Wedding of smriti mandhana and palash muchchal was called off, an end to six-year relationship dgtl
Time line of smriti and palash relationship
গোপনে প্রেম, হাতে প্রেমিকার নামের ট্যাটু, হাঁটু মুড়ে হিরের আংটি দিয়ে প্রেমপ্রস্তাব! দীর্ঘ ছ’বছরের প্রেমে ইতি টানলেন স্মৃতি-পলাশ
গত ২৩ নভেম্বর পলাশের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল স্মৃতির। ৭ ডিসেম্বর সেই বিয়ে ভাঙার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার। ছ’বছরের প্রেমের অধ্যায়ে ইতি টানলেন স্মৃতি ও পলাশ।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
ছ’বছরের দীর্ঘ প্রেম। নাটকীয় ভাবে বিয়ের প্রস্তাব। সম্পর্কের পরিণতি পেতে ছিল কয়েক মুহূর্তের অপেক্ষা। আচমকা সব কিছু যেন ওলটপালট হয়ে গেল। প্রথমে বিয়ে স্থগিত রাখার ঘোষণার পরে বিয়ে বাতিল ঘোষণা করলেন ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের সহ-অধিনায়ক স্মৃতি মন্ধানা। জানিয়ে দিলেন, দীর্ঘ দিনের প্রেমিক পলাশ মুচ্ছলকে বিয়ে করছেন না।
০২১৭
বিয়ের দিন দুপুরে স্মৃতির বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিয়ের অনুষ্ঠান সাময়িক ভাবে স্থগিত বলে জানানো হয়েছিল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা জল্পনা ও টানাপড়েনের পর বিয়ে নিয়ে সপাটে ছক্কা হাঁকালেন মহিলাদের এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করেই সমাজমাধ্যমে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন ভারতের ‘জাতীয় ক্রাশ’।
০৩১৭
গত রবিবার দুপুরে সুরকার পলাশ মুচ্ছলের সঙ্গে বিয়ে বাতিলের প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে স্মৃতি লিখলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার জীবন নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা চলেছে। আমি মনে করি এই মুহূর্তে আমার কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ। আমি আসলে খুবই ব্যক্তিগত প্রকৃতির। আমি সে ভাবেই থাকতে চাই। কিন্তু আমার স্পষ্ট করে বলা দরকার যে, বিয়ে বাতিল করা হয়েছে।’’
০৪১৭
গত ২৩ নভেম্বর পলাশের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ওই স্মৃতির। ৭ ডিসেম্বর সকালে সেই বিয়ে ভাঙার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন মন্ধানা। এই গোটা পর্বের মাঝে পলাশকে নিয়ে একাধিক মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা চাউর হয়েছে সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে। প্রেমিক নাকি স্মৃতিকে ঠকিয়েছেন। স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন অন্য নারীদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ বার্তালাপ চালিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি তুলেছেন অনেকে। সমাজমাধ্যমে সেই সমস্ত কথোপকথনের স্ক্রিনশট ফাঁস হয়েছে বলেও দাবি ওঠে।
০৫১৭
একজন নৃত্য প্রশিক্ষকের সঙ্গে তো বিয়ের দিনেই ‘চিট চ্যাট’ করছিলেন পলাশ। এমন অভিযোগ তোলেন মেরি ডি কোস্টা নামের ওই তরুণী। চলতি বছর জুলাই মাসে আরও এক মহিলাকে নানা ‘আপত্তিকর’ প্রস্তাব দেন পলাশ, অভিযোগ ওঠে সমাজমাধ্যমে। পলাশের বিরুদ্ধে স্মৃতিকে প্রতারণা করার একাধিক তত্ত্বের গুঞ্জন বাতাসে ভেসে বেড়াতে শুরু করতেই বিয়ে নিয়ে দমবন্ধ করা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যদিও ওই স্ক্রিনশটের সত্যতা এখনও ধোঁয়াশায়।
Time line of smriti and palash relationship
০৬১৭
বিয়ে সম্পর্কিত সব পোস্ট নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে সরিয়ে ফেলেন স্মৃতি। ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে স্মৃতিকে হাঁটু মুড়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন পলাশ। হিরের আংটি পরিয়ে দিয়েছিলেন প্রেমিকাকে। সেই ভিডিয়ো পলাশ ও স্মৃতি দু’জনই সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছিলেন। রবিবার বিয়ের অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ার পরে সেই ভিডিয়োটিও সরিয়ে দিয়েছেন স্মৃতি। এমনকি, দলের সতীর্থ জেমাইমা ও শ্রেয়ঙ্কার সঙ্গে তোলা ছবিও সরিয়ে ফেলেছেন স্মৃতি।
০৭১৭
বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটতারকা তাঁর দীর্ঘ দিনের প্রেমিক পলাশের সঙ্গে জীবনের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশের নানা কোলাজ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সমাজমাধ্যমে। পলাশের দিদি খ্যাতনামী গায়িকা পলক মুচ্ছলের শেয়ার করা ছবি ও ভিডিয়োয় মেহন্দি, গায়েহলুদ ও প্রাক্বিবাহের নানা মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছিলেন অনুরাগীরা।
০৮১৭
২০১৯ সাল থেকে সম্পর্কে ছিলেন স্মৃতি ও পলাশ। প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে গোড়া থেকে রাখঢাক ছিল তারকাজুটির। খুব কমই জনসমক্ষে একসঙ্গে দেখা যেত তাঁদের। একসঙ্গে তাঁদের দু’জনের ছবি প্রথম প্রকাশিত হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে। দীর্ঘ দিন ধরেই পলাশ এবং স্মৃতির সম্পর্ক নিয়ে চর্চা চলছিল। তবে দু’জনের কেউই সে কথা স্বীকার করেননি।
Time line of smriti and palash relationship
০৯১৭
শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সদস্যেরাই জানতেন এই সম্পর্কের কথা। একে অপরের প্রেমে পড়লেও দু’জনেই কেরিয়ারের দিকে মনোযোগী হয়ে পড়েন। স্মৃতি ক্রিকেটে ও পলাশ বলিউডে নিজের জমি শক্ত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন।
১০১৭
এক ‘কমন ফ্রেন্ডের’ মারফত আলাপ হয়েছিল স্মৃতি ও পলাশের। সঙ্গীত ও খেলাধুলায় একে অপরের আগ্রহই তাঁদের বন্ধুত্বের কারণ। পরে সেই বন্ধুত্ব বদলে যায় প্রেমে। ২০২৪ সালে পলাশ তাঁদের সম্পর্কের পাঁচ বছর উদ্যাপনের মিষ্টি ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন। তার পরই তাঁদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসে।
১১১৭
পলাশ ও স্মৃতির সম্পর্ককে প্রথম থেকেই খোলাখুলি ভাবে মেনে নিয়েছিল মুচ্ছল ও মন্ধানা পরিবার। খুশি মনেই দুই পরিবারের সম্মতিতে চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল পাত্র-পাত্রীর।
১২১৭
একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল এই তারকাজুটির। সেখানে প্রেমিকাকে বিয়ের জন্য বিশেষ কায়দায় প্রস্তাব দেখা দিতে দেখা গিয়েছিল ইনদওরের পাত্র পলাশকে। লাল রঙের পোশাকে সজ্জিত হবু স্ত্রীকে ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে হাঁটুতে ভর দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিতে দেখা যায় পলাশকে। স্মৃতির অনামিকায় পরিয়ে দেন ভালবাসার চিহ্ন, হিরের আংটি।
১৩১৭
বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তটি পলাশের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন স্মৃতি। সেই দিন মাঠে ছিলেন পলাশ ও তাঁর দিদি পলক। স্মৃতির দিকে ছুটে আসেন পলাশ। স্মৃতির গায়ে জড়িয়ে দেন ভারতীয় পতাকা। জড়িয়ে ধরেন একে অপরকে। তার পর খানিক চোখে চোখেই কথোপকথন সারেন তাঁরা। বিশ্বকাপ জয়ের পরে বহুকাঙ্ক্ষিত ট্রফিটি নিয়ে একসঙ্গে পোজ়ও দিয়েছেন এই জুটি। জয়ের মুহূর্তকে ভাগাভাগি করে উদ্যাপন করেছেন। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমেও।
১৪১৭
স্মৃতির নামের যে উল্কি করিয়েছেন, সেটাও প্রকাশ্যে আনেন পলাশ। স্মৃতির নামের আদ্যক্ষর এসএম এবং জার্সি নম্বর ১৮ মিলিয়ে ‘এসএম১৮’ উল্কিটি দেখিয়েছিলেন গোটা বিশ্বকে। বিয়ের আগে নাটকীয় কায়দায় স্মৃতিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন পলাশ। হাঁটু মুড়ে বসে ভারতীয় ব্যাটারের অনামিকায় পরিয়ে দিয়েছিলেন হিরের আংটি। আংটি পরানোর ভিডিয়ো অবশ্য সরিয়ে দিয়েছেন পলাশ। তাঁরা পরস্পরকে আর নিজেদের সমাজমাধ্যমে রাখেননি।
১৫১৭
২২ মে স্মৃতি প্রথম বার সমাজমাধ্যমে পলাশের সঙ্গে ছবি দিয়েছিলেন। সে দিন ছিল পলাশের জন্মদিন। তার ঠিক দু’মাসের মাথায় স্মৃতির ২৯তম জন্মদিনে সমাজমাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান পলাশ। তাতে স্মৃতিকে নিজের শক্তি এবং সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘প্রথম থেকে তুমিই আমার শান্তি এবং উচ্ছ্বাস। আমার সবচেয়ে বড় ‘চিয়ারলিডার’।’’
১৬১৭
স্মৃতি ও পলাশ দু’জনই ইনস্টাগ্রামে পরস্পরকে ‘আনফলো’ করেছেন। নেটাগরিকদের একাংশ মনে করছেন, বিয়ে ভাঙার নেপথ্যে শুধুমাত্র বাবার অসুস্থতাই কারণ নয়। এই নিয়ে পলাশের পরিবারের সদস্যেরা নানা মন্তব্য করলেও স্মৃতির পরিবার একটি কথাও খরচ করেননি। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল তা নিয়ে কিছু জানাননি ক্রিকেটতারকা। শুধু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই সম্পর্কে ইতি টানছেন এখানেই।
১৭১৭
বিয়ে ভাঙা ও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছেন পলাশ। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা ‘ভিত্তিহীন গুজব’ নিয়ে প্রথমে খুবই শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। জীবন কঠিন হয়ে উঠেছিল। তিনি লেখেন, ‘‘আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন অধ্যায় পেরোচ্ছি। আশা করি আমি পরবর্তী সময়ে সমস্ত পরিস্থিতি শান্ত ভাবে সামলে নিতে পারব।’’ এত কিছুর পরও অবশ্য নিজেদের সম্পর্কের কিছু পুরনো ছবি এখনও রেখে দিয়েছেন স্মৃতি ও পলাশ।