Advertisement
E-Paper

থামতে শেখেনি ঝড়ের পাখি

অসাধারণ অভিনয়ে দেবশঙ্কর হালদার ও সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখছেন বিপ্লবকুমার ঘোষঅসাধারণ অভিনয়ে দেবশঙ্কর হালদার ও সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। লিখছেন বিপ্লবকুমার ঘোষ।

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০০:০১

নাট্যরঙ্গ-র ‘ঝড়ের পাখি’র উৎস হল উৎপল দত্তের লেখা নাটক ‘ঝড়’ ও পল্লব সেনগুপ্তের ‘ঝড়ের পাখি’ গ্রন্থটি। এখানে ‘ঝড়ের পাখি’ বলতে ডিরোজিওকেই বোঝানো হচ্ছে। তবে রাজা রামমোহনও আছেন। অন্য দিকে ডিরোজিও-র কৃতী ছাত্র দক্ষিণারঞ্জন, কৃষ্ণমোহন, রাধানাথ শিকদারও আছেন। নাটকের প্রেক্ষাপট হল বাংলার সুবর্ণ যুগের প্রাকমুহূর্ত। অর্থাৎ সূর্য উঠবে, আভা আছে, কিন্তু অন্ধকার কাটেনি। সেই অন্ধকারের রাজা হয়ে সমস্ত সংস্কার ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছেন রাজা রাধাকান্ত দেব। সঙ্গে আছেন রামকমল সেনের মতো এশিয়াটিক সোসাইটির স্তম্ভ। আছেন সমাচার চন্দ্রিকার ভবানী চরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঝড়ের শুরু।

নাটকের গতি ঘুরেছে অসাধারণ অভিনয়ে। ডিরোজিওর ভূমিকায় সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। রাধাকান্ত দেবের চরিত্রে দেবশঙ্কর হালদার। এক জন এদেশে প্রগতির হাওয়া বইয়ে দিতে বদ্ধপরিকর। অন্য জন প্রাচীন হিন্দু সমাজের শাসন-অপশাসনকে অক্ষত রাখতে মরিয়া। দেবশঙ্করের রুদ্ররসের নানা কারুকার্যের পাশে সুরজিতের স্বভাববন্দি ধারালো অভিনয় দেখার মতো। পাশাপাশি ডিরোজিও-র বোন এমিলিয়া, যিনি এ নাটকে দক্ষিণারঞ্জনকে ভালবেসেছেন সেই চরিত্রে অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায়ের নজর কাড়া অভিব্যক্তি, পরিণত ও সংযত। পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দু’একটি দুর্বল অভিনয় নাটকে গতির কোনও ক্ষতি করতে পারে না। সুরজিৎ নাটকটিও সুন্দর বুনেছেন। রাধাকান্তের ‘ছায়ার সঙ্গে’ অসি চালনা দিয়ে এর শুরু।

নাটকের বিরতি হয় পানপাত্র হাতে ডিরোজিও-রাধাকান্ত দেবের পারস্পরিক ‘চিয়ার্স’-এর পরিবর্তে ‘ফায়ার’ শব্দে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবার মধ্য দিয়ে। শেষ হয় একাকী রাজা রাধাকান্ত দেবের দীর্ঘশ্বাসে। ‘সিস্টার, একটু কফি হবে নাকি! আমার শীত করছে।’ সুন্দর অভিনয়। বলতে দ্বিধা নেই অভিনেতা সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় নাট্যকার হিসেবে যতটা সার্থক, পরিচালক হিসেবে ততটা নন। তাঁর পরিচালনার কাজে তেমন কোনও অভিনবত্ব চোখে পড়ে না। মঞ্চসজ্জা থেকে আবহ সর্বত্র সার্থক পরিচালকের ভাবনার ছায়া পড়ে। এ ক্ষেত্রে তেমনটি হল না। আবহে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের এত ব্যবহার কেন? ডিরোজিও ‘অ্যাংলোইন্ডিয়ান’ বলে? কিন্তু তার তো যাবতীয় কাজ এই বাংলাকে ঘিরে। পোশাক পরিচ্ছদেও সর্বদা ভারসাম্য থাকেনি। ডিরোজিওর জুতোর সঙ্গে তার ছাত্রদের জুতো একই গোত্রের তবু গুণগত এত পার্থক্য কেন?

এখনও বাঙালি নাটক দেখতে আসেন অভিনয় দেখার জন্য। তাই দু’ঘণ্টা কুড়ি মিনিট ধরে নাটক দেখার পরেও শেষে করতালি দিয়ে যেতে দর্শকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে না।

biplab kumar ghosh play jhorer pakhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy