Advertisement
০২ মে ২০২৪
Crying Crystals

চোখ থেকে ঝরে কাচের দানা! ‘স্ফটিককান্না’ দেখে বিভ্রান্ত চিকিৎসকেরাও, নেপথ্যে কোন রহস্য?

২৬ বছরের আর্মেনিয়ান তরুণী শিরোনামে উঠে এসেছেন তাঁর কান্নার জন্য। দাবি, তিনি স্ফটিককান্নার অধিকারী। কাঁদলেই তাঁর চোখ থেকে স্ফটিকস্বচ্ছ কাচের টুকরো ঝরে পড়ে। কান্না তাঁর কাছে যন্ত্রণাদায়ক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ১৭:১৪
Share: Save:
০১ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

চোখের পাতা ফেললেই বিস্ময়! দুই পাতার ফাঁক থেকে বেরিয়ে আসে কাচের টুকরো। কান্নার সময়েও জলের দেখা মেলে না। চোখের জল যেন বদলে গিয়েছে স্ফটিকে।

০২ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

আর্মেনিয়ার ছোট্ট গ্রাম স্প্যান্ডারিয়ান। সেখানেই থাকেন স্যাটেনিক কাজ়ারিয়ান। ২৬ বছরের এই তরুণী শিরোনামে উঠে এসেছেন তাঁর কান্নার জন্য। দাবি, তিনি স্ফটিককান্নার অধিকারী। কাঁদলেই তাঁর চোখ থেকে স্ফটিকস্বচ্ছ কাচের টুকরো ঝরে পড়ে।

০৩ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

কয়েক বছর আগে স্ফটিককান্নার ছবি এবং ভিডিয়ো দেখিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন আর্মেনিয়ান এই তরুণী। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছিল, তিনি এক বার করে চোখের পাতা ফেলছেন, আর চোখের নীচের অংশ থেকে একটি করে কাচের টুকরো বেরিয়ে আসছে। এই কাচের টুকরোর উৎস কী, তা ভেবে পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকেরা।

০৪ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

তরুণীর দাবি ছিল, দিনে প্রায় ৫০টি করে কাচের টুকরো তাঁর চোখ থেকে বেরিয়ে আসে। এই স্ফটিককান্নার প্রক্রিয়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তাই তা থেকে মুক্তির আশায় চিকিৎসকদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেরিয়েছেন। তবে সমস্যার সুরাহা হয়নি।

০৫ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

চিকিৎসকদের কাছে তরুণী জানান, তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে এক দিন খেলতে খেলতে ঘরে রাখা কাচের ফুলদানি ভেঙে ফেলেছিল। তখন তাঁর চোখে কিছু কাচের টুকরো ঢুকে গিয়েছিল। তার পর থেকেই নাকি কাঁদলে তরুণীর চোখ থেকে কাচ বেরিয়ে আসে।

০৬ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

তরুণী এবং তাঁর পরিবারের দাবি শুনে চিকিৎসকেরা বিভ্রান্ত হয়েছেন বার বার। কারণ, চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী স্ফটিককান্না কার্যত অসম্ভব। চোখ থেকে স্ফটিকের মতো শক্ত পদার্থ বেরিয়ে আসার উল্লেখ রয়েছে বটে, তবে সেই জটিল রোগের উপসর্গ মেলে না আর্মেনিয়ান তরুণীর সঙ্গে।

০৭ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

তরুণীর চোখ থেকে বেরিয়ে আসা কাচের টুকরোগুলি গবেষণাগারে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, সেগুলি নেহাত মামুলি কাচের টুকরো। যা কোনও ভাবেই শরীরের ভিতর উৎপন্ন হতে পারে না।

০৮ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

এ ক্ষেত্রে, সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল, তরুণীর চোখ থেকে কাচ বেরিয়ে আসার সময় কোনও রক্তপাত হত না। যা চিকিৎসকদের আরও বেশি বিভ্রান্ত করে। সন্দেহ জন্মায় অনেকের মনেই।

০৯ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

চোখের এই সমস্যা নিয়ে একাধিক চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন তরুণী। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই চিকিৎসকেরা একমত। তরুণী বিরল মুন্‌চৌসেন সিন্ড্রোমের আক্রান্ত। এটি শারীরিক নয়, মানসিক রোগ।

১০ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

চিকিৎসকদের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবে চোখে কাচ ঢুকিয়ে এই রোগের নাটক করেন তরুণী। মুন্‌চৌসেন সিন্ড্রোমের আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত নিজের শরীরে আঘাত করে ভুয়ো রোগের অভিনয় করে পরিজনদের বিব্রত করে থাকেন। এ ভাবে রোগী মূলত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান।

১১ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে সিসটিনোসিস নামের এক রোগের উল্লেখ আছে, স্বীকার করে নিয়েছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। সেই বিরল জিনগত রোগের লক্ষণ অনুযায়ী, চোখের ভিতর স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়ায় স্ফটিক তৈরি সম্ভব। তবে সেই স্ফটিকের আকার হয় অনেক ছোট এবং তা বেরিয়ে আসার সময় চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

১২ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

শুধু তাই নয়, স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়ায় স্ফটিক তৈরিতে অনেক মাস সময় লেগে যায় বলে জানান বিশেষজ্ঞেরা। দিনে ৫০টি কাচের টুকরো চোখ থেকে বেরিয়ে আসা অসম্ভব।

১৩ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

ওষুধের মাধ্যমে সিসটিনোসিস রোগের চিকিৎসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। তবে আর্মেনিয়ান তরুণীকে যত বার সেই ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তিনি জানিয়েছেন, ওষুধ খেয়ে তাঁর পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

১৪ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

আর্মেনিয়ান তরুণী যে মিথ্যা কথা বলে চিকিৎসকদের বিভ্রান্ত করছেন, তা আরও স্পষ্ট হয় তাঁর বয়ানের অসঙ্গতিতে। তিনি কোথাও বলেছেন, ভাঙা ফুলদানির কাচ ছিটকে চোখে ঢোকার পর থেকে স্ফটিককান্নার সূত্রপাত। কোথাও আবার বলেছেন, এক দাঁতের চিকিৎসকের কাছে গিয়ে এই রোগ বাঁধিয়ে এসেছেন তিনি।

১৫ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইভান স্কোয়াবের মতে, কখনও কখনও শরীরে উপযুক্ত পুষ্টিগুণের অভাবে চোখের জল স্ফটিকের আকার নিতে পারে। তবে আর্মেনিয়ান তরুণীর ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি বলে এক প্রকার নিশ্চিত তিনি।

১৬ ১৬
Armenian girl who alleges of crying crystals is suffering from rare disease.

রাশিয়ার চক্ষু বিশারদ তাতিয়ানা শিলোভা জানিয়েছেন, চোখে লবণের পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে প্রদাহজনিত রোগ দেখা দিতে পারে। অশ্রু জমাট বেঁধে সে ক্ষেত্রে স্ফটিকের আকার নিতে পারে। কিন্তু আর্মেনিয়ার তরুণীর ক্ষেত্রে তা-ও হয়নি বলে জানা যায়। কারণ, চোখে অত্যধিক লবণের সমারোহে প্রথমে হৃদ্‌পিণ্ড এবং মস্তিষ্কের সমস্যা দেখা দেওয়ার কথা। তরুণীর তা হয়নি।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE