Pakistan’s Viral Tweet for Loans Sparks Controversy, Government says X account hacked dgtl
India-Pakistan tensions
‘সাহায্য করুন’, আন্তর্জাতিক স্তরে ‘ভিক্ষা’ চাওয়ার টুইট প্রকাশ্যে আসতেই অন্য তত্ত্ব দিল পাকিস্তান
শুক্রবার সকালের সেই পোস্টের পর থেকেই হইচই পড়ে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রশ্ন ওঠে, ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ হাল নিয়ে কেন ‘যুদ্ধ’ শুরু করল ইসলামাবাদ? পাকিস্তানের অর্থনীতির কোমর ভেঙে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৫ ১১:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আবহে ‘ব্যাপক ক্ষতি’ হয়েছে! তেমনটাই উল্লেখ করে বিশ্ব ব্যাঙ্ক-সহ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে আরও ঋণের আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান। তেমন খবরই উঠে এসেছিল সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
০২২২
যদিও পরে প্রতিবেদন প্রত্যাহার করা হয়। খবরটি ভুল এবং সেটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানায় সংবাদ সংস্থা। কিন্তু কী ভাবে হল এমনটা?
০৩২২
এই নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত এক্স হ্যান্ডলে পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে। সরকারি ওই পোস্টে লেখা ছিল, ‘‘শত্রুদের দ্বারা ব্যাপক ক্ষতির পর পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছে আরও ঋণের আবেদন জানিয়েছে। ক্রমবর্ধমান সংঘাত এবং শেয়ার বাজারে পতনের কারণে আমরা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করছি। দেশকে অবিচল থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’’
০৪২২
শুক্রবার সকালের সেই পোস্টের পর থেকেই হইচই পড়ে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রশ্ন ওঠে, ‘ভাঁড়ে মা ভবানী’ হাল নিয়ে কেন ‘যুদ্ধ’ শুরু করল ইসলামাবাদ? পাকিস্তানের অর্থনীতির কোমর ভেঙে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
০৫২২
পুরো বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের মুখ পুড়তেই তড়িঘড়ি বিবৃতি জারি করে সে দেশের অর্থ মন্ত্রক। তারা জানায়, পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের ওই এক্স হ্যান্ডলটি হ্যাক করা হয়েছে।
০৬২২
পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রকের ওই দাবির পর জল্পনার পারদ আরও চড়ে। প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি নিজেদের দীনতার কথা প্রকাশ্যে আনার পর ভুল বুঝতে পেরেছে পাকিস্তান? এবং তার পরেই কি এই ‘হ্যাক’ তত্ত্ব খাড়া করে ভুল শুধরে নিল?
০৭২২
উল্লেখ্য, ভারত-পাক সংঘাতের আবহে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জম্মু এবং পঞ্জাবে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু সেই সব ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে ভারত। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, জম্মু এবং পঞ্জাবের একাধিক জায়গা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তান।
০৮২২
কিন্তু সেই হামলা ভেস্তে দিয়েছে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস ৪০০ ট্রায়াম্ফ। পাল্টা আঘাতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের এফ ১৬ যুদ্ধবিমান। ধ্বংস করা হয়েছে পাকিস্তানের দু’টি জেএফ ১৭ যুদ্ধবিমানও।
০৯২২
ড্রোনের মাধ্যমেও হামলা চালানো হয়েছিল পাকিস্তানের তরফে। তা-ও প্রতিহত করা হয়েছে। আখনুরে একটি ড্রোনকে গুলি করে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
১০২২
অভিযোগ, ভারতীয় সেনাকে লড়াইয়ে প্ররোচিত করতে সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে বার বার। বৃহস্পতিবার রাতেও একই ভাবে তারা হামলা চালিয়েছিল।
১১২২
কিন্তু ভারত-পাক সংঘাত শুরু হওয়ার সময় থেকেই প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি ভারতের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে পাকিস্তানের? কোমর ভেঙে যাওয়া অর্থনীতি নিয়ে কি তারা লড়াই করতে পারবে ভারতের সঙ্গে?
১২২২
অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা ও অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিয়ে পাকিস্তান ইতিমধ্যেই জর্জরিত। এর পর এখন পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ (পিএসএক্স)-এর মুখ থুবড়ে পড়ার কারণে পাক অর্থনীতির হাল আরও বেহাল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে এই সময় ভারতের সঙ্গে সংঘাতে গেলে ফল মোটেও ভাল হবে না পাকিস্তানের জন্য। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
১৩২২
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করা, অটারী-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করা, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল-সহ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করা ভারত সরকারের একাধিক পদক্ষেপের পর থেকেই রক্তক্ষরণ হয় পিএসএক্সে। সে দেশের শেয়ার বাজারের সূচক পড়তির দিকে যায়। বৃহস্পতিবার সাময়িক ভাবে বাজার বন্ধও রাখতে হয়।
১৪২২
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ভারতের সঙ্গে সংঘাতের প্রভাব মারাত্মক ভাবে পড়েছে পাকিস্তানের শেয়ার বাজারের উপর। বিশেষজ্ঞেরা এ-ও সতর্ক করেছেন, ভারতের তরফে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি বাতিল করার ফল ভুগতে পারে পাকিস্তানের কৃষিব্যবস্থা। গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে।
১৫২২
পাকিস্তানের ২০২২-২৩ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুসারে, সে দেশটির জিডিপিতে ২২.৭% অবদান কৃষির। ফলে ইতিমধ্যেই কোমর নুইয়ে পড়া পাক অর্থনীতি আরও চাপের সম্মুখীন হতে পারে।
১৬২২
তবে এ তো গেল বর্তমান পরিস্থিতি। এর আগেও কি অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভাল যাচ্ছিল পাকিস্তানের? উত্তর, না। গত বছর প্রায় দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল পাকিস্তান।
১৭২২
রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভাঙনের মুখে থাকা সরকার, খারাপ শাসনব্যবস্থা, সামরিক একনায়কতন্ত্র এবং সীমান্ত সন্ত্রাসের কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছিল। ফুরিয়ে এসেছিল তহবিল। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও তলানিতে পৌঁছেছিল।
১৮২২
এর পর অর্থনীতি বাঁচাতে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার বা আইএমএফের কাছে হাত পাতে ইসলামাবাদ। আইএমএফ প্রথমে পাত্তা না দিলেও পরে তাদের থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছিল পাকিস্তান।
১৯২২
এ ছাড়াও বালোচ বিদ্রোহীদের দৌরাত্ম্য এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণেও জর্জরিত পাকিস্তান। সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকেরাও অনেক দিন ধরে রোষ পুষে রেখেছেন সরকারের বিরুদ্ধে। দিকে দিকে প্রতিবাদ চলছে ইমরানের মুক্তির দাবিতে।
২০২২
তাই অর্থনৈতিক জট, অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং কৃষিব্যবস্থা বাঁচাতে বাঁচাতে পাকিস্তান কতটা ভারতের সঙ্গে পেরে উঠবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
২১২২
সে ক্ষেত্রে সংঘাত শুরু হলে আরও এক বার লজ্জার হার দেখতে হতে পারে পাকিস্তানকে। এমনকি, অর্থনীতির কোমরও ভেঙে যেতে পারে। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
২২২২
এর মধ্যেই আবার শুক্রবার সকালে পাকিস্তান সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়ক বিভাগের এক্স হ্যান্ডল থেকে করা ওই পোস্ট এবং কিছু ক্ষণ পর সেই হ্যান্ডল ‘হ্যাক’ হয়েছে বলে পাকিস্তানের দাবি সেই জল্পনা আরও বাড়়িয়ে দিয়েছে।