Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Presents

আপনাদের প্রশ্ন

আমার স্বামী গৃহঋণের জন্য আবেদন করতে গিয়ে দেখেন, তাঁর নাম সিবিলের খাতায় রয়েছে। সেখানে ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ আছে। কিন্তু ওই বিবরণে প্যান কার্ডের নম্বর তাঁর হলেও, ঠিকানা অন্য। এই অবস্থায় ব্যাঙ্কেও গৃহঋণ পাচ্ছে না। এই সমস্যা থেকে বেরোনোর পথ কী?

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৫৩
Share: Save:

• আমার স্বামী গৃহঋণের জন্য আবেদন করতে গিয়ে দেখেন, তাঁর নাম সিবিলের খাতায় রয়েছে। সেখানে ক্রেডিট কার্ডের বিবরণ আছে। কিন্তু ওই বিবরণে প্যান কার্ডের নম্বর তাঁর হলেও, ঠিকানা অন্য। এই অবস্থায় ব্যাঙ্কেও গৃহঋণ পাচ্ছে না। এই সমস্যা থেকে বেরোনোর পথ কী?

অসীমা রায়, কলকাতা

আপনাকে প্রথমে সিবিলের কাছ থেকে নিজের ক্রেডিট রিপোর্ট কিনতে হবে। সিবিলের ওয়েবসাইট www.cibil.com থেকেই সরাসরি এই রিপোর্ট কেনার আবেদন করা যায়। রিপোর্ট হাতে পেলে দেখুন, সেখানে কী কী ভুল তথ্য রয়েছে। যেগুলি ভুল, সেগুলি চিহ্নিত করে রাখুন।

সিবিলের ওয়েবসাইটেই গ্রাহকদের অভাব অভিযোগ জমার জন্য আলাদা পেজ রয়েছে। সেখানে নিজের নাম, ঠিকানা, জন্মের তারিখ, রিপোর্ট কন্ট্রোল নম্বর এবং সেই সঙ্গে রিপোর্টে আপনার সম্পর্কে যে সমস্ত তথ্য ভুল দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে অভিযোগের বিবরণ জমা দিন। দেখে নেবেন, প্রতিটি তথ্য যেন ঠিক থাকে। আপনার অভিযোগ পাওয়ার পর সিবিল তা খতিয়ে দেখবে এবং যদি কোনও সমস্যা থাকে, তা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে যাচাই করার জন্য পাঠাবে। তারা সঠিক তথ্য দেওয়ার পর, সিবিলও নিজেদের রিপোর্ট ঠিক করে দেবে।

কিন্তু মনে রাখবেন, সিবিল নিজে থেকে কোনও তথ্য বদলাতে পারে না। এক মাত্র ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের তথ্য পাঠালে তবেই সিবিল তা রিপোর্টে প্রকাশ করতে পারে। ফলে রিপোর্টে বদল হলেও, তা পাঠানোর বিষয়টি নির্ভর করে সেই প্রতিষ্ঠানের উপরই।

(পরামর্শ: সিবিল)

• আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে।

১) কী ভাবে ডলারে লগ্নি করতে হয়? লাভ কখন হয়? টাকার দর বাড়লে ভাল, না কমলে? এর জন্য কি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট দরকার?

২) ব্যাঙ্কের লকারে কোনও ক্ষতি হলে (যেমন, চুরি, আগুন লাগা ইত্যাদি), সেখানে রাখা কাগজপত্র কী ভাবে ফেরত পাব?

৩) এখন তো মিউচুয়াল ফান্ডে কেওয়াইসি লাগে। এটা কোথায় করা যায়? তার জন্য কী কী লাগে?

সৈকত মণ্ডল, বর্ধমান

১) সাধারণ মানুষ ডলার-টাকা ফিউচারে লগ্নি করতে পারেন। ধরুন, আপনি এক্সচেঞ্জের সঙ্গে চুক্তি করে ৫৫ টাকায় ডলার কিনলেন। এর পর চুক্তি শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত যে কোনও দিন যে কোনও সময়, সেই মুহূর্তের দামে ডলার বিক্রি করতে পারেন। ফলে ডলারের দাম বাড়লে (ধরুন ৬০ টাকা হল), আপনার মুনাফা। কিন্তু, চুক্তি শেষ হওয়ার অপেক্ষা করলে এই সুবিধা পাবেন না। কারণ এক বার চুক্তি শেষ হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্ধারিত দামেই তা বেচতে হবে। ধরুন, চুক্তি শেষের দিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ডলারের দর বেঁধে দিল ৫৮ টাকায়। তা হলে ৫৮ টাকাতেই তখন ডলার বিক্রি করতে হবে আপনাকে।

অর্থাৎ টাকার দর বাড়লে আগাম পণ্য লেনদেনের বাজারে আপনার সামনে কম খরচে ডলার কিনে রাখার সুযোগ রয়েছে। আবার টাকার দর কমলে রয়েছে ডলার বিক্রি করে লাভ করার সুবিধা। তবে যে-দামে আপনি ডলার কিনতে চুক্তি করেছেন, তার থেকেও যদি ডলারের দর বেশি পড়ে যায় (ধরুন ৫০ টাকায়), তা হলে আপনার লোকসান হবে।

আবার ধরুন, আপনি চুক্তি করে ৬০ টাকায় ডলার বিক্রি করলেন। ডলারের দাম যদি পরে কমে যায় (ধরুন ৫৫ টাকা), তা হলে ৫৫ টাকাতেই ডলার কিনে বাজার থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার লাভ। কারণ, ৬০ টাকায় বেচা ডলার ৫৫ টাকায় কিনতে পারলেন আপনি। কিন্তু তেমনই ডলার বেড়ে ৬৫ টাকা হলে ওই বেশি দামেই তা কিনতে হবে আপনাকে। আর চুক্তি শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করলে দাম স্থির হবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দরের ভিত্তিতে। আর হ্যাঁ, ডলার-টাকা ফিউচারে লগ্নি করার জন্য ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার দরকার হয় না।

২) আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন, ব্যাঙ্কের লকারের কোনও ক্ষতি হলে সেখানে রাখা কাগজপত্র ফেরত পাওয়া নিয়ে। দেখুন, এ ব্যাপারে আপনাকেই আগে থেকে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রথমত, যা যা রাখছেন লকারে, তার একটি তালিকা নিজের কাছে রাখুন। দ্বিতীয়ত, ওই সব কাগজের একটি করে কপি বাড়িতে বা বাইরে অন্য কোথাও রাখলে ভাল হয়। যাতে হারিয়ে গেলে অথৈ জলে না-পড়েন। তৃতীয়ত, যে সব কাগজপত্র সেখানে রাখা হচ্ছে, সেগুলি হারিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট তথ্য বা অধিকার বা লোকসান প্রমাণ করা যাবে, এমন নথি নিজের কাছে রাখুন। লকার ভাঙা বা সেখান থেকে মূল্যবান সামগ্রী/কাগজপত্র চুরি যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে সামগ্রিক ভাবে নিরাপত্তা রক্ষার দায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক বা বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিরই। ফলে এ রকম কোনও ঘটনা ঘটলে গ্রাহক যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় খামতি থাকাই তাঁর লোকসানের কারণ, তা হলে তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন।

৩) মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে গেলে কেওয়াইসি লাগে। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখুন (আমি ধরে নিচ্ছি এখানে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির কেওয়াইসি-র কথাই বলা হচ্ছে) ক) অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা অর্থাৎ যে সংস্থার কাছ থেকে আপনি ফান্ড কিনবেন, তার কাছেই কেওয়াইসি ফর্ম পাবেন। এ ছাড়া, বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকেও এ ব্যাপারে সাহায্য পেতে পারেন। পাশাপাশি আবার ওই ফর্ম ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোডও করে নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে http://www.amfiindia.com/know-your-customer খুললেই ওই ফর্ম পেয়ে যাবেন।

তবে ফর্ম দিতে

খ) কেওয়াইসি খুলতে ব্যক্তিগত কিছু তথ্য দিতে হবে। যেমন, জন্ম তারিখ, পুরো ঠিকানা ইত্যাদি। ছবি লাগবে। নিজের সই করা প্যান কার্ডের কপি দেওয়া বাধ্যতামূলক।

গ) ঠিকানা-সহ বিভিন্ন প্রদত্ত তথ্যের প্রমাণ হিসেবে কিছু নথিও লাগবে। যেমন, পাসপোর্ট, ভোটার্স আইডি কার্ড, রেশন কার্ড, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ইত্যাদির মধ্যে কোনও একটি।

ঘ) ফর্ম জমার আগে পেছনের অংশে লেখা নির্দেশিকা ভাল করে পড়ে নেবেন। এ ছাড়া, জমা দেওয়ার সময় ‘ইন পার্সন ভেরিফিকেশন’ করাতে হবে। যা তথ্য দিয়েছেন, সেগুলির সত্যতা যাচাই হয়েছে কিনা, প্রমাণ হিসেবে নিজের সই করা নথি জমা দিয়েছেন কি না ইত্যাদি বিচার করতেই এই ব্যবস্থা।

(পরামর্শদাতা: অরিন্দম সাহা, অমিতাভ গুহ সরকার ও নীলাঞ্জন দে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

apnader proshno
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE