ভারতে এমন একটি সম্প্রদায় রয়েছে যারা দীপাবলির দিন আনন্দ নয়, বরং শোকপালন করে। তাদের কাছে দীপাবলি দুঃখের অনুষ্ঠান। এই জনজাতির লোকেরা দীপাবলিতে ঈশ্বরকে নয়, মৃতদের স্মরণ করেন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:২৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে দীপাবলি উৎসবে সেজে ওঠে গোটা দেশ। আলোর উৎসবের ঝলকে কেটে যায় অমানিশা। দীপাবলি একটি অতি প্রাচীন উৎসব। পৌরাণিক কাল থেকেই এই বিশেষ তিথি পালন করা হয়।
০২১৫
দীপাবলি আনন্দের উৎসব। ‘দীপাবলি’ শব্দটির অর্থ ‘প্রদীপের সমষ্টি’। এই দিন হিন্দুরা ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ জ্বালেন। অমঙ্গল দূর করার প্রতীক হিসাবে এই আচার পালন করা হয়। উত্তর ভারতে দীপাবলির সময় নতুন পোশাক পরা এবং প্রিয়জনদের বাড়িতে উপহার পাঠানোর চল রয়েছে।
০৩১৫
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দীপাবলির গুরুত্ব ভিন্ন। উত্তর ভারতীয় হিন্দুদের মতে দীপাবলির দিনেই শ্রীরামচন্দ্র ১৪ বছরের বনবাস কাটিয়ে অযোধ্যা ফেরেন। পরমপ্রিয় রাজাকে ফিরে পেয়ে অযোধ্যাবাসী ঘিয়ের প্রদীপ জ্বেলে নগর সাজিয়ে তোলেন।
০৪১৫
দীপাবলি মানেই বাড়ি জুড়ে আলোর রোশনাই। ঘরবাড়ি আলোয় ভরে ওঠার দিন। রাস্তা, বারান্দা, ছাদ— কোথাও যেন অন্ধকারের জায়গা নেই।
০৫১৫
বছরের এই একটা সময় সমস্ত আঁধার দূরে সরিয়ে রেখে আলোয় উৎসবে মেতে ওঠেন ভারতবাসী। সেই উৎসবের তোড়জোড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই! বাজারেও ভিড় চোখে পড়ার মতো।
০৬১৫
তবে, ভারতে এমন একটি সম্প্রদায় রয়েছে যারা দীপাবলির দিন আনন্দ নয়, বরং শোকপালন করে। তাদের কাছে দীপাবলি দুঃখের অনুষ্ঠান। এই জনজাতির লোকেরা দীপাবলিতে ঈশ্বরকে নয়, মৃতদের স্মরণ করেন।
০৭১৫
কথা হচ্ছে থারু জনজাতির। উত্তরাখণ্ড থেকে বিহার পর্যন্ত ভারতের তরাই অঞ্চলে বাস করেন এই জনজাতির মানুষেরা। নেপালেরও বেশ কিছু অংশে এঁদের দেখতে পাওয়া যায়।
০৮১৫
থারু জনজাতির প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস করেন ভারতে। মনে করা হয়, এই জনজাতির নামকরণ করা হয়েছে রাজস্থানের থর মরুভূমির নামানুসারে। অনেকের দাবি, এঁদের উৎপত্তি রাজস্থানে এবং এঁরা রাজপুতদের বংশধর।
০৯১৫
থারু জনজাতি ভারতের অন্যতম প্রধান জনজাতি। এই জনজাতির বেশ কিছু অনন্য এবং অদ্ভুত রীতি রয়েছে।
১০১৫
এর মধ্যে অন্যতম দীপাবলিতে শোকপালন করা। দীপাবলিতে যখন সারা দেশের মানুষ আলো জ্বালিয়ে উদ্যাপন করেন, তখন এঁরা শোকপালন করেন আলো নিবিয়ে।
১১১৫
অবিশ্বাস্য হলেও তেমনটাই নাকি করেন থারুরা। কিন্তু কেন এমন রীতি? এর নেপথ্যে রয়েছে আশ্চর্যজনক কারণ।
১২১৫
থারু উপজাতির লোকেরা দীপাবলিকে বলেন ‘দিওয়ারি’। এই দিন মৃত প্রিয়জনদের জন্য শোকপালন করেন তাঁরা। স্মরণ করেন পূর্বপুরুষদের।
১৩১৫
শুধু তা-ই নয়, মৃত প্রিয়জন বা পরিবারের সদস্যদের প্রতিমূর্তি তৈরি করে সেগুলি আগুনেও পোড়ান তাঁরা। মূর্তিগুলি পোড়ানোর পর পরিবারের সকলে একসঙ্গে খেতে বসেন। ভোজের আয়োজনও করা হয় কোথাও কোথাও।
১৪১৫
এই অনন্য উদ্যাপন করে পূর্বপুরুষদের সম্মান এবং পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষা করা হয় বলে দাবি থারুদের।
১৫১৫
থারু জনজাতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মহিলারা। রানা, খাতুলিয়া এবং দাগৌরার মতো কিছু বংশে মহিলারাই হন পরিবারের প্রধান। যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তাঁরা।