প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে সৌদি আরবের সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়ার কথা ঘোষণা করে পাকিস্তান। এই সমঝোতায় ভারতের বিদেশনীতির ব্যর্থতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
পাকিস্তান-সৌদি আরব সামরিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে দুনিয়া জুড়ে শোরগোল। এই সমঝোতাকে ‘ইসলামীয় নেটো’র ভিত্তিপ্রস্তর হিসাবে দেখছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশ। শুধু তা-ই নয়, সংশ্লিষ্ট চুক্তিটিকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ‘বিপদ সঙ্কেত’ বলেও উল্লেখ করেছেন তাঁরা। ইসলামাবাদ ও রিয়াধের সৈন্য সমঝোতা আটকাতে না পারা কি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিদেশনীতির চরম ব্যর্থতা? এই প্রশ্নে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছে দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস থেকে শুরু করে সাবেক কূটনীতিকেরা।
০২২০
পাক-সৌদি সামরিক চুক্তিকে নয়াদিল্লির বিদেশনীতির ‘ব্যর্থতা’ হিসাবে দেখার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পশ্চিম এশিয়ার আরব দেশগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধিতে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। গত এক দশকে বহু বার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কাতার ও বাহরাইনের মতো দেশগুলিতে সফর করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যদিও তাঁর কোনও প্রচেষ্টাই ‘ইসলামীয় নেটো’র চারাগাছ পোঁতা থেকে ইসলামাবাদ ও রিয়াধকে বিরত করতে পারেনি।
০৩২০
বিশ্লেষকদের কেউ কেউ আবার একে ভারতের গোয়েন্দা ব্যর্থতা হিসাবেও দেখছেন। তাঁদের দাবি, সৌদি ও পাকিস্তান যে গোপনে গোপনে এই ধরনের একটি সামরিক চুক্তির নীলনকশা তৈরি করে ফেলেছে, তার বিন্দুবিসর্গ জানত না নয়াদিল্লি। ফলে সমঝোতা হওয়ার রাস্তায় কোনও বাধা বা চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি কেন্দ্র। ফলে ‘গোটা বিষয়টির উপর’ নজর রাখা হচ্ছে বলে একটি দায়সারা গোছের বিবৃতি দিতে বাধ্য হয় বিদেশ মন্ত্রক। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের পাল্টা পদক্ষেপ কী হবে, সেই রূপরেখাও স্পষ্ট নয়।
০৪২০
ইসলামাবাদ-রিয়াধের সামরিক চুক্তিটিকে ভারতের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হিসাবে দেখার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন এ দেশের সাবেক সেনাকর্তারা। তাঁদের যুক্তি, এর জেরে আগামী দিনে পাকিস্তানের মাটিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো জঙ্গিদমন অভিযান চালাতে দু’বার ভাবতে হবে নয়াদিল্লিকে। সমঝোতার শর্ত মেনে ওই ধরনের পরিস্থিতিতে রাওয়ালপিন্ডির সেনা অফিসারদের পাশে এসে দাঁড়াতে পারে ভারতের দীর্ঘ দিনের ‘বন্ধু’ সৌদি আরব। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে একসঙ্গে দু’টি দেশের বিরুদ্ধে লড়তে হবে এ দেশের বাহিনীকে।
০৫২০
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ভারত-পাক সংঘর্ষের আশঙ্কা কমা তো দূর অস্ত, উল্টে তা আরও বেড়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ইসলামাবাদ মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যুর পর সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছেন রাওয়ালপিন্ডির ফৌজি জেনারেল ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। গত চার মাসে একাধিক বার পরমাণু হামলার হুমকি পর্যন্ত দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।
০৬২০
সিন্ধুর জলকে বাদ দিলে গুজরাতের কচ্ছের রণ এলাকার স্যর ক্রিক খাঁড়ি নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সীমান্ত বিবাদ রয়েছে। ২০১৮ সালে আচমকাই নতুন একটি মানচিত্র প্রকাশ করে পাক সরকার। সেখানে স্যর ক্রিক এবং জুনাগড়কে তাদের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে দেখিয়েছিল ইসলামাবাদ। সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট এলাকাটির আশপাশে সামরিক পরিকাঠামো বৃদ্ধি করছে ইসলামাবাদ। এই নিয়ে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় পশ্চিমের প্রতিবেশীটিকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং স্থল সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী।
০৭২০
এ ছাড়া পহেলগাঁও হামলার পর জঙ্গি হামলা নিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট করেছে ভারত। তা হল, আগামী দিনে এ দেশে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিরা হামলা চালালে তাকে যুদ্ধ হিসাবে বিবেচনা করবে নয়াদিল্লি। আর তাই ইসলামাবাদ ও রিয়াধের সামরিক সমঝোতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এ দেশের সেনা অফিসারেরা। তাঁদের দাবি, ওই ধরনের পরিস্থিতিতে রাওয়ালপিন্ডির ফৌজি জেনারেলদের অত্যাধুনিক হাতিয়ার, গোলা-বারুদ, রসদ, এমনকি সৈনিক দিয়েও সাহায্য করতে পারে সৌদি সরকার।
০৮২০
‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার ইনডেক্স’-এর প্রকাশ করা তালিকা অনুযায়ী, সামরিক শক্তির নিরিখে এ বছর ১২ নম্বর স্থানে রয়েছে পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তান। অন্য দিকে সৌদি আরবের স্থান ২৪। বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী ফৌজ রয়েছে ভারতের হাতে। ২০২৫-’২৬ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা খাতে হাজার কোটি ডলার ব্যয় বরাদ্দ করেছে ইসলামাবাদ। রিয়াদ ও নয়াদিল্লির সেনার পিছনে খরচের অঙ্ক যথাক্রমে সাত হাজার এবং ৮,৬০০ কোটি ডলার। এই হিসাবে চুক্তিবদ্ধ দু’টি দেশের প্রতিরক্ষা বাজেট এ দেশের সমতুল্য, যা মোদী সরকারের চিন্তা বাড়াবে, বলছেন বিশ্লেষকেরা।
০৯২০
বর্তমানে সৌদি বিমানবাহিনীর বহরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘এফ-১৫’ এবং ইউরোপের পাঁচ দেশের যৌথ উদ্যোগে তৈরি ‘ইউরোফাইটার টাইফুন’ লড়াকু জেট। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তা পাক ফৌজকে সরবরাহ করতে পারে রিয়াধ। তা ছা়ড়া এই চুক্তির ফলে জ্বালানির দিক থেকেও নয়াদিল্লিকে বিপদে ফেলতে পারে সৌদি সরকার। কারণ, ৮৫ শতাংশ খনিজ তেল বিদেশ থেকে আমদানি করে ভারত। ‘তরল সোনা’ কেনার ক্ষেত্রে নয়াদিল্লির অন্যতম বড় ভরসার জায়গা পশ্চিম এশিয়ার ওই আরব মুলুক।
১০২০
১৯৭৩ সালে চতুর্থ আরব-ইজ়রায়েল সংঘাত বা ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধ চলাকালীন ইহুদিদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে আমেরিকা-সহ একাধিক পশ্চিমি দেশ। ওই সময় ইউরোপে খনিজ তেলের সরবরাহ একরকম বন্ধ করে দিয়েছিল পশ্চিম এশিয়ার অধিকাংশ আরব রাষ্ট্র। ফলে মারাত্মক জ্বালানি সঙ্কটের মুখে পড়ে গোটা বিশ্ব। আন্তর্জাতিক বাজারে হু-হু করে বাড়তে থাকে ‘তরল সোনা’র দাম। পাক-সৌদি চুক্তির জেরে ফের এক বার সেই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে, বলছেন সাবেক সেনাকর্তারা।
১১২০
তৃতীয়ত, সৌদির সঙ্গে সামরিক চুক্তি সম্পন্ন হতেই অন্যান্য ইসলামীয় দেশকে একই রকমের সামরিক সমঝোতায় আসার জন্য ক্রমাগত আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ সবাইকে আণবিক সুরক্ষা দিতেও প্রস্তুত। ফলে আগামী দিনে ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্র সৈন্যচুক্তি করলে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত যে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
১২২০
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, পরমাণু নিরাপত্তার কথা বলে সৌদি আরব-সহ অন্য মুসলিম দেশগুলির থেকে মোটা টাকা তুলতে চাইছে পাকিস্তান। সেই অর্থের সিংহভাগ ফৌজি শক্তি বৃদ্ধিতে খরচের পরিকল্পনা রয়েছে ইসলামাবাদের। সে ক্ষেত্রে যুদ্ধের ময়দানে রাওয়ালপিন্ডির জেনারেলদের মাত দিতে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে নয়াদিল্লিকে। ফলে সংশ্লিষ্ট চুক্তিটিকে হালকা ভাবে নিলে মোদী সরকার বড় ভুল করবে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা।
১৩২০
সৌদি-সহ পশ্চিম এশিয়ার উপসাগরীয় দেশগুলিতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ৯০ লক্ষ ভারতীয়। এই সামরিক চুক্তিকে সামনে রেখে এ ব্যাপারে রিয়াধের উপরে চাপ তৈরি করতে পারে ইসলামাবাদ। সে ক্ষেত্রে বিপদে পড়বেন ওই প্রবাসীরা। হঠাৎ করে কর্মহীন হয়ে দেশে ফিরতে হতে পারে তাঁদের। এ দেশের অর্থনীতির পক্ষে সেটা যে একেবারেই ভাল হবে না, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আর তাই অনেকেই দ্রুত ইজ়রায়েল, রাশিয়া বা আমেরিকার সঙ্গে একই ধরনের সামরিক চুক্তি করে নেওয়ার দাবি তুলছেন।
১৪২০
ভারতের পক্ষে অবশ্য কোনও দেশের সঙ্গে নেটো ধাঁচের সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া বেশ কঠিন। ইজ়রায়েলের সঙ্গে সমঝোতায় গেলে ইহুদি বনাম আরবদের যুদ্ধে না চেয়েও যোগ দিতে হবে নয়াদিল্লিকে। অন্য দিকে চুক্তি করলে এ দেশের মাটিতে ফৌজ রাখার শর্ত দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। গত সাড়ে তিন বছর ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ লড়ছে রাশিয়া। মস্কোর সঙ্গে সামরিক সমঝোতা মানে পূর্ব ইউরোপের সংঘর্ষে বাহিনী পাঠানো। তাতেও আখেরে লোকসান হবে কেন্দ্রের। আর তাই ধীরে চলো নীতিতে আটকে রয়েছে মোদী সরকার।
১৫২০
তবে এ সব কিছুর উল্টো যুক্তিও রয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, আগামী দিনে ভারত-পাক সংঘর্ষ যতই তীব্র হোক না কেন, তাতে মাথা গলাবে না সৌদি সরকার। তার কারণ হল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। বর্তমানে এ দেশের চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হল রিয়াধ। উল্টো দিকে আরব দেশটির ক্ষেত্রে নয়াদিল্লি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে ৪,১৮৮ কোটি ডলারের পণ্য আদান-প্রদান করেছে এই দুই দেশ। এই অঙ্ক আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া আরব মুলুকটির সঙ্গে ভারতের গভীর সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন রয়েছে। প্রতি বছর আরব মুলুকটির মক্কা ও মদিনায় হজ করতে যান এ দেশের বহু ধর্মপ্রাণ মুসলিম।
১৬২০
অন্য দিকে, ‘ইসলামীয় ভ্রাতৃত্ববোধ’-এর (ইসলামিক ব্রাদারহুড) পৃষ্ঠপোষক পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদির বাণিজ্যিক সম্পর্ক মাত্র ৩০০-৪০০ কোটি ডলারে সীমাবদ্ধ। শুধু তা-ই নয়, দেউলিয়ার দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা ইসলামাবাদকে প্রায়ই মোটা অঙ্কের আর্থিক সাহায্য দিতে হয় রিয়াধকে। ফলে সংশ্লিষ্ট চুক্তিটিকে হাতিয়ার করে ভারতের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে রাওয়ালপিন্ডির ফৌজি জেনারেলরা আরব মুলুকটির থেকে ‘ফাঁকা চেক’ পাবেন, সেই ধারণা অবান্তর এবং কষ্টকল্পিত, বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা।
১৭২০
পশ্চিমি গণমাধ্যমগুলির আবার দাবি, এই ধরনের সামরিক চুক্তির নেপথ্যে আরব দেশগুলির অন্য হিসাব রয়েছে। পরমাণু শক্তিধর পাক ফৌজকে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চাইছে তারা। এতে ওই এলাকার দেশগুলির মানসিক জোর যে কয়েক গুণ বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। কারণ, ইহুদিদের অস্ত্রভান্ডারে রয়েছে আণবিক হাতিয়ার। আরব দেশগুলির একাংশের দাবি, সেই কারণেই বার বার তেল আভিভের সঙ্গে যুদ্ধে হারতে হচ্ছে তাদের।
১৮২০
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অন্য কোনও দেশের হয়ে ভাড়াটে যোদ্ধা হিসাবে কাজ করার প্রভূত অভিজ্ঞতা রয়েছে পাক সেনার। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জর্ডনে কর্মরত ছিলেন সাবেক পাক সেনাপ্রধান তথা প্রেসিডেন্ট জেনারেল জ়িয়া উল হক। ওই সময় প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের বিরুদ্ধে আম্মানের কুর্সিবদলের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ইতিহাসে তাঁদের বিদ্রোহ জায়গা পেয়েছে ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর’ নামে, যা দমন করতে বড় ভূমিকা নেন জেনারেল জ়িয়া। পশ্চিমি প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জর্ডনের বাহিনীকে নেতৃত্বও দেন তিনি।
১৯২০
গত ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় বোমাবর্ষণ করে ইহুদি বিমানবাহিনী। ওই সময় মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরও কয়েকটি দেশে হামলা চালায় ইজ়রায়েল। সেই তালিকায় ছিল পশ্চিম এশিয়ার লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং উত্তর আফ্রিকার টিউনিশিয়া। এর পরই পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয় সৌদি আরব। ফলে এর জন্য ভারতের বিদেশনীতিকে দায়ী করা পুরোপুরি ঠিক নয়। ইহুদিরাই দুই মুসলিম দেশকে কাছাকাছি এনে ফেলেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকদের অপর অংশ।
২০২০
গত ১৭ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট সামরিক চুক্তির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে পাকিস্তান ও সৌদি আরব। এর পোশাকি নাম ‘কৌশলগত এবং পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’। সেখানে বলা হয়েছে দু’টির মধ্যে কোনও একটি দেশ অপর কারও দ্বারা আক্রান্ত হলে, তাকে দু’জনের উপরেই যুদ্ধ হিসাবে গণ্য করা হবে। এই সমঝোতাকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে ‘ইসলামীয় নেটো’ গড়ে উঠলে পশ্চিম এশিয়ায় শেষ হবে আমেরিকার প্রাধান্য। মুছে যেতে পারে ইজ়রায়েলের অস্তিত্ব। যুক্তরাষ্ট্র সেটা কতটা মেনে নেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।