Sulakshana Pandit went into depression after Sanjeev Kumar refused her marriage proposal; both passed away on the same date dgtl
Bollywood Gossip
অন্য নায়িকার প্রেমে ডুবে থাকা নায়ক বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে অবসাদে ডুবে যান বলি নায়িকা, মৃত্যুদিনও এক দুই তারকার!
সঙ্গীত নিয়ে কেরিয়ার গড়লেও পরে অভিনয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন নায়িকা। কেরিয়ারের প্রথম ছবির সহ-অভিনেতার প্রেমেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই নায়ককে ছাড়া দ্বিতীয় কোনও পুরুষের দিকে তাকাতেনও না তিনি।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
ভালবাসার মানুষের সঙ্গেই সংসার পাতার স্বপ্ন দেখেছিলেন বলি অভিনেত্রী। কিন্তু তাঁর স্বপ্নের নায়ক তখন অন্য অভিনেত্রীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। তা না জেনেই বলি অভিনেতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছিলেন নায়িকা। কিন্তু তাঁর ভালবাসা যে একতরফা! নায়িকার দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব সেই অভিনেতা ফিরিয়ে দিলে মন ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। অবসাদে ডুবে গিয়ে কেরিয়ারেরও ক্ষতি করে ফেলেছিলেন বলি অভিনেত্রী-সঙ্গীতশিল্পী সুলক্ষণা পণ্ডিত।
০২২৩
সত্তরের দশক থেকে আশির দশকের মধ্যে বলিপাড়ায় নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন সুলক্ষণা। শৈশব থেকেই সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য সঙ্গীতজগতের সঙ্গে যুক্ত। সুলক্ষণার ভাই বলিপাড়ার জনপ্রিয় সঙ্গীত নির্মাতা যতীন এবং ললিত। তাঁর বোন বলি অভিনেত্রী বিজয়েতা পণ্ডিত।
০৩২৩
পরিবারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সঙ্গীত নিয়ে কেরিয়ার গড়ে তুলেছিলেন সুলক্ষণা। ন’বছর বয়স থেকে গান শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘তকদীর’ ছবিতে লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া ‘সাত সমুন্দর পার সে’ গানে গলা মিলিয়েছিলেন সুলক্ষণা। কিশোর কুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মহম্মদ রফি এবং উদিত নারায়ণের সঙ্গেও গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
০৪২৩
হিন্দি, বাংলা, মরাঠি, ওড়িয়া এবং গুজরাতি ভাষায় গান গেয়েছিলেন সুলক্ষণা। তবে গানের পাশাপাশি অভিনয়ের দিকেও ঝুঁকতে শুরু করেছিল তাঁর মন। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘উলঝন’ ছবির মাধ্যমে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন সুলক্ষণা। কেরিয়ারের প্রথম ছবির সহ-অভিনেতারই প্রেমে প়ড়ে গিয়েছিলেন তিনি।
০৫২৩
‘উলঝন’ ছবিতে বলি অভিনেতা সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন সুলক্ষণা। তবে সেই সম্পর্ক পেশার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। এমনকি, সুলক্ষণার পরিবারের সঙ্গেও মেলামেশা শুরু হয়েছিল সঞ্জীবের। নায়কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার ফলে তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন সুলক্ষণা।
০৬২৩
বলিপাড়ার জনশ্রুতি, সঞ্জীবকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন সুলক্ষণা। কিন্তু নায়িকার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেতা। তিনি যে অন্য নায়িকাকে ভালবাসেন তা জানতে পেরেছিলেন সুলক্ষণা। সঞ্জীবের প্রতি সুলক্ষণার ভালবাসা ছিল একতরফা। অন্য দিকে, সঞ্জীবও নাকি একতরফা ভালবাসার জন্যই সুলক্ষণার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
০৭২৩
বিয়ে নিয়ে সঞ্জীবের সিদ্ধান্ত মন থেকে মেনে নিতে পারেননি সুলক্ষণা। নিজেকে একসময় ঘরবন্দিও করে ফেলেছিলেন। সুলক্ষণার বোন বিজয়েতা এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, সঞ্জীবের সঙ্গে বিয়ে হয়নি বলে মানসিক অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন সুলক্ষণা।
০৮২৩
বিজয়েতা জানিয়েছিলেন, তাঁদের বাড়িতে মাঝেমধ্যেই যেতেন সঞ্জীব। তিনি নিরামিষ খেতে চাইতেন না। তাই সুলক্ষণার মা আলাদা ভাবে সঞ্জীবের জন্য আমিষ রান্না করতেন। সেই রান্না চেটেপুটে খেতেন অভিনেতা।
০৯২৩
সুলক্ষণার বাড়ি গিয়ে নাকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা নায়িকার সঙ্গে গল্প করতেন সঞ্জীব। এমনকি, প্রেমে আঘাত পেয়ে যখন সঞ্জীবের মন ভেঙেছিল তখনও নাকি সুলক্ষণার সঙ্গেই অধিকাংশ সময় কাটাতেন অভিনেতা।
১০২৩
বিজয়েতার দাবি, সুলক্ষণা খুব সাদাসিধে স্বভাবের ছিলেন। সঞ্জীবকে ছাড়া অন্য কোনও পুরুষের দিকে তাকাতেনও না। সঞ্জীবকে নিয়েই সারা দিন মেতে থাকতেন। সরল মনে সঞ্জীবকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছিলেন নায়িকা। কিন্তু নায়িকার প্রশ্নের নাকি সোজাসুজি কোনও উত্তর দিতেন না সঞ্জীব।
১১২৩
বিজয়েতা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমার দিদিকে (সুলক্ষণা) সঞ্জীব ভালবাসতেন কি না জানি না। তবে সুলক্ষণাকে খুবই পছন্দ করতেন তিনি। সর্ব ক্ষণ খুনসুটি করতেন সুলক্ষণার সঙ্গে। তবে দিদি যখনই বিয়ের প্রসঙ্গ তুলত, তখনই উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যেতেন সঞ্জীব। ‘দেখা যাবে, ভেবে দেখব’, এই ধরনের উত্তর দিতেন তিনি। কখনও স্পষ্ট ভাবে হ্যাঁ অথবা না বলেননি।’’
১২২৩
১৯৭২ সালে ‘সীতা অউর গীতা’ ছবির সেটে বলি অভিনেত্রী হেমা মালিনীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সঞ্জীবের। কানাঘুষো শোনা যায়, হেমার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন নায়ক। হেমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।
১৩২৩
সঞ্জীবের প্রস্তাব নাকি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন হেমা। অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, হেমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার সময় একটি বিশেষ শর্ত রেখেছিলেন সঞ্জীব। সেই শর্তে রাজি হতে পারেননি হেমা।
১৪২৩
হেমার কাছে সঞ্জীব দাবি করেছিলেন যে, বিয়ের পর নায়িকাকে অভিনয়জগৎ থেকে সরে যেতে হবে। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ারে বহু দূর এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন হেমা। শর্তে রাজি ছিলেন না বলে সঞ্জীবের বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নায়িকা।
১৫২৩
হেমার সঙ্গে সংসার করার স্বপ্ন চিরতরে ভেঙে গিয়েছিল সঞ্জীবের। সেই শোকে নাকি মদ-মাংসের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন অভিনেতা। অতিরিক্ত মদ্যপান করে স্বাস্থ্যও ভেঙে পড়েছিল তাঁর।
১৬২৩
বলিপাড়া সূত্রে খবর, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন সঞ্জীব। প্রথম হার্ট অ্যাটাকের পর আমেরিকায় অস্ত্রোপচারও করানো হয়েছিল সঞ্জীবের।
১৭২৩
বিজয়েতার ধারণা, সঞ্জীব হয়তো আগে থেকেই তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির কথা চিন্তা করেছিলেন। সুলক্ষণাকে বিয়ে করলেও তাঁদের দাম্পত্যজীবন যে দীর্ঘ হবে না, তা জানতেন অভিনেতা। সে কারণেই হয়তো নায়িকার বিয়ের প্রস্তাব বার বার ফিরিয়ে দিতেন তিনি।
১৮২৩
সঞ্জীবের সঙ্গে সংসার গড়তে পারবেন না বলে সুলক্ষণাও বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মানসিক অবস্থার প্রভাব পড়েছিল নায়িকার কেরিয়ারে। ধীরে ধীরে সুলক্ষণার কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব আসা কমতে থাকে। কাজ না পেয়ে মন আরও ভেঙে গিয়েছিল অভিনেত্রীর। ‘দো ওয়াক্ত কি রোটি’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল সুলক্ষণাকে। সেই ছবিতেও সুলক্ষণার সহ-অভিনেতা ছিলেন সঞ্জীব।
১৯২৩
১৯৮৫ সালের ৬ নভেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল সঞ্জীবের। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৪৭ বছর। বিজয়েতা জানিয়েছিলেন, সঞ্জীবের প্রয়াণের পর মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন সুলক্ষণা।
২০২৩
২০০৬ সালে বিজয়েতা তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন সুলক্ষণাকে। বিজয়েতার দাবি, নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখতেন সুলক্ষণা। কারও সঙ্গে কথা বলতে চাইতেন না তিনি। এর পর এক দিন বাথরুমে পা পিছলে পড়ে গিয়ে মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন নায়িকা। চার বার অস্ত্রোপচারও করানো হয়েছিল তাঁর। টানা ১৫ বছর শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি।
২১২৩
ভালবাসার মানুষকে জীবনসঙ্গী করতে না পারায় সারা জীবন অবিবাহিতা রয়ে গিয়েছিলেন সুলক্ষণা। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মারা যান তিনি। বেশ কিছু দিন ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন সুলক্ষণা।
২২২৩
বলিপাড়া সূত্রে খবর, মুম্বইয়ের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল সুলক্ষণাকে। হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ৭১ বছর।
২৩২৩
জীবনকালে সঞ্জীবের সঙ্গে সংসার বাঁধতে না পারলেও মৃত্যুর সময় মনের মানুষের সঙ্গে চিরকালের জন্য জুড়ে যান সুলক্ষণা। সঞ্জীব এবং তাঁর মৃত্যুদিন একই। নভেম্বর মাসের ৬ তারিখেই মারা যান সঞ্জীবের আত্মজন।