Advertisement
০৪ মে ২০২৪

কাটাকুটি

আমাদের অনুরোধে, সম্পর্ক ‘কেটে যাওয়া’র বিবরণ পাঠিয়েছেন বহু পাঠক-পাঠিকা। সবাইকে ধন্যবাদ। নির্বাচিত কয়েকটি সাজিয়ে দেওয়া হল।আমাদের অনুরোধে, সম্পর্ক ‘কেটে যাওয়া’র বিবরণ পাঠিয়েছেন বহু পাঠক-পাঠিকা। সবাইকে ধন্যবাদ। নির্বাচিত কয়েকটি সাজিয়ে দেওয়া হল।

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:০৪
Share: Save:

আমার কলেজের অল্পবয়সি প্রফেসর। কেনই বা প্রোপোজ করল, আড়াই বছর বাদে কেনই বা আমায় বাতিল করল কে জানে! ও বলে, আমায় ভাল মেয়ে ভেবেছিল। কিন্তু সে ধারণাকে আমি ধীরে ধীরে খুন করি। প্রথমত, কাছে এলে বোঝা যায়, আমি দেখতে সুন্দরী নই। তাই ওর পাশে মানায় না। তার ওপর রান্নাবান্নাও জানতাম না। সব থেকে বড় দোষ, ভাবতাম শুধু ইঞ্জিনিয়ার হলেও বউ হওয়া যায়। ওর কাছে জানলাম, বউ হতে গেলে শুধু চাকরি করলেই তো চলবে না। রান্নাবান্না, ঘর মোছা, বাসন মাজা, ঘর গোছানো, সবই জানতে হবে। ২০১২ সালের ৪ এপ্রিল, বাড়িতে ডেকে সুন্দর এক ফর্সা মেয়ের ছবি দেখিয়ে বলল, তাকে ভালবাসে। ওর মধ্যে সব গুণ আছে। পড়াশোনায় তেমন না হলেও, চিংড়িমাছের মালাইকারিতে সেটা ম্যানেজ হয়ে গেছে। এর পর আর কী? এক বছর মতো অশ্রুগঙ্গা। আমি পাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিয়ে করেছে। কিন্তু চিংড়িমাছের মালাইকারিকে না। এই মহিলা কীসে পারদর্শী ঠিক জানা হয়নি। কয়েক মাস আগে গিয়েছিলাম কলেজে। চাকরির চাপে সার্টিফিকেটটা এক বছর ধরে আনা হয়নি। ঢুকতেই অবতারের মুখোমুখি। রোগা রোগা হাত-পায়ের সঙ্গে বেঢপ ভুঁড়িটা দেখে কম্পাস দিয়ে ফুটো করে দিতে ইচ্ছে হল। বেরিয়ে আসছি, বন্ধু শুভম বলল— ‘ভাই রে, দৃষ্টি তোর দিকেই আটকে।’ সে দিন ফিরে মাটন বিরিয়ানি রেঁধে খাওয়ালাম মা-বাবাকে। ওঁরা বললেন, ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে আমার শেফ হওয়া উচিত ছিল। বেখেয়ালে এক বার মাথাটা চুলকে নিলাম।

পূজা দাস, রাজারহাট

দিনটা ছিল ২০১৩-র ১ সেপ্টেম্বর। সে দিন সন্ধেবেলা আমি জানতে পারলাম ওদের সম্পর্কের কথা। ওরা দুজনেই আমার খুব কাছের মানুষ। এক জন আমার দিদি, আর এক জন আমার প্রাণপুরুষ। ফোনের এ-প্রান্তে দিদি, ও-প্রান্তে সে। আমার প্রাণপুরুষ দিদিকে বাদ দিয়ে মাঝে মাঝে আমাকে গুরুত্ব দিয়ে ফেলে— এ নিয়েই ওদের সমস্যার শুরু। আর তার পর নিজেরা নিজেদের সামলাতে না পেরে আমার সামনে সত্যের প্রকাশ। আমার থেকে মাত্র এক বছরের বড় আমার দিদি। সব সময় এক সঙ্গে থাকতাম আমরা। একই সঙ্গে একই ক্লাসে পড়তাম। আমার জীবনের সব কথার এক মাত্র ভাগীদার সে। আমার সঙ্গে আমার প্রাণপুরুষের সম্পর্কের শুরু থেকেই দিদি সব জানত। আমাদের সম্পর্কের বয়স সাড়ে তিন বছর হতে না হতেই প্রাণপুরুষের প্রকৃত রূপ দেখতে পেলাম। তার কেরিয়ার প্রতিষ্ঠার ভিত ছিলাম আমি। নিজের জীবন গড়তে টাকা নেওয়া থেকে শুরু করে আমাকে সে সব রকম ভাবেই ব্যবহার করেছে। এমনকী দিদির সঙ্গে সম্পর্ক গড়তেও। আজ মাঝে মাঝে সেই সব দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে— যেগুলো ওদের গভীর প্রেমের খুনসুটি ছিল। বোকা আমি বুঝিনি কিছুই। দুজনের ওপরেই ছিল আমার অগাধ বিশ্বাস, চরম নির্ভরতা। আমার বিবাহিত সুন্দর দিদি হারিয়ে দিল আমাকে। আমি সুন্দর না। আমার এই কমতি আমার প্রাণপুরুষ দিদির কাছে পুষিয়ে নিল। ওদের আজও সম্পর্ক আছে। আজ আমি পর পর দুই বোন দেখলেই এক অজানা আতঙ্কে কেঁপে উঠি।

অপরাজিতা কর

তখন মোবাইল আসেনি পাড়াগাঁয়ে। যে প্রেমপত্র চালাচালি করত, সে ছিল আমাদের ইন্টুমিন্টুর একমাত্র সাক্ষী, আগের দিন সে-ই এনেছিল চিরকুট। ‘কাল দুপুরে দিদি তোমাকে ডেকেছে ওদের বাড়িতে।’ আমাদের পাশের গ্রামে ওর দিদিবাড়ি। জাগরণে সারা রাত। আয়নার সামনে প্রস্তুতি, ‘হ্যাঁ, আমি মিনতিকে বিয়ে করব।’ আকাশমণি গাছের ফাঁকে সকাল এল আমাদের উঠোনে। বালতিতে জল তুলে মুখ ধুলাম। শ্যাম্পু করলাম। মা’কে বললাম, ‘আজ স্কুল যাব না। ও-পাড়ায় ক্রিকেট ম্যাচ আছে।’ পথের দু’পাশে সার দেওয়া মাটির ঘরের মাঝখানে অহঙ্কারে বুক উঁচিয়ে থাকা পাকা বাড়িটা কে না চেনে? দিদিকেও চিনতাম। দরজা ফাঁক করে জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি কি সে-ই?’ বললাম, ‘হ্যা।ঁ’ ‘ভেতরে এসো। চা খাও তো?’ ‘না, মানে...’ ‘মানে মানে করতে হবে না। গরম চা জিভ পুড়িয়ে খাও, শেষ স্মৃতি হয়ে থাকবে।’ দেড়খানা বিস্কুট শেষ। বলল, ‘মিনতির জামাইদাকে জানো তো, দশগাঁয়ের নাম করা ডাক্তার। পারবে হতে কখনও?’ আমি চুপ। ‘জানি, পারবে না। বাবার দু’বিঘে সম্বল। হাতে আর কাদা মেখো না।’ অসমাপ্ত চা রেখে ঘর থেকে বেরলাম। ডান পায়ের চটি বাঁ পায়ে, বাঁ পায়েরটা ডান পায়ে। যে মেয়েটি চিঠি চালাচালি করত, দেখলাম, ওর দু’চোখে ঝরনা।

ধনঞ্জয় দেবসিংহ, মধুপুর, শালবনি

গত এক মাস ধরেই আমার মাসতুতো দিদির ডাক্তার-দেওর, সোহম, আমায় ফোনে আর এসএমএস-এ জানান দিচ্ছিল যে তার নাকি আমাকে বেজায় পছন্দ। এমনকী আমার ইঞ্জিনিয়ার প্রেমিক অর্ণবের কথাও তার অজানা নয়। সোহমের সঙ্গে অর্ণবের এক বার পরিচয় হয়েছিল। ব্যাপারটা আমি শুধু অর্ণবকেই বলি। সে আমায় সোহমকে নিয়ে বার কয়েক পুছতাছও করে। আমি গা করিনি বিশেষ। সোহমের এসএমএস-প্রার্থনা অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় আমি ফুলবাগান সিসিডি-র সামনে হাজির। ঠিক করেছি আজ একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়ব। স্ট্রেট ‘না’ বলব, দরকার পড়লে দিদিকেও জানাব। কাঁটায় কাঁটায় চারটে দশ। রাস্তার অপর ফুটপাতে অর্ণব। ঠোঁটে ধূর্ত হাসি।

—তুমি??!!!

—সোহমকে তো তুমি পছন্দই করো। মিথ্যে বলার কী ছিল?

বুঝতে এক মুহূর্ত দেরি লাগেনি, পুরো ব্যাপারটাই অর্ণবের সাজানো। ‘সোহম’ পুরো ফল্স কেস। রাগে-দুঃখে-অপমানে গা রি-রি করে উঠেছিল। বিকারগ্রস্ত পাবলিক। নোংরা সন্দেহ করল। অর্ণবের মিশন সিসিডি সফল। কেঁদে ফেলেছিলাম। আর যোগাযোগ রাখিনি ওর সঙ্গে। রাখতে চাইও না।

সম্প্রীতি চক্রবর্তী, সোদপুর

তিন বছরের সম্পর্ক। ও তখন কলেজে পড়ে, আমি মাস্টার্স। ওদের ডিপার্টমেন্ট থেকে দক্ষিণ ভারতে যাচ্ছে। আমার অনুমতি ছাড়া ও যাবে না। শুধু ট্যুর-এ যাওয়া নয়, যাবতীয় ব্যাপারে আমার পারমিশন চাই ওর। কোনও কথার অবাধ্য হয়নি কোনও দিন। দশ দিনের ট্যুর, বন্ধুরা যাচ্ছে, আর যাচ্ছে ওর প্রিয় এক সহপাঠী বন্ধু পার্থ— যার খুব গল্প করে ও। আমি নিষেধই বা করব কেন? এগারো দিন পর ফিরে এল ওরা। ও বলেনি। অন্য সূত্র থেকে জানলাম। কয়েক দিন কোনও ফোন নেই, দেখা নেই। বেশ অবাক হলাম। সকালে চায়ের সঙ্গে কোন বিস্কুটটা খেয়েছে, সেটাও না বললে ওর ভাত হজম হয় না। ফিরে আসার পর থেকে তো ওর মুখে কনস্ট্যান্ট খই ফোটার কথা! না কি শরীর খারাপ? কিন্তু সেটাও তো জানাত! ক’দিন পর রাত দশটায় ফোন করলাম। এনগেজ্ড। সাড়ে দশটায় করলাম। এনগেজ্ড। এগারোটাতেও বিজি টোন। সাড়ে এগারোটায় করতে, আগের কলটা সাময়িক ছেড়ে দিয়ে কল-ব্যাক করে ও জানাল, পার্থর সঙ্গে জরুরি কথা বলছে, পরে ফোন করবে। আর করেনি।

সাধন দাস, মুর্শিদাবাদ

কালো মেয়ে, বাবার পয়সারও জোর নেই, বান্ধবহীন জীবন কাটাতাম। পত্রবন্ধুত্বের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল কিছু ভিন্নবয়সি মানুষের সঙ্গে। এর মধ্যে এক জন, ইকনমিক্স অনার্স নিয়ে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে, একটু বেশি প্রিয় হয়ে উঠেছিল। দেখতে খারাপ বলে হীনম্মন্যতায় ভুগতাম, তাই প্রথমেই বলে দিয়েছিলাম, ‘দেখতে ভাল নই।’ কিছুতেই বিশ্বাস করত না, অগত্যা একটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি পাঠালাম। লিখত, ‘রোজ সকালে উঠে তোমার ছবিটা দেখি, আর সারা দিনে যে কত বার তার ঠিক নেই।’ ‘শেষের কবিতা’ দুজনেরই প্রিয়, আদর করে নাম দিয়েছিল ‘বন্যা’। বললাম ‘রান্না জানি না’, ও উত্তর দিল, ‘আমি খুব ভাল ফ্রেঞ্চ টোস্ট আর কফি বানাই, আর হ্যাঁ, আমার বউকে আমি রান্না করতেই দেব না, যদি হাত পুড়ে যায়।’ এই বার তো দেখা করতে হয়। বাড়ি থেকে এমনি কোথাও যেতে দেবে না। নৈহাটিতে জেঠুর বাড়ি যাব, তাই জায়গা ঠিক করলাম নৈহাটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর চার। দিনটা ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর, রোদে পুজো-পুজো ভাব। আমি শাড়ি পরেছিলাম, গলায় ‘ডি’, ওর নামের আদ্যক্ষর, লকেট দেওয়া কালো টাসেল। ও বলেছিল ওর পরনে থাকবে ছাই রঙের ট্রাউজার আর ব্রাউন শু। আমাকে ও ঠিক খুঁজে নেবে। সকাল ন’টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। ব্যান্ডেল লোকালে আসবে, কিন্তু কোথায় সে? বেলা এগারোটা নাগাদ বাড়ি যাব বলে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছলাম, দু-নম্বরে একটা ব্যান্ডেল লোকাল একটু পরেই ছাড়বে, এমন সময় দেখি দুজন ছেলে— এক জন ছাইরঙা ট্রাউজার ব্রাউন জুতো, গিয়ে জিজ্ঞেস করতে বলল হ্যাঁ ও-ই সে, কিন্তু ‘জরুরি কাজ আছে’ বলে এক বারও পিছনে না তাকিয়ে ট্রেনে উঠে চলে গেল। হঠাৎ যেন সব কেমন মেঘলা হয়ে গেল, মুখটাও তো ভাল করে দেখতে পেলাম না, ওর জন্য যে গিফ্ট নিয়ে গেছিলাম তা-ও দেওয়া হল না। বাইরের রূপ এত দামি! ওই অপমান আজও ভুলিনি।

রুমা চক্রবর্তী, পটনা

মেয়েটির সঙ্গে এইচ এস-এ প্রথমে বন্ধুত্ব, পরে প্রেম। তুই থেকে তুমি। প্রথম চিঠি, হাত ধরা, চুম্বন, ভিক্টোরিয়া, সবই হল। আমি তখন পলিটেকনিক-এ। ওর জুলজি অনার্স। ২০১০— প্রথম চাকরি। ওর আশুতোষ-এ মাস্টার্স। শ্যামবাজারে মেস। ফোনে কথা, দেখা করা, গিফ্ট দেওয়া সবই বাড়তে লাগল। বেসরকারি চাকুরিজীবীটি চেয়েছিল তার মেমসাহেবকে খুশি করতে, সুখী রাখতে। ফ্লোটেল-এ লাঞ্চ, টাইটান রাগা, শাড়ি কিংবা সোনাদানা— সব কিছু উজাড় করে দিত মেয়েটির মুখে একটু হাসির জন্য। ২০১২— আমি বিদ্যুৎ ভবনের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, ও এডুকেটেড আনএমপ্লয়েড। তত দিনে গ্রামের মেয়ের অনেক কিছু পালটাতে শুরু করে দিয়েছে। ডান হাতে ঘড়ি, স্লিভলেস টপ। আমার সেই পেতে আঁচড়ানো চুল আর প্লিট দেওয়া প্যান্ট। প্রকৃতির নিয়মে, পুরনো প্রেমে ঝামেলা বাড়ল। ভেবেছিলাম, ওর চাকরি না পাওয়ার হতাশা। পাশে থেকে মানিয়ে নিতে চেয়েছি। ইতিমধ্যে দুজনের ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট হয়েছে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালাম। প্রত্যাখ্যাত। ২০১৪— আমায় ডেকেছে পাঁচমাথার মোড়ে। ঝলমলে ব্যস্ত সকাল। ভিড়। যেতেই একের পর এক থাপ্পড়। কিছু জিজ্ঞেস করলেই আবার মার। আমি কালো তো, তাই গালটা ঠিক লাল হয়নি। ইংলিশে অনেক গালি। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, বাস্টার্ড, ইত্যাদি। চোখের জল লুকনোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম। পারিনি। মেসের কিছু জুনিয়র এসেছিল। লাইভ এন্টারটেনমেন্ট-এর জন্য।

