Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Tehrik-e Taliban

এক সময় মালাই-মাখন খাওয়ানো পাক তালিবানই এখন ইসলামাবাদের হাড় হিম করা দুশমন!

এক সময় ইসলামাবাদের মদতপুষ্ট ‘তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান’ নামে জঙ্গি সংগঠনই এখন ভাঙতে চাইছে পাকিস্তানকে। হয়ে উঠেছে পাক সরকারের বড় মাথাব্যথার কারণ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ০৮:১৭
Share: Save:
০১ ২৬
বছর ২২ আগে আফগানিস্তানে যখন বড়সড় রাজনৈতিক পালাবদল চলছিল, সেই সময়ে পাক-আফগান সীমান্তে পোঁতা হয়েছিল ‘তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান’ (টিটিপি) নামে এক জঙ্গি সংগঠনের বীজ। যারা সাধারণ ভাবে পরিচিত পাক তালিবান বা পাকিস্তান তালিবান নামে। এক সময় ইসলামাবাদের রাজনৈতিক শক্তির একটি বড় অংশের মদতপুষ্ট সেই জঙ্গি সংগঠনই এখন হয়ে উঠেছে ইসলামাবাদের ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’।

বছর ২২ আগে আফগানিস্তানে যখন বড়সড় রাজনৈতিক পালাবদল চলছিল, সেই সময়ে পাক-আফগান সীমান্তে পোঁতা হয়েছিল ‘তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান’ (টিটিপি) নামে এক জঙ্গি সংগঠনের বীজ। যারা সাধারণ ভাবে পরিচিত পাক তালিবান বা পাকিস্তান তালিবান নামে। এক সময় ইসলামাবাদের রাজনৈতিক শক্তির একটি বড় অংশের মদতপুষ্ট সেই জঙ্গি সংগঠনই এখন হয়ে উঠেছে ইসলামাবাদের ‘ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন’।

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ২৬
রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে এখন টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে পাকিস্তানে। এই অবস্থায় নখদাঁত বার করে পাকিস্তানকে টুকরো করতে উদ্যত টিটিপি। ইসলামাবাদের সার্বভৌমত্বকে প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ওই জঙ্গি সংগঠন।

রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে এখন টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে পাকিস্তানে। এই অবস্থায় নখদাঁত বার করে পাকিস্তানকে টুকরো করতে উদ্যত টিটিপি। ইসলামাবাদের সার্বভৌমত্বকে প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ওই জঙ্গি সংগঠন।

ছবি: সংগৃহীত।

০৩ ২৬
আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের অন্তত ৩০টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে অন্যতম এই টিটিপি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৭ সালে। উপজাতি নেতা বায়তুল্লা মেহসুদের হাত ধরে। তার বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছিল সলতে পাকানোর কাজ। নেপথ্যে ছিলেন সত্তরের দশকে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে জন্ম নেওয়া মেহসুদই। পরবর্তী কালে আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃত্যু হয় তাঁর।

আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের অন্তত ৩০টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে অন্যতম এই টিটিপি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৭ সালে। উপজাতি নেতা বায়তুল্লা মেহসুদের হাত ধরে। তার বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছিল সলতে পাকানোর কাজ। নেপথ্যে ছিলেন সত্তরের দশকে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে জন্ম নেওয়া মেহসুদই। পরবর্তী কালে আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃত্যু হয় তাঁর।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ২৬
আমেরিকার মাটিতে আল কায়দার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর আফগানিস্তানে তখন চলছে আমেরিকার সামরিক অভিযান। মূল আফগান ভূখণ্ড ছেড়ে বহু তালিবান যোদ্ধা তখন আশ্রয় নিয়েছেন পাক-আফগান সীমান্তের খাইবার-পাখতুনখাওয়া এলাকায়। আশ্রয় নিয়েছিলেন অজস্র উজবেক এবং চেচেন জঙ্গিও। তাঁদের সাহায্য নিয়ে পাক-আফগানিস্তান সীমান্তের একাধিক গোষ্ঠীকে একত্রিত করে টিটিপি গড়ে তোলেন মেহসুদ। ওয়াজিরিস্তান হয়ে ওঠে টিটিপির ঘাঁটি। অনেকে ওই এলাকাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘যোদ্ধাদের প্রজননক্ষেত্র’ নামে।

আমেরিকার মাটিতে আল কায়দার টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর আফগানিস্তানে তখন চলছে আমেরিকার সামরিক অভিযান। মূল আফগান ভূখণ্ড ছেড়ে বহু তালিবান যোদ্ধা তখন আশ্রয় নিয়েছেন পাক-আফগান সীমান্তের খাইবার-পাখতুনখাওয়া এলাকায়। আশ্রয় নিয়েছিলেন অজস্র উজবেক এবং চেচেন জঙ্গিও। তাঁদের সাহায্য নিয়ে পাক-আফগানিস্তান সীমান্তের একাধিক গোষ্ঠীকে একত্রিত করে টিটিপি গড়ে তোলেন মেহসুদ। ওয়াজিরিস্তান হয়ে ওঠে টিটিপির ঘাঁটি। অনেকে ওই এলাকাকে আখ্যা দিয়েছেন ‘যোদ্ধাদের প্রজননক্ষেত্র’ নামে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ২৬
বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্মলগ্ন থেকে এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালিবান গোষ্ঠী এবং আল কায়দার মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছে টিটিপি। পাশাপাশি, টিটিপিকে নানা সাহায্য দিয়ে পুষ্ট করেছিল পাকিস্তানের রাজনৈতিক শক্তির একটি বড় অংশও। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই জঙ্গিগোষ্ঠীটি আসলে ৯/১১ হামলার পর আল কায়দার জিহাদি নীতিরই অন্যতম ফসল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্মলগ্ন থেকে এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালিবান গোষ্ঠী এবং আল কায়দার মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছে টিটিপি। পাশাপাশি, টিটিপিকে নানা সাহায্য দিয়ে পুষ্ট করেছিল পাকিস্তানের রাজনৈতিক শক্তির একটি বড় অংশও। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই জঙ্গিগোষ্ঠীটি আসলে ৯/১১ হামলার পর আল কায়দার জিহাদি নীতিরই অন্যতম ফসল।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ২৬
বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবদ্দশায় আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি এবং আফগান তালিবান নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল টিটিপি নেতৃত্বের। আফগানিস্তানে আমেরিকার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চলাকালীন টিটিপি সেখানে যোদ্ধা সরবরাহ করত বলেও মত অনেকেরই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবদ্দশায় আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি এবং আফগান তালিবান নেতা মোল্লা মহম্মদ ওমরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল টিটিপি নেতৃত্বের। আফগানিস্তানে আমেরিকার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চলাকালীন টিটিপি সেখানে যোদ্ধা সরবরাহ করত বলেও মত অনেকেরই।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ২৬
টিটিপির ঘোষিত উদ্দেশ্য পাক-আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী উপজাতি এলাকা (ফেডারেলি অ্যাডমিনিস্টার্ড ট্রাইবাল এরিয়া বা ফাটা) এবং খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশে স্বশাসন চালু করা। পাশাপাশি, ওই সব এলাকায় শরিয়তি আইন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করাও এই সংগঠনের ঘোষিত লক্ষ্য।

টিটিপির ঘোষিত উদ্দেশ্য পাক-আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী উপজাতি এলাকা (ফেডারেলি অ্যাডমিনিস্টার্ড ট্রাইবাল এরিয়া বা ফাটা) এবং খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশে স্বশাসন চালু করা। পাশাপাশি, ওই সব এলাকায় শরিয়তি আইন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করাও এই সংগঠনের ঘোষিত লক্ষ্য।

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ২৬
অতি সম্প্রতি উত্তর পাকিস্তানে সমান্তরাল সরকার গঠনের ঘোষণা করে দিয়েছে টিটিপি। এর জন্য পৃথক মন্ত্রকও ঘোষণা করা হয়েছে। টিটিপির মুখপত্র ‘দ্য খোরাসান ডায়েরি’তে প্রতিরক্ষা, গোয়েন্দা, বিচার, অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, তথ্য, ফতোয়া জারি, পরিকাঠামো নির্মাণের মতো কয়েকটি মন্ত্রকের কথা লেখা হয়েছে।

অতি সম্প্রতি উত্তর পাকিস্তানে সমান্তরাল সরকার গঠনের ঘোষণা করে দিয়েছে টিটিপি। এর জন্য পৃথক মন্ত্রকও ঘোষণা করা হয়েছে। টিটিপির মুখপত্র ‘দ্য খোরাসান ডায়েরি’তে প্রতিরক্ষা, গোয়েন্দা, বিচার, অর্থনীতি, রাজনীতি, শিক্ষা, তথ্য, ফতোয়া জারি, পরিকাঠামো নির্মাণের মতো কয়েকটি মন্ত্রকের কথা লেখা হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ২৬
উত্তর পাকিস্তানকে দু’টি প্রদেশে ভাগ করাও লক্ষ্য টিটিপির। তার মধ্যে একটি হল গিলগিট, বাল্টিস্তান এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কিছু এলাকা নিয়ে। অপরটি পাক পঞ্জাব সংলগ্ন এলাকা এবং পাক পঞ্জাবের ডেরা গাজি খান এলাকা নিয়ে।

উত্তর পাকিস্তানকে দু’টি প্রদেশে ভাগ করাও লক্ষ্য টিটিপির। তার মধ্যে একটি হল গিলগিট, বাল্টিস্তান এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কিছু এলাকা নিয়ে। অপরটি পাক পঞ্জাব সংলগ্ন এলাকা এবং পাক পঞ্জাবের ডেরা গাজি খান এলাকা নিয়ে।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ২৬
এ হেন জঙ্গি গোষ্ঠী টিটিপিকে নিয়ে বরাবরই স্ববিরোধী অবস্থান পাকিস্তানের। গত বছর ডিসেম্বরে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে টিটিপির নাম না-করে বলা হয়, ‘জঙ্গি’রা পাকিস্তানের শত্রু। কিন্তু টিটিপির সঙ্গে শান্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় আলোচনাও চালিয়ে এসেছে পাকিস্তান।

এ হেন জঙ্গি গোষ্ঠী টিটিপিকে নিয়ে বরাবরই স্ববিরোধী অবস্থান পাকিস্তানের। গত বছর ডিসেম্বরে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে টিটিপির নাম না-করে বলা হয়, ‘জঙ্গি’রা পাকিস্তানের শত্রু। কিন্তু টিটিপির সঙ্গে শান্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় আলোচনাও চালিয়ে এসেছে পাকিস্তান।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ২৬
গত বছর ২৩ জুন পাক সংসদে সরকার পক্ষের তরফে বলা হয়, ‘সংবিধানের আলো’য় চলছে ওই আলোচনা। তার ঠিক আগের বছর, ১১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘ডন’-এ প্রকাশিত হওয়া সাক্ষাৎকারে টিটিপির মতো নৃশংস জঙ্গি গোষ্ঠীকে ক্ষমা করার বার্তা দেন সেই দেশের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। অথচ এই টিটিপি বার বার রক্ত ঝরিয়েছে পাকিস্তানে।

গত বছর ২৩ জুন পাক সংসদে সরকার পক্ষের তরফে বলা হয়, ‘সংবিধানের আলো’য় চলছে ওই আলোচনা। তার ঠিক আগের বছর, ১১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘ডন’-এ প্রকাশিত হওয়া সাক্ষাৎকারে টিটিপির মতো নৃশংস জঙ্গি গোষ্ঠীকে ক্ষমা করার বার্তা দেন সেই দেশের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। অথচ এই টিটিপি বার বার রক্ত ঝরিয়েছে পাকিস্তানে।

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ২৬
বহু দিন ধরেই সন্ত্রাসবাদকে নানা ভাবে প্রশ্রয় দেওয়াকে ‘জাতীয় নীতি’ হিসাবে নিয়েছে পাকিস্তান। সে দেশের বুকে একাধিক হামলা চালানো টিটিপিকেও এক সময় মদত দিয়েছে ইসলামাবাদ। আফগান তালিবানরা তাদের দেশের ভূখণ্ডে ‘লালনপালন’ করছে টিটিপিকে। অথচ কয়েক বছর আগে সেই তালিবানরা আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতায় আসার পর জনসমক্ষে উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

বহু দিন ধরেই সন্ত্রাসবাদকে নানা ভাবে প্রশ্রয় দেওয়াকে ‘জাতীয় নীতি’ হিসাবে নিয়েছে পাকিস্তান। সে দেশের বুকে একাধিক হামলা চালানো টিটিপিকেও এক সময় মদত দিয়েছে ইসলামাবাদ। আফগান তালিবানরা তাদের দেশের ভূখণ্ডে ‘লালনপালন’ করছে টিটিপিকে। অথচ কয়েক বছর আগে সেই তালিবানরা আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতায় আসার পর জনসমক্ষে উল্লাস প্রকাশ করেছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ২৬
রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে পাকিস্তানে ১৭৯ জন সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছিলেন টিটিপির হামলায়। তবে হত্যালীলার সেই ‘রেকর্ড’ ভেঙে যেতে পারে চলতি বছরে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসেই পেশোয়ারের একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে শতাধিক মানুষকে খুন করেছে তারা।

রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে পাকিস্তানে ১৭৯ জন সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছিলেন টিটিপির হামলায়। তবে হত্যালীলার সেই ‘রেকর্ড’ ভেঙে যেতে পারে চলতি বছরে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসেই পেশোয়ারের একটি মসজিদে হামলা চালিয়ে শতাধিক মানুষকে খুন করেছে তারা।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ২৬
প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাক সেনাবাহিনী এবং সাধারণ মানুষের উপর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে টিটিপি। তথ্য বলছে,  ২০০৭ সাল থেকে শতাধিক হামলা এবং কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ওই জঙ্গি সংগঠনটি। ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর খুন হয়ে যান পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেত্রী এবং সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো। তাঁকে গুলি করে খুনের পিছনে টিটিপি নেতা মেহসুদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাক সেনাবাহিনী এবং সাধারণ মানুষের উপর একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে টিটিপি। তথ্য বলছে, ২০০৭ সাল থেকে শতাধিক হামলা এবং কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ওই জঙ্গি সংগঠনটি। ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর খুন হয়ে যান পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেত্রী এবং সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো। তাঁকে গুলি করে খুনের পিছনে টিটিপি নেতা মেহসুদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ২৬
প্রতিষ্ঠার পরের বছর ইসলামাবাদের ‘ম্যারিয়ট হোটেল’ এবং ২০০৯ সালে পেশোয়ারের ‘পার্ল কন্টিনেন্টাল’ হোটেলে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে টিটিপির বিরুদ্ধে।

প্রতিষ্ঠার পরের বছর ইসলামাবাদের ‘ম্যারিয়ট হোটেল’ এবং ২০০৯ সালে পেশোয়ারের ‘পার্ল কন্টিনেন্টাল’ হোটেলে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে টিটিপির বিরুদ্ধে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ২৬
সংগঠন প্রতিষ্ঠার বছর দু’য়েকের মাথায় নিহত হন মেহসুদ। এর পর টিটিপির প্রধান হন হাকিমুল্লা মেহসুদ। নৃশংসতা চালানোর একের পর এক নজির গড়ে ওঠে হাকিমুল্লার আমলেও। ২০১০ সালে টিটিপিকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে তকমা দেয় আমেরিকা।

সংগঠন প্রতিষ্ঠার বছর দু’য়েকের মাথায় নিহত হন মেহসুদ। এর পর টিটিপির প্রধান হন হাকিমুল্লা মেহসুদ। নৃশংসতা চালানোর একের পর এক নজির গড়ে ওঠে হাকিমুল্লার আমলেও। ২০১০ সালে টিটিপিকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে তকমা দেয় আমেরিকা।

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ২৬
২০১২ সালে সোয়াত উপত্যকায় স্কুলছাত্রী মালালা ইউসুফজাইয়ের (পরবর্তী কালে নোবেল জয়ী) উপর হামলা চালায় টিটিপি। পাশাপাশি, পাকিস্তানের পোলিও দূরীকরণ কর্মসূচিতেও একের পর এক রক্তক্ষয়ী হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে ওই জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে।

২০১২ সালে সোয়াত উপত্যকায় স্কুলছাত্রী মালালা ইউসুফজাইয়ের (পরবর্তী কালে নোবেল জয়ী) উপর হামলা চালায় টিটিপি। পাশাপাশি, পাকিস্তানের পোলিও দূরীকরণ কর্মসূচিতেও একের পর এক রক্তক্ষয়ী হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে ওই জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ২৬
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেশোয়ারের ‘অল সেন্ট চার্চে’ আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ১২০ জনকে হত্যা করে টিটিপি। ওই বছরের নভেম্বরেই কয়েকটি সূত্র মারফত জানা যায়, আমেরিকার ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন টিটিপি প্রধান হাকিমুল্লা। কিন্তু সেই খবর ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে জঙ্গি সংগঠনটি। তবে আশ্চর্যের বিষয়, তার পর থেকে আর প্রকাশ্যে আসেননি হাকিমুল্লা। টিটিপির অবশ্য এখনও দাবি করে যাচ্ছে, হাকিমুল্লা জীবিতই রয়েছেন।

২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পেশোয়ারের ‘অল সেন্ট চার্চে’ আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ১২০ জনকে হত্যা করে টিটিপি। ওই বছরের নভেম্বরেই কয়েকটি সূত্র মারফত জানা যায়, আমেরিকার ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন টিটিপি প্রধান হাকিমুল্লা। কিন্তু সেই খবর ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে জঙ্গি সংগঠনটি। তবে আশ্চর্যের বিষয়, তার পর থেকে আর প্রকাশ্যে আসেননি হাকিমুল্লা। টিটিপির অবশ্য এখনও দাবি করে যাচ্ছে, হাকিমুল্লা জীবিতই রয়েছেন।

ছবি: সংগৃহীত।

১৯ ২৬
এর পর ২০১৪ সালের ৮ জুন করাচিতে জিন্না আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালায় টিটিপি। বিমানবন্দর মুক্ত করতে প্রায় ১০ ঘণ্টার অভিযান চালাতে হয় পাক সেনাবাহিনীকে।

এর পর ২০১৪ সালের ৮ জুন করাচিতে জিন্না আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলা চালায় টিটিপি। বিমানবন্দর মুক্ত করতে প্রায় ১০ ঘণ্টার অভিযান চালাতে হয় পাক সেনাবাহিনীকে।

ছবি: সংগৃহীত।

২০ ২৬
ওই বছরই টিটিপির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে পাক সেনা। ২০১৪ সালের ১৫ জুন উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাক-আফগানিস্তান সীমান্ত বরাবর সেনা অভিযান চালানো হয়। নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন জার্ব-ই আজব’। যার অর্থ ‘তীক্ষ্ণ এবং ধারালো আক্রমণ’। ওই অভিযানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় টিটিপির।

ওই বছরই টিটিপির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে পাক সেনা। ২০১৪ সালের ১৫ জুন উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাক-আফগানিস্তান সীমান্ত বরাবর সেনা অভিযান চালানো হয়। নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন জার্ব-ই আজব’। যার অর্থ ‘তীক্ষ্ণ এবং ধারালো আক্রমণ’। ওই অভিযানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় টিটিপির।

ছবি: সংগৃহীত।

২১ ২৬
কিন্তু ওই অভিযানের ক্ষয়ক্ষতি সামলে আবার কামড় বসায় টিটিপি। ‘অপারেশন জার্ব-ই আজব’-এর   প্রতিশোধ নিতে ওই বছরেই ডিসেম্বর মাসে পেশোয়ারের সেনা স্কুলে ভয়াবহ হামলা চালায় তারা। মৃত্যু হয় বহু পড়ুয়া-সহ অন্তত ১৫০ জনের। ব্ল্যাকবোর্ডে তৈরি হয় বুলেটের ক্ষত।

কিন্তু ওই অভিযানের ক্ষয়ক্ষতি সামলে আবার কামড় বসায় টিটিপি। ‘অপারেশন জার্ব-ই আজব’-এর প্রতিশোধ নিতে ওই বছরেই ডিসেম্বর মাসে পেশোয়ারের সেনা স্কুলে ভয়াবহ হামলা চালায় তারা। মৃত্যু হয় বহু পড়ুয়া-সহ অন্তত ১৫০ জনের। ব্ল্যাকবোর্ডে তৈরি হয় বুলেটের ক্ষত।

ছবি: সংগৃহীত।

২২ ২৬
এর পর ২০২২ সালে আফগানিস্তানের তালিবান শাসকদের মধ্যস্থতায় শান্তিচুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি পায় পাকিস্তান সরকার এবং টিটিপি মধ্যে। যদিও পাক সেনার হামলার অভিযোগ তুলে গত বছরের নভেম্বর মাসে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করে টিটিপি।

এর পর ২০২২ সালে আফগানিস্তানের তালিবান শাসকদের মধ্যস্থতায় শান্তিচুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি পায় পাকিস্তান সরকার এবং টিটিপি মধ্যে। যদিও পাক সেনার হামলার অভিযোগ তুলে গত বছরের নভেম্বর মাসে যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহার করে টিটিপি।

ছবি: সংগৃহীত।

২৩ ২৬
গত বছরের ২৮ নভেম্বর একটি চিঠিতে টিটিপির প্রতিরক্ষা প্রধান মুফতি মুজাহিম যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন। সংগঠনটি অভিযোগ করে, পাক সরকার যুদ্ধবিরতি না মেনে বিভিন্ন জায়গায় সেনা অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ করে লক্কি মারওয়াত নামে খাইবার-পাখতুনখোওয়া প্রদেশের একটি জায়গায় সেনা অভিযান চালানো নিয়ে অভিযোগ তুলেছিল তারা।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর একটি চিঠিতে টিটিপির প্রতিরক্ষা প্রধান মুফতি মুজাহিম যুদ্ধবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন। সংগঠনটি অভিযোগ করে, পাক সরকার যুদ্ধবিরতি না মেনে বিভিন্ন জায়গায় সেনা অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ করে লক্কি মারওয়াত নামে খাইবার-পাখতুনখোওয়া প্রদেশের একটি জায়গায় সেনা অভিযান চালানো নিয়ে অভিযোগ তুলেছিল তারা।

ছবি: সংগৃহীত।

২৪ ২৬
যুদ্ধবিরতি নিয়ে টানাপড়েনের আবহেও পাকিস্তানে জারি থেকেছে টিটিপি-র হামলা। পাক ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ় নামে একটি সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর গোটা পাকিস্তান জুড়ে ২৬২টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল। তার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাত ছিল টিটিপির।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে টানাপড়েনের আবহেও পাকিস্তানে জারি থেকেছে টিটিপি-র হামলা। পাক ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ় নামে একটি সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর গোটা পাকিস্তান জুড়ে ২৬২টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল। তার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাত ছিল টিটিপির।

ছবি: সংগৃহীত।

২৫ ২৬
এই আবহেই গত জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানের শীর্ষ রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করার হুমকি দিয়েছে টিটিপি। সেই তালিকায় রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তাদের বিরুদ্ধে পাক সরকারের ‘যুদ্ধ’ ঘোষণার জেরেই এই হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে।

এই আবহেই গত জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানের শীর্ষ রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করার হুমকি দিয়েছে টিটিপি। সেই তালিকায় রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তাদের বিরুদ্ধে পাক সরকারের ‘যুদ্ধ’ ঘোষণার জেরেই এই হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত।

২৬ ২৬
একই সঙ্গে জানুয়ারি মাসেই জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান মুফতি নুরওয়ালি মেহসুদ আবার যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন। অর্থাৎ নরমে গরমেই তারা টক্কর নিয়ে চলেছে ইসলামাবাদের সঙ্গে। এ ভাবেই কখনও কখনও সাময়িক ‘স্বস্তি’ মিললেও, বহু মানুষের রক্তে হাত রাঙানো ওই সংগঠন নিয়ে পাকিস্তানের  ‘স্থায়ী’ মাথাব্যথা কাটছে না কিছুতেই।

একই সঙ্গে জানুয়ারি মাসেই জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান মুফতি নুরওয়ালি মেহসুদ আবার যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন। অর্থাৎ নরমে গরমেই তারা টক্কর নিয়ে চলেছে ইসলামাবাদের সঙ্গে। এ ভাবেই কখনও কখনও সাময়িক ‘স্বস্তি’ মিললেও, বহু মানুষের রক্তে হাত রাঙানো ওই সংগঠন নিয়ে পাকিস্তানের ‘স্থায়ী’ মাথাব্যথা কাটছে না কিছুতেই।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE