Advertisement
E-Paper

পাবনার রমা

অদূরেই নাটোর। তাই কি বনলতা সেনের আশ্চর্য আঘ্রাণ মহানায়িকার জীবনে? বাংলাদেশে সুচিত্রা সেনের কৈশোর খুঁজে বেড়ালেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্যএক সময় যা ছিল ওঁদের বাড়ি কেউ খেয়াল করেনি অ্যাদ্দিন যে, বাঙালির প্রিয় মানবী সুচিত্রা সেন আর প্রিয় মানসী বনলতা সেন পারতপক্ষে পড়শি। একজন পাবনার, অন্যজন নাটোরের। দুই নগরীর মধ্যিখানে দূরত্ব কত?

ছবি: অভিজিৎ দে

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০০:০৫
সুচিত্রা সেনের সব ছবি: ধীরেন দেব

সুচিত্রা সেনের সব ছবি: ধীরেন দেব

এক সময় যা ছিল ওঁদের বাড়ি কেউ খেয়াল করেনি অ্যাদ্দিন যে, বাঙালির প্রিয় মানবী সুচিত্রা সেন আর প্রিয় মানসী বনলতা সেন পারতপক্ষে পড়শি।

একজন পাবনার, অন্যজন নাটোরের।

দুই নগরীর মধ্যিখানে দূরত্ব কত? কত আর, বড়জোর বাইশ-চব্বিশ কিলোমিটার, গাড়িতে লাগেও বিশ-বাইশ মিনিট।

নাটোর উচ্চারণ করলেই তো এসে পড়েন বনলতা। আর সুচিত্রার আদি ও আসল নাম রমা ডেকে আনে ততটা কলকাতা নয়, যতটা তাঁর জন্মভূমি পাবনা।

তবে কী, রমার জন্ম ঠিক পাবনাতেও নয়, পাবনা ও নাটোরের মাঝখানে, মামাবাড়ি সিরাজগঞ্জে। এই তথ্য জোগালেন এই সে দিন কলকাতা ঘুরতে এসে বাংলাদেশ শিল্পকলা ও অ্যাকাডেমির প্রাক্তন অধিকর্তা কামাল লোহানি। যাঁর বাড়ি পাবনায় সুচিত্রার বাড়ির ঠিক পিছনে। বললেন, “আপনি যদি সুচিত্রার বাড়ির পিছন অবধি হেঁটে থাকেন, তবে আমার বাড়িও দেখে ফেলেছেন। তবে ওঁর বাড়ি কিন্তু ও-বাড়িতে নয়, সিরাজগঞ্জে মামাবাড়িতে।”

এই সিরাজগঞ্জ নগর বটে, তবে জায়গাটা মানুষের স্মৃতিতে ভর করে থাকে একটা সাত কিলোমিটার বিস্তীর্ণ বিলের জন্য, স্থানীয় বুলিতে যাকে বলে হাওড়।

এক সময় যা ছিল ওঁদের বাড়ি।

দেখে কে বুঝবে, এ হল হাওড় বা বিল, চেহারাটা নদীর মতো। যার উপর দিয়ে যাতায়াতের পথ হল দীর্ঘাতিদীর্ঘ এক আধুনিক সেতু। কে জানে, লম্বাইতে সাত কিলোমিটারই কি না।

বাংলাদেশের মানুষের বেশ গর্ব সুচিত্রা সেন ও বনলতা সেন ওদের দিকে পড়েছেন, তা বনলতা সেন যতই কবির মানসী হোন না! সেই কবি, জীবনানন্দ দাশও তো ওদের দিকেই পড়েন, বরিশালে।

বাংলাদেশিদের এই গর্বভাবটা এখন মনে হয় যথযথ, কারণটা বলি। ২০১১-য় যখন সুচিত্রা ৮০ বছরে পা দিলেন, তখন কলকাতায় কী দেখা গেল? তিনি অসুস্থ, সংবাদ মাধ্যমের নজর এড়িয়ে তাঁকে রাখা হচ্ছে, তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে নার্সিং হোমে। টেলিভিশন জুড়ে সেই অসুখ-বিসুখের চর্চা।

ঢাকা এবং পাবনায় কিন্তু তখন এক ভিন্ন দৃশ্য। ঢাকায় সুচিত্রার ছায়াছবির পূর্বাপর প্রদর্শনী ও উৎসব। পাবনায় তাঁর ছবি দেখানো ও আলোচনা সভা। এবং এমনকী সরকারি মহল থেকে জোরালো প্রয়াস পাবনায় সুচিত্রার বসতভিটেকে সুচিত্রা সংক্রান্ত এক জাদুঘরে রূপান্তরিত করার। যেমনটি করা গিয়েছে ওপার বাংলার আরেক ভূমিপুত্র জ্যোতি বসুর পৈতৃক ভিটেকে।

সুচিত্রা-জাদুঘর করার চেষ্টা যে কেন মাঝপথে আটকে তা ওই বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছতেই ধরা গেল।

বাড়ির ঠিকানা: পি এন রোড, মহল্লা গোপালপুর ২, ওয়ার্ড নং ২। দেওয়ালে এক পাশে এই ঠিকানা, কিন্তু গেটের মাথা জুড়ে সাইনবোর্ড ইমাম্ গায্যালী ইনস্টিটিউট, পাবনা।

দ্যাখ না দ্যাখ ভিড় জমে গেল পড়শিদের, তাঁদের মধ্যে প্রৌঢ় বুজুর্গ একজন বললেন, “এখানে বাচ্চাদের ইস্কুল চলে, জাদুঘর করা কি ঠিক হবে?”

পাবনায় ওঁর সেই স্কুল।

বললাম, “ধরা যাক এখানে ইস্কুলই রইল, কিন্তু মহানায়িকার নামে। তাতে কি আপত্তি থাকবে আপনাদের?”

হাজার হোক বাড়িটা তো সুচিত্রা, থুড়ি, রমা দাশগুপ্তর পরিবারের। তখন বললেন, “ইমাম গায্যালী একজন পির। তাঁর নাম কি বদলানো যায়?”

কথা না বাড়িয়ে বাড়িটা ঘুরে দেখায় মন দিলাম। দ্বার পেরিয়ে দিব্যি লম্বা-চওড়া উঠোন। উঠোন পেরোলেই আগেকার শান্তিনিকেতনের ঢঙে এ-ধার ও-ধার ঘর, সে-ঘর ডিঙিয়ে ভেতর-ঘর।

শোনা গেল, ডান দিকের ঘরখানি ছিল রমার। যার জানালা দিয়ে রাস্তা দেখা যায়।

প্রতিবেশী মালাদেবী বললেন, “উনি আট বছরের বড় ছেলেন আমার চাইতে। জানলা দিয়ে দ্যাখবার পাইতাম তিনি পড়তে আছেন। বেশি কথার লোক ছেলেন না, সুন্দরী ছেলেন। অর সঙ্গে ম্যাশার মতো বড় হলাম যখন, তখন তো উনি চলেই গেছেন। আর অনেক কতা মনে আছে।”

খুবই অসুস্থ দেখা গেল মালাদেবীকে। জন্মের সেই বাড়ি এখনও আঁকড়ে পড়ে আছেন। চোখের সামনে রমার বাড়ি একটা দ্রষ্টব্য ক্ষেত্র হয়ে উঠতে দেখেছেন। তেমন কেউ সুচিত্রার বাড়ির খোঁজে এলে ওঁর সামনে এসে পড়েন। যেমন পড়েন সেই বুজুর্গ ভদ্রলোক, যিনি একটু আগে ইস্কুল দেখাচ্ছিলেন।

তিনিও বললেন, “ছাওয়ালকালে (শিশুবয়েসে) খুব দ্যাখসি উনারে। দ্যাদার সুন্দরী ছ্যালেন। পড়াশুনাতেও শুনছি ভাল। আসতে যাইতেই তো দ্যাখতাম, কদাটদা হয় নাই। বড় হইয়া শোনলাম সিনামায় নামছেন, নায়িকা হইছেন।”

পাবনা গার্লস হাইস্কুলে রমার সঙ্গে পড়েছেন যে-ফুলরানি চৌধুরী, বিয়ের পরে ফুলরানি কাঞ্জিলাল, তিনি কিন্তু জানিয়েছেন যে ছাত্রী হিসেবে রমা সাধারণ মানের ছিল, “লেখাপড়ায় আহামরি কিছু ছিল না। মোটামুটি রেজাল্ট করে ক্লাসে উঠত এটুকুই।”

তবে এও জানিয়েছেন ফুলরানি যে, রমার গানের গলা বেশ ভাল ছিল। বেশির ভাগ সময় রবীন্দ্রনাথের গান গাইত। ওর প্রিয় দুই রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল, ‘হৃদয় আমার নাচে রে আজিকে...’ এবং ‘হিমের রাতের ওই গগনের...’।

পাবনা গার্লস হাইস্কুলে পাঁচ বছরের রমার সঙ্গে পড়েছেন ফুলরানি। একটা সরু রাস্তা দিয়ে একটু ঢুকেই পাওয়া গিয়েছিল সুচিত্রা সেনের সেই ইস্কুল। রমা দাশগুপ্তর আমলে কেমন ছিল জানা নেই। তবে এখন এক গোলাপি রঙের পেল্লাই চারতলা ইমারত।

ওই পাবনার জীবন থেকেই কি সুচিত্রা স্রেফ নিজের স্টাইলে জীবনযাপন করে গেছেন?

ফুলরানি বলেছেন যে, “বিয়ের দিন রমাকে খুব সুন্দর লাগছিল, যদিও আচারমতো বিয়ের অনুষ্ঠানে মাথায় ঘোমটা দেয়নি।”

পরে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ দেখার সময় শেষের ওই বিয়ের দৃশ্যে রমা দাশগুপ্ত ও দিবানাথ সেনের বিয়ের লগ্নটা মনে পড়েছিল ফুলরানির। সেখানে নায়িকা সুচিত্রার সাজগোজের সঙ্গে ভীষণ মিল বিয়ের দিনের রমার সাজের। ব্যতিক্রম শুধু হয়তো রমার ঘোমটা না দেওয়াটা।

পাবনার রমা থেকে এ ভাবে ধাপে ধাপে কলকাতার সুচিত্রা হয়ে ওঠার খুব নির্ভরযোগ্য বৃত্তান্ত গড়া যাবে কি না জানি না। কিন্তু এ কথা নিশ্চিত, নায়িকা সুচিত্রার জীবন থেকে পাবনার রমার সরে যাওয়ার ইতিহাস বড় বেদনার মতো বাঙালি মনে বাজবে বহু দিন।

খুব মনে হল সেটা ঢাকার বন্দর সদরঘাটে দাঁড়িয়ে। এক দল মানুষ দেখা করতে চলে এলেন জাহাজে চড়ার সিঁড়ি অবধি। তাঁরা সুচিত্রার শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়, ঢাকায় নিবাস। সেই বাড়ি ও সেই সব স্মৃতি ঘুরিয়ে দেখাতে চান। তখনই খেয়াল হল আদিনাথ সেনদেরও তো জমিদারি ছিল পূর্ববঙ্গে।

একজন বললেন, “সুচিত্রা-দিবানাথের বিয়ের ছবিও আছে আমাদের কাছে।”

কিন্তু বিধি বাম, স্থলপথে যাত্রা করতে হবে পাবনা, রমা দাশগুপ্তের বাড়ি, ইস্কুল, পাড়া ও নগর দেখার জন্য। কথা দিলাম ফিরে আসব শিগগিরই এবং অতিথি হব ওই বাড়িতেই।

সে ফেরা হল না, তত দিনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জুড়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন, যুদ্ধ-যুদ্ধ ভাব। আরও দুঃখের এটাই যে রমা দাশগুপ্তের পাবনা, সিরাজগঞ্জ আর জীবনানন্দের বরিশালেই ঝঞ্ঝাট সব চেয়ে বেশি।

পাবনার ঘাটের পাশ বেয়ে গিয়ে, বাজার ঘুরে, বার কয়েক সিরাজগঞ্জের হাওড় পার করে, নাটোরের রাজবাড়ির আশপাশ, অন্দরমহল ঘুরে মনের মধ্যে বারবার এসে পড়েছেন দুই অধরা মাধুরী বনলতা সেন ও সুচিত্রা সেন। বিস্তীর্ণ বিলের উপর দিয়ে যেতে-আসতে কেবলই মনে হয়েছে এই সেতু সম্পর্কবন্ধন করছে সুচিত্রা ও বনলতার মধ্যে।

একেক বারে চমকে উঠে ভেবেছি বনলতা সেনের সঙ্গে সুচিত্রা সেনকে মিলিয়ে বড্ড বাড়াবাড়ি করে ফেলছি না তো? তার পর দ্বিতীয় চমকের সঙ্গে ভেবেছি, সুচিত্রা সেনকে নিয়ে আমাদের কতই তো বাড়াবাড়ি। তার কি অন্ত আছে?

করূণাময় ও ইন্দিরা দাশগুপ্তর কন্যা রমার জন্মের পর নাম হয়েছিল কৃষ্ণা। মেজ মেয়ের এই নামটা হয়েছিল মামাবাড়িতে, যদিও পিতৃগৃহে তাকে ডাকা হত রমা বলেই।

করুণাময় মেয়েকে ইস্কুলে ভর্তি করার সময়ও ওর নাম লিখিয়েছিলেন রমা। কিন্তু কলকাতায় এসে পড়ে রমা সিনেমায় নেমে সুচিত্রা নাম নেওয়ায় ধন্ধে পড়েছিল ওর ইস্কুলের বান্ধবীরা।

ফুলরানি বলছিলেন, ১৯৫৪ সালে সুচিত্রার ‘ওরা থাকে ওধারে’ ছবি ঢাকায় রিলিজ হলে ওঁরা বুঝে উঠতে পারছিলেন না ওঁদের রমাই সুচিত্রা কি না। অথচ চুল থেকে পা অবধি এত মিল যখন...। এই ধোঁয়াশা অচিরে অবশ্য কাটেও।

তবে সুচিত্রা ও বনলতার যে মেলামিলি এত কাল অগোচরেই ছিল তা যেন সহসা প্রতানিত হতে থাকল। প্রতান সাধারণত লতাদির বিস্তার বোঝায়, তাই বনলতা সংসর্গে এই শব্দটাই মনে এল।

সুচিত্রার সঙ্গে মিলের খোঁজে বনলতা নিয়েও একটু তত্ত্বতল্লাশি করা কি যায় না? চেষ্টা করাই যাক না।

জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’ কবিতার বই ১৯৪২-এ প্রকাশ হলেও সঙ্কলনের সবচেয়ে পুরনো লেখা ‘কুড়ি বছর পরে’র জন্মকাল কিন্তু ১৯৩১-এ। অর্থাৎ সুচিত্রা সেনের জন্মের বছরে।

‘বনলতা সেন’ যে কবিতার খাতায় লেখা হয়েছে তা মার্চ, ১৯৩৪ থেকে এপ্রিল, ১৯৩৬-এর মধ্যে কোনও এক সময়কালে। অর্থাৎ মানসী বনলতার জন্ম মানবী সুচিত্রার জন্মের তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে।

লিখতে বড্ড খারাপ লাগছে, মন ভেঙে যাচ্ছে যে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ ছবি দিয়ে সুচিত্রা-উত্তম জুটির প্রকৃত জয়যাত্রা শুরু হল (যদিও তার আগে আরও পাঁচটা ছবি আছে এ জুটির), তার শুভমুক্তির (৩.৯.৫৪) পরদিন (৪.৯.৫৪) সঞ্জয় ভট্টাচার্যকে লেখা তাঁর শেষ চিঠিতে জীবনানন্দ লিখেছেন, “অনেক দিন থেকেই আমার শরীর বেশ অসুস্থ।” সঞ্জয় ভট্টাচার্য লিখেছেন, “মৃত্যুর পূর্বাভাস ছিল সে চিঠিতে।”

এর কিছু দিন পর ১৪ অক্টোবর ট্রামের সামনে পড়লেন কবি এবং ২২ তারিখ প্রয়াত হলেন। তবে ওই বছরই, ১৯৫৪-য়, কবির পছন্দ করা ওঁর ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’-র যে সঙ্কলন প্রকাশ পেল তার ‘বনলতা সেন’ পর্যায়ে কবি রাখলেন প্রথম সংস্করণের একমাত্র ‘বনলতা সেন’ নামক কবিতাটিই।

তবে সুচিত্রা বনলতায় এই সব সাল-তারিখের পড়শিতার চেয়েও অন্য অদ্ভুত নৈকট্যও ভেসে উঠছে ক্রমশ। জীবনানন্দ গবেষক দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৩৩ সালে কবির লেখা এক গল্প থেকে বনলতা সম্পর্কে কিছু তথ্যের উল্লেখ করেছেন।

সে গল্পে বনলতার যে বর্ণনা দিয়েছেন লেখক, তা তাঁর প্রসিদ্ধতম কবিতার বনলতার চেয়ে কিছু কম স্মরণীয় নয়, এবং সে বর্ণনার সঙ্গে আমাদের দেখা সুচিত্রার (যাঁর প্রথম পাতানো নামও কৃষ্ণা) কিছু সাদৃশ্য খুঁজলে কবির ‘রূপসী বাংলা’ আশা করি অশুদ্ধ হবে না।

তার রূপ ছিল, জীবনানন্দ লিখেছেন, ‘নক্ষত্র মাখা রাত্রির কালো দিঘির জলে চিতল হরিণীর প্রতিবিম্বের মতো। মিষ্টি ক্লান্ত অশ্রুমাখা চোখ, নগ্ন শীতল নিরাবরণ দু’খানা হাত, ম্লান ঠোঁট...,’ এখানেও পল্লিবালিকা হয়ে উঠেছেন নিঃসময়ের অমরী নায়িকা।

একটু মনে করার চেষ্টা করুন ‘শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য’, ‘হারানো সুর’, ‘সপ্তপদী’, ‘আলো আমার আলো’, ‘উত্তর ফাল্গুনী’-র কিছু দৃশ্য কিংবা ‘সাত পাকে বাঁধা’-য় ইজিচেয়ারে নিরাশার প্রতিমূর্তি হিসেবে এলিয়ে থাকা ওই সুচিত্রা। কোত্থেকে, কী করেই যেন পাবনার সেই একটেরে, অভিমানী রমাই ভেসে ওঠে।

পাবনার ইস্কুলে রমার যে সব বন্ধু মলয়া, রেবা, রেখা ও ফুলরানির মধ্যে এই শেষের জনের স্মৃতিচারণাই আমরা পাচ্ছি।

অন্য এক জন নৃত্যশিল্পী মঞ্জুশ্রী চাকী সরকার, প্রয়াতা। রমা নিজে কোনও স্মৃতিকথা রেখে যাওয়ার চেষ্টাও করেননি।

শেষ তিরিশ-বত্রিশ বছর কক্ষবন্দি থেকে পূর্ব বাংলাকে কতটা হৃদয়ে ধরে রেখেছিলেন সুচিত্রা জানাও যাচ্ছে না। কিন্তু পাবনা, ঢাকা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ বেড়াতে বেড়াতে থেকে থেকেই মনে হল ও-পার বাংলা তার রমাকে ভোলেনি।

সাগরদাঁড়ির মধুসূদন, শিলাইদা-সাজাদপুরের রবীন্দ্রনাথ, বরিশালের জীবনানন্দ, ঢাকা-বারদির জ্যোতি বসু, মশুয়ার পরিবারের সত্যজিৎ, ফরিদপুরের সুনীলের মতো বাংলাদেশের বাঙালির বেশ পায়াভারী পাবনার রমাকে নিয়ে।

সুচিত্রার মতো গোলাপকে যে নামে ডাকেন ওঁরা। অন্য বনলতা।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy