেশি গিয়ারে চালান

কম গিয়ারে বেশি স্পিড তোলার থেকে একটু বেশি গিয়ারে সাধারণ স্পিডে গাড়ি চালালে ইঞ্জিনেরওপর চাপ পড়ে, তেলও বেশি লাগে। বরং নির্দিষ্ট গিয়ারে নির্দিষ্ট স্পিডে গাড়ি চালালে তেল এবং ইঞ্জিন, দু’দিকেই চালকের লাভ।

৫. অতিরিক্ত ওজন নিয়ে ঘুরবেন না

প্রতি ৪৫কিলোগ্রামের জন্যে প্রায় ২শতাংশ অবধি গাড়ির মাইলেজ কমে যেতে পারে। গাড়ির পিছনে, ট্রাঙ্ক বা অন্য কোথাও অপ্রয়োজনীয় কিছু নিয়ে ঘুরবেন না।

৬. ভাল জ্বালানি মানে বেশি মাইলেজ

সব তেল সমান নয়। যত ভাল তেল হবে,গাড়ির ইঞ্জিন তত ভাল চলবে। চালকের গাড়ি চালানোর অভ্যেস এবং ভাল জ্বালানি-দুই যদি ভাল হয়, গাড়ির মাইলেজ বেড়ে যায়।

৭. যথাযথ মোটর অয়েলের ব্যবহার

ভালো মোটর অয়েল ইঞ্জিন কে যেমন ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচায়, তেমনি ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। ফলে ইঞ্জিন যেমন ভাল ভাবে কাজ করতে পারে, মাইলেজও ঠিকঠাক পাওয়া যায়।

৮. ছাদে কোনওলাগেজ রাখার র‍্যাক থাকলে সরিয়ে দিন

যদি অনেকদিন ধরে গাড়ির ছাদে কোনো র‍্যাক লাগানো থাকে,যা সাধারণত ব্যবহার হয়না, তাহলে খুলে নিন ওই র‍্যাক। অতিরিক্ত ওজন যেমন কমবে, হাওয়ার বাধা তেমনি কমবে, ফলে ৫ শতাংশ অবধি মাইলেজ বেড়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন: পেটপুজো এ বার অ্যাপনির্ভর টাচে​

৯. জানলা বন্ধ রাখুন

হাওয়ার বাধা বড় বাধা। আপনি হয়ত হাওয়া খাবেন বলে গাড়ির জানলা গুলো খুলে রাখলেন, কিন্তু তাতে গাড়ির উপর অনেক বেশি বাধা প্রয়োগ হয়, ফলে মাইলেজ কমতে থাকে, স্পিড বাড়ানোর জন্যে আরও বেশি তেল খরচা করতে হয়। ফলে প্রয়োজন না হলে জানলা খুলবেন না।

১০. বেশি স্পিডে চালাবেন না

যত বেশি স্পিডে চালাবেন, তত বেশি হাওয়ার বাধা পেরোতে হবে আপনার গাড়ি কে। ফলে গাড়ির স্পিড লিমিট যদি ৪০ থেকে ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টার মধ্যে হয়ে থাকে, চেষ্টা করুন তার মধ্যে চালাতে। এর থেকে ১০ কিমি প্রতি ঘন্টা জোরে চালাতে আপনার ২৩ শতাংশ বেশি জ্বালানি ব্যবহার হবে।

১১. সিগন্যালে গাড়ি বন্ধ রাখুন

গাড়ি নিয়ে যখন কোনও সিগন্যাল বা পার্কিং বা অন্য কোথাও দাঁড়িয়ে, ইঞ্জিন বন্ধ করে দিন। যতই দাড়িয়ে থাকুন এক জায়গায়, অল্প হলেও তেল পুড়বে গাড়ির ইঞ্জিন চালিয়ে রাখলেই।

১২. অফিস টাইম পারলে এড়িয়ে চলুন

রাশ আওয়ার, মানে অফিস বা স্কুলের টাইমে যখন ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে, সব গাড়ি তখন রাস্তায় নামার ফলে জ্যাম তৈরি হবেই। সকলকে সময়ে পৌঁছতে হবে, ফলে ব্যস্ত রাস্তাগুলোয় জ্যাম লেগেই থাকে। সম্ভব হলে এই সময় গাড়ি নিয়ে বেরোবেন না, জ্যাম বা ধীর গতিতে চালানোর জন্যে অনেক বেশি জ্বালানি নষ্ট হবে।

১৩. অতিরিক্ত অ্যাক্সেলারেশন করবেন না

সঠিক সময় গিয়ার চেন্জ শুধু জ্বালানি নয়, ইঞ্জিনের পক্ষেও খুব প্রয়োজনীয়। না হলে লো গিয়ারে অতিরিক্ত অ্যাক্সিলারেশন একদিকে যেমন ইঞ্জিনের পক্ষে ক্ষতিকর, অন্যদিকে জ্বালানি নষ্টেরও কারণ।

১৪. ক্রুজ কন্ট্রোল ব্যবহার করা

যদি আপনার গাড়িতে ক্রুজ কন্ট্রোল থাকে, লং ড্রাইভ করার সময় ব্যবহার করলে যেমন গতি এক রকম রাখতে সাহায্য পাবেন, একই সঙ্গে জ্বালানিও বাঁচবে।

১৫. এয়ার ফিল্টার চেক করুন

ইঞ্জিনে যাতে ধুলো বালি না যেতে পারে, তার জন্যে রয়েছে এয়ার ফিল্টার। কিন্তু এই ফিল্টারে দিনের পর দিন নোংরা জমতে জমতে একসময় সেখান থেকে আর হাওয়া ইঞ্জিন অবধি পৌছায় না ঠিক করে। ফলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কমে আসে। ১০ শতাংশ অবধি মাইলেজ কমতে পারে এর ফলে।

১৬. অল্প অল্প তেল না ভরাই ভাল

প্রতিবার তেলের ঢাকনা খুললে বেশ কিছুটা তেল গ্যাসে পরিণত হয় বাতাসে মিশে গিয়ে। ফলে অল্প অল্প করে তেল ভরার থেকে একবারে অনেকটা তেল ভরে নিলে বার বার পাম্পে লাইন দিতে হয় না, নষ্ট হয় না জ্বালানি।


১৭. সামনের গাড়ির থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন

কিছুটা দুরত্ব রেখে চললে আপনি ব্রেক মারার সুযোগ পাবেন, কিছু ক্ষেত্রে গাড়ি পুরো থামানোর প্রয়োজনও পরে না, একটু স্পিড কমিয়ে পাশ দিয়ে কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়। ফলে আপনি কতটা দূরে আছেন, কতটা জায়গা পাচ্ছেন ব্রেক মেরে কাটানোর, তার উপরেও আপনার মাইলেজ নির্ভর করছে।

১৮. রাস্তার কথা ভেবে চালান

যদি জানেন সামনে স্পিডব্রেকার আছে বা সিগনাল, স্পিড কমিয়ে নিন। যখন দেখছেন ফ্লাইওভার থেকে নামছেন, সামনে রাস্তা ফাকা, একটু স্পিড বাড়িয়ে রাখুন। চেনা রাস্তা হলে খেয়াল রাখুন কোথায় কোথায় গাড়ি কত স্পিডে চালালে ব্রেক কম ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌঁছবেন।

১৯. এয়ার কন্ডিশন চালান প্রয়োজনে

গাড়িতে উঠেই এয়ার কন্ডিশন চালিয়ে দেন? খেয়াল করে দেখুন তার প্রয়োজনীয়তা। অথবা চালানোর পর গরম কেটে গেলে বন্ধ করে দিন।যত বেশি সময় চালাবেন, তত বেশি তেল খাবে, তত বেশি ইঞ্জিনে চাপ পড়বে।

২০. কোথায় কোথায় যাবেন আগে ঠিক করে নিন

কোন দিক দিয়ে গেলে কম ঘুরতে হবে বা কোন রাস্তায় জ্যাম কম—আগেই প্ল্যান করে নিন। ছোট ছোট ট্রিপ না করে বরং একবার গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যা যা কাজ আছে সেরে ফেলুন।দেখবেন অনেকটাই তেল এবং সময় বেঁচে যাবে।

অনুবাদ: অর্চিষ্মান সাহা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mileage Cars Speed Motor Vehicles
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE