BRICS countries trying to remove dollar as reserve currency, know the consequences and impact on India dgtl
De-Dollarization
‘ব্রিক্স’-এর রামধাক্কায় ডলারের মাথা থেকে খসে পড়বে ‘রাজমুকুট’? জল্পনার মধ্যে আর্থিক সঙ্কটের আতঙ্কে ভারত
‘ব্রিক্স’-ভুক্ত দেশগুলির প্রস্তাবিত নতুন মুদ্রা বাজারে আসার আগেই চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ডলারের মাথা থেকে ‘রাজার মুকুট’ খসে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ। শেষ পর্যন্ত নতুন মুদ্রা বাজারে এলে কতটা সুবিধা হবে ভারতের?
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫ ০৮:১১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
দুনিয়া জুড়ে শেষ হতে চলেছে ডলারের আধিপত্য? মার্কিন টাকার জায়গা নেবে ‘ব্রিক্স’ মুদ্রা? এই নিয়ে জল্পনা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে আরও একটি প্রশ্ন। শেষ পর্যন্ত এই দৌড়ে ডলার হেরে গেলে কতটা বদলে যাবে বিশ্ব অর্থনীতি? ’ব্রিক্স’-ভুক্ত দেশ হিসাবে তার আদৌ কি কোনও সুফল পাবে ভারত? না কি ফল হবে সম্পূর্ণ উল্টো? এই নিয়ে ইতিমধ্যেই চুলচেরা বিশ্লেষণে মেতেছেন দুঁদে কূটনীতিক থেকে আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
০২২০
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডলারের আধিপত্য শেষ হলে ফের বাড়বে সোনার ব্যবহার। পাশাপাশি, দুনিয়া জুড়ে ক্রিপ্টো মুদ্রার দাপাদাপি দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিজস্ব ডিজিটাল মুদ্রাভান্ডার তৈরিতে মন দেবে বিশ্বের তাবড় শক্তিশালী দেশ। এ ছাড়া পেট্রোপণ্যের দামে বড় বদল আসার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যে সমস্ত রাষ্ট্রের বিদেশি মুদ্রাভান্ডার শুধুমাত্র ডলারে পরিপূর্ণ, রাতারাতি তাদের দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কাকেও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিশ্লেষকদের দল।
০৩২০
বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের ‘রাজা’ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কিন্তু এক দিনে হয়নি। দু’টি বিশ্বযুদ্ধই বদলে দেয় মার্কিন মুদ্রাটির ভাগ্য। আর তাই হঠাৎ করে এর গুরুত্ব হ্রাস করা মোটেই সহজ নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪-১৯১৮ সাল) বেধে যাওয়ার ঠিক এক বছর আগে ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে আর্থিক দিক থেকে দুনিয়ার এক নম্বর দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে আমেরিকা। যদিও তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে ইংরেজদের মুদ্রা পাউন্ডের প্রভাব ছিল সর্বাধিক। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চলত সংশ্লিষ্ট ব্রিটিশ টাকায়।
০৪২০
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২০ শতকের গোড়ার দিকে সোনার দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টাকা ছাপত বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। অর্থাৎ, যার কাছে যতটা ‘হলুদ ধাতু’ রয়েছে, সেই অনুপাতে বাজারে মুদ্রা রাখত সরকার। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সামরিক খরচ অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেলে অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশ এই নিয়ম ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ফলে ফ্রান্স, জার্মানি বা রাশিয়ার মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রের মুদ্রার দামের সূচক হু-হু করে নামতে থাকে। তখনও অবশ্য সোনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পাউন্ড ছাপানোর রাস্তা থেকে সরে আসেনি আটলান্টিকের দ্বীপরাষ্ট্র ব্রিটেন।
০৫২০
গত শতাব্দীর ৩০-এর দশকের মহামন্দার সময়ে প্রথম বার মারাত্মক ভাবে দুর্ভোগের মুখে পড়ে ইংরেজদের অর্থনীতি। ওই সময়ে স্বর্ণমূল্যের সঙ্গে টাকাকে জুড়ে রাখার রাস্তা থেকে সরে আসে ব্রিটেন। এর ফলে গদিচ্যুত হয় বিশ্ব অর্থনীতিতে ‘রাজা’র আসন পাওয়া পাউন্ড। পাশাপাশি, দুনিয়া জুড়ে হঠাৎ করে বাড়তে থাকে ডলারের চাহিদা। সোনার দামের সঙ্গে জুড়ে থাকায় ইউরোপীয় দেশগুলিরও আমেরিকার টাকার উপর ভরসা তখনও অটুট ছিল।
০৬২০
১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে আমেরিকার অর্থনীতিতে আসে জোয়ার। পরবর্তী ছ’বছর জার্মানি-জাপান-ইটালির অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে লড়তে থাকা ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ ৪৪টি দেশের মিত্রবাহিনীকে বিপুল পরিমাণে হাতিয়ার সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র। এই লেনদেনের পুরোটাই হয়েছিল সোনায়। ফলে লড়াই থামার পর দেখা যায় দুনিয়ায় ৭৫ শতাংশ ‘হলুদ ধাতু’ চলে গিয়েছে আমেরিকার দখলে।
০৭২০
১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর দুনিয়ার অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ঠিক রাখতে ৪৪টি দেশের জোট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্রিটেন উড্স চুক্তি সেরে ফেলে। সেখানে আমেরিকান ডলারকে বিশেষ মুদ্রার মর্যাদা দেওয়া হয়। ফলে দুনিয়ার রিজ়ার্ভ মুদ্রা হয়ে যায় ওয়াশিংটনের টাকা। ব্রিটেন উড্স চুক্তি অনুযায়ী, ডলারকে স্বর্ণমূল্যের সঙ্গে জুড়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ঠিক হয় অন্যান্য দেশের মুদ্রা এর সঙ্গে জুড়ে থাকবে। ওই সময়ে এক আউন্স সোনার দাম ছিল ৩৫ ডলার।
০৮২০
বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার এক দশকের মধ্যেই ভিয়েতনামের লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট্ট দেশটির সঙ্গে টানা ২০ বছর লড়েও জিততে পারেনি ‘সুপার পাওয়ার’ দেশটির সেনাবাহিনী। উল্টে সংঘাতের খরচ মেটাতে গিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে কমতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণভান্ডার। তখনই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে ওয়াশিংটন। ১৯৭১ সালের ১৫ অগস্ট স্বর্ণমূল্যের থেকে ডলারকে আলাদা করে দেন তৎকালীন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। ফলে ডলারের বিনিময়ে আমেরিকার থেকে সোনা কেনা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। ইতিহাসবিদেরা এর নাম দেন ‘নিক্সন শক’।
০৯২০
স্বর্ণমূল্যের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের কুর্সি হারানোর ভয় ছিল। কিন্তু, তৎক্ষণাৎ পাল্টা চালে তা আটকে দেয় আমেরিকা। গত শতাব্দীর ৭০-এর দশকে খনিজ তেল উত্তোলনকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক-এর (অর্গানাইজ়েশন অফ পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ়) সঙ্গে একটি সমঝোতা করে যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক হয়, দুনিয়া জুড়ে ‘তরল সোনা’র রফতানি বাণিজ্য চলবে শুধুমাত্র ডলারে। অর্থনীতিবিদেরা এর নামকরণ করেন ‘পেট্রোডলার’।
১০২০
১৯৭৪ সালের ৮ জুন সৌদি আরবের সঙ্গে ৫০ বছরের জন্য এই চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। বিনিময়ে পশ্চিম এশিয়ার ওই উপসাগরীয় দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় আমেরিকা। রিয়াধের দেখাদেখি পরবর্তী কালে ওপেক-ভুক্ত অন্যান্য দেশও ওয়াশিংটনের সঙ্গে একই ধরনের সমঝোতায় রাজি হয়ে যায়। তার পর থেকে খনিজ তেল কেনার জন্য বিশ্ব জুড়ে বজায় রয়েছে ডলারের চাহিদা।
১১২০
আন্তর্জাতিক সমীক্ষক সংস্থাগুলির দাবি, ২০২৩ সাল পর্যন্ত দুনিয়ার ৮০ শতাংশ খনিজ তেলের রফতানি হয়েছে ডলারে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজ়ার্ভের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত উত্তর আমেরিকা মহাদেশের বাণিজ্যিক লেনদেনের ৯৬ শতাংশ, এশিয়ার ৭৪ শতাংশ এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের বাণিজ্যের ৭৯ শতাংশ ডলারের মাধ্যমে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বিশ্ব ব্যাঙ্ক বা আন্তর্জাতিক মুদ্রাভান্ডারের মাধ্যমে দেওয়া ঋণের ৬০ শতাংশ পরিশোধ করতে ব্যবহার হয় ডলার।
১২২০
২০২৪ সালের জুনে ৫০ বছর উত্তীর্ণ হওয়ায় আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে আর ‘পেট্রোডলার’-এর চুক্তিতে আগ্রহ দেখায়নি সৌদি আরব। বিশ্লেষকদের দাবি, ওই সময়ে প্রথম বার ধাক্কা খায় সংশ্লিষ্ট মার্কিন মুদ্রা। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সেনা অভিযান’-এ (পড়ুন স্পেশ্যাল মিলিটারি অপারেশন) নামে রাশিয়া। সঙ্গে সঙ্গে মস্কোর উপরে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্র। গত তিন বছরে এর থেকে মুক্তি পায়নি ক্রেমলিন। ফলে অর্থনীতি বাঁচাতে বিকল্প মুদ্রাব্যবস্থা গড়ে তুলতে গলা ফাটাতে থাকেন পূর্ব ইউরোপের দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
১৩২০
২০০৯ সালে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করতে পাঁচটি দেশ মিলে গড়ে তোলে ‘ব্রিকস’। প্রতিটা রাষ্ট্রের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে তৈরি সংশ্লিষ্ট সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিল ব্রাজ়িল, রাশিয়া, ভারত, চিন ও সাউথ আফ্রিকা। পরবর্তী কালে এতে যোগ দেয় মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। গত বছর কাজ়ান শহরে হওয়া সম্মেলনে প্রথম বার ‘ব্রিকস’-এর নতুন মুদ্রা তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এর পরেই বাড়তে শুরু করে ওয়াশিংটনের রক্তচাপ।
১৪২০
‘ব্রিকস’-ভুক্ত দেশগুলিতে বসবাস করেন বিশ্বের ৪৬ শতাংশ মানুষ। দুনিয়ার ৪০ শতাংশ খনিজ তেলের উৎপাদন করে থাকে এই সংগঠন। পাশাপাশি, বিশ্বের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) দখল রয়েছে ‘ব্রিকস’-ভুক্ত দেশগুলির কাছে। সেই কারণে এই সংস্থার মুদ্রা তৈরি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যেই এই মুদ্রা-যুদ্ধকে বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘ব্রিক্স মুদ্রা আনার চেষ্টা হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক চাপাবে ওয়াশিংটন।’’
১৫২০
তবে ‘ব্রিকস’ মুদ্রা শেষ পর্যন্ত দিনের আলো দেখবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সংগঠনটির অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র ভারতের এ ব্যাপারে প্রবল আপত্তি রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, ‘‘ডলারকে দুর্বল করার কোনও পরিকল্পনা নেই নয়াদিল্লির।’’ যদিও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা জারি রেখেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।
১৬২০
দ্বিতীয়ত, বর্তমানে ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেস’ বা ইউপিআই প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার করছে নয়াদিল্লি। ভারতের বাইরে মোট আটটি দেশে চালু রয়েছে এই প্রযুক্তি। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিম এশিয়ার আমিরশাহি এবং ইউরোপের ফ্রান্স। আগামী দিনে আফ্রিকার দু’টি দেশ ঘানা ও নামিবিয়ায় এই পদ্ধতি ডিজিটাল লেনদেন চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে দেশীয় মুদ্রা শক্তিশালী হচ্ছে বলে মনে করেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
১৭২০
বিশেষজ্ঞদের কথায়, ‘ব্রিকস’ মুদ্রা মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের তিনটি মূল অসুবিধা রয়েছে। প্রথমত, সংগঠনটির অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র হল চিন। উত্তর ও উত্তর-পূর্বের প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে নয়াদিল্লির চলছে সীমান্ত সংঘাত। আগামী দিনে সেটা যে কোনও সময় যুদ্ধে বদলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বেজিঙের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাত বেধে গেলে সমমুদ্রার কারণে বিপাকে পড়তে পারে এ দেশের অর্থনীতি।
১৮২০
দ্বিতীয়ত, ভারতের বিদেশি মুদ্রাভান্ডারের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে আছে ডলার। তৃতীয়ত, রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে নয়াদিল্লির বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি। আমেরিকার ক্ষেত্রে চিত্রটা ঠিক উল্টো। ফলে ডলারের অবমূল্যায়ন হলে বা ‘ব্রিক্স’ মুদ্রা বাজারে এলে আখেরে লাভ হবে বেজিং ও মস্কোর। সেটা বুঝতে পেরেই এর বিরোধিতা করেছে মোদী সরকার।
১৯২০
বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, ‘ব্রিকস’ মুদ্রা চলে এলে হ্রাস পাবে ভারতীয় টাকার আপেক্ষিক মূল্য। এতে আর্থিক দিক থেকে দুর্বল হবে নয়াদিল্লি। বাড়বে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের খরচ। চিনের ইউয়ান, রুশ রুবল এবং আমিরশাহির দিরহামের সঙ্গে ‘ব্রিকস’ মুদ্রা সংযুক্ত থাকবে। ফলে ওই দেশগুলির উপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাবে ভারতের, যা কোনও অবস্থাতেই চায় না কেন্দ্রের মোদী সরকার।
২০২০
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মার্কিন ঋণ এবং মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ডলারের জায়গা অটুট। শেষ পাঁচ বছরে আমেরিকার মুদ্রাটির সূচক ১.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২১ শতকের গোড়ার দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মুদ্রা ইউরো বা চিনের ইউয়ান একে গদিচ্যুত করতে পারবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের জেরে সেটা হয়নি।