All you need to know about the ten most bizarre street foods across the world dgtl
Weird Street Food
বিষাক্ত হাঙর থেকে আস্ত পিঁপড়ে, সর্বকালের উন্নত জীবেরা খায় সবই! বিশ্বের উদ্ভট ১০ খাবারে চমকাবেন নিশ্চিত
এ বিশ্বে আমাদের পছন্দের পিৎজ়া, পাস্তার বাইরে নানা বিদেশি খাবার রয়েছে যা খাওয়ার কথা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। আমাদের কাছে সেগুলি ‘অখাদ্য’ হলেও বহু মানুষ সেগুলি চেটেপুটে খান।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৫ ১৪:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১৩০
বিদেশ-বিভুঁইয়ে ঘুরতে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা প্রায় সকলেরই থাকে। কিন্তু সেই খাবার যদি আপনার থালায় নড়েচড়ে ওঠে? অথবা খাবারটি যদি কোনও লার্ভার বমি দিয়ে বানানো হয়! তখন কী করবেন?
০২৩০
এ বিশ্বে আমাদের পছন্দের পিৎজ়া, পাস্তার বাইরে নানা বিদেশি খাবার রয়েছে যা খাওয়ার কথা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। আমাদের কাছে সেগুলি ‘অখাদ্য’ হলেও বহু মানুষ সেগুলি চেটেপুটে খান। কেবল স্থানীয়েরাই নয়, লোকজন ঘুরতে গিয়েও সেই খাবারের স্বাদ আস্বাদন করেন।
০৩৩০
অদ্ভুত খাবারের তালিকায় ১০ নম্বরে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সানাকজি। অক্টোপাসের পা ছোট ছোট করে কেটে সানাকজি বানানো হয়। এটা আবার অদ্ভুত কী ভাবছেন তো? অক্টোপাসের পাগুলি কাটার পর সঙ্গে সঙ্গে সেটিকে খেয়ে নিতে হয়, অর্থাৎ সেটিকে তেলেঝোলে রান্না করে খেতে দেওয়া হয় না।
০৪৩০
জ্যান্ত অক্টোপাসের পাগুলি ছোট ছোট টুকরো করে কাটার পর তাতে তিল তেল ও সাদা তিল ছড়িয়ে পরিবেশন করা হয়। পাগুলিতে তখনও ‘প্রাণ’ থাকে এবং সেগুলি থালার উপর নড়েচড়ে বেড়ায়। তবে খবরদার, সেগুলির নড়নচড়ন থামার অপেক্ষা করবেন না। তা হলে সেই পায়ের ছোট্ট টুকরোয় থাকা সাকসন কাপ দিয়ে সে আপনার ঠোঁট আঁক়ড়ে ধরতে পারে!
০৫৩০
শুনতে ভয়ানক হলেও দক্ষিণ কোরিয়ার লোকজন সেটিকে অত্যন্ত ভালবেসে খেয়ে থাকেন। এমনকি সেখানে ঘুরতে যাওয়া বহু লোকজনও অক্টোপাসের ‘জ্যান্ত’ পা চেখে দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন।
০৬৩০
বিশ্বের উদ্ভট সব খাদ্যের তালিকায় নয় নম্বরে রয়েছে চিনের ফ্রায়েড মিল্ক। আমাদের চেনা দুধকে ভেজে এই উপাদেয় খাবারটি বানানো হয়। স্বাদ বাড়ানোর জন্য উপর থেকে ছড়িয়ে দেওয়া হয় চিনির গুঁড়ো বা মধু।
০৭৩০
গরু বা মোষের দুধকে ময়দা বা কর্নস্টার্চে মিশিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। তার পর সেই মণ্ডটিকে ছোট ছোট আকারে ফুটন্ত তেলের মধ্যে দিয়ে ভাজা হয়। মণ্ডগুলির বাইরের আস্তরণ সোনালি হয়ে এলে সেটিকে তেল থেকে তুলে পরিবেশন করা হয়।
০৮৩০
দুধ ভাজার কথা শুনেই চমকে গেলেন? তবে কেবল দুধই নয়, বহু মানুষের প্রিয় নরম পানীয় কোকা কোলাও ভেজে বিক্রি করা হয় আমেরিকায়। সেই বিখ্যাত ফ্রায়েড কোকই অদ্ভুত খাবারের তালিকার আটে রয়েছে।
০৯৩০
অ্যাবেল গঞ্জালেস জুনিয়র নামের এক ব্যক্তি ২০০৬ সালে টেক্সাসের এক বিশেষ মেলায় এই ফ্রায়েড কোকের দোকান দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই এই খাবারের উৎপত্তি। এর পর থেকে আমেরিকার বাজার ছেয়ে গিয়েছে ফ্রায়েড কোকের দোকানে।
১০৩০
কোকা কোলার সঙ্গে অন্যান্য জিনিস মিশিয়ে প্রথমে একটি মণ্ড তৈরি করা হয়। তার পর সেটিকে গোল গোল আকারে তেলের মধ্যে ভাজা হয়। এর পর গ্লাসের মধ্যে গোল ফ্রায়েড কোকগুলিকে দিয়ে তার উপর থেকে কোকা কোলা আর হুইপড ক্রিম ছড়িয়ে পরিবেশন করা হয়। আমেরিকায় এই খাবারের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া।
১১৩০
টুনা মাছ নামটির সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত। দামি এই মাছের চোখগুলিকে মুখ চালানোর খাবার হিসাবে খেয়ে থাকেন জাপানের লোকেরা। জাপানের এই টুনা মাছের চোখ উদ্ভট খাবারের মধ্যে সাতে রয়েছে।
১২৩০
কথিত রয়েছে, জাপানের টোকুগাওয়া শোগুনেট রাজার সময়কালে টুনা মাছের চোখ খাওয়ার প্রচলন হয়। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত সেটি খাওয়ার চল রয়ে গিয়েছে।
১৩৩০
টুনা মাছের চোখগুলিকে আলাদা করে তার মধ্যে সোয়া সস ও রসুন ছড়িয়ে খাওয়া হয়। কেবল জাপানিরাই নন, জাপানে ঘুরতে যাওয়া অনেক পর্যটকও এই খাবার পছন্দ করেন।
১৪৩০
তালিকার ছয় নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে তুরস্কের কোকোরেক। ভেড়ার অন্ত্র দিয়ে এই খাবারটিকে বানানো হয়। লোহার শিকের মধ্যে ভেড়ার অন্ত্রগুলিকে সারিবদ্ধ ভাবে ঢুকিয়ে কাঠকয়লার উপর রেখে গ্রিল করা হয়।
১৫৩০
সাধারণত পাউরুটির মাঝে দিয়ে স্যান্ডউইচ বানিয়ে কোকোরেক খাওয়া হয়। কিন্তু তুরস্কের কোনও নামীদামি রেস্তরাঁয় এই খাবার পাওয়া যাবে না, সেখানকার রাস্তার ধারের দোকানেই এটি পাওয়া যায়।
১৬৩০
খাবারে পোকা পড়লে সেটি দেখে প্রায় সকলেরই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। কিন্তু এক নির্দিষ্ট পোকার লার্ভা দিয়ে বানানো চিজ়, কাসু মার্জ়ু রয়েছে এই উদ্ভট খাবারের তালিকার পাঁচে। শুনে গা গোলালেও সেখানকার লোকজন কিন্তু হাত চেটে এই চিজ়ের স্বাদ আস্বাদন করেন। বহু পর্যটকও সেটিকে চেখে দেখতে দু’বার ভাবেন না।
১৭৩০
সার্ডিনিয়ান ভাষায় ‘কাসু মার্জ়ু’ কথাটির অর্থ হল পচা চিজ়। ভেড়ার দুধ দিয়ে তৈরি চিজ়কে পচিয়েই এটি বানানো হয়। এক বিশেষ ধরনের মাছি ভেড়ার দুধ দিয়ে বানানো চিজ়ের চাকার মধ্যে গিয়ে ডিম পাড়ে। তার পর সেই ডিম ফুটে লার্ভা বেরোলে তারা সেই চিজ়টিকে খেয়ে ক্রিম চিজ়ের মতো নরম মণ্ডে পরিণত করে। জীবন্ত সেই সকল লার্ভার সঙ্গেই কাসু মার্জ়ু খাওয়া হয়।
১৮৩০
তবে জীবন্ত লার্ভার উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও এটি খেয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েননি। কিন্তু কাসু মার্জ়ুকে বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১৯৩০
বিচিত্র খাদ্যের তালিকার চার নম্বরে রয়েছে পিঁপড়ের ডিম দিয়ে তৈরি ক্যাভিয়ার। বিশেষ এই ক্যাভিয়ারটিও আসল ক্যাভিয়ারের মতোই দামি। কারণ পিঁপড়ের বাসা ভেঙে ডিম বার করে আনা একটি কষ্টসাধ্য কাজ।
২০৩০
পিঁপড়ের ডিম দিয়ে তৈরি সেই ক্যাভিয়ারের নাম হল এসকামোলস। গা ঘিনঘিনে এই খাবারের উৎসস্থল হল মেক্সিকো। লিওমেটোপাম অ্যাপিকুলাটাম নামের এক বিশেষ প্রজাতির পিঁপড়ের ডিম ফুটে বেরোনো লার্ভা দিয়ে এই খাবারটি বানানো হয়।
২১৩০
মেক্সিকোয় এসকামোলসের উল্লেখযোগ্যতা নজরকাড়া। মাখনে হালকা ভেজে নিয়ে নানা রকম মশলা সহযোগে টাকো বা ছোট রুটির মাঝে দিয়ে এটিকে খাওয়া হয়। এসকামোলসের পুষ্টিগুণও এটির অতিরিক্ত দামের নেপথ্যে রয়েছে। এটি থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খনিজ লবণ পাওয়া যায়।
২২৩০
বেড়াতে গিয়ে নানা রকমের নতুন নতুন খাবার খেতে অনেকেই ভালবাসেন। তালিকায় যদি হাঙরের মতো হিংস্র মাছের মাংস খাওয়ার পরিকল্পনা থাকে তা হলে আইসল্যান্ড যেতে পারেন। বিচিত্র খাদ্যের তালিকার তিনে থাকা আইসল্যান্ডের হাকারেল হল সেই হাঙরেরই মাংস।
২৩৩০
আইসল্যান্ডের যেখানে যাবেন, সেখানেই এই ভয়াল প্রাণীর মাংস পাবেন। কারণ হাকারেল হল সেখানকার জাতীয় খাবার। কিন্তু একটি হাঙরকে জল থেকে তুলে, কেটেই টাটকা মাছের ঝোল বানিয়ে আপনাকে খেতে দেওয়া হবে না। আর ভুলেও যদি দেওয়া হয়, তা হলে সেই মাছের ঝোলই আপনার খাওয়া শেষ মাছের ঝোল হতে পারে।
২৪৩০
আইসল্যান্ডে যে হাঙর পাওয়া যায়, সেগুলির মাংস সাধারণত বিষাক্ত হয়। কারণ তাতে অতিরিক্ত পরিমাণে ইউরিয়া থাকে। সেই বিষাক্ত মাংস বহু ধাপ পেরিয়ে আসার পর নির্বিষ হয়। সেটিই হল হাকারেল।
২৫৩০
হাকারেল বানানোর জন্য হাঙরগুলিকে প্রথমে মাটির তলায় বা কোনও কিছুর নীচে চাপা দিয়ে রেখে দেওয়া হয়। এতে তার শরীরে অবস্থিত বিষাক্ত সকল পদার্থ নিঃসৃত হয়ে যায়। এর পর হাঙরটিকে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়। মাংসের টুকরোগুলিকে বহু দিন দড়িতে ঝুলিয়ে রেখে শোকানোর পর সেটি খাওয়া হয়।
২৬৩০
উদ্ভট খাবারের তালিকার দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছে আরও এক ‘বিষাক্ত’ খাবার, জাপানের ফুগু। বিষাক্ত পাফার মাছ দিয়ে এই পদটিকে বানানো হয়।
২৭৩০
যে কেউ বাজার থেকে পাফার মাছ কিনে এনে এই খাবার বানাতে পারবেন না। অভিজ্ঞ রাঁধুনিরাই কেবল ফুগু বানাতে পারেন।
২৮৩০
কলম্বিয়ার হরমিগাস কুলোনাস উদ্ভট খাবারের তালিকার শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে। কলম্বিয়ার লোকেরা পিঁপড়ের ডিম খান না, স্বয়ং পিঁপড়েদেরই তাঁরা চিবিয়ে খেয়ে নেন। আর পিঁপড়ে দিয়ে তৈরি সেই উপাদেয় পদই হরমিগাস কুলোনাস নামে খ্যাত।
২৯৩০
এই পদটি বানাতে আট্টা লেভিগাট্টা নামের প্রজাতির পিঁপড়েদের ব্যবহার করা হয়। প্রথমে পিঁপড়েগুলির পা ও ডানা ছিঁড়ে বাদ দেওয়া হয়। তার পর সেগুলিকে নুনজলে ডুবিয়ে রাখা হয়। এর পর শুকনো খোলায় বা অল্প তেলে ভেজে নিয়ে পিঁপড়েগুলিকে খাওয়া হয়।
৩০৩০
কলম্বিয়ানরা যেমন হরমিগাস কুলোনাস খেতে ভালবাসেন, তেমনই দেশ-বিদেশ থেকে কলম্বিয়ায় ঘুরতে যাওয়া পর্যটকেরাও এই বিচিত্র পদ চেখে দেখার জন্য মুখিয়ে থাকেন। বহু পর্যটকের কাছে পিঁপড়েগুলির স্বাদ খোসাওয়ালা বাদামের মতো ঠেকেছে।