Advertisement
E-Paper

বেঁধেছি আমার স্মরণবিন

গানে ও কথায়। মান্না দে’কে ফিরে পাওয়া মহাজাতি সদনে।

শিখা বসু

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৪ ১৫:৫৩

মঞ্চের পিছনে পর্দা জোড়া তাঁর বিশাল ছবি, ঠোঁট দু’টো একটু ফাঁক, যেন এখনই গান গেয়ে উঠবেন। মঞ্চে তখন গাওয়া হচ্ছে তাঁরই গলার বা সুর দেওয়া গান। তাদের সঙ্গে বুঝি বেজে উঠবে তাঁর গলাও। তিনি মান্না দে। ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা-হিন্দি গানের জাদুদণ্ড ছিল তাঁর হাতে। ছিলই বা বলি কেন, থাকবেও অনেক দিন। প্রয়াত মান্না দের স্মরণে ‘বেঁধেছি আমার স্মরণবিন’ নামে গাঁথা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল মহাজাতি সদনে।

কে না ছিলেন শিল্পী তালিকায়। প্রত্যেকে গেয়েছেন নিজেদের উজাড় করে, ভালবাসায়, শ্রদ্ধায়, স্মরণে। আন্তরিকতায় ফাঁকি ছিল না। অনুষ্ঠানের মুখড়াটি চমৎকার বেঁধে দিলেন রূপঙ্কর। মনে থাকবে ‘কত দূরে আর’। ইন্দ্রাণী সেনের ‘আমি নিরালায় বসে’ গানটি কান্নাঝরা বেদনায় মন খারাপ করে দেয়। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ অবধি শ্রোতাদের মনকে অনুভবের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পেরেছেন সঞ্চালনার কেউ কেউ। দেবাশিস বসু এবং রায়া ভট্টাচার্যের নাম সবচেয়ে আগে আসে। দু’জনকে আলাদা করে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছি না। উপস্থাপনার সঙ্গে সঙ্গে কণ্ঠবৈচিত্র-অসাধারণ। বিশেষ করে রায়ার। এ ছাড়াও ছিলেন চন্দ্রমৌলি বন্দ্যোপাধ্যায়, রণিতা দাস মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

মান্না দে-র তেত্রিশ বছরের সঙ্গী প্রতাপ রায় পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়ানে বাজালেন ‘মানুষ খুন করলে পরে’ আর ‘ক’ফোঁটা চোখের জল’। অসাধারণ। আর পুরো অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে যন্ত্রানুষঙ্গ পরিচালনা করলেন। তাঁর এমনই শ্রদ্ধা। কুমার শানু ‘শোলে’ ছবির গান ধরলেন সৈকত মিত্রকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু মান্না দে’র গান নয় কেন? এমন স্মরণ সন্ধ্যায় কুমার শানুর গাওয়া গান নিয়ে শ্রোতাদের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল গুঞ্জন। এর পরে সৈকত গাইলেন ‘চম্পা চামেলি’। ‘অভিমানে চলে যেও না’তে তাঁর অসাধারণ সরগম-এর বিস্তার যতই না তিনি বলুন এ গান গাইতে ভয় করে। স্বাক্ষর বসু ও অমৃতা চট্টোপাধ্যায়ের ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’ এক কথায় রোম্যান্টিক। সুজয় ভৌমিক, শ্রীকান্ত ভারী দরদি, গভীর অনুভবী। ‘সেই তো আবার কাছে এলে’।

রাত ন’টাতেও শিল্পী তালিকা অফুরান। গাইলেন শম্পা কুণ্ডু, ইন্দ্রনীল সেন, শান্তনু রায়চৌধুরী, অরুন্ধতী হোমচৌধুরী, শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, পরিমল ভট্টাচার্য, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, পল্লব ঘোষ, শোভন, ইমন। হৈমন্তী শুক্লর গানের কথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। গাইলেন ‘ঠিকানা না নিয়ে’, ‘আমার বলার কিছু’। মনোময় ভট্টাচার্যের ‘বাজে গো বীণা’তে তাঁর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য প্রখর হয়ে উঠল। নৃত্যে ছিলেন মায়া ভট্টাচার্য।

শেষ পর্বে বাবুল সুপ্রিয়র একাধিক গান শোনা অবশ্যই এক অভিজ্ঞতা। তাঁর নিবেদনে ছিল ‘এই শহর থেকে’, ‘কফি হাউজের’, ‘আমি কোন পথে যে’র মতো কিছু গান। মধ্য পর্বে এলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শোনালেন মান্না দে-র গানে তাঁর ‘লিপ’ দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিলেন পার্থপ্রতিম সাহা ও ভোলা ভট্টাচার্য।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy