Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Indian Combat Drones

‘ঘাতক’-এর ঘায়ে ভবলীলা সাঙ্গ! লড়াকু জেটের সঙ্কট মেটাতে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ তৈরি করল ভারত

অবিলম্বে যুদ্ধবিমানের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা প্রকাশ্যে বলেছেন বায়ুসেনা প্রধান এপি সিংহ। লড়াকু জেটের সেই সঙ্কট মেটাতে পারবে ডিআরডিওর তৈরি ‘ঘাতক’ ড্রোন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৫:৩৬
Share: Save:
০১ ১৮
Indian Combat Drones

যুদ্ধবিমানের সঙ্কটে ভুগছে ভারতীয় বায়ুসেনা। দিন দিন কমছে লড়াকু জেটের সংখ্যা। এই অবস্থায় চিন ও পাকিস্তান একসঙ্গে হামলা চালালে কী করবে নয়াদিল্লি? কী ভাবে সামলাবে জোড়া আক্রমণ? এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসেছে প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ‘ডিফেন্স রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন’ (ডিআরডিও)। তাদের তৈরি বিশেষ ধরনের ‘ঘাতক’ ড্রোন ভুলিয়ে দেবে লড়াকু জেটের অভাব, বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা।

০২ ১৮
Indian Combat Drones

ডিআরডিওর ‘অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’র (এডিএ) হাত ধরে জন্ম হয়েছে ‘ঘাতক’-এর। মূলত মানববিহীন উড়ন্ত বোমারু বিমানের আদলে একে তৈরি করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। শত্রু ঘাঁটিতে ঢুকে জোরালো আক্রমণ শানানো থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক যুদ্ধ— দু’ধরনের লড়াইয়ের দক্ষতা রয়েছে বিনা চালকে আকাশে রাজত্ব করতে চলা উডুক্কু যানটির।

০৩ ১৮
Indian Combat Drones

একটা সময়ে দেশীয় প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমান তৈরির জন্য একটি ইঞ্জিন তৈরি করে ডিআরডিও। ইঞ্জিনটির নাম রাখা হয় ‘কাবেরী’। কিন্তু, তা নিয়ে উন্নত প্রযুক্তির লড়াকু জেট নির্মাণ করা যায়নি। এর পরই পরিকল্পনা বদল করেন ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনটি দিয়েই ‘ঘাতক’-এর প্রাণ সঞ্চার করেছেন তাঁরা। ফলে গতিবেগের দিক থেকে এটি শত্রুর মানববিহীন উড়ুক্কু যানগুলিকে টেক্কা দিতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।

০৪ ১৮
Indian Combat Drones

যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করতে সাধারণত তাপের উৎসের দিকে ছুটে যেতে সক্ষম (হিট সিকিং) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। আমেরিকার তৈরি ‘স্টিংগার’ এর অন্যতম। এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে ‘কাবেরী’ ইঞ্জিনের তাপীয় নিঃসরণ কম রেখেছেন ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষকেরা। ফলে একটি অতিরিক্ত কবচ পেয়েছে ডিআরডিওর ‘ঘাতক’ ড্রোন।

০৫ ১৮
Indian Combat Drones

‘ঘাতক’-এর ক্ষুদ্র সংস্করণের ইতিমধ্যেই পরীক্ষা চালিয়েছেন প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা। সেখানে এখনও পর্যন্ত কলার উঁচু করেই পাশ করেছে এই মানববিহীন উড়ুক্কু যান। ডিআরডিওর দাবি, যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি একসঙ্গে শত্রু ঘাঁটিতে আক্রমণ শানাতে পারবে ‘ঘাতক’। ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা— দু’ধরনের হাতিয়ার বহনের ক্ষমতা রয়েছে এই ড্রোনের। পাশাপাশি, মাঝ আকাশে ডগ ফাইটের সময়ে ভারতীয় লড়াকু জেটগুলির আত্মরক্ষায় একে অনায়াসেই ব্যবহারের সুযোগ পাবেন বায়ুসেনার অফিসারেরা।

০৬ ১৮
Indian Combat Drones

‘ঘাতক’-এর নির্মাণকাজ যথেষ্ট গোপন রেখেছে নয়াদিল্লি। পুরোপুরি ভাবে ড্রোনটিকে বহরে সামিল করার আগে এর আরও কয়েকটি কঠিন পরীক্ষা নেবে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেখানে উৎরোতে পারলেই ফৌজ়ের হয়ে কাজ শুরু করবে এই মানববিহীন উড়ুক্কু যান। তবে একে আরও আধুনিক এবং বিপজ্জনক করে তুলতে বিদেশি সাহায্যে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। ড্রোনটির ব্যাপক উৎপাদনের জন্য বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দিতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

০৭ ১৮
Indian Combat Drones

প্রযুক্তিগত দিক থেকে ‘ঘাতক’-এর ক্ষেত্রে এখনও কিছু কিছু জায়গায় খামতি রয়েছে। সে কথা অবশ্য ইতিমধ্যেই স্বীকার করে নিয়েছে ডিআরডিও। এ দেশের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীদের দাবি, বিদেশি বিশেষ ড্রোন প্রযুক্তিতে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া আমেরিকা বা রাশিয়ার মতো দেশের সরাসরি সাহায্য পেলে অতি অল্প খরচে লড়াকু জেটের স্বল্পতা মেটানোর মতো জায়গায় একে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এ ব্যাপারে প্রাথমিক পর্যায়ের কথাবার্তা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

০৮ ১৮
Indian Combat Drones

পাক-চিনকে একসঙ্গে মোকাবিলার জন্য যুদ্ধবিমানের বহর অন্তত ৪২ স্কোয়াড্রন রাখার কথা কেন্দ্রকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেখানে বর্তমানে এই সংখ্যা নামতে নামতে ৩২ স্কোয়াড্রনে চলে এসেছে। দেশীয় প্রযুক্তিতে অবশ্য ইতিমধ্যেই লড়াকু জেট তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। এর লক্ষ্যমাত্রা বছরে ৩০ ইউনিট করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র।

০৯ ১৮
Indian Combat Drones

ভারতীয় বায়ুসেনার কর্তা-ব্যক্তিরা চাইছেন, লড়াকু জেটের উৎপাদন আরও ১০ ইউনিট বৃদ্ধি করুক সরকার। এর জন্য প্রয়োজনে বেসরকারি সংস্থাকে এই ধরনের প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। বিষয়টিকে চিন্তাভাবনার স্তরে রেখেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। পাশাপাশি, স্টেলথ প্রযুক্তি হামলাকারী ড্রোন তৈরির দিকেও মনোনিবেশ করেছে কেন্দ্র। এটি ভাল উদ্যোগ হিসাবে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

১০ ১৮
Indian Combat Drones

বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগামী দিনে যুদ্ধের রং বদলে দেবে ড্রোন। ফলে মানববিহীন উড়ুক্কু হাতিয়ারগুলি অস্ত্রাগারে সামিল হলে বায়ুসেনার শক্তি যে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ধরনের স্টেলথ প্রযুক্তির একাধিক শ্রেণির ড্রোনের বহুল ব্যবহার শুরু করেছে আমেরিকা, রাশিয়া, চিন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ানভুক্ত দেশগুলি। রাডারে যাতে এই মানববিহীন উড়ুক্কু যানগুলি ধরা না পড়ে, সে কথা মাথায় রেখে এগুলিকে তৈরি করছে তারা।

১১ ১৮
Indian Combat Drones

মার্কিন বায়ুসেনার স্টেলথ ড্রোনের মধ্যে প্রথমেই আসবে ক্র্যাটোস ডিফেন্সের তৈরি ‘এক্সকিউ-৫৮এ ভ্যালকাইরি’। মূলত, এফ-৩৫ লাইটনিং টু এবং এফ-২২ র্যা ফটার লড়াকু জেটের সঙ্গে শত্রুঘাঁটিতে হামলার সময়ে এই মানববিহীন উড়ুক্কু যানটিকে ব্যবহার করেন তাঁরা। নজরদারি, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা— একসঙ্গে তিনটি কাজ করতে পারে আমেরিকার ‘ভ্যালকাইরি’।

১২ ১৮
Indian Combat Drones

এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যৌথ সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং সংস্থাটি তৈরি করেছে ‘এমকিউ-২৮ ঘোস্ট ব্যাট’ নামের ড্রোন। ফরাসি সংস্থা দাসোঁ এই ধরনের মানববিহীন উড়ুক্কু যান নির্মাণের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই ওই ড্রোন ফ্রান্স ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ানের একাধিক দেশ ব্যবহার করবে বলে জানা গিয়েছে।

১৩ ১৮
Indian Combat Drones

যুদ্ধবিমানের মতো ক্ষমতাসম্পন্ন চিনা ড্রোনের নাম ‘জিজ়ে-১১’। পিপল্‌স লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) বায়ুসেনা আবার এর নাম নামকরণ করেছে ‘ধারালো তরোয়াল’ (শার্প সোর্ড)। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও মহড়ায় ড্রোনটির পাশাপাশি ড্রাগনের লড়াকু জেটগুলিকে উড়তে দেখা যায়নি।

১৪ ১৮
Indian Combat Drones

স্টেলথ ড্রোন প্রযুক্তিতে পিছিয়ে নেই রাশিয়াও। মস্কোর বায়ুসেনার হাতে আবার রয়েছে ‘এস-৭০ ওখোটনিক-বি’ নামের একটি মানববিহীন উড়ুক্কু যান। মানববিহীন উড়ুক্কু যানটি সম্পর্কে তেমন কোনও তথ্য এখনও প্রকাশ করেনি ক্রেমলিন। তবে এটিকে ‘এসইউ-৫৭’ লড়াকু জেটের সঙ্গে উড়ে গিয়ে হামলা করার মতো দক্ষতা সম্পন্ন করেছেন পূর্ব ইউরোপের দেশটির প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা।

১৫ ১৮
Indian Combat Drones

গত তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ড্রোন ব্যবহার করেছে রুশ ফৌজ়। রণাঙ্গনে শক্তি প্রদর্শন করতে দেখা গিয়েছে ‘এস-৭০ ওখোটনিক-বি’কেও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মানববিহীন উড়ুক্কু যানটিকে লড়াকু জেটের ককপিটে বসে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আবার অনেক দূরের কমান্ড কন্ট্রোল থেকেও এর সাহায্য শত্রু ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে মস্কোর।

১৬ ১৮
Indian Combat Drones

বিশ্লেষকদের দাবি, ভারতের ‘ঘাতক’ এখনও প্রযুক্তিগত দিক থেকে সেই জায়গা অর্জন করতে পারেনি। তবে এর প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করার সুযোগ রয়েছে। এই অবস্থায় ঘরোয়া প্রযুক্তিতে তৈরি দু’টি যুদ্ধবিমান– তেজস এবং অ্যামকা (অ্যাডভান্স মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট) প্রকল্পে গা ছাড়া মনোভাব থাকলে চলবে না। লড়াকু জেট এবং ড্রোন, দু’তরফেই প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত হতে হবে নয়াদিল্লিকে।

১৭ ১৮
Indian Combat Drones

দেশীয় প্রযুক্তিতে যুদ্ধবিমান তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এর ইঞ্জিন নির্মাণ। শত চেষ্টা করেও সেই কাজে এখনও সাফল্য পাননি এ দেশের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা। ফলে আমেরিকা এবং ফ্রান্স থেকে ওই ইঞ্জিন আমদানি করতে হচ্ছে ‘হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্যাল লিমিটেড’ বা হ্যালকে। ফলে শ্লথ হচ্ছে উৎপাদন প্রক্রিয়া।

১৮ ১৮
Indian Combat Drones

তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল ড্রোন কি আদৌ যুদ্ধবিমানের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে? এ ব্যাপারে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকেরা দ্বিধাবিভক্ত। সেটা না হলেও আগামী দিনের লড়াইয়ে ড্রোন যে বড় ভূমিকা নেবে, তাতে অবশ্য কোনও সন্দেহই নেই।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy