Advertisement
E-Paper

ভ্রুপল্লবে ডাক দিলে...

মুখের আদলের সঙ্গে মিলিয়ে কেমন শেপের আইব্রো আপনাকে করে তুলবে অপরূপা?মুখের আদলের সঙ্গে মিলিয়ে কেমন শেপের আইব্রো আপনাকে করে তুলবে অপরূপা?

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০০:৫৬

সব মুখে যেমন সব রকম হেয়ার কাট মানায় না, আইব্রো-ও কিন্তু তেমনই। আপনার মুখে কেমন ভুরু মানাবে তা নির্ভর করছে মুখের আদলের উপর। অর্থাৎ মুখের আকৃতি গোল, চৌকো না লম্বা, সেই অনুযায়ী বদলে যাবে ভুরুর আকারও।

কোন মুখে কেমন ভুরু?

সাধারণ ভাবে মুখের আদল ছ’ ধরনের হয়। লম্বা, গোল, চৌকো, হার্ট শেপড বা পানপাতার মতো, রম্বস বা ডায়মন্ড শেপড আর ডিমের মতো। এ বার আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে ভাল করে দেখুন আপনার মুখের গড়ন ঠিক কোনটা। আর সেই অনুযায়ী আকার দিন ভুরুকেও।

লম্বা: মুখ লম্বাটে হলে ভুরুর আকার এমন হবে, যাতে মুখ একটু গোলগাল দেখায়। সে ক্ষেত্রে ভুরু যত কম তির্যক হয়, ততই ভাল। এমন মুখে সোজা এবং একটু নীচের দিকে ঝোলা ভুরু বেশ মানায়। চট করে লম্বা ভাবটা নজরে পড়ে না।

গোল: মুখের আদল যদি গোল হয় তবে গোলাকৃতি ভুরু নৈব নৈব চ। বরং বেশ আর্চ করা ভুরুতে আপনাকে ব্যক্তিত্বময়ী লাগবে।

ডিম্বাকার: এমন মুখ যাঁদের, তাঁরা ভাগ্যবান। সত্যি কথা বলতে এই ধরনের মুখে সব রকমের ভুরুই মানিয়ে যায়। তাই একটু-আধটু এক্সপেরিমেন্ট করতে চাইলে ক্ষতি কী? ফেমিনিন লুকের জন্য ভুরুতে অল্প আর্চ রাখতে পারেন। আবার ড্রামাটিক লুক দিতে ভুরুতে গভীর আর্চ তুলতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে মুখের সৌন্দর্য যেন বিগড়ে না যায়।

চৌকো: মুখ চৌকো হলে চোয়ালের গঠন বেশ স্পষ্ট হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে একটু কাঠ কাঠ দেখতে লাগে। মুখে নরম ভাব আনতে গোল করে ভুরু শেপ করুন। আর সেই সঙ্গে মনে রাখবেন, খুব মোটা বা খুব সরু ভুরু কিন্তু আপনাকে মানাবে না।

পানপাতা: হার্ট শেপড বা পানপাতার মতো মুখে থুতনির দিকটা সুঁচলো হয়। তাই ভুরু গোল বা অল্প আর্চযুক্ত হলে দেখতে ভাল লাগে। তবে হার্ট শেপড মুখ যদি ছোট হয়, তবে তীক্ষ্ণ আর্চেও মন্দ লাগে না।

ডায়মন্ড: এমন মুখেও গালের হাড় ও চোয়ালের আকার বেশ স্পষ্ট হয়। তখন ভুরু গোলাকার হলে ন্যাচারাল লুক আসে।

টুকিটাকি টিপ্‌স

যতই সুন্দর হোক চোখ— ভুরু জোড়ায় খুঁত থাকলে সব সাজই মাটি। ব্রো-শেপ করতে সাধারণত প্লাকিং, থ্রেডিং বা প্রয়োজন মতো দুটো পদ্ধতিই ব্যবহার করা হয়। তবে খুব ঘন মোটা ভুরু হলে ওয়াক্সিংও করা যায়। সে ক্ষেত্রে বাড়িতে চেষ্টা না করাই ভাল। সালোঁয় গিয়ে কোনও দক্ষ হাতে সেই ভার তুলে দিন। আর নিজেই নিজের বিউটিশিয়ান হতে চাইলে কয়েকটি টিপ্‌স মাথায় রাখুন।

• স্নানের পর বিশেষ করে গরম জলে স্নানের পর ত্বক নরম থাকে। রোমকূপের গোড়া আলগা হয়। ফলে প্লাকিং-থ্রেডিংয়ে ব্যথা কম লাগে।

• টুইজার ব্যবহার করলে কিছুক্ষণ পর আয়নায় দেখে নিন। আতসকাচ জাতীয় আয়না ব্যবহার করবেন না। ভুরু সরু করে ফেলার সম্ভাবনা রয়েই যায়।

• প্রথমে আইব্রো পেনসিল দিয়ে পছন্দমতো ভুরু এঁকে ফেলুন। এ বার সেই বরাবর টুইজার দিয়ে অবাঞ্ছিত রোম তুলে ফেলুন। ভুল হওয়ার সুযোগই থাকবে না।

• এখন অবশ্য ফ্যাশনে চওড়া ভুরুই ইন। করিনা কপূর, দীপিকা পাড়ুকোন থেকে টলিউডের মিমি চক্রবর্তী বা শুভশ্রী— সেলেব দুনিয়ায় চওড়া ভুরুই লেটেস্ট ট্রেন্ড। এতে লুকটাও ন্যাচারাল থাকে আবার বয়সও খানিকটা কম লাগে। তবে সেটা দেখে ট্রেন্ড ফলো করার আগে দেখে নিন, আপনার ফেস শেপ ওভাল কি না। এ ধরনের মুখের আকৃতিতে ঈষৎ চওড়া ভুরু বেশি ভাল লাগে।

• খুব ঘন ঘন ভুরু প্লাক করলে কিন্তু ভুরুর ঘনত্ব কমে যায়। একবার প্লাক করার পর তা পুরনো শেপে ফিরতে অন্তত মাস দেড়-দুয়েক মতো সময় লাগে। খুব বেশি প্লাকিং ছাড়াও ভুরু বেশি ঘষলেও তার ঘনত্ব কমে। আর ভুরু হালকা হয়ে গেলে কিন্তু বয়সের তুলনায় আপনাকে অধিক বয়স্ক দেখাবে।  চওড়া ভুরু প্লাকিং, থ্রেডিং, ওয়াক্সিং-এ সরু করে নেওয়া যায়। কিন্তু ভুরু পাতলা আর ছোট হলে? তখন মেকআপেই ঢাকতে হয় খুঁত। অনেকেরই আবার নিখুঁত আঁকা ভুরু না-পসন্দ। সে ক্ষেত্রে ন্যাচারাল লুক দিতে চাইলে শুধু ভুরুর নীচের অংশটুকু পরিষ্কার করে নিতে পারেন। হালকা, পাতলা ভুরু যাঁদের, তাঁরা আইব্রো পেন্সিল দিয়ে ভুরু এঁকে ফিলার দিয়ে ভর্তি করে ফেলুন। ফিলার হল রং। জেল, পাউডার, আর স্টিক— তিন ধরনের ফিলার রং বাজারে পাওয়া যায়। শুধু রং বাছার সময় খেয়াল রাখুন, তা যেন চুলের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। কালো কুচকুচে একমাথা চুলের সঙ্গে হালকা বাদামি ভুরু মোটেই দেখতে ভাল লাগবে না। মনে রাখবেন, চুলের চেয়ে এক শেড গাঢ় হবে ভুরুর রং। তবে স্বাভাবিক ভাবে ভুরুর ঘনত্ব বাড়াতে চাইলে, পাঁচ মিনিট হালকা হাতে আইব্রো মাসাজ করুন। তার পর ঘণ্টাখানেক রেখে, ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলুন। অনেকে আবার বলেন, ভুরুর অংশ ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে, অলিভ অয়েল মাসাজ করতে। সারা রাত রেখে ধুয়ে ফেলুন। ভুরুর গ্রোথ ভাল হবে।

সাজ কাল আজ

চোখের উপর, কপালের নীচে নরম কালো ওই রোমের রেখা নিয়ে মেয়েদের আকুলি-বিকুলি তো আজকের নয়। সেই আদ্যিকাল থেকেই সাজে-ফ্যাশনে-বিশ্বাসে ঘুরেফিরে এসেছে ভ্রু-যুগলের নানান রকম। মিশরের রানি নেফারতিতি নাকি চওড়া আর টানা ভুরু পেতে কালো রং মাখতেন। ঘন, কালো, চওড়া ভুরু ছিল তাঁর ক্ষমতার ভাষা। আবার অষ্টম শতকের জাপানে বড় ঘরের মহিলারা ভুরুটাই বেমালুম চেঁছে তুলে দিতেন। বদলে কালি জাতীয় রং দিয়ে কপালে নকল ভুরু আঁকতেন। কারণটা অদ্ভুত! বিশ্বাস ছিল, ভ্রুভঙ্গি থেকে খুব সহজেই মনের ভাব পড়ে ফেলা যায়। তাই বাইরের মানুষ যাতে সহজে সেই আবেগের নাগাল না পায়, তার জন্য এই আঁটসাঁট ব্যবস্থা!

একটা সময় গ্রিসে রোমশ, ঘন, জোড়া ভুরুই ছিল সৌন্দর্যের মাপকাঠি। আবার বিশ শতকের গোড়ার দিকে খুব সরু করে ভুরু রাখার ঝোঁকই ছিল বেশি। সে সময়ের নির্বাক ছবির জনপ্রিয় নায়িকা ক্লারা বোয়ের কথাই মনে করুন। কিংবা সত্তরের দশক কাঁপানো সুন্দরী সোফিয়া লোরেন! পেলব কপালে আঁকা কৃষ্ণপক্ষের চাঁদের মতো ফিনফিনে সরু ভুরু ফ্যাশনে এনেছেন তো এঁরাই।

সঙ্গে থাকুক

তবে এটা জেট-স্পিডের সময়। হাতে সময় কম। ব্যস্ত দিনে তাই সব সময় নিজেকে সালোঁ-রেডি রাখতে সঙ্গে রাখুন পার্সোনাল টুল কিট। যাতে থাকবে আইব্রো ব্রাশ, পেন্সিল, ফিলার রং, টুইজার বা চিমটে, সেফটি রেজার, কাঁচি। বাজারে আইব্রো ট্রিমিং মেশিন পাওয়া যায়। চাইলে নিজের কাছে রাখতে পারেন।

মহুয়া গিরি

মডেল: অনুষ্কা, নয়নিকা,শ্রীময়ী

মেকআপ: নবীন দাস

ছবি: অমিত দাস

Eye Brow facial adhesion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy