নিজেকে ধোপদুরস্ত দেখাতে ব্লেজার, কোট বা সামার কোটের ব্যবহার তো আকছার করেন। কিন্তু ভেবে দেখেছেন, একমাত্র কোট বা ব্লেজারেই ল্যাপেল থাকে কেন?
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১০:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১০৯
শীত হোক বা গরম, নিজেকে ধোপদুরস্ত দেখাতে ব্লেজার, কোট বা সামার কোটের ব্যবহার তো আকছার করেন। এই ধরনের পোশাকের অন্যতম সৌন্দর্য এর ‘ল্যাপেল’। কোটের বুকের যে অংশ কলারের সঙ্গে একই রেখায় ভাঁজ করা থাকে, তাকেই ফ্যাশন দুনিয়া ‘ল্যাপেল’ নামে ডাকে। কিন্তু ভেবে দেখেছেন, একমাত্র কোট বা ব্লেজারেই ল্যাপেল থাকে কেন?
০২০৯
এর কারণ জানার আগে আসুন দেখে নিই সাধারণত কী কী ধরনের ল্যাপেল থাকে কোট বা ব্লেজারে। মূলত তিন রকমের ল্যাপেল থাকে। নচ, পিক আর শল ল্যাপল। নচ ল্যাপেলই এদের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত। এ ক্ষেত্রে ল্যাপেল ও কলারের মাঝে একটা স্পষ্ট বিভাজন দেখা যায়। ভিক্টোরিয়ান যুগে বিজনেস মিটিংয়ের সময় বা স্পোর্টসম্যানরা এমন কোট পরতেন।
০৩০৯
পিক ল্যাপেলের ক্ষেত্রে কলারের পাশ দিয়ে ল্যাপেলের অংশ খানিক উঁচিয়ে থাকে। শিখরের মতো দেখতে হওয়ায় একে ‘পিক’ ল্যাপেল বলে। অফিসের নানা মিটিং বা কোনও অভিজাত জায়গায় যাওয়ার সময়ে এমন ল্যাপেলের কোটই বেছে নেন বেশির ভাগ মানুষ।
০৪০৯
ভিক্টোরিয়ান স্মোকিং জ্যাকেটে শল ল্যাপেলের প্রথম প্রচলন শুরু হয়। ভিক্টোরিয়ান যুগে ধূমপান করার সময় এমন জ্যাকেট পরতেন অনেকেই। কোনও ডিনার পার্টি বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডার সময় এমন শল ল্যাপেলের জ্যাকেট পরা হয়। এতে আলাদা করে কোনও পিক বা নচ কলার থাকেই না।বুকের অংশের সঙ্গে কলার মিশে থাকে।
০৫০৯
এ তো গেল ল্যাপেলের প্রকারভেদ। কিন্তু এমন ল্যাপেলের উপস্থিতিই বা কেন থাকে কোটে? নচ ল্যাপেলের প্রচলন শুরু হয় আঠারো শতকে। তখন মূলত ব্যবসায়ী ও খেলোয়াড়রা এই ধরনের কোট পরতেন। কোটের কলারে গোলাপ আটকানো পছন্দ করতেন তাঁরা। আর পকেটে থাকত রুমাল। তাই দরকার হত ল্যাপেলে গোলাপ গোঁজার জায়গা। সে ভাবেই বানানো হত কোট।
০৬০৯
তিনটি ভিন্ন কারণে তিন রকমের কোট ব্যবহার করা হত। নচ ল্যাপেল ব্যবসায়িক মিটিংয়ে বা খেলাধূলা সংক্রান্ত কাজে, পিক অফিসের ফর্মাল পোশাকের সঙ্গে ও স্মোকিং জ্যাকেট হালকা কোনও আড্ডার আসরে। তিন রকম কাজে ব্যবহার হত বলেই ল্যাপেল দিয়ে আলাদা করা হত কোটের প্রকারভেদ।
০৭০৯
কোট এমনিতই বেশ মোটা কাপড়ের হয়। তাই যাতে খুব গরম না লাগে সেই বুঝে কলারের অংশ অনেকটা চেরা ও লম্বা করা হত। হাওয়া চলাচলের সুবিধার জন্য কোটের বুকের কাছে বোতাম দেওয়ার বদলে ল্যাপেলের নকশা শুরু করেন দর্জিরা।
০৮০৯
ভিক্টোরিয়ান যুগে কোটের এক দিকে বোতামের সঙ্গে অন্য অংশের কাপড়কে অনেকটা এগিয়ে এনে আটকানো হত। একে ডবলব্রেস্টেড ফ্রক বলে। সেই সময় এই ধরনের কোটে ল্যাপেলকে আভিজাত্যের প্রতীর হিসাবে ধরা হত ও কোটে ল্যাপেল রাখাটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়।
০৯০৯
এক সময় কোটে ল্যাপেল দেওয়াটা ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ হয়ে উঠলেও পরবর্তী সময়ে ল্যাপেলের নকশা ও কায়দায় অনেক বদল এসেছে। আজকাল কোটের সৌন্দর্য বাড়াতেই নানা রকমের ল্যাপেল দিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালান ফ্যাশন ডিজাইনাররা। তবে ল্যাপেলের খাঁজে রাখা পালক বা ফুল আজও পোশাকের মালিকের রুচি ও আভিজাত্যকেই মেলে ধরে।