শুভজিৎ অধিকারী, কোলাঘাট, পূর্ব মেদিনীপুর

আমার সঙ্গে মেয়েটির সম্পর্ক তৈরি হল কলেজে ঢোকার কিছু দিনের মধ্যেই, বাড়ি-আসাআসিও চলতে লাগল খুব। আমার নিজের ঘর ছিল, আমাদের বিরাট বাড়ি, দুপুরে ফাঁকাও থাকত। এক দিন ও আর আমি ক্লাস কেটে বাড়িতে চলে এসেছি, ঘরে গিয়ে নিয়ম মতো আদর-টাদর হচ্ছে। হঠাৎ ও আমাকে জড়িয়ে হাউহাউ করে কাঁদতে শুরু করল, ‘বলো তুমি কোনও দিন আমাকে ছেড়ে যাবে না? তা হলে আমি কিন্তু একদম মরে যাব।’ আমি তো স্তম্ভিত, হঠাৎ ছেড়ে যাওয়ার কথা উঠছে কোত্থেকে? যত বলি, পাগলামি কোরো না, তত কান্নার বেগ বেড়ে ওঠে, ‘আমায় কখনও ছেড়ে যেয়ো না!’ অনেক কষ্টে শান্ত করলাম। পরের দিন সকালে ফোন। ‘শোনো, আমি রিলেশনটা রাখতে চাই না। তোমায় ছেড়ে দিচ্ছি।’ মানে! শক-এর চোটে মুখে কথা সরল না, বহু ফোন করে, দেখা করে, কেঁদেকেটে, ফল হল না। এখনও বুঝতে পারিনি, হঠাৎ কী হল, আর সবচেয়ে বড় কথা, আগের দুপুরের ওই উলটো-ডোজটার কী দরকার ছিল!

শাশ্বত সাহারায়, সল্ট লেক

কলেজে একই ইয়ারে একই ডিপার্টমেন্টে পড়তাম। ফার্স্ট ইয়ারেই ওকে দেখেছিলাম, ও স্যরের সব প্রশ্নেরই প্রায় উত্তর দিচ্ছিল, আর আমি ভাবছিলাম, বাপ রে কী ছেলে! যাই হোক, কলেজে আমরা শুধু বন্ধুই ছিলাম, হয়তো ‘বিশেষ বন্ধু।’ কিন্তু কেউই প্রকাশ করিনি। ও প্রথম প্রোপোজ করল, যে দিন ক্যাম্পাসিংয়ে চাকরিটা পেল। ফোনে বলল দেখা করতে। আমি তো ফোনে ওর কথাগুলো শুনে আর অপেক্ষা করতেই পারছিলাম না। ভাবছিলাম, এত দিনের প্রিয় বন্ধুকে কি এ বার শুধু আমার করে ভাবতে পারব? আর কারও সঙ্গে শেয়ার করতে হবে না! কত কথা বলব, মনে মনে সাজিয়ে ওর সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। যখন দূর থেকে ওকে দেখলাম, বুকটা এত জোরে বাজতে লাগল, মনে হচ্ছিল পৌঁছতেই পারব না। কিন্তু কাছে গিয়ে মুখটা দেখেই বুঝতে পারলাম, কিছু একটা হয়েছে। ফোনে ওর আওয়াজ আর সামনাসামনি ওকে যেন মেলাতেই পারছিলাম না। আমরা হাঁটতে হাঁটতে নদীর ধারে এসে বসলাম। ও আমার দিকে ঠিক করে তাকাতেই পারছিল না। জিজ্ঞেস করলাম, তোর কি শরীর খারাপ? ও কেঁদে ফেলল। বলল, ফোনে আমাকে যা যা বলেছে, সব ভুলে যেতে। হয়তো আমাদের মধ্যে কোনও সম্পর্ক হোক ভগবানও চান না, তাই এত দিন পর এক হতে গিয়েও হতে পারব না। বার বার কারণটা জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু আর কিছুই বলল না। বুঝতে পারলাম না, এক রাতে কী এমন ঘটল যে আমার জীবনের সব ওলটপালট হয়ে গেল।

অমৃতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর

১৯৬০ সাল। আমি বি.এ. পড়ি। লতার প্রাইভেট টিউটর নিযুক্ত হলাম। লতা ১৫, ক্লাস নাইনে পড়ে। বছরখানেক পরেই প্রেমে পড়লাম, চিঠি দিলাম। তিন দিন পর লতা লিখল, মাস্টারমশাই, আমাদের রক্ষণশীল পরিবার, আমি কোনও দিনই আপনার হতে পারব না। আমার তৃতীয় চিঠির উত্তরে লতা লিখল, প্রিয়তম, ধরা দিলাম। এ ভাবে চলল বছর তিনেক। তার পর আমি একটা চাকরি পেলাম, কিন্তু কর্তৃপক্ষের টালবাহানায় যোগ দিতে চার মাস লাগল। তখন সব টিউশনি আমি ছেড়ে দিয়েছি। লতাদের থেকেও তিন মাসের টাকা বাকি। প্রচণ্ড অর্থকষ্ট। কোনও এক দুর্বল মুহূর্তে এক বন্ধুকে লতাদের মাইনে বাকি রাখা সম্বন্ধে একটু নিন্দেমন্দ করি। সেটা লতাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়। এক দিন