Advertisement
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Satish Shah

মেলেনি উপযুক্ত পারিশ্রমিক, শুনতে হয়েছে অপ্রীতিকর মন্তব্য, সতীশের বিরুদ্ধে ছিল ‘র‌্যাগিং’য়ের অভিযোগও

‘ইয়ে জো হ্যায় জ়িন্দেগি’ ধারাবাহিকের সাফল্যের পর বেছে বেছে কাজ করতে শুরু করেছিলেন সতীশ। শোনা যায়, কৌতুকাভিনেতা হিসাবে নির্দিষ্ট ছকে পড়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি নাকি ১৫০ বার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৫৯
Share: Save:
০১ ২১
Satish Shah

পর্দায় অভিনয় করে সকলের মুখে হাসি ফোটাতেন। শনিবার সেই হাসির কারণই হারিয়ে গেল। ৭৪ বছর বয়সে মারা গেলেন জনপ্রিয় কৌতুকাভিনেতা সতীশ শাহ। বলিপাড়া সূত্রে খবর, কিডনির অসুখে মারা গিয়েছেন তিনি।

০২ ২১
Satish Shah

১৯৫১ সালের জুন মাসে মুম্বইয়ে জন্ম সতীশের। গোড়া থেকেই অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়বেন বলে স্থির করেছিলেন তিনি। তাই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করে তিনি মুম্বই ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন পুণেতে।

০৩ ২১
Satish Shah

পুণেতে গিয়ে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ায় অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সত্তরের দশক থেকেই বড়পর্দায় অভিনয় করা শুরু করেছিলেন। হিন্দি ভাষার পাশাপাশি মরাঠী এবং কন্নড় ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি।

০৪ ২১
Satish Shah

তবে পুণের খ্যাতনামী প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করলেও পেশাগত জীবনে বিশেষ লাভ হয়নি সতীশের। তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, নায়কসুলভ চেহারা ছিল না বলে তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হত।

০৫ ২১
Satish Shah

কৌতুকাভিনেতা হিসাবে সতীশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন আশির দশকে। ১৯৮৪ সালে ছোটপর্দায় ‘ইয়ে জো হ্যায় জ়িন্দেগি’ নামে এক হিন্দি ধারাবাহিকের সম্প্রচার শুরু হয়। এই ধারাবাহিকের ৫৫টি পর্বে ৫৫টি আালাদা চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সতীশকে। তার পর কেরিয়ারে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।

০৬ ২১
Satish Shah

একের পর এক ধারাবাহিকের পাশাপাশি হিন্দি ছবিতে অভিনয়েরও প্রস্তাব পেতে শুরু করেছিলেন সতীশ। তবে পারিশ্রমিক নিয়ে বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল তাঁকে। এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার কথাই জানিয়েছিলেন অভিনেতা।

০৭ ২১
Satish Shah

১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জানে ভি দো ইয়ারো’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সতীশ। সেই ছবি নির্মাণে মোট খরচ হয়েছিল ৭-৮ লাখ টাকা। কিন্তু পারিশ্রমিক দেওয়ার সময় নাকি হাত গুটিয়ে ফেলতেন ছবিনির্মাতারা।

০৮ ২১
Satish Shah

এক সাক্ষাৎকারে সতীশ জানিয়েছিলেন যে, ‘জানে ভি দো ইয়ারো’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি এক বারে পারিশ্রমিক পাননি। একাধিক কিস্তিতে সেই অর্থ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। দীর্ঘ দিনের ব্যবধানে ৫০ অথবা ১০০ টাকার চেক সতীশকে লিখে দিতেন ছবিনির্মাতারা। অল্প অল্প করেই নাকি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।

০৯ ২১
Satish Shah

‘ইয়ে জো হ্যায় জ়িন্দেগি’ ধারাবাহিকের সাফল্যের পর বেছে বেছে কাজ করতে শুরু করেছিলেন সতীশ। শোনা যায়, কৌতুকাভিনেতা হিসাবে নির্দিষ্ট ছকে পড়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি নাকি ১৫০ বার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সতীশের মনে হয়েছিল, সেই চরিত্রগুলি একই ধরনের। তাই একপেশে চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি তিনি।

১০ ২১
Satish Shah

মধু শাহ নামে এক পোশাক পরিকল্পককে বিয়ে করেছিলেন সতীশ। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যে তাঁদের দাম্পত্যজীবনে নেমেছিল অন্ধকার। জীবন-মরণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন মধু। অসুস্থতার কারণে হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন তিনি। সেই সময় সতীশের এক অনুরাগী তাঁকে দেখে অপ্রীতিকর মন্তব্য করে বসেছিলেন।

১১ ২১
Satish Shah

সতীশ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, বিয়ের তিন মাস পর খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মধু। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। হাসপাতালের বাইরে বসে অপেক্ষায় করছিলেন সতীশ। সদাহাস্য অভিনেতাকে চিন্তিত দেখে তাঁর দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন সতীশের এক অনুরাগী। সতীশকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কী ব্যাপার? আপনি এমন গম্ভীর হয়ে বসে রয়েছেন! আপনাকে দেখতে ভাল লাগছে না। মজার কোনও কথা বলে ফেলুন তো দেখি।’’ অনুরাগীর এই কথা শুনে রেগে গিয়েছিলেন সতীশ। তাঁর কথায়, ‘'শুনে মনে হচ্ছিল, সেই ব্যক্তিকে মারধর করতে শুরু করি। পরে নিজেকে বোঝাই। তাঁর কথার কোনও উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে চলে যাই আমি।’’ পরে মধু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন।

১২ ২১
Satish Shah

বার বার বিতর্কে জড়িয়ে পড়তেন সতীশ। ২০২২ সালে ৯ অগস্ট ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৮০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন চলছিল দেশ জুড়ে। সেই উপলক্ষে জাতীয় পতাকা মেলে ধরে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে সমাজমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন সতীশ। তা নিয়েই শুরু হয়েছিল মতবিরোধ।

১৩ ২১
Satish Shah

পতাকা হাতে ছবি পোস্ট করে সতীশ লিখেছিলেন, ‘‘এই সেই আদি অকৃত্রিম তেরঙ্গাধ্বজা যা ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় পেয়েছিলেন আমার মা!’’ সেই সময়কালে দেশে এমন পতাকা ছিল কি না তা নিয়ে নেটাগরিকদের অধিকাংশ প্রশ্ন তুলেছিলেন।

১৪ ২১
Satish Shah

ব্রিটিশ শাসকদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন হওয়ার মাসখানেক আগে ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই গণপরিষদ জাতীয় পতাকা গ্রহণ করেছিল। তবে ’৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় যে পতাকাটি দেখা যেত সেই তেরঙ্গার মাঝে অশোকচক্রের বদলে চরকা আঁকা ছিল।

১৫ ২১
Satish Shah

২০২৩ সালে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে গিয়েও নাকি তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন সতীশ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিমান সফরের সময় প্রথম শ্রেণিতেই যাতায়াত করতেন অভিনেতা৷ সতীশকে বিমানবন্দরের প্রথম শ্রেণির আসনে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন কর্মীরা৷ সতীশের কানেও সেই ফিসফাস পৌঁছেছিল। কর্মীরা নাকি বলাবলি করছিলেন, ‘‘সতীশ শাহের মতো অভিনেতা প্রথম শ্রেণির টিকিট কী করে কাটতে পারেন?’’

১৬ ২১
Satish Shah

বিমানের কর্মীদের সেই আচরণের কথা উল্লেখ করে সমাজমাধ্যমে সতীশ লিখেছিলেন, ‘‘এমন প্রশ্ন শুনে আমি একটাই উত্তর দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমরা ভারতীয়। তাই এই খরচ আমরা সহজেই করতে পারি।’’

১৭ ২১
Satish Shah

‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছিলেন সতীশ। কিন্তু সেই ধারাবাহিকে কাজ করার সময় নাকি তাঁর জুনিয়র শিল্পীকে র‌্যাগিং করেছিলেন তিনি। ধারাবাহিকের অভিনেতা রাজেশ কুমার এমনই অভিযোগ তুলেছিলেন সতীশের বিরুদ্ধে।

১৮ ২১
Satish Shah

রাজেশের অভিযোগ, একটি দৃশ্যে তাঁর দীর্ঘ সংলাপ ছিল। কিন্তু কিছুতেই তা মনে রাখতে পারছিলেন না রাজেশ। তা দেখে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন সতীশ। রাগের মাথায় সেটে চিৎকার করে সতীশ নাকি বলেছিলেন, ‘‘রাজেশের যখন সংলাপ মনে পড়বে, তখন আমায় ডাকবেন।’’ এই কথা বলে সেট থেকে চলে গিয়েছিলেন সতীশ। অভিজ্ঞ অভিনেতার কাছে এই ব্যবহার পেয়ে মন ভেঙে গিয়েছিল রাজেশের।

১৯ ২১
Satish Shah

‘হম আপকে হ্যায় কৌন…!’, ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘জু়ড়ওয়া’, ‘হিরো নম্বর ১’, ‘হম সাথ সাথ হ্যায়, ‘কহো না প্যার হ্যায়’, ‘চলতে চলতে’, ‘কাল হো না হো’, ‘ম্যায় হুঁ না’, ‘ভূতনাথ’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন সতীশ। ২০১৪ সালে ‘হমশকল্‌স’ ছবিতে শেষ অভিনয় দেখা গিয়েছিল তাঁর। এর পর আর বড় পর্দায় অভিনয় করতে দেখা যায়নি সতীশকে।

২০ ২১
Satish Shah

২০২০ সালে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন সতীশ। তাঁকে মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তড়িঘড়ি হিন্দুজা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

২১ ২১
Satish Shah

দীর্ঘ দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন সতীশ। কিছু দিন আগে তাঁর অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। শনিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। বলিপাড়া সূত্রে খবর, আপাতত হাসপাতালেই সতীশের দেহ রাখা হবে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে রবিবার।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy