Who is Chhattisgarh DSP Kalpana Verma, accused of cheating businessman boyfriend dgtl
DSP Kalpana Verma
গভীর রাত পর্যন্ত ভিডিয়ো কল, প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিবাহিত প্রেমিকের বিপুল সম্পত্তি ‘হাতান’ সুন্দরী ডিএসপি! কে এই কল্পনা বর্মা?
ব্যবসায়ী দীপকের অভিযোগ, ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে’ কল্পনা প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়েছেন তাঁর কাছ থেকে। একটি গাড়ি, হিরের আংটি এবং লক্ষ লক্ষ টাকার গয়না হাতিয়ে নিয়েছেন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
প্রতারণা সংক্রান্ত অভিযোগের জেরে খবরের শিরোনামে ছত্তীসগঢ়ের ডিএসপি কল্পনা বর্মা। রায়পুরের ব্যবসায়ী দীপক টন্ডনের দাবি, কল্পনার সঙ্গে প্রেম করতেন তিনি। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে দু’কোটি টাকা নগদ-সহ একাধিক মূল্যবান উপহার নিয়েছেন কল্পনা। পরে সেই পুলিশ প্রেমিকাই তাঁকে ব্ল্যাকমেল করছেন!
০২২২
ছত্তীসগঢ়ের ডেপুটি পুলিশ সুপারের (ডিএসপি) বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁর ব্যবসায়ী প্রেমিক। ডিএসপি-র বিরুদ্ধে তোলাবাজি, ব্ল্যাকমেল এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
০৩২২
দীপকের অভিযোগ, ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে’ কল্পনা প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়েছেন তাঁর কাছ থেকে। একটি গাড়ি, হিরের আংটি এবং লক্ষ লক্ষ টাকার গয়না নিয়েছেন কল্পনা।
০৪২২
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন কল্পনা। পুরো বিষয়টিকে ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলেও অভিযোগ করেছেন ডিএসপি।
০৫২২
তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে দেশ জুড়ে। ডিএসপি কল্পনা বর্মা কে, তা নিয়েও কৌতূহলী হয়ে উঠেছেন নেটাগরিকদের একাংশ।
০৬২২
কল্পনা ছত্তীসগঢ় পুলিশের এক জন তরুণী ডিএসপি। পুরো নাম কল্পনা বর্মা। রায়পুরের কন্যা। ২০১৬-’১৭ ব্যাচের পুলিশকর্তা তিনি।
০৭২২
২০১৭ সাল থেকে ছত্তীসগঢ় পুলিশে কর্মরত কল্পনা। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথম জীবনে তিনি রায়পুরের মানা পুলিশ স্টেশনে সিএসপি (সিটি সুরারিটেনডেন্ট অফ পুলিশ) হিসাবে কর্মরত ছিলেন। পরে সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াডে (এটিএস) যোগ দেন।
০৮২২
এর পর রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ডিএসপি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন কল্পনা। বর্তমানে তিনি ছত্তীসগঢ়ের সংবেদনশীল জেলা দান্তেওয়াড়ায় ডিএসপি হিসাবে কর্মরত। মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে পরিচিতি থাকায় প্রায়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসে ওই জেলার কথা। এ বার খবরে জেলার ডিএসপি।
০৯২২
ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় কল্পনার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। সে রাজ্যের বর্তমান গৃহমন্ত্রী বিজয় শর্মা-সহ বিজেপির বেশ কয়েক জন বর্ষীয়ান নেতা কল্পনাকে একটি বিষয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলেন তাঁর অফিসে।
১০২২
কিন্তু বিজেপি নেতারা যখন স্মারকলিপি জমা দিচ্ছিলেন, তখন তাঁদের দিকে তাকাননি কল্পনা। তিনি ব্যস্ত ছিলেন ফোন নিয়ে। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর হইচই পড়েছিল। সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল ডিএসপিকে।
১১২২
সেই কল্পনার বিরুদ্ধেই এ বার প্রেমে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন ব্যবসায়ী। কল্পনার বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগের পাহাড়।
১২২২
রায়পুরের ব্যবসায়ী দীপক জানিয়েছেন, কল্পনার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এক বন্ধুর মাধ্যমে। সেখান থেকে বন্ধুত্ব। দীপক বিবাহিত। তা সত্ত্বেও প্রতি দিন নিয়ম করে তাঁকে ফোন করে তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন কল্পনা। হোটেলে দীপকের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতেন।
১৩২২
এ ছাড়া গভীর রাত পর্যন্ত ভিডিয়ো কলেও কথা হত দু’জনের মধ্যে। দীপকের দাবি, ধীরে ধীরে কল্পনার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি। সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন। কল্পনার প্রেমে নাকি ‘পাগল’ হয়ে গিয়েছিলেন দীপক। কিন্তু ‘আসল খেলা’ নাকি শুরু হয় তার পরেই।
১৪২২
দীপকের দাবি, তাঁকে সৌন্দর্যের জালে পুরোপুরি আটকে ফেলেছিলেন কল্পনা। সম্পর্কে থাকাকালীন গত কয়েক বছর ধরে ডিএসপি প্রেমিকা তাঁর কাছ থেকে দু’কোটি টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ দীপকের। এ ছাড়াও উপহার হিসাবে কল্পনা তাঁর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকার ব্রেসলেট, পাঁচ লক্ষ টাকার সোনার চেন এবং ১২ লক্ষ টাকার একটি হিরের আংটি নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীর।
১৫২২
পাশাপাশি দীপক দাবি করেছেন, রায়পুরের ভিআইপি রোডের একটি হোটেল কল্পনার ভাইয়ের নামে লিখে দিয়েছিলেন দীপক। পরে তা কল্পনা নিজের নামে করে নেন। দীপকের স্ত্রী বরখার নামে যে ২২ লক্ষ টাকার গাড়ি ছিল, তা-ও নাকি নিয়ে নিয়েছিলেন কল্পনা।
১৬২২
দীপকের অভিযোগগুলিকে সমর্থন করেছেন তাঁর স্ত্রী বরখা টন্ডন। দাবি করেছেন, ডিএসপি-র জন্য তাঁদের দাম্পত্যজীবনে অশান্তি শুরু হয়েছে। অভিযোগ, বরখার সঙ্গে বিয়ে ভেঙে তাঁকে বিয়ে করার জন্যও দীপককে চাপ দিতেন কল্পনা। তাতে রাজি না হলে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল।
১৭২২
এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ব্যবসায়ী। খামারডিহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ডিএসপি-র সঙ্গে হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট, একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং অন্যান্য তথ্য তিনি প্রমাণ হিসাবে থানায় জমা দিয়েছেন। সমাজমাধ্যমেও তা ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সেই সমস্ত ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।
১৮২২
দীপকের দাবি, অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তাঁর উপর অনবরত চাপ দেওয়া হচ্ছে। ভুয়ো মামলা সাজিয়ে কল্পনা তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও নাকি দিচ্ছেন। দীপক এ-ও দাবি করেছেন, কল্পনার বেশ কয়েক জন ঊর্ধ্বতন পুলিশকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আর তার জোরেই তাঁর এত রমরমা।
১৯২২
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিএসপি। কল্পনার দাবি, অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন। তাঁর সম্মানহানি করার জন্য এই ধরনের গল্প সাজানো হয়েছে। দীপক এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন কল্পনা।
২০২২
কল্পনা ব্যাখ্যা করেছেন, তাঁর বাবা এবং দীপকের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তা নিয়ে মামলাও হয়েছিল। দীপক তাঁর স্ত্রী বরখাকে ওই লেনদেন সংক্রান্ত একটি চেক দিয়েছিলেন, যা ‘বাউন্স’ হয়ে যায়। পরে বিষয়টি আদালতে পৌঁছোয়।
২১২২
ডিএসপির দাবি, বিচার প্রক্রিয়া এড়াতে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর নাম এই মামলার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাঁর ভাবমূর্তি এবং চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
২২২২
কল্পনা আরও জানিয়েছেন, অনুমতি ছাড়াই সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ থেকে তাঁর ছবি নিয়ে ভুয়ো চ্যাটগুলি তৈরি করা হয়েছে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দীপকের বিরুদ্ধে তিনি ইতিমধ্যেই আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। নোটিসও পাঠানো হয়েছে ব্যবসায়ীকে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।