Advertisement
E-Paper

কর রিটার্নের নতুন নিয়ম

প্রস্তাবিত চোদ্দো পাতার বদলে আয়কর রিটার্নের ফর্ম শেষমেশ বপুতে বেশ ছোট। কিন্তু তেমনই কিছু ক্ষেত্রে বদলে গিয়েছে তা জমা দেওয়ার পদ্ধতি আর নিয়ম-কানুন। সেই খবর রেখেছেন তো?প্রস্তাবিত চোদ্দো পাতার বদলে আয়কর রিটার্নের ফর্ম শেষমেশ বপুতে বেশ ছোট। কিন্তু তেমনই কিছু ক্ষেত্রে বদলে গিয়েছে তা জমা দেওয়ার পদ্ধতি আর নিয়ম-কানুন। সেই খবর রেখেছেন তো?

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৫ ০১:০৭

সময়টা এখন ইলিশ, শেষ মরসুমের আম আর আয়কর রিটার্ন দাখিলের। প্রথম দু’টি উপাদেয়। কিন্তু শেষেরটি যেন নিমপাতা। তেতো হলেও খেতে হবে। সমস্যায় পড়তে হতে পারে না-খেলে।

ফর্ম এসেছে

বিস্তর আলোচনা আর টালবাহানার পরে অবশেষে প্রকাশিত হয়েছে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নানা ফর্ম। দেরিতে প্রকাশ হওয়ায় বাড়ানো হয়েছে রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখও। অন্যান্য বার ব্যক্তিগত আয়করদাতাদের রিটার্ন দাখিল করতে হয় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। সে জায়গায় এ বার তাঁদের তা করতে হবে ৩১ অগস্টের মধ্যে।
না-করলে কী হতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা করব আজকের প্রতিবেদনে।

বদল কোথায়?

প্রস্তাবিত ১৪ পাতার জটিল ফর্মের জায়গায় এ বার আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে তুলনামূলক ভাবে সরল ফর্মের মাধ্যমে। দিতে হবে না আগে প্রস্তাবিত অনেক তথ্য (যেমন, বিদেশ ভ্রমণ)। কিন্তু তা বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। সময় থাকতে প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে রিটার্ন দাখিল করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

আগে তথ্য জোগাড়

মনে রাখবেন, এ বার নতুন ফর্মে জানাতে হবে কিছু নতুন তথ্য। যা আগে দিতে হত না। ২০১৫-’১৬ ‘অ্যাসেসমেন্ট’ বছরের জন্য যা যা জানাতে হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

চালু সব ক’টি সেভিংস ও কারেন্ট অ্যাকাউন্টের তথ্য। যে-সমস্ত অ্যাকাউন্টে গত তিন বছরে কোনও লেনদেন হয়নি, সেগুলি সম্পর্কে অবশ্য জানানোর প্রয়োজন নেই।

বাড়তি কর কাটা হলে, তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ফেরত পাঠায় আয়কর বিভাগ। তাই একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলে জানাতে হবে, কোনটিতে আপনি রিফান্ড পেতে চান।

পেয়ে থাকলে জানাতে হবে আধার নম্বর।

উল্লেখ করতে হবে পাসপোর্ট নম্বর। তবে বিদেশে যাওয়ার তথ্য দাখিলের প্রয়োজন নেই। বিস্তর জলঘোলা হওয়ার পরে সেই শর্ত বাতিল করা হয়েছে।

বিদেশে সম্পত্তি কিংবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলে, জানাতে হবে তা-ও।

দু’টি ই-মেল আইডি জানানোর জায়গা রাখা আছে ফর্মে।

বিশদে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট

তিন বছরে কোনও লেনদেন হয়নি, এমন অ্যাকাউন্ট ছাড়া এ বারের রিটার্নে আপনাকে দাখিল করতে হবে অন্য সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য। মোট আয় হিসেব করার সময়ে ধরে নিতে হবে সব ক’টি সেভিংস অ্যাকাউন্টে প্রাপ্ত সুদও। মোট সুদ বছরে ১০,০০০ টাকার বেশি না-হলে, ৮০ টিটিএ ধারা অনুযায়ী তার উপর কোনও কর দিতে হবে না। কিন্তু সুদ দশ হাজারের বেশি হলে, তার উপর কর ধার্য হবে। তাই রিটার্নে প্রত্যেক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে উল্লেখ করতে হবে ব্যাঙ্কের নাম এবং আইএফএসসি কোড।

প্রশ্ন উঠছে, কারও অ্যাকাউন্টে যদি অন্য কারও (যেমন স্বামী, স্ত্রী, সন্তান) টাকা ঢুকে থাকে কিংবা আপনার টাকা যদি অন্য কারও অ্যাকাউন্টে জমা হয়, তবে কার রিটার্নে সেই সব তথ্য দাখিল করা হবে?

এ বিষয়ে প্রথমেই বলি, ঝামেলা এড়ানোর জন্য প্রত্যেক আয়করদাতার নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা উচিত। এবং সব আয় সেই অ্যাকাউন্টে এলেই ভাল হয়।

আয় যদি অন্য কারও অ্যাকাউন্টে জমা হয়, তবে আয়কর আইনের ৬৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী অ্যাসেসিং অফিসার সেই আয়কে আপনার আয়ের সঙ্গে যুক্ত করে (ক্লাবিং) তার উপর কর ধার্য করতে পারেন।

যদি করের দায় এড়াতে আপনার টাকা অন্য কারও (যেমন স্ত্রী) অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করেন এবং সেই টাকা লগ্নি করে তাঁর অ্যাকাউন্টে কোনও আয় হয়, তবে তা যুক্ত করা হতে পারে আপনার আয়ের সঙ্গে।

প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের অ্যাকাউন্টে দান হিসেবে টাকা দেওয়া হলে অবশ্য তার থেকে আয় হওয়া টাকা আপনার আয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হবে না।

যুগ্ম (জয়েন্ট) অ্যাকাউন্টে টাকা রাখা হলে, সেই টাকা যাঁর আয় বাবদ এসেছে, তাঁর রিটার্নে সেই অ্যাকাউন্টের তথ্য উল্লেখ করতে হবে। দু’জনের টাকা একই অ্যাকাউন্টে ঢুকে থাকলে, ব্যাপারটি একটু জটিল হতে পারে।

সুতরাং যে-অ্যাকাউন্টেই ঢুকে থাকুক, নিয়ম হল, আপনার আয় আপনার রিটার্নেই দেখাতে হবে। এবং অবশ্যই এখন থেকে সাবধান হতে হবে যাতে, একের টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে মিশে না-থাকে। আমার পরামর্শ, কোন আয় কোন অ্যাকাউন্টে গেল, তার তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট কাগজ যত্ন করে আয়কর রিটার্ন ফাইলে রাখুন।

চার ফর্ম

আয়ের সূত্র অনুযায়ী আয়কর রিটার্ন দাখিলের ফর্ম আলাদা-আলাদা হতে পারে। যেমন, ব্যক্তিগত আয়করদাতা এবং অবিভক্ত হিন্দু পরিবারের (হিন্দু আনডিভাইডেড ফ্যামিলি বা এইচইউএফ) জন্য চারটি আলাদা ফর্ম প্রকাশিত হয়েছে। এগুলি হল:—

আইটিআর-১ আইটিআর-২

আইটিআর-২এ আইটিআর-৪এস।

কোন ফর্ম কার?

আইটিআর-১ (সহজ): যাঁদের আয়ের সূত্র বেতন অথবা পেনশন, একটি বাড়ি থেকে আয় এবং অন্যান্য সূত্র (যেমন ধরুন, সুদ) থেকে রোজগার ইত্যাদি।

আইটিআর-২: ব্যক্তি এবং অবিভক্ত হিন্দু পরিবার, যাঁদের ব্যবসা অথবা পেশাগত আয় নেই।

আইটিআর-১

আইটিআর-২


সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন


সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন

আইটিআর-২এ

আইটিআর-৪এস


সবিস্তার জানতে ক্লিক করুন

আইটিআর-২এ: ব্যক্তি এবং অবিভক্ত হিন্দু পরিবার, যাঁদের ব্যবসা, পেশাগত আয় এবং মূলধনী লাভ নেই। সেই সঙ্গে নেই বিদেশে কোনও সম্পত্তিও।

আইটিআর-৪এস (সুগম): যাঁদের ব্যবসা থেকে আয় আছে। কিন্তু সেই ব্যবসায় হিসাবের খাতা রাখা হয় আয়কর আইনের ৪৪এএ কিংবা ৪৪এবি ধারা অনুযায়ী।

প্রত্যেক ফর্মের সঙ্গে একটি করে নির্দেশিকা দেওয়া আছে। যা দেখে স্পষ্ট করে বুঝে নেওয়া যাবে কোন ফর্ম কার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ ছাড়া, দেখে নেওয়া যেতে পারে আয়কর রুল ১৯৬২-এর রুল-১২।

যাঁদের বিভিন্ন সূত্র থেকে আয় আছে, তাঁরা প্রয়োজনে নতুন ফর্ম ভর্তি করার আগে আয়কর পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলুন।

ই-ফাইলিং

পুরো কথায় ইলেকট্রনিক ফাইলিং বা সরাসরি নেটে রিটার্ন জমা দেওয়া। এ বার এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে। আয় ৫ লক্ষ টাকার বেশি হলে অথবা কর ফেরতের (রিফান্ড) ব্যাপার থাকলে এবং আইটিআর-৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭-এর ক্ষেত্রে ই-ফাইলিং বাধ্যতামূলক। তবে কারও বয়স ৮০ বছরের বেশি হলে এবং তিনি আইটিআর-১ অথবা ২ ফাইল করলে, তাঁর ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।

আয় ৫ লক্ষ টাকা বা তার নীচে হলে এবং কর ফেরতের (রিফান্ড) ব্যাপার না-থাকলে, ই-ফাইলিং বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু রিফান্ডের বিষয়টি থাকলে, আয় যা-ই হোক, ই-ফাইলিং করতে হবে। প্রস্তাব আছে, রিফান্ডের টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টেই পাঠানো হবে। আগের মতো চেক মারফত আর দেওয়া হবে না।

করদাতার আধার কার্ড থাকলে, ই-ফাইলিংয়ের পরে সেটির পরীক্ষা (ভেরিফিকেশন) মোবাইলে আসা ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ (ওটিপি) ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতেই করা যাবে। সই করা রিটার্ন পরীক্ষার জন্য আর আয়কর দফতরের বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রীয় প্রসেসিং সেলে (সিপিসি) স্পিড পোস্ট মারফত পাঠানোর প্রয়োজন হবে না। ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং, আধার নম্বর, এটিএম এবং ই-মেল মারফত এই সুবিধা নেওয়া যাবে।

আয় পাঁচ লক্ষ টাকা বা তার নীচে হলে এবং কর ফেরতের (রিফান্ড) ব্যাপার না-থাকলে, ই-ফাইলিংয়ের পরে সেটির পরীক্ষা (ভেরিফিকেশন) ই-মেল এবং মোবাইল ব্যবহার করেই করা যাবে। তবে এই সুবিধা শর্তসাপেক্ষ। গ্রাহকের কর জমা বা রিটার্ন নিয়ে প্রশ্ন থাকলে, ভেরিফিকেশনের অনুমতি না-ও দিতে পারে আয়কর দফতর।

সময়ে না-দিলে?

ব্যক্তিগত আয়করদাতারা রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন ৩১ অগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে রিটার্ন ফাইল না-করা হলে, কী হবে? এখানে তা-ও দেখে নেব এক নজরে—

যদি ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে সমস্ত কর মিটিয়ে দেওয়া থাকে, তবে কোনও কারণে অগস্ট মাসের শেষ দিনের মধ্যে রিটার্ন ফাইল না-করতে পারলেও তেমন চিন্তা নেই। কারণ, সে ক্ষেত্রে রিটার্ন ফাইল করতে পারেন ২০১৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে। রিটার্ন ফাইল করার সর্বাধিক সময় ২ বছর। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন ফাইল না-করা হলে, পরে আপনি সংশোধিত (রিভাইজড) রিটার্ন ফাইল করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

৩১ অগস্টের পরে রিটার্ন তৈরির সময়ে যদি দেখা যায়, গত আর্থিক বছরের কিছু কর বকেয়া আছে, তবে দেরির জন্য তার উপর প্রতি মাসে এক শতাংশ সুদ গুনতে হবে।

আগের কর বকেয়া থাকুক বা না-থাকুক, ৩১ মার্চের মধ্যে যদি রিটার্ন দাখিল না-করেন, তা হলে কিন্তু যেচে সমস্যা ডেকে আনছেন। সে ক্ষেত্রে সব কর মেটানো থাকলেও রিটার্ন ফাইল না-করার কারণে ৫,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। কর বকেয়া থাকলে দিতে হবে সুদ এবং জরিমানা। ইচ্ছা করে আয় লুকোনোয় কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে।

সময়ে রিটার্ন দাখিল না-করলে, যদি উৎসে কেটে নেওয়া কোনও কর (টিডিএস) ফেরত পাওয়ার কথা থাকে, তবে তা থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।

রিটার্ন জমা না-করলে, ব্যবসার লোকসান এক বছর থেকে পরের বছরে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না। অর্থাৎ, পরে লাভ হলে, তা থেকে ওই লোকসান বাদ দেওয়া যায় না।

রিটার্ন জমার প্রাপ্তিস্বীকার হাতে থাকলে, বিভিন্ন সরকারি কাজে এবং বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে সুবিধা হয়।

লেগে পড়ুন

সুতরাং সময় নষ্ট না-করে এখনই লেগে পড়ুন। দেখে নেওয়া যাক, কী কী করতে হবে—

সব চালু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর একটি কাগজে লিখুন।

কোথায় কত সুদ পেয়েছেন, পাসবই/ স্টেটমেন্ট থেকে তার হিসেব করুন। মোট সুদ ১০,০০০ টাকার বেশি হলে দেখে নিন তার উপর কর দেওয়া হয়েছে কি না। না-হয়ে থাকলে প্রযোজ্য কর জমা করুন।

দেখে নিন, কোন রিটার্ন ফর্ম আপনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাতে ভর্তি করুন সব তথ্য।

আয় ৫ লক্ষের বেশি হলে বা রিফান্ড পাওয়ার থাকলে, ই-ফাইলিং করতেই হবে। ফলে বিষয়টির সঙ্গে সড়গড় হওয়া ভাল।

শেষ দিনের জন্য বসে না-থেকে আগেভাগে রিটার্ন ফাইল করুন।

সব টিডিএস সার্টিফিকেট জোগাড় করা না হয়ে থাকলে, তা করুন। আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটে ফর্ম-২৬এ থেকে মিলিয়ে নিতে পারেন উৎসমূলে কেটে নেওয়া করের তথ্য।

পাসবই/ ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট থেকে দেখে নিন, অ্যাকাউন্টে দেখানো সব আয় আপনার দেখানো মোট আয়ের মধ্যে দেখানো আছে কি না। ৮০জি ধারায় ডোনেশন দিয়ে থাকলে, দেখুন প্রাপকের প্যান নম্বর দিয়েছেন কি না।

কোনও কোনও ফর্মের সঙ্গে ‘শিডিউল’ ভর্তি করতে হতে পারে। তবে রিটার্নের সঙ্গে কোনও কাগজ জুড়তে হবে না। সব কাগজ আয়কর ফাইলে রেখে দিন। প্রয়োজনে পরে দেখাতে হতে পারে।

লেখক বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ (মতামত ব্যক্তিগত)

জমিই হোক বা সঞ্চয়। আপনার যে কোনও বিষয়-সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের জন্য লিখুন।
ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না। ‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ, আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১। ই-মেল: bishoy@abp.in

amitabha guha sarkar income tax return income tax it return rules it return forms form 16 itr bisoy ashoy abp bisoy ashoy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy