Advertisement
০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
India’s Strike on Pakistan

বদলা নিতে তাড়াহুড়ো নয়, ‘নেকড়ে কান্না’য় বিপদ বাড়বে পাকিস্তানেরই, দিল্লির ‘ধীরে চলো’র প্রশংসায় সেনা

পহেলগাঁও হামলার বদলা নিতে একরকম ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে ভারতীয় সেনা। ফৌজের এই সিদ্ধান্তের ঢালাও প্রশংসা করেছেন সাবেক অফিসার থেকে শুরু করে কূটনীতিকেরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৫ ১৭:২৬
Share: Save:
০১ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর দশ দিন পার। এখনও বদলা নিতে কোনও সামরিক পদক্ষেপ করেনি ভারত। তবে কি পাকিস্তানকে স্রেফ মুখেই হুমকি দিয়ে ক্ষান্ত কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার? ইসলামাবাদের কাছে পরমাণু হাতিয়ার থাকায় ফৌজি অভিযানে ভয় পাচ্ছে নয়াদিল্লি? সময় যত গড়াচ্ছে, ততই আমজনতার মনে চেপে বসছে এই সমস্ত প্রশ্ন।

০২ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

সাধারণ মানুষ, নেটাগরিক বা রাজনৈতিক নেতা— পহেলগাঁওয়ের বদলা নিয়ে যে যতই সুর চড়াক না কেন, ফৌজ ও সরকারের ‘ধীরে চলো’ নীতির প্রশংসা করেছেন সাবেক সেনা অফিসার ও কূটনীতিবিদেরা। এ ব্যাপারে আফগানিস্তান এবং আমেরিকার উদাহরণ টেনেছেন তাঁরা।

০৩ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

এ ব্যাপারে সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে (আগে নাম ছিল টুইটার) একটি তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করেন ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ এস পানাগ। তাঁর কথায়, ‘‘এই মুহূর্তে কোনও তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। ঠিক সময় বুঝে প্রত্যাঘাত শানাবে ভারতীয় ফৌজ। কোথায়, কখন এবং কোন পরিস্থিতিতে হামলা হবে, সেটা আমজনতা ঠিক করে দিতে পারে না।’’

০৪ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল পানাগের যুক্তি, বর্তমান অবস্থায় বদলার নামে পাকিস্তানের সেনা ও সরকারের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে ভালই করেছে নয়াদিল্লি। এর ফলে সীমান্তে সৈন্য এবং হাতিয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে ইসলামাবাদ। রাওয়ালপিন্ডির সেনা অফিসারদের ঘন ঘন মহড়ায় যোগ দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি যে খুব দ্রুত দেউলিয়ার দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানকে ‘আর্থিক মৃত্যু’র দিকে ঠেলে দেবে, তা বলাই বাহুল্য।

০৫ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

দ্বিতীয়ত, ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আবহে আমেরিকা ও চিনের মতো আন্তর্জাতিক শক্তিকে নিজেদের দিকে টানতে চেষ্টার কসুর করছে না ইসলামাবাদ। সেই লক্ষ্যে নিজেরাই যুদ্ধের জিগির তুলে যে কোনও মুহূর্তে ভারত আক্রমণ করবে বলে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফ সরকার। পশ্চিমের প্রতিবেশী দেশটির ‘নেকড়ে কান্না’ আপাতত চালু থাকুক, চাইছেন সাবেক সেনা অফিসার পানাগ।

০৬ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

ভারতীয় সেনার প্রাক্তন অফিসারের কথায়, ‘‘রাওয়ালপিন্ডির ফৌজি কর্তারা ভাবছেন, ভারত আগ্রাসী হয়েছে বললে বিশ্বের তাবড় শক্তি নয়াদিল্লির উপর চাপ তৈরি করবে। বদলা নিতে আমরা এই মুহূর্তে হামলা করলে সেই তত্ত্বে পড়বে সিলমোহর। কিন্তু লম্বা সময় ধরে ‘নেকড়ে কান্না’ কেঁদে গেলে বিরক্ত হয়ে পাকিস্তানকে গুরুত্ব দেওয়া বন্ধ করবে আমেরিকা, ফ্রান্স, রাশিয়া বা চিনের মতো শক্তিশালী দেশ। প্রত্যাঘাতের সেটাই সঠিক সময়।’’

০৭ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

পানাগের যুক্তিকে পুরোপুরি সমর্থন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিডি বক্সী। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর থেকে সীমান্তে হাই অ্যালার্টে রয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তাড়াহুড়ো করে বদলা নিতে গেলে আমাদেরই ক্ষতি হবে। তাই এর জন্য চাই সময়। অভিযানের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিতে কোনও খামতি থাকলে চলবে না।’’

০৮ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

সাবেক সেনা অফিসারদের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রাক্তন কূটনীতিকদের একাংশ। এ ব্যাপারে প্রথমেই তাঁরা টেনেছেন আফগানিস্তান প্রসঙ্গ। ২০২১ সালে হিন্দুকুশের কোলের দেশটি থেকে আমেরিকা সৈন্য প্রত্যাহার করলে দ্বিতীয় বারের জন্য সেখানে ক্ষমতায় ফেরে তালিবান। ফলে দূতাবাস এবং সেখানকার অফিসগুলি বন্ধ করে দ্রুত সেখান থেকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য হন ভারতীয় কূটনীতিকেরা।

০৯ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালিবান নেতৃত্বের হাতে যেতেই পাকিস্তানে উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল। ওই সময় ইসলামাবাদের গুপ্তচর সংস্থা ‘ইন্টার সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স’ বা আইএসআইয়ের পদস্থ কর্তারা কাবুলে ঘন ঘন যাতায়াত করছিলেন। জম্মু-কাশ্মীরকে দখল করতে এ বার তালিবানকে রাওয়ালপিন্ডির সেনাকর্তারা কাজে লাগাবেন বলেও জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে।

১০ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

কিন্তু, সময়ের চাকা ঘুরতেই পুরোপুরি পাল্টে যায় পরিস্থিতি। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে মান্যতা না দিয়েও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে নয়াদিল্লি। ফলে অচিরেই হিন্দুকুশের কোলের দেশটিতে চলা পুরনো প্রকল্পগুলি ভারত চালিয়ে নিয়ে যাক, তা চাইছেন কাবুলের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা। এর মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি নদীবাঁধ। আফগান তালিবান এ দেশে ঢালাও ভিসার সুবিধা পেতে চাইছে বলেও জানা গিয়েছে।

১১ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

অন্য দিকে, ক্ষমতায় আসার কয়েক দিনের মধ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে ‘ডুরান্ড লাইন’ নামের সীমান্ত নিয়ে বিরোধ বেঁধেছে তালিবানের। একে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বলে মানতে নারাজ আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক গোষ্ঠী। ফলে গত সাড়ে তিন বছরে একাধিক বার পাক সেনার সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছেন তালিবান যোদ্ধারা। বন্ধ থেকেছে তোরখাম সীমান্তে দু’দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য।

১২ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

এই আবহে গত বছর আফগান শরণার্থীদের দেশ থেকে বিতাড়নের কথা ঘোষণা করে পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফ সরকার। ইসলামাবাদে এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে তালিবান নেতৃত্ব। পাক সরকারকে এর পরিণাম ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। যদিও তাকে একেবারেই গুরুত্ব দেয়নি শাহবাজ় প্রশাসন।

১৩ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

আফগানিস্তান লাগোয়া পাকিস্তান খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে গত কয়েক বছর ধরেই সক্রিয় রয়েছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। ইসলামাবাদের অভিযোগ, এদের মদত এবং আশ্রয়দাতা কাবুলের তালিবান সরকার। খাইবার-পাখতুনখোয়ায় পাক সেনার বিরুদ্ধে একরকম যুদ্ধই ঘোষণা করেছে টিটিপি। একে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে চলে গিয়েছে।

১৪ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

একই কথা আমেরিকার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দ্বিতীয় বারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। কুর্সিতে বসেই শুল্কযুদ্ধে নেমে পড়েন তিনি। গত ২ এপ্রিল নতুন পারস্পরিক শুল্কনীতির কথা ঘোষণা করেন স্বয়ং ট্রাম্প।

১৫ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পারস্পরিক শুল্কনীতি কার্যকর করতেই দুনিয়া জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। এ ব্যাপারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় চিন। ফলে ড্রাগনভূমির উপর শুল্কের মাত্রা চড়াতে থাকেন তিনি। ভারত তখনও ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছিল।

১৬ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির প্রভাবে প্রাথমিক ভাবে ভারতীয় শেয়ার বাজারে পতন লক্ষ করা গিয়েছিল। কিন্তু, ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামলে ওঠে নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, খুব দ্রুত দুই দেশের মধ্যে সম্পন্ন হবে বাণিজ্য চুক্তি। তখন মার্কিন শুল্কের আঘাত এ দেশের শিল্পপতিদের সে ভাবে সহ্য করতে হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

১৭ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

বিশ্লেষকদের দাবি, ওই সময় সংযম খুইয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে গেলে ফল হত হিতে বিপরীত। সে ক্ষেত্রে আরও বেশি শুল্ক চাপিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তোলার সুযোগ পেতেন তিনি। পাশাপাশি, বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা চলে যেত পুরোপুরি ঠান্ডা ঘরে।

১৮ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

কূটনীতিকদের বড় অংশ তাই মনে করেন, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সঠিক রাস্তাতেই চলছে নয়াদিল্লি। চাপে পড়ে ইসলামাবাদের নেতা-মন্ত্রীরা বার বার পরমাণু হামলার হুমকি দিচ্ছেন। পাশাপাশি, ইজ়রায়েল এবং আমেরিকাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্যও করতে শোনা গিয়েছে তাঁদের। ফলে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলির সমর্থন আদায় ইসলামাবাদের পক্ষে কঠিন হতে পারে।

১৯ ১৯
India’s wait and watch policy before thunderbolt strike on Pakistan after Pahalgam incident

তবে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা যে ভারত নেবে তা নিয়ে সাবেক সেনা অফিসারদের মনে কোনও সন্দেহ নেই। এর দায়িত্ব সম্পূর্ণ ভাবে স্থল-জল এবং বিমানবাহিনীকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রত্যাঘাতের সময় ঠিক করবে তিন ফৌজ। কতটা ভয়ঙ্কর হবে সেই বদলা, তার উত্তর দেবে সময়।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy