Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
The Nepal Royal Massacre

সাধুর অভিশাপ না রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র? এক রাতে গোটা রাজপরিবারকে শেষ করার নেপথ্যে কোন রহস্য?

কাচের দরজা বন্ধ করা ছিল ভিতর থেকে। কাচের ও পার থেকে দীপেন্দ্রকে রাজার দিকে গুলি চালাতে দেখেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা বাধা দিতে ছুটে আসেন। কিন্তু দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার আগেই শেষ হয়ে যায় সব।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৪
Share: Save:
০১ ২৮
এক রাতে শেষ হয়ে গিয়েছিল রাজা-রানি-সহ প্রায় গোটা একটা রাজপরিবার! ২২ বছর পরও সেই রহস্যের কোনও কিনারা হয়নি।

এক রাতে শেষ হয়ে গিয়েছিল রাজা-রানি-সহ প্রায় গোটা একটা রাজপরিবার! ২২ বছর পরও সেই রহস্যের কোনও কিনারা হয়নি।

০২ ২৮
নৈশভোজের পার্টিতে জমজম করছিল রাজপ্রাসাদ। নেপালের কাঠমাণ্ডুর নারায়ণহিতি দরবারের বিলিয়ার্ড রুমে জড়ো হয়েছিলেন রাজপরিবারের সদস্যরা। সেখানে চলছিল খানাপিনা। আচমকাই সেখানে চলে গুলি।

নৈশভোজের পার্টিতে জমজম করছিল রাজপ্রাসাদ। নেপালের কাঠমাণ্ডুর নারায়ণহিতি দরবারের বিলিয়ার্ড রুমে জড়ো হয়েছিলেন রাজপরিবারের সদস্যরা। সেখানে চলছিল খানাপিনা। আচমকাই সেখানে চলে গুলি।

০৩ ২৮
এলোপাথাড়ি বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নেপালের রাজা বীরেন্দ্র। তার পর একে একে তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য— স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন, বোনের স্বামী, সবাইকে হত্যা করা হয়। রাজপুরী মুহূর্তে বদলে যায় মৃত্যুপুরীতে।

এলোপাথাড়ি বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নেপালের রাজা বীরেন্দ্র। তার পর একে একে তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য— স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন, বোনের স্বামী, সবাইকে হত্যা করা হয়। রাজপুরী মুহূর্তে বদলে যায় মৃত্যুপুরীতে।

০৪ ২৮
২০০১ সালের ১ জুন ঘটেছিল ওই ঘটনা। নেপালের সরকারি তথ্য বলছে, রাজপ্রাসাদে সে দিন গুলি চালিয়েছিলেন নেপালের সেই সময়ের যুবরাজ, তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্রের বড় ছেলে দীপেন্দ্র। নেপালের জনতার আদরের ‘দিপ্পি’। যদিও নেপালের বহু সংবাদ সংস্থা এমনকি, রাজপরিবার বিশেষজ্ঞদের অনেকেও সেই তথ্য মেনে নিতে চাননি। বদলে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন তাঁরা।

২০০১ সালের ১ জুন ঘটেছিল ওই ঘটনা। নেপালের সরকারি তথ্য বলছে, রাজপ্রাসাদে সে দিন গুলি চালিয়েছিলেন নেপালের সেই সময়ের যুবরাজ, তৎকালীন রাজা বীরেন্দ্রের বড় ছেলে দীপেন্দ্র। নেপালের জনতার আদরের ‘দিপ্পি’। যদিও নেপালের বহু সংবাদ সংস্থা এমনকি, রাজপরিবার বিশেষজ্ঞদের অনেকেও সেই তথ্য মেনে নিতে চাননি। বদলে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন তাঁরা।

০৫ ২৮
রাজপরিবার জানিয়েছিল, দীপেন্দ্রর সঙ্গে বেশ কিছু দিন আগে থেকে মনোমালিন্য চলছিল পরিবারের। দীপেন্দ্রর পছন্দের পাত্রীকে নাকচ করে দিয়েছিলেন তাঁর মা রানি ঐশ্বর্যা।

রাজপরিবার জানিয়েছিল, দীপেন্দ্রর সঙ্গে বেশ কিছু দিন আগে থেকে মনোমালিন্য চলছিল পরিবারের। দীপেন্দ্রর পছন্দের পাত্রীকে নাকচ করে দিয়েছিলেন তাঁর মা রানি ঐশ্বর্যা।

০৬ ২৮
নেপালের এক অভিজাত পরিবারের কন্যা দেবযানী রানাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন দীপেন্দ্র। দেবযানী ছিলেন ব্রিটেনের কলেজে দীপেন্দ্রর সহপাঠী। তাঁদের জুটি সেই সময় নেপালে জনপ্রিয়ও হয়েছিল। কিন্তু বিয়েতে মত দেয়নি রাজপরিবার। তাই নিয়েই পরিবারের সঙ্গে মন কষাকষি চলছিল যুবরাজের।

নেপালের এক অভিজাত পরিবারের কন্যা দেবযানী রানাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন দীপেন্দ্র। দেবযানী ছিলেন ব্রিটেনের কলেজে দীপেন্দ্রর সহপাঠী। তাঁদের জুটি সেই সময় নেপালে জনপ্রিয়ও হয়েছিল। কিন্তু বিয়েতে মত দেয়নি রাজপরিবার। তাই নিয়েই পরিবারের সঙ্গে মন কষাকষি চলছিল যুবরাজের।

০৭ ২৮
আবার আরও একটি সূত্রে জানা গিয়েছিল, রাজা বীরেন্দ্র ক্রমেই সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের নীতি নিচ্ছিলেন। যেখানে রাজপরিবারের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ হবে। ফলে কমবে রাজার ক্ষমতা। এই বিষয় নিয়েও নাকি সিংহাসনের পরবর্তী দাবিদার দীপেন্দ্র বাবার উপর রেগে গিয়েছিলেন। যদিও এই কারণগুলি তাঁকে পরিবারকে হত্যা করার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল কি না তা জানা যায়নি।

আবার আরও একটি সূত্রে জানা গিয়েছিল, রাজা বীরেন্দ্র ক্রমেই সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের নীতি নিচ্ছিলেন। যেখানে রাজপরিবারের ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ হবে। ফলে কমবে রাজার ক্ষমতা। এই বিষয় নিয়েও নাকি সিংহাসনের পরবর্তী দাবিদার দীপেন্দ্র বাবার উপর রেগে গিয়েছিলেন। যদিও এই কারণগুলি তাঁকে পরিবারকে হত্যা করার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছিল কি না তা জানা যায়নি।

০৮ ২৮
রাজপরিবারের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, দীপেন্দ্র সে দিন পার্টি চলাকালীন হুইস্কি পান করে এবং গাঁজা সেবন করে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় হাজির হন বিলিয়ার্ড রুমে। তাঁর হাতে ধরা ছিল বন্দুক। কিন্তু তার পরও কেউ আটকায়নি দীপেন্দ্রকে। আর এখান থেকেই উঠে এসেছে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব।

রাজপরিবারের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, দীপেন্দ্র সে দিন পার্টি চলাকালীন হুইস্কি পান করে এবং গাঁজা সেবন করে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় হাজির হন বিলিয়ার্ড রুমে। তাঁর হাতে ধরা ছিল বন্দুক। কিন্তু তার পরও কেউ আটকায়নি দীপেন্দ্রকে। আর এখান থেকেই উঠে এসেছে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব।

০৯ ২৮
বন্দুক সংগ্রহের শখ ছিল দীপেন্দ্রের। রাজবাড়ির বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সেই জন্যই কেউ সন্দেহ করেননি তাঁকে। তা ছাড়া রাজপরিবারের সদস্যদের বাইরে ওই পার্টিতে কোনও অতিথি না থাকায় সে ভাবে নিরাপত্তারক্ষীও মোতায়েন ছিল না।

বন্দুক সংগ্রহের শখ ছিল দীপেন্দ্রের। রাজবাড়ির বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সেই জন্যই কেউ সন্দেহ করেননি তাঁকে। তা ছাড়া রাজপরিবারের সদস্যদের বাইরে ওই পার্টিতে কোনও অতিথি না থাকায় সে ভাবে নিরাপত্তারক্ষীও মোতায়েন ছিল না।

১০ ২৮
কাচের দরজা বন্ধ করা ছিল ভিতর থেকে। কাচের ও পার থেকে দীপেন্দ্রকে রাজার দিকে গুলি চালাতে দেখেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা বাধা দিতে ছুটে আসেন। কিন্তু দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার আগেই শেষ হয়ে যায় সব। দীপেন্দ্রের বন্দুকের এলোপাথাড়ি গুলিতে লুটিয়ে পড়েন অনেকেই। এমনকি, মা, রানি ঐশ্বর্যাকেও হত্যা করেন তিনি।

কাচের দরজা বন্ধ করা ছিল ভিতর থেকে। কাচের ও পার থেকে দীপেন্দ্রকে রাজার দিকে গুলি চালাতে দেখেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা বাধা দিতে ছুটে আসেন। কিন্তু দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার আগেই শেষ হয়ে যায় সব। দীপেন্দ্রের বন্দুকের এলোপাথাড়ি গুলিতে লুটিয়ে পড়েন অনেকেই। এমনকি, মা, রানি ঐশ্বর্যাকেও হত্যা করেন তিনি।

১১ ২৮
রাজপ্রাসাদের তরফে জানানো হয়েছিল, রানিকে হত্যা করার আগে দীপেন্দ্রর ছোট ভাই দীপেন্দ্র আর তঁদের মায়ের মাঝে দাঁড়িয়ে বাধা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘মারতে হলে আগে আমাকে মারো। মাকে ছেড়ে দাও।’’ কিন্তু দীপেন্দ্র অবলীলায় দু’জনকেই হত্যা করেন। শেষে নিজেকেও গুলি করেন তিনি।

রাজপ্রাসাদের তরফে জানানো হয়েছিল, রানিকে হত্যা করার আগে দীপেন্দ্রর ছোট ভাই দীপেন্দ্র আর তঁদের মায়ের মাঝে দাঁড়িয়ে বাধা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘মারতে হলে আগে আমাকে মারো। মাকে ছেড়ে দাও।’’ কিন্তু দীপেন্দ্র অবলীলায় দু’জনকেই হত্যা করেন। শেষে নিজেকেও গুলি করেন তিনি।

১২ ২৮
গুরুতর আহত হন দীপেন্দ্র। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই কোমায় চলে যান তিনি।

গুরুতর আহত হন দীপেন্দ্র। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই কোমায় চলে যান তিনি।

১৩ ২৮
রাজার মৃত্যু হওয়ায় রাজবাড়ির নিয়ম মেনে দীপেন্দ্ররই রাজা হওয়ার কথা। কোমায় থাকাকালীন দীপেন্দ্রকে রাজা বলে ঘোষণাও করা হয়। কিন্তু রাজা হিসাবে দীপেন্দ্রের মেয়াদ শুরু না হতেই শেষ হয়ে যায়।

রাজার মৃত্যু হওয়ায় রাজবাড়ির নিয়ম মেনে দীপেন্দ্ররই রাজা হওয়ার কথা। কোমায় থাকাকালীন দীপেন্দ্রকে রাজা বলে ঘোষণাও করা হয়। কিন্তু রাজা হিসাবে দীপেন্দ্রের মেয়াদ শুরু না হতেই শেষ হয়ে যায়।

১৪ ২৮
তিন দিন পর মৃত্যু হয় দীপেন্দ্রের। নতুন রাজা হন দীপেন্দ্রের কাকা জ্ঞানেন্দ্র। তার পরেই শুরু হয় নেপালের রাজপরিবারের বিরুদ্ধে নেপালের জনগণের বিক্ষোভ। সম্ভবত নেপালের রাজতন্ত্রের শেষের সেটাই শুরু। একদা নেপালের রাজবাড়ির সদস্যদের ‘দেবতার দূত’ ভাবা নেপালের জনতা রাজপরিবারকে ১৫ দিন সময় দেয় রাজপ্রাসাদ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য।

তিন দিন পর মৃত্যু হয় দীপেন্দ্রের। নতুন রাজা হন দীপেন্দ্রের কাকা জ্ঞানেন্দ্র। তার পরেই শুরু হয় নেপালের রাজপরিবারের বিরুদ্ধে নেপালের জনগণের বিক্ষোভ। সম্ভবত নেপালের রাজতন্ত্রের শেষের সেটাই শুরু। একদা নেপালের রাজবাড়ির সদস্যদের ‘দেবতার দূত’ ভাবা নেপালের জনতা রাজপরিবারকে ১৫ দিন সময় দেয় রাজপ্রাসাদ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য।

১৫ ২৮
২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয় নেপাল। শেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্রর বিরুদ্ধে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছিল নেপালের জনগণের মধ্যে। নেপালের রাজপরিবারের হত্যার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব তত দিনে প্রভাব ফেলেছে জনমানসেও। যা নিয়ে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে পাকাপাকি প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছিল সংবাদমাধ্যমগুলি।

২০০৮ সালে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয় নেপাল। শেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্রর বিরুদ্ধে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছিল নেপালের জনগণের মধ্যে। নেপালের রাজপরিবারের হত্যার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব তত দিনে প্রভাব ফেলেছে জনমানসেও। যা নিয়ে বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ দেখিয়ে পাকাপাকি প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছিল সংবাদমাধ্যমগুলি।

১৬ ২৮
 প্রশ্ন তোলার অবশ্য অবকাশও ছিল। রাজা বীরেন্দ্রর মৃত্যুর পর যে জ্ঞানেন্দ্র রাজা হয়ে বসেছিলেন, তাঁর পরিবারও সে দিনের সেই নৈশভোজের পার্টিতে উপস্থিত ছিল। কিন্তু তাঁদের কেউ সে দিনের ঘটনায় মারা যাননি। গুরুতর জখমও হননি।

প্রশ্ন তোলার অবশ্য অবকাশও ছিল। রাজা বীরেন্দ্রর মৃত্যুর পর যে জ্ঞানেন্দ্র রাজা হয়ে বসেছিলেন, তাঁর পরিবারও সে দিনের সেই নৈশভোজের পার্টিতে উপস্থিত ছিল। কিন্তু তাঁদের কেউ সে দিনের ঘটনায় মারা যাননি। গুরুতর জখমও হননি।

১৭ ২৮
জ্ঞানেন্দ্র নিজে ওই পার্টিতে হাজির ছিলেন না। তবে তাঁর স্ত্রী-পুত্র-নিকটাত্মীয়েরা ছিলেন। গুলি লেগেছিল জ্ঞানেন্দ্রর স্ত্রীর। তবে তা প্রাণঘাতী ছিল না।

জ্ঞানেন্দ্র নিজে ওই পার্টিতে হাজির ছিলেন না। তবে তাঁর স্ত্রী-পুত্র-নিকটাত্মীয়েরা ছিলেন। গুলি লেগেছিল জ্ঞানেন্দ্রর স্ত্রীর। তবে তা প্রাণঘাতী ছিল না।

১৮ ২৮
যে দেবযানীকে নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত বলে বোঝাতে চেয়েছিল রাজপরিবার, তিনি জানিয়েছিলেন, দীপেন্দ্র সে দিন মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এমনকি, রাজবাড়িতে তাঁর নিজের ঘরের ফোন নম্বর থেকে তিন বার ফোনও করেছিলেন তাঁকে। কিন্তু মদ্যপান করায় ঠিক করে কথাই বলতে পারছিলেন না দীপেন্দ্র। যদিও শেষ বার ফোনে তাঁকে জানিয়েছিলেন, তিনি ঘুমোতে যাচ্ছেন।

যে দেবযানীকে নিয়ে এই ঘটনার সূত্রপাত বলে বোঝাতে চেয়েছিল রাজপরিবার, তিনি জানিয়েছিলেন, দীপেন্দ্র সে দিন মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এমনকি, রাজবাড়িতে তাঁর নিজের ঘরের ফোন নম্বর থেকে তিন বার ফোনও করেছিলেন তাঁকে। কিন্তু মদ্যপান করায় ঠিক করে কথাই বলতে পারছিলেন না দীপেন্দ্র। যদিও শেষ বার ফোনে তাঁকে জানিয়েছিলেন, তিনি ঘুমোতে যাচ্ছেন।

১৯ ২৮
ষড়যন্ত্রের তত্ত্বে বিশ্বাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন, যিনি মত্ত অবস্থায় কথাই বলতে পারছিলেন না, তিনি সঠিক লক্ষ্যে বন্দুক চালিয়ে বেছে বেছে নিজের পরিবারের সবাইকে হত্যা করলেন কী ভাবে?

ষড়যন্ত্রের তত্ত্বে বিশ্বাসীরা প্রশ্ন তুলেছেন, যিনি মত্ত অবস্থায় কথাই বলতে পারছিলেন না, তিনি সঠিক লক্ষ্যে বন্দুক চালিয়ে বেছে বেছে নিজের পরিবারের সবাইকে হত্যা করলেন কী ভাবে?

২০ ২৮
২২ বছর আগের সেই ঘটনাকে ‘নেপালের কেনেডি হত্যা’ বলা হয়। ঘটনাটিকে একটি অত্যন্ত ঘোরালো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছিলেন অনেকেই। এমনকি, নির্দিষ্ট দিনে নেপালের পরবর্তী রাজা জ্ঞানেন্দ্রর ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকাটাও সেই ষড়যন্ত্রেরই অঙ্গ বলে মনে করেন অনেকে।

২২ বছর আগের সেই ঘটনাকে ‘নেপালের কেনেডি হত্যা’ বলা হয়। ঘটনাটিকে একটি অত্যন্ত ঘোরালো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছিলেন অনেকেই। এমনকি, নির্দিষ্ট দিনে নেপালের পরবর্তী রাজা জ্ঞানেন্দ্রর ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকাটাও সেই ষড়যন্ত্রেরই অঙ্গ বলে মনে করেন অনেকে।

২১ ২৮
তবে জ্ঞানেন্দ্র না থাকলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর পুত্র পারস। ষড়যন্ত্রের তত্ত্বে বিশ্বাসীরা বলেছিলেন, হাসপাতালে কোমায় থাকা দীপেন্দ্রের লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়েছিলেন এই পারসই। বস্তুত পারসের সাহায্য নিয়ে দূর থেকে গোটা বিষয়টি জ্ঞানেন্দ্রই পরিচালনা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল একটি মহল।

তবে জ্ঞানেন্দ্র না থাকলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর পুত্র পারস। ষড়যন্ত্রের তত্ত্বে বিশ্বাসীরা বলেছিলেন, হাসপাতালে কোমায় থাকা দীপেন্দ্রের লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়েছিলেন এই পারসই। বস্তুত পারসের সাহায্য নিয়ে দূর থেকে গোটা বিষয়টি জ্ঞানেন্দ্রই পরিচালনা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল একটি মহল।

২২ ২৮
অদ্ভুত ভাবে এই ঘটনার তদন্তই হয়নি সে ভাবে। তদন্ত শুরু হলেও তা সাত দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়।

অদ্ভুত ভাবে এই ঘটনার তদন্তই হয়নি সে ভাবে। তদন্ত শুরু হলেও তা সাত দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়।

২৩ ২৮
যদিও বেশ কয়েক জন সাক্ষী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, দীপেন্দ্রর মুখোশ পরে ওই পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন অন্য বন্দুকধারীরাও। তাঁরাই পার্টিতে গুলি চালিয়েছিলেন। হত্যা করেছিলেন দীপেন্দ্রকেও। যদিও এই সমস্ত দাবির কোনও প্রমাণ মেলেনি।

যদিও বেশ কয়েক জন সাক্ষী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, দীপেন্দ্রর মুখোশ পরে ওই পার্টিতে হাজির হয়েছিলেন অন্য বন্দুকধারীরাও। তাঁরাই পার্টিতে গুলি চালিয়েছিলেন। হত্যা করেছিলেন দীপেন্দ্রকেও। যদিও এই সমস্ত দাবির কোনও প্রমাণ মেলেনি।

২৪ ২৮
বরং এই সব তত্ত্ব প্রকাশ করার জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন নেপালের দুই সংবাদ সংস্থার অধিকর্তা। যদিও চাপের মুখে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল রাজপরিবার।

বরং এই সব তত্ত্ব প্রকাশ করার জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন নেপালের দুই সংবাদ সংস্থার অধিকর্তা। যদিও চাপের মুখে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল রাজপরিবার।

২৫ ২৮
তবে নেপালের প্রাচীন ইতিহাসের বিশ্বাসীরা এই ঘটনাকে একটি ‘পুরনো অভিশাপের ফল’ বলেও বর্ণনা করেছেন। সেই প্রাচীন কাহিনি অনুযায়ী নেপালের রাজা পৃথ্বীনারায়ণ শাহকে নাকি অভিশাপ দিয়েছিলেন এক সন্ন্যাসী।

তবে নেপালের প্রাচীন ইতিহাসের বিশ্বাসীরা এই ঘটনাকে একটি ‘পুরনো অভিশাপের ফল’ বলেও বর্ণনা করেছেন। সেই প্রাচীন কাহিনি অনুযায়ী নেপালের রাজা পৃথ্বীনারায়ণ শাহকে নাকি অভিশাপ দিয়েছিলেন এক সন্ন্যাসী।

২৬ ২৮
রাজা পৃথ্বীনারায়ণ সন্ন্যাসীকে খাবার দিলে তিনি সেটি কিছুটা খেয়ে রাজাকে ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এটি প্রসাদ। এ বার এটা তুমি খেয়ে নাও।’’ রাজা তখন সবে তিনটি রাজ্য জয় করে ফিরেছিলেন। সন্ন্যাসীর কথায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। খাবারটি মাটিতে ছুড়ে ফেলে তিনি বলেন, তিনি এঁটো খাবেন কেন?

রাজা পৃথ্বীনারায়ণ সন্ন্যাসীকে খাবার দিলে তিনি সেটি কিছুটা খেয়ে রাজাকে ফিরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এটি প্রসাদ। এ বার এটা তুমি খেয়ে নাও।’’ রাজা তখন সবে তিনটি রাজ্য জয় করে ফিরেছিলেন। সন্ন্যাসীর কথায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। খাবারটি মাটিতে ছুড়ে ফেলে তিনি বলেন, তিনি এঁটো খাবেন কেন?

২৭ ২৮
কথিত আছে, সেই সময় সন্ন্যাসী তাঁকে বলেছিলেন, ১০ পুরুষ পর রাজার রাজত্ব শেষ হয়ে যাবে। বীরেন্দ্র ছিলেন সেই পৃথ্বী শাহের একাদশতম বংশধর। তাঁর পরে জ্ঞানেন্দ্র রাজা হলেও সেই রাজত্ব টেকেনি। নেপালে রাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

কথিত আছে, সেই সময় সন্ন্যাসী তাঁকে বলেছিলেন, ১০ পুরুষ পর রাজার রাজত্ব শেষ হয়ে যাবে। বীরেন্দ্র ছিলেন সেই পৃথ্বী শাহের একাদশতম বংশধর। তাঁর পরে জ্ঞানেন্দ্র রাজা হলেও সেই রাজত্ব টেকেনি। নেপালে রাজতন্ত্র ভেঙে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

২৮ ২৮
তবে কি সন্ন্যাসীর অভিশাপেই ধ্বংস হল নেপালের রাজবংশ? রহস্যের সমাধান এখনও খুঁজে চলেছে নেপালের জনগণ।

তবে কি সন্ন্যাসীর অভিশাপেই ধ্বংস হল নেপালের রাজবংশ? রহস্যের সমাধান এখনও খুঁজে চলেছে নেপালের জনগণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE