Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
The next Dalai Lama

লালফৌজের রক্তচক্ষু এড়িয়ে সেনার পোশাকে প্রাসাদ ছাড়েন ‘বৌদ্ধ অবতার’! এ বার কি একজোড়া দলাই লামা দেখবে বিশ্ব?

৬০ বছর আগে চিনা ফৌজের তাড়া খেয়ে প্রাসাদ ছেড়ে বেরিয়ে যান সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মগুরু। গন্তব্য নির্দিষ্ট থাকলেও পথ ছিল অজানা। কোন পথে যাবেন, কোন পথে গেলে এড়াতে পারবেন লালফৌজের কড়া নজর, তা সঠিক ভাবে জানা ছিল না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪২
Share: Save:
০১ ১৮
৯০ বছরে পদার্পণ করলেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। ছোট ছোট পাহাড় আর তুষারে ঢাকা সুউচ্চ পর্বতে ঘেরা ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় তাঁর জীবনের ন’টি দশক অতিক্রান্ত করে ফেললেন চতুর্দশ দলাই লামা তেনজ়িং গ্যাৎসো। তাঁর পরবর্তী দলাই লামা কে হবেন তা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই চলছে বিতর্ক। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চিন। বেজিঙের দাবি, চিনের ভূমিপুত্রকেই পঞ্চদশ দলাই লামা হিসাবে বেছে নিতে হবে।

৯০ বছরে পদার্পণ করলেন বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। ছোট ছোট পাহাড় আর তুষারে ঢাকা সুউচ্চ পর্বতে ঘেরা ভারতের হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় তাঁর জীবনের ন’টি দশক অতিক্রান্ত করে ফেললেন চতুর্দশ দলাই লামা তেনজ়িং গ্যাৎসো। তাঁর পরবর্তী দলাই লামা কে হবেন তা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই চলছে বিতর্ক। এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চিন। বেজিঙের দাবি, চিনের ভূমিপুত্রকেই পঞ্চদশ দলাই লামা হিসাবে বেছে নিতে হবে।

০২ ১৮
দলাই লামা হলেন তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের আধ্যাত্মিক নেতা। তাঁকে বোধিসত্ত্ব অবলোকিতেশ্বরের অবতার বলে মনে করা হয়। দলাই লামা উপাধির অর্থ ‘জ্ঞানের মহাসাগর’, যা মঙ্গোলীয় এবং তিব্বতি শব্দের মিশেলে তৈরি। বর্তমান দলাই লামার মৃত্যুর পর তিব্বতি সন্ন্যাসীরা তাঁর পুনর্জন্মের সন্ধান করেন। পরবর্তী দলাই লামাকে খুঁজে বার করার জন্য দৈববাণীর পরামর্শের অপেক্ষায় থাকেন এবং তিব্বত ও প্রতিবেশী দেশের দু’বছর থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের পরীক্ষা করেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা। শিশুদের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ শনাক্ত করার পর সিদ্ধান্ত নেন কে হবেন বৌদ্ধ ধর্মের পরবর্তী ‘অবতার’।

দলাই লামা হলেন তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের আধ্যাত্মিক নেতা। তাঁকে বোধিসত্ত্ব অবলোকিতেশ্বরের অবতার বলে মনে করা হয়। দলাই লামা উপাধির অর্থ ‘জ্ঞানের মহাসাগর’, যা মঙ্গোলীয় এবং তিব্বতি শব্দের মিশেলে তৈরি। বর্তমান দলাই লামার মৃত্যুর পর তিব্বতি সন্ন্যাসীরা তাঁর পুনর্জন্মের সন্ধান করেন। পরবর্তী দলাই লামাকে খুঁজে বার করার জন্য দৈববাণীর পরামর্শের অপেক্ষায় থাকেন এবং তিব্বত ও প্রতিবেশী দেশের দু’বছর থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের পরীক্ষা করেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা। শিশুদের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ শনাক্ত করার পর সিদ্ধান্ত নেন কে হবেন বৌদ্ধ ধর্মের পরবর্তী ‘অবতার’।

০৩ ১৮
চিন জানিয়ে দিয়েছে, তাদের অনুমোদন ছাড়া পঞ্চদশ দলাই লামার মনোনয়ন হবে না। চিনের এই দাবিকে বার বারই নস্যাৎ করে দিয়েছেন বর্তমান দলাই লামা। ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান দলাই লামা। মাত্র দু’বছর বয়সে দলাই লামা হিসাবে স্বীকৃতি পান তিনি। তাঁর দাবি, চিন কাউকে পরবর্তী দলাই লামা হিসাবে বেছে নিলে তিব্বতিরা তাঁকে আদৌ মেনে নেবেন না। বেজিংয়ের বক্তব্য, চিনা রাজবংশের নিয়ম ও ঐতিহ্য অনুযায়ী পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার তাদেরই।

চিন জানিয়ে দিয়েছে, তাদের অনুমোদন ছাড়া পঞ্চদশ দলাই লামার মনোনয়ন হবে না। চিনের এই দাবিকে বার বারই নস্যাৎ করে দিয়েছেন বর্তমান দলাই লামা। ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান দলাই লামা। মাত্র দু’বছর বয়সে দলাই লামা হিসাবে স্বীকৃতি পান তিনি। তাঁর দাবি, চিন কাউকে পরবর্তী দলাই লামা হিসাবে বেছে নিলে তিব্বতিরা তাঁকে আদৌ মেনে নেবেন না। বেজিংয়ের বক্তব্য, চিনা রাজবংশের নিয়ম ও ঐতিহ্য অনুযায়ী পরবর্তী দলাই লামা বেছে নেওয়ার অধিকার তাদেরই।

০৪ ১৮
তিব্বতিদের সঙ্গে চিনের বৈরিতার সূত্রপাত ১৯৫০ সালে। সেই বছরে সেনা পাঠিয়ে তিব্বত দখল করে নেয় লালফৌজ। অনিচ্ছাসত্ত্বেও চিনের শক্তির কাছে সার্বভৌমত্ব খোয়ায় তিব্বত। তবে দলাই লামার সরকারকে মোটামুটি আগের মতোই তিব্বত পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রদান করে রাখে চিন।

তিব্বতিদের সঙ্গে চিনের বৈরিতার সূত্রপাত ১৯৫০ সালে। সেই বছরে সেনা পাঠিয়ে তিব্বত দখল করে নেয় লালফৌজ। অনিচ্ছাসত্ত্বেও চিনের শক্তির কাছে সার্বভৌমত্ব খোয়ায় তিব্বত। তবে দলাই লামার সরকারকে মোটামুটি আগের মতোই তিব্বত পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রদান করে রাখে চিন।

০৫ ১৮
ভূমিপূত্রদের উৎখাত করে চিনের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতে শুরু হয় অত্যাচার, নির্যাতন। ওই বছরের মার্চ মাসে পরিস্থিতি সংঘাতপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় যখন চিন সেখানে ভূমি সংস্কারের কাজ শুরু করতে যায়। তিব্বতিদের মধ্যে উত্তেজনা দানা বাঁধতে শুরু করে। আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে যখন অদ্ভুত এক শর্ত আরোপ করে চিন লাসার বাইরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলাই লামাকে আমন্ত্রণ জানায়। কী ছিল সেই শর্ত?

ভূমিপূত্রদের উৎখাত করে চিনের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতে শুরু হয় অত্যাচার, নির্যাতন। ওই বছরের মার্চ মাসে পরিস্থিতি সংঘাতপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় যখন চিন সেখানে ভূমি সংস্কারের কাজ শুরু করতে যায়। তিব্বতিদের মধ্যে উত্তেজনা দানা বাঁধতে শুরু করে। আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে যখন অদ্ভুত এক শর্ত আরোপ করে চিন লাসার বাইরে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দলাই লামাকে আমন্ত্রণ জানায়। কী ছিল সেই শর্ত?

০৬ ১৮
কোনও সশস্ত্র রক্ষী ছাড়াই সেখানে হাজির হতে হবে ধর্মগুরুকে। একেবারে একা। চিনের এই শর্তকে ভাল ভাবে নেননি তিব্বতিরা। চিনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পুরোধা হয়ে ওঠা ধর্মগুরুকে অপহরণ করে বন্দি করতে পারে চিনা ফৌজ, এমনই আশঙ্কার মেঘ জমা হয়েছিল লক্ষ লক্ষ তিব্বতির মনে। দলাই লামাকে রক্ষা করার জন্য প্রায় তিন লক্ষ তিব্বতি ঘিরে রেখেছিলেন লামার গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ লাসার নরবুলিঙ্কাকে।

কোনও সশস্ত্র রক্ষী ছাড়াই সেখানে হাজির হতে হবে ধর্মগুরুকে। একেবারে একা। চিনের এই শর্তকে ভাল ভাবে নেননি তিব্বতিরা। চিনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পুরোধা হয়ে ওঠা ধর্মগুরুকে অপহরণ করে বন্দি করতে পারে চিনা ফৌজ, এমনই আশঙ্কার মেঘ জমা হয়েছিল লক্ষ লক্ষ তিব্বতির মনে। দলাই লামাকে রক্ষা করার জন্য প্রায় তিন লক্ষ তিব্বতি ঘিরে রেখেছিলেন লামার গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ লাসার নরবুলিঙ্কাকে।

০৭ ১৮
ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় তিব্বতিদের। শুরু হয় চিনা শাসকের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থান। লালফৌজকে রুখতে সে দিন গণ-আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দলাই লামা। তাই তাঁকে সরাতে উঠেপ়ড়ে লেগেছিলেন বেজিংয়ের সামরিক কর্তারা। পালিয়ে জীবন বাঁচানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনও পথ খোলা ছিল না দলাই লামার সামনে। তিব্বতকে বাঁচাতে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে পথে নামেন ‘বোধিসত্ত্ব অবলোকিতেশ্বরের অবতার’।

ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় তিব্বতিদের। শুরু হয় চিনা শাসকের বিরুদ্ধে গণ অভ্যুত্থান। লালফৌজকে রুখতে সে দিন গণ-আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দলাই লামা। তাই তাঁকে সরাতে উঠেপ়ড়ে লেগেছিলেন বেজিংয়ের সামরিক কর্তারা। পালিয়ে জীবন বাঁচানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনও পথ খোলা ছিল না দলাই লামার সামনে। তিব্বতকে বাঁচাতে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে পথে নামেন ‘বোধিসত্ত্ব অবলোকিতেশ্বরের অবতার’।

০৮ ১৮
৬০ বছর আগে মার্চের সেই রাতে পথে না নেমে পড়লে লালফৌজের হাতেই প্রাণ হারাতে হত তাঁকে। হয়তো তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও রেহাই পেতেন না। রওনা হওয়ার ঠিক আগে ধূলিঝড় শুরু হয়। তার মধ্যেই যাত্রার প্রস্তুতি নেন দলাই লামা।

৬০ বছর আগে মার্চের সেই রাতে পথে না নেমে পড়লে লালফৌজের হাতেই প্রাণ হারাতে হত তাঁকে। হয়তো তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও রেহাই পেতেন না। রওনা হওয়ার ঠিক আগে ধূলিঝড় শুরু হয়। তার মধ্যেই যাত্রার প্রস্তুতি নেন দলাই লামা।

০৯ ১৮
রাত গভীর হতেই লালসেনার পোশাক পরে পথে নেমেছিলেন দলাই লামা। মা, ভাই, বোন আর গুটিকয় অনুগামী নিয়ে তাঁর দু’দিন, দু’রাত কেটেছিল অচেনা, অজানা পথে। কখনও পায়ে হেঁটে। কখনও বা ঘোড়ার পিঠে। আর ছিল ক’টা খচ্চর, যাদের পিঠে চাপানো ছিল এক মাসের মতো জল, খাবারদাবার, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

রাত গভীর হতেই লালসেনার পোশাক পরে পথে নেমেছিলেন দলাই লামা। মা, ভাই, বোন আর গুটিকয় অনুগামী নিয়ে তাঁর দু’দিন, দু’রাত কেটেছিল অচেনা, অজানা পথে। কখনও পায়ে হেঁটে। কখনও বা ঘোড়ার পিঠে। আর ছিল ক’টা খচ্চর, যাদের পিঠে চাপানো ছিল এক মাসের মতো জল, খাবারদাবার, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।

১০ ১৮
যাচ্ছেন কোথায়, জানা ছিল। ভারত। কিন্তু কোন পথে যাবেন, কোন পথে গেলে এড়াতে পারবেন লালফৌজের কড়া নজর, তা সঠিক ভাবে জানা ছিল না। তাই খানিকটা অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াতে হয়েছিল তাঁদের। হাঁটতে হাঁটতে পথে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদ।

যাচ্ছেন কোথায়, জানা ছিল। ভারত। কিন্তু কোন পথে যাবেন, কোন পথে গেলে এড়াতে পারবেন লালফৌজের কড়া নজর, তা সঠিক ভাবে জানা ছিল না। তাই খানিকটা অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াতে হয়েছিল তাঁদের। হাঁটতে হাঁটতে পথে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদ।

১১ ১৮
সেই ব্রহ্মপুত্র তাঁরা রাতের অন্ধকারে পেরিয়েছিলেন তিব্বতি গরুর চামড়া দিয়ে বানানো ছোট্ট একটি নৌকায়। ব্রহ্মপুত্র পেরিয়ে আবার অনেকটা দুর্গম পাহাড়ি পথ। হিমালয়। হাঁটা ছাড়া যা পেরোনো সম্ভব নয়। সেই পথে কখনও হেঁটে, কখনও পাহাড় ধরে উঠে-নেমে তাঁর মা, ভাই, বোন আর অনুগামীদের নিয়ে দলাই লামা শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন ভারতের ভূখণ্ডে।

সেই ব্রহ্মপুত্র তাঁরা রাতের অন্ধকারে পেরিয়েছিলেন তিব্বতি গরুর চামড়া দিয়ে বানানো ছোট্ট একটি নৌকায়। ব্রহ্মপুত্র পেরিয়ে আবার অনেকটা দুর্গম পাহাড়ি পথ। হিমালয়। হাঁটা ছাড়া যা পেরোনো সম্ভব নয়। সেই পথে কখনও হেঁটে, কখনও পাহাড় ধরে উঠে-নেমে তাঁর মা, ভাই, বোন আর অনুগামীদের নিয়ে দলাই লামা শেষ পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন ভারতের ভূখণ্ডে।

১২ ১৮
দলাই লামা ভারতে পৌঁছেছিলেন ১৭ মার্চ। চিন-অধিকৃত তিব্বত ছেড়ে পালিয়ে আসা দলাই লামা, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং অনুগামীদের ভারত আশ্রয় দেয় হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৯।

দলাই লামা ভারতে পৌঁছেছিলেন ১৭ মার্চ। চিন-অধিকৃত তিব্বত ছেড়ে পালিয়ে আসা দলাই লামা, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং অনুগামীদের ভারত আশ্রয় দেয় হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৯।

১৩ ১৮
নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর হিমাচলের ধর্মশালার বৌদ্ধমন্দিরে বসে দলাই লামা জানিয়েছিলেন, সে দিন চিন তিব্বতিদের ভাষা আর সংস্কৃতির স্বাধীনতার দাবি মেনে নেয়নি। তিব্বতিদের আন্দোলন দমন করতে লালফৌজ নামিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর পালিয়ে আসার খবর চিনা সেনার কাছে পৌঁছোনোর পরই শুরু হয় তিব্বতিদের উপর অকথ্য অত্যাচার।

নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার পর হিমাচলের ধর্মশালার বৌদ্ধমন্দিরে বসে দলাই লামা জানিয়েছিলেন, সে দিন চিন তিব্বতিদের ভাষা আর সংস্কৃতির স্বাধীনতার দাবি মেনে নেয়নি। তিব্বতিদের আন্দোলন দমন করতে লালফৌজ নামিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর পালিয়ে আসার খবর চিনা সেনার কাছে পৌঁছোনোর পরই শুরু হয় তিব্বতিদের উপর অকথ্য অত্যাচার।

১৪ ১৮
ভারত তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় এপ্রিলের ৩ তারিখে। তাঁর নির্বাসিত সরকারকে জায়গা দেয় হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা-সহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন কয়েক হাজার তিব্বতি বৌদ্ধ। তার পর সেখান থেকেই তিব্বতে মুক্ত করার দাবিতে চিনবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন দলাই।

ভারত তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় এপ্রিলের ৩ তারিখে। তাঁর নির্বাসিত সরকারকে জায়গা দেয় হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা-সহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন কয়েক হাজার তিব্বতি বৌদ্ধ। তার পর সেখান থেকেই তিব্বতে মুক্ত করার দাবিতে চিনবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন দলাই।

১৫ ১৮
২০১৯ সালে রয়টার্সকে বর্তমান দলাই লামা গ্যাৎসো জানিয়েছিলেন, চিন বা চিন-অধিকৃত তিব্বত নয়, তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত হবেন ভারত থেকেই। সেই ঘোষণার পরই বৌদ্ধ ধর্মের সর্বোচ্চ গুরুর কুর্সি ঘিরে তৎপরতা বাড়িয়েছে বেজিং। দলাই লামার প্রভাব কমাতে তিব্বতিদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পাঞ্চেন লামার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বা়ড়িয়েছে শি জিনপিং সরকার।

২০১৯ সালে রয়টার্সকে বর্তমান দলাই লামা গ্যাৎসো জানিয়েছিলেন, চিন বা চিন-অধিকৃত তিব্বত নয়, তাঁর উত্তরসূরি মনোনীত হবেন ভারত থেকেই। সেই ঘোষণার পরই বৌদ্ধ ধর্মের সর্বোচ্চ গুরুর কুর্সি ঘিরে তৎপরতা বাড়িয়েছে বেজিং। দলাই লামার প্রভাব কমাতে তিব্বতিদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পাঞ্চেন লামার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বা়ড়িয়েছে শি জিনপিং সরকার।

১৬ ১৮
দলাই লামাপন্থীদের কোণঠাসা করতেই এই কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। দলাই লামার অনুগামীদের বক্তব্য, চিন যে ভাবে দলাই লামার উত্তরসূরি খোঁজার চেষ্টা করছে তা রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্যই। চিনের অনুসন্ধান পদ্ধতিকে মেনে নিতে চাইছেন না অধিকাংশ তিব্বতি। তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতেই দলাই লামার ‘পুনরাবির্ভাব’-এর জন্য বেজিঙের এই অত্যুৎসাহ।

দলাই লামাপন্থীদের কোণঠাসা করতেই এই কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। দলাই লামার অনুগামীদের বক্তব্য, চিন যে ভাবে দলাই লামার উত্তরসূরি খোঁজার চেষ্টা করছে তা রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্যই। চিনের অনুসন্ধান পদ্ধতিকে মেনে নিতে চাইছেন না অধিকাংশ তিব্বতি। তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতেই দলাই লামার ‘পুনরাবির্ভাব’-এর জন্য বেজিঙের এই অত্যুৎসাহ।

১৭ ১৮
ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসিত সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মগুরু বলেছেন, ‘‘আমি খুব অবাক হব না যদি আমার মৃত্যুর পর আপনাদের দু’জন দলাই লামাকে দেখতে হয়। তাঁদের মধ্যে এক জন আমার উত্তরসূরি হবেন। আর এক জনকে বেজিং বেছে নেবে। তিনি পরবর্তী দলাই লামা হবেন চিন থেকে। আমার পরের দলাই লামা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করছে চিনই।’’

ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসিত সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মগুরু বলেছেন, ‘‘আমি খুব অবাক হব না যদি আমার মৃত্যুর পর আপনাদের দু’জন দলাই লামাকে দেখতে হয়। তাঁদের মধ্যে এক জন আমার উত্তরসূরি হবেন। আর এক জনকে বেজিং বেছে নেবে। তিনি পরবর্তী দলাই লামা হবেন চিন থেকে। আমার পরের দলাই লামা নিয়ে বেশি চিন্তাভাবনা করছে চিনই।’’

১৮ ১৮
তাঁর দাবি, দলাই লামা নিয়ে শেষ কথা বলবেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তিব্বতের মানুষই। তাঁরা যদি লামাদের বাঁচিয়ে রাখতে চান, তা হলে লামারা থাকবেন। আর তখনই প্রশ্ন উঠবে কে হবেন পরবর্তী দলাই লামা।

তাঁর দাবি, দলাই লামা নিয়ে শেষ কথা বলবেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী তিব্বতের মানুষই। তাঁরা যদি লামাদের বাঁচিয়ে রাখতে চান, তা হলে লামারা থাকবেন। আর তখনই প্রশ্ন উঠবে কে হবেন পরবর্তী দলাই লামা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy