Advertisement
১১ মে ২০২৪
Serial Killer

Mary Bell: ১১ বছর বয়সেই ‘সিরিয়াল কিলার’! নষ্ট শৈশবের অন্ধকারে এখনও মুখ লুকিয়ে মেরি বেল

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২২ ১৪:৪০
Share: Save:
০১ ২৫
১৯৬৮ সালের ২৪ মে। মার্টিন ব্রাউন নামে এক চার বছরের শিশুর দেহ উদ্ধার হয় ইংল্যান্ডের স্কটউডে। একটি পরিত্যক্ত বাড়ির নীচ থেকে শিশুর দেহটি উদ্ধার হয়।

১৯৬৮ সালের ২৪ মে। মার্টিন ব্রাউন নামে এক চার বছরের শিশুর দেহ উদ্ধার হয় ইংল্যান্ডের স্কটউডে। একটি পরিত্যক্ত বাড়ির নীচ থেকে শিশুর দেহটি উদ্ধার হয়।

০২ ২৫
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান ছাদ থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছিল শিশুটির। ফলে তদন্ত আর এগিয়ে নিয়ে যায়নি পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান ছাদ থেকে পড়েই মৃত্যু হয়েছিল শিশুটির। ফলে তদন্ত আর এগিয়ে নিয়ে যায়নি পুলিশ।

০৩ ২৫
এর ঠিক কয়েক সপ্তাহ পর আরও একটি নৃশংস খুন হয় ওই এলাকায়। যাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এর ঠিক কয়েক সপ্তাহ পর আরও একটি নৃশংস খুন হয় ওই এলাকায়। যাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

০৪ ২৫
 ১৯৬৮ সালের ৩১ জুলাই ব্রায়ান হাওয়ে নামে এক তিন বছরের শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ এই খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

১৯৬৮ সালের ৩১ জুলাই ব্রায়ান হাওয়ে নামে এক তিন বছরের শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ এই খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

০৫ ২৫
দ্বিতীয় খুনে তিন বছরের শিশু ব্রায়ানের চুল কেটে নেয় আততায়ী। তাঁর পা এবং যৌনাঙ্গ কেটে ক্ষতবিক্ষত করে। কিন্তু পুলিশ কিছুতেই খুঁজে পায় না কে এই খুন দু’টি করেছে? কেনই বা করেছে?

দ্বিতীয় খুনে তিন বছরের শিশু ব্রায়ানের চুল কেটে নেয় আততায়ী। তাঁর পা এবং যৌনাঙ্গ কেটে ক্ষতবিক্ষত করে। কিন্তু পুলিশ কিছুতেই খুঁজে পায় না কে এই খুন দু’টি করেছে? কেনই বা করেছে?

০৬ ২৫
ব্লেড দিয়ে তিন বছরের শিশুর পেটে ‘এম’ লিখে দিয়েছিল আততায়ী। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর নিজেদের সন্তানকে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাবা-মা।

ব্লেড দিয়ে তিন বছরের শিশুর পেটে ‘এম’ লিখে দিয়েছিল আততায়ী। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর নিজেদের সন্তানকে নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাবা-মা।

০৭ ২৫
তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ  জানতে পারে দু’টি খুনের পিছনে রয়েছে একটি ১১ বছরে বালিকা। নাম মেরি বেল।

তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে দু’টি খুনের পিছনে রয়েছে একটি ১১ বছরে বালিকা। নাম মেরি বেল।

০৮ ২৫
প্রথমে সে চার বছরের শিশু মার্টিন ব্রাউনকে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তার পর তাকে বাড়ির ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেয়।

প্রথমে সে চার বছরের শিশু মার্টিন ব্রাউনকে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। তার পর তাকে বাড়ির ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেয়।

০৯ ২৫
খুনের পর সে একটি হাতে লেখা কাগজ রেখে দেয় মৃতদেহের পাশে। প্রথম দিকে পুলিশ সেই কাগজকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। পরে সেই কাগজ থেকেই দু’টি খুনের যোগসূত্র খুঁজে পায় পুলিশ।

খুনের পর সে একটি হাতে লেখা কাগজ রেখে দেয় মৃতদেহের পাশে। প্রথম দিকে পুলিশ সেই কাগজকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। পরে সেই কাগজ থেকেই দু’টি খুনের যোগসূত্র খুঁজে পায় পুলিশ।

১০ ২৫
দু’টি খুনেই মেরিকে সাহায্য করেছিল নরমা বেল নামে এক ১৩ বছরের মেয়ে। পদবিতে দু’জনের মিল থাকলেও দু’জনের মধ্যে কোনও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল না।

দু’টি খুনেই মেরিকে সাহায্য করেছিল নরমা বেল নামে এক ১৩ বছরের মেয়ে। পদবিতে দু’জনের মিল থাকলেও দু’জনের মধ্যে কোনও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল না।

১১ ২৫
পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী প্রথমে তাঁরা খুন করে দেহটি ফেলে চলে যেত। পরে তারা ফিরে এসে মৃতদেহের পেটে নিজেদের নামে প্রথম অক্ষর লিখে দিত। কী ভাবে এই জোড়া খুনের রহস্য ফাঁস করল পুলিশ?

পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী প্রথমে তাঁরা খুন করে দেহটি ফেলে চলে যেত। পরে তারা ফিরে এসে মৃতদেহের পেটে নিজেদের নামে প্রথম অক্ষর লিখে দিত। কী ভাবে এই জোড়া খুনের রহস্য ফাঁস করল পুলিশ?

১২ ২৫
তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ এলাকার অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। জোর দেওয়া হয় এলাকার শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদে। এই জেরার সময় অদ্ভুত আচরণ করে নরমা এবং মেরি।

তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ এলাকার অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। জোর দেওয়া হয় এলাকার শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদে। এই জেরার সময় অদ্ভুত আচরণ করে নরমা এবং মেরি।

১৩ ২৫
যখন নরমাকে খুনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন অদ্ভুত ভাবে এই খুনের ঘটনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। তদন্তকারীরা লক্ষ করেন তাঁদের প্রশ্নগুলির উত্তর সে স্বাভাবিক ভাবে দিচ্ছে না। পুরো বিষয়টি রসিকতা হিসাবে নিচ্ছে।

যখন নরমাকে খুনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন অদ্ভুত ভাবে এই খুনের ঘটনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। তদন্তকারীরা লক্ষ করেন তাঁদের প্রশ্নগুলির উত্তর সে স্বাভাবিক ভাবে দিচ্ছে না। পুরো বিষয়টি রসিকতা হিসাবে নিচ্ছে।

১৪ ২৫
একই আচরণ লক্ষ করা যায় মেরির মধ্যেও। সে-ও প্রশ্নগুলিকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছিল না। বদলে সে নতুন নতুন তথ্য জুড়ে দিচ্ছিল।

একই আচরণ লক্ষ করা যায় মেরির মধ্যেও। সে-ও প্রশ্নগুলিকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছিল না। বদলে সে নতুন নতুন তথ্য জুড়ে দিচ্ছিল।

১৫ ২৫
সে পুলিশকে বলে, প্রথম খুনের দিন সে শিশুটি একটি ছেলের সঙ্গে ওই পরিত্যক্ত বাড়ির পাশে মাঠে খেলতে দেখেছে। এর পরই পুলিশের সন্দেহ হয় এই খুন সম্পর্কে জানে মেরি। তবু আরও তথ্যের জন্য তারা অপেক্ষা করে।

সে পুলিশকে বলে, প্রথম খুনের দিন সে শিশুটি একটি ছেলের সঙ্গে ওই পরিত্যক্ত বাড়ির পাশে মাঠে খেলতে দেখেছে। এর পরই পুলিশের সন্দেহ হয় এই খুন সম্পর্কে জানে মেরি। তবু আরও তথ্যের জন্য তারা অপেক্ষা করে।

১৬ ২৫
সেই তথ্য পুলিশকে দেয় নরমা। সে জানায় কী ভাবে খুন করা হয়েছিল প্রথম জনকে। মেরি নরমাকে ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায় প্রথম শিশুর দেহ দেখানোর জন্য।

সেই তথ্য পুলিশকে দেয় নরমা। সে জানায় কী ভাবে খুন করা হয়েছিল প্রথম জনকে। মেরি নরমাকে ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায় প্রথম শিশুর দেহ দেখানোর জন্য।

১৭ ২৫
নরমার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ মেরিকে গ্রেফতার করে। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে আরও তথ্য। পুলিশ জানতে পারে খুনের দু’দিন পর একটি নোটে সে লেখে ‘আমি খুন করেছি যাতে আমি ফিরে আসতে পারি।’ অন্য একটি নোটে সে লেখে ‘আমরা মার্টিন ব্রাউনকে খুন করেছি।’

নরমার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ মেরিকে গ্রেফতার করে। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে আরও তথ্য। পুলিশ জানতে পারে খুনের দু’দিন পর একটি নোটে সে লেখে ‘আমি খুন করেছি যাতে আমি ফিরে আসতে পারি।’ অন্য একটি নোটে সে লেখে ‘আমরা মার্টিন ব্রাউনকে খুন করেছি।’

১৮ ২৫
পুলিশের কাছে সে স্বীকার করে নোটগুলি তারই লেখা। ১৯৬৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয় মেরি। নরমাকে মুক্তি দেয় আদালত।

পুলিশের কাছে সে স্বীকার করে নোটগুলি তারই লেখা। ১৯৬৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয় মেরি। নরমাকে মুক্তি দেয় আদালত।

১৯ ২৫
মেরির এই অদ্ভুত আচরণের পিছনে কারণ কী? এর পিছনে রয়েছে এক নষ্ট শৈশবের গল্প।

মেরির এই অদ্ভুত আচরণের পিছনে কারণ কী? এর পিছনে রয়েছে এক নষ্ট শৈশবের গল্প।

২০ ২৫
মেরির মা ছিলেন এক জন যৌনকর্মী। জন্মের পর মা তাকে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি চাইতেন না তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’দের জন্য দেওয়া সময় কেড়ে নিত শিশু মেরি। এ জন্য সারা ক্ষণ তাকে অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতেন মা। তার পরিবারে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ দেওয়ার ফলে যে ছোট শিশুটির ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত ছিলেন না তিনি।

মেরির মা ছিলেন এক জন যৌনকর্মী। জন্মের পর মা তাকে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। তিনি চাইতেন না তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’দের জন্য দেওয়া সময় কেড়ে নিত শিশু মেরি। এ জন্য সারা ক্ষণ তাকে অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতেন মা। তার পরিবারে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ দেওয়ার ফলে যে ছোট শিশুটির ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত ছিলেন না তিনি।

২১ ২৫
এমনকি চার-পাঁচ বছর বয়সে মেরিকে তিনি ঠেলে দিতেন তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’দের কাছে। দুঃসহ এই অভিজ্ঞতাগুলিই মেরিকে ঠেলে দিয়েছিল তার অদ্ভুত আচরণের দিকে, করে তুলছিল ‘সিরিয়াল কিলার’।

এমনকি চার-পাঁচ বছর বয়সে মেরিকে তিনি ঠেলে দিতেন তাঁর ‘ক্লায়েন্ট’দের কাছে। দুঃসহ এই অভিজ্ঞতাগুলিই মেরিকে ঠেলে দিয়েছিল তার অদ্ভুত আচরণের দিকে, করে তুলছিল ‘সিরিয়াল কিলার’।

২২ ২৫
 বন্দি থাকাকালীন মেরি এক বার জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। ধরা পড়ে যায়।

বন্দি থাকাকালীন মেরি এক বার জেল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। ধরা পড়ে যায়।

২৩ ২৫
১২ বছর জেল খাটার পর ১৯৮০ সালে ছাড়া পায় সে। তখন তার বয়স ২৩। নতুন নামে নতুন জীবন শুরু করে সে। মুক্তির চার বছর পর বিয়ে করে মেরি। তার একটি মেয়েও হয়। তবু ইতিহাস তাকে পিছু ছাড়ে না। তার পুরনো পরিচয় জেনে ফেলার আগেই তাকে জায়গা পরিবর্তন করতে হত।

১২ বছর জেল খাটার পর ১৯৮০ সালে ছাড়া পায় সে। তখন তার বয়স ২৩। নতুন নামে নতুন জীবন শুরু করে সে। মুক্তির চার বছর পর বিয়ে করে মেরি। তার একটি মেয়েও হয়। তবু ইতিহাস তাকে পিছু ছাড়ে না। তার পুরনো পরিচয় জেনে ফেলার আগেই তাকে জায়গা পরিবর্তন করতে হত।

২৪ ২৫
এক বার তাকে সংবাদিকদের হাত থেকে বাঁচতে বাড়ি থেকে বিছানার চাদর চাপা দিয়ে পালাতে হয়েছিল।  এই ঘটনার পর সে তার মেয়ের পরিচয় নিয়ে চিন্তিত ছিল। মেয়েকে যাতে ‘পরিচয়হীন’ রাখা যায় তার জন্য  ব্রিটেনের আদালতে আবেদন করে মেরি।

এক বার তাকে সংবাদিকদের হাত থেকে বাঁচতে বাড়ি থেকে বিছানার চাদর চাপা দিয়ে পালাতে হয়েছিল। এই ঘটনার পর সে তার মেয়ের পরিচয় নিয়ে চিন্তিত ছিল। মেয়েকে যাতে ‘পরিচয়হীন’ রাখা যায় তার জন্য ব্রিটেনের আদালতে আবেদন করে মেরি।

২৫ ২৫
২০০৩ সালের ২১ মে আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করে। তার মামলাটির রায় পরবর্তী কালে আইনে পরিণত হয়। এটি ব্রিটেনে ‘মেরি বেল নির্দেশ’ নামে পরিচিত। আদালত পরবর্তী কালে তার নাতনির ক্ষেত্রে এই সুরক্ষা প্রদান করে। আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় নষ্ট শৈশবের ইতিহাস। এখন মেরি বেল কোথায় থাকে তা কেউ জানে না।

২০০৩ সালের ২১ মে আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করে। তার মামলাটির রায় পরবর্তী কালে আইনে পরিণত হয়। এটি ব্রিটেনে ‘মেরি বেল নির্দেশ’ নামে পরিচিত। আদালত পরবর্তী কালে তার নাতনির ক্ষেত্রে এই সুরক্ষা প্রদান করে। আজও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় নষ্ট শৈশবের ইতিহাস। এখন মেরি বেল কোথায় থাকে তা কেউ জানে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE