Advertisement
E-Paper

স্বরবিস্তারে ঋদ্ধ

সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের রাজা রায় লক্ষ্মীকান্ত চৌধুরী ১৬১০ সালে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সম্মেলনের প্রচলন করেছিলেন। নানা কারণে তা বন্ধ থাকলেও গত বছর থেকে শুরু করেছেন প্রবীণ ও নবীন সদস্যরা। সংগঠনের আহ্বায়ক তন্ময় রায় চৌধুরী ব্যাখ্যা করছিলেন পারিবারিক ইতিহাসের নানা কথা।

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০

সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের রাজা রায় লক্ষ্মীকান্ত চৌধুরী ১৬১০ সালে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সম্মেলনের প্রচলন করেছিলেন। নানা কারণে তা বন্ধ থাকলেও গত বছর থেকে শুরু করেছেন প্রবীণ ও নবীন সদস্যরা। সংগঠনের আহ্বায়ক তন্ময় রায় চৌধুরী ব্যাখ্যা করছিলেন পারিবারিক ইতিহাসের নানা কথা। অনুষ্ঠান উদ্বোধনে ছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সরস্বতী বন্দনা দিয়ে নান্দীমুখ সারলেন তরুণ দুই গায়ক দীপ্তম ও অনির্বাণ।

নীলাঞ্জনা আর শীলাঞ্জনার খেয়াল গায়নের মাধ্যমে শুরু হল প্রথম দিনের আসর। তাঁদের নির্বাচনে ছিল রাগ মারু বেহাগ। পরবর্তী দ্বৈত খেয়াল গাইলেন দীপ্তম, অনির্বাণ। তাঁরা শোনালেন শ্যাম কল্যাণে শিববন্দনা, ঝিঁঝিঁটে দুর্গাবন্দনা ও রাগ কিরওয়ানিতে ভজন। দুজনেরই কণ্ঠ চমৎকার। মধ্য পর্বে সরোদ বাদক দেবজ্যোতি বসু বাজালেন রাগ মালগুঞ্জি। তবলায় উজ্জ্বল ভারতী অত্যন্ত অভিনিবেশ সহকারে বাজিয়েছেন। এ দিনের শেষ শিল্পী ওমকার দাদারকার। গোয়ালিয়র ঘরানার এই শিল্পী গাইলেন রাগ যোগ এবং শুরুতেই জানিয়ে দিলেন তাঁদের ঘরানায় এই রাগে দুই নিষাদ ও দুই গান্ধার ব্যবহারের কথা। স্বরবিস্তার বেশ ঋদ্ধ, স্বরগম ও বুদ্ধিদীপ্ত। দুটি ভৈরবী ভজন দিয়ে তিনি অনুষ্ঠান শেষ করেন।

শেষ দিনে ছিল কত্থক নৃত্যানুষ্ঠান। লখনউ ঘরানার শ্রীলেখা মুখোপাধ্যায়ের ছাত্রী সুদত্তা বেশ প্রতিভাবান। মুদ্রাভঙ্গিমা ও পদসঞ্চার চমৎকার। ঘুঙুরের শব্দের সঙ্গে পাখোয়াজ (কুণাল পাতিল) ও তবলা (চিরঞ্জিত মুখোপাধ্যায়) অসাধারণ।

বিষ্ণুপুর ঘরানার শিল্পী অমিয় রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় এই বয়সেও পুরিয়া ও যোগ রাগে যে খেয়াল দুটি শোনালেন তা এখনও শিক্ষণীয়। এখনও তাঁর স্বরস্থান অসাধারণ। তবলা ও হারমোনিয়ামে তাঁকে সহযোগিতা করেন যথাক্রমে রূপক ভট্টাচার্য ও শুভ্রকান্তি চট্টোপাধ্যায়। সাধারণত আমরা যে ধরনের তবলা লহড়া শুনতে অভ্যস্ত কুমার বসুর বাজানো সে তুলনায় একেবারে অন্যরকম নিজস্ব শৈলীতে। বেনারস ঘরানার এই শিল্পী তবলা পাখোয়াজের এক দুর্দান্ত যুগলবন্দি উপহার দিলেন শ্রোতাদের। সারেঙ্গিতে ছিলেন পঙ্কজ মিশ্র ও পাখোয়াজে কুণাল পাতিল। শুরু হল ত্রিতাল দিয়ে। ভাও অংশে রাধাকৃষ্ণের মান অভিমান অংশটি বোল ও বাজনায় এক কথায় অনবদ্য।

বারীন মজুমদার

তেত্রিশে পা

কলাশ্রী-র নিবেদনে এবং তবলিয়া বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল তেত্রিশ-তম শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। শুরুতেই ছিল রমা মুখোপাধ্যায়ের রবীন্দ্রসঙ্গীত। শৈলেন্দ্রপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের কিছু ছড়া শোনালেন আয়ুধ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌম্যশ্রী কাঁড়ার এবং ঋতম পাল। অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করলেন কাকলি ঘোষ, তাপস রানা ও শিপ্রা সেন। শিপ্রার কণ্ঠে পুরনো দিনের গান ও গজল অন্য মাত্রা এনে দেয়। অনুষ্ঠানে অপর্ণা সিমলাই-এর পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করলেন সংসৃতি সেন। দ্বিতীয় দিনে মধু বর্মন ও গোপাল বর্মনের বাদন শৈলী প্রশংসার দাবি রাখে। শেষ দিনে বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় সমবেত তবলা তরঙ্গ — প্রথমে রূপক, ঝাঁপতাল এবং পরে তিনতালে অংশ নিলেন সুমন কাঁড়ার, জয়দীপ চক্রবর্তী, অমিয় চৌধুরী, ঋতম পাল, তাপস রানা, শিবনাথ মুখোপাধ্যায়।

গানে ও সুরে

সম্প্রতি জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের জন্মবার্ষিকী পালন করল মণীন্দ্র সঙ্গীত তীর্থ অ্যাকাডেমি। ভবানীপুর সঙ্গীত সম্মিলনীতে অংশ নিয়েছিলেন নবীন ও প্রবীণ শিল্পীরা। এ দিনের এই আসরে জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ-এর লেখা কিছু গান পরিবেশন করলেন কৌশিক ভট্টাচার্য।

কৌতুকে ঠাসা তবুও রহস্যময়

ফাঁসিতে হাঁসিও না নাটকে। লিখছেন পিয়ালী দাস

ছবি: কৌশিক সরকার

একজন ফাঁসির আসামিকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে ঠিক কী কী নিয়ম পালন করা হয়? কী ভাবেই বা তার শেষ ইচ্ছে পূরণ করা হয়? তা প্রকাশ্যে আসে না। এবার সেই গোপনীয়তার বেড়াজাল উপেক্ষা করেই, সেই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা গেল ‘ফাঁসিতে হাঁসিও না’ নাটকে। বিমল বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নাটককে এবার হাসি-ব্যঙ্গ-কৌতুকে এবং রহস্যের মোড়কে উপস্থাপন করলেন তরুণ নির্দেশক শান্তনু নাথ। এ নাটকে হাসির খোরাক থাকলেও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবন যন্ত্রণাও ফুটে ওঠে।

সহধর্মিণীকে খুনের দায়ে ফাঁসি হতে চলেছে চটকলকর্মী কমণ্ডলের। ভোর রাতে তাকে স্নান করিয়ে নতুন জামা কাপড় পরিয়ে, শেষ ইচ্ছেমতো পান্তাভাত খাইয়ে, পুরোহিতের মন্ত্র পাঠের পর ফাঁসি দেওয়া হয়। কিন্তু মরেনি কমণ্ডল! এ দিকে আদালতের রায় তো উপেক্ষা করা যায় না। আবার প্রস্তুতি নেওয়া হয় ফাঁসির। আর তাতেই ঘটে যত বিপত্তি। কারণ কমণ্ডল ততক্ষণে স্মৃতিশক্তি বাকশক্তি খুইয়ে বসেছে। অগত্যা ঠিক হয় কমণ্ডলের জীবন কাহিনি নাট্যাভিনয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করে, তার স্মৃতি ফেরানো হবে।
সেই অসাধ্য সাধন করতে গিয়েই ল্যাজে গোবরে অবস্থা হয়— জেলার, ডাক্তার, পুরোহিত
সকলের। এই অংশ থেকেই নাটক রহস্য আর হাস্যরসে ভর করে এগোতে থাকে পরিণতির দিকে। সংলাপের ধার আর টান টান অভিনয়ে এ নাটক ছুঁয়ে যায় দর্শক মন। কমণ্ডল রবীন বিশ্বাস অসামান্য। জেলার শ্যামাশিস পাহাড়ী সত্যিই প্রশংসনীয়। বিশেষভাবে নজর কাড়েন পুরোহিত শুভঙ্কর ঘটক। রাম সিংহ সুকান্ত কর্মকার, সূত্রধর সর্বজিৎ সরকার প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

হেসেছে নীলমণি

বাংলা অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হল ‘আলেখ্য’-র আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটক। শুরুতেই সংস্থার ছোটরা পাঠ করে ‘চিত্ত যেথা’, ‘প্রভাতী’। পরে কাজল সুরের শ্রুতি নাটক ‘পারব পারব পারব’। অংশ নিয়েছিলেন দেবস্মিতা, দেবলীন প্রমুখ। নন্দন সিংহের ‘প্রিয়তমাসু’ এবং মানসী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বিকেল বেলায় মেঘের ভেলায়’ আবৃত্তি দু’টি মন্দ লাগে না। এ দিন ছিল হাসির শ্রুতি নাটক ‘নীলমণি’। পরে কাজল গুপ্ত এবং শাশ্বতী গুহ-র ‘আরশি’তে ষোলটি কবিতার রূপ অনবদ্য প্রয়াস। সব শেষে কাজল ও শাশ্বতী-র দ্বৈত নিবেদনে ছিল মনোজ মিত্রের ‘সাহেব বাগানের সুন্দরী’। সুন্দর অভিনয় ও অভিব্যক্তি প্রশংসার দাবি রাখে।

Functions
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy