Advertisement
১১ জুন ২০২৪

সাবধান মোবাইল!

চার বছরের পুঁচকে তিতাসকে খাওয়াতে তার মা’র সময় লাগে পাক্কা দেড় ঘণ্টা। কিন্তু হাতে মোবাইল দিলে খতম করে ফেলে পুরো খাবারটাই। ছ’বছরের আকাশ এখন তাঁর দাদু-দিদার মোবাইল টিচার। এই চিত্রটা অল্পবিস্তর সকলের কাছেই পরিচিত।

মডেল: ঋষিকা সুকুল,ফোটো: অমিত দাস, মেকআপ: সায়ন্ত ঢালি, লোকেশন: ভার্দে ভিস্তা

মডেল: ঋষিকা সুকুল,ফোটো: অমিত দাস, মেকআপ: সায়ন্ত ঢালি, লোকেশন: ভার্দে ভিস্তা

ঊর্মি নাথ
শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

চার বছরের পুঁচকে তিতাসকে খাওয়াতে তার মা’র সময় লাগে পাক্কা দেড় ঘণ্টা। কিন্তু হাতে মোবাইল দিলে খতম করে ফেলে পুরো খাবারটাই। ছ’বছরের আকাশ এখন তাঁর দাদু-দিদার মোবাইল টিচার। এই চিত্রটা অল্পবিস্তর সকলের কাছেই পরিচিত। বিশেষ করে যে বাবা-মা দু’জনেই বাইরে কাজ করেন, দিনের শেষে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরে হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে সন্তানের হাতে মোবাইল ধরিয়ে রক্ষে পেতে চান। কিন্তু চটজলদি এই ব্যবস্থা আপনার সন্তানের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর, তা কি জাননে?

প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে শিশুর মস্তিষ্কে মোবাইলের রেডিয়েশন ক্ষতি করে প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। মানসিক ক্ষতির তালিকাটিও চিন্তার। বেশিসময় ধরে মোবাইলে গেম খেলা, চ্যাট করা বা ভিডিয়ো দেখার জন্য বাচ্চারা কথা বলতে ভুলে যাচ্ছে, কারও সঙ্গে বন্ধুর সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে না। এমনকী একঘর লোকের মাঝেও কথা বলার বিষয় খুঁজে পাচ্ছে না। কিছু অভিভাবক মনে করেন মোবাইল-গেমে বাচ্চাদের মনোযোগ বাড়ে। কিন্তু ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডা. সুস্মিতা হালদারের মতে, ঘটে উলটোটাই। ‘‘অতিরিক্ত গেম খেলার জন্য বাচ্চাদের সাংঘাতিক রকম মনোযোগের সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে পড়াশোনা, যা অতটা ইন্টারেস্টিং নয়, সেখানে মনোযোগ দিতে পারছে না। ফলে পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ব্যবহার নেশার পর্যায়ে চলে গেলে তারা জেদি, খিটখিটে হয়ে যায়।’’

মোবাইল ব্যবহার থেকে ছোটদের কি পুরোপুরি বিরত রাখা যাবে? যাবে না, দরকারও নেই। তারা মোবাইল নিয়ে খেলুক, কিন্তু খেলার সময় বেঁধে দিন, তৈরি করুন কিছু নিয়ম। ‘‘দিনে আধঘণ্টার বেশি মোবাইল ব্যবহার করতে দেবেন না। ঘরে লোকজন থাকলে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করুন। সপ্তাহে একদিন মল-এর বদলে মাঠে নিয়ে যান। ধাঁধাঁ সমাধান, দাবা বা ওয়ার্ড মেকিং বা ওই ধরনের কোনও ইন্টারেস্টিং গেম বাচ্চার সঙ্গে খেলুন। এমন কোনও কাজদিন, যেটা মনোযোগ দিয়ে কাগজ–পেনসিল নিয়ে করবে। দেখবেন এসব অভ্যেস হয়ে যাবে,’’ বললেন ডাক্তার হালদার। এত কিছুর পরও আপনার সন্তানের জেদ বহাল থাকলে, সেই জেদের কাছে হার মানবেন না। নিয়ম কড়া করুন, এতে যদি সে কাঁদে তো কাঁদতে দিন। যদি না খায়, তা হলেও দেবেন না। খাওয়া-ঘুমোনো এগুলো যে স্বাভাবিক কাজ, সেটা তাকে বুঝতে দিন। এই সমস্যাগুলো সাময়িক। তাই এ ব্যাপারে বাবা-মাকে একটু কড়া হতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mobile Phone Children
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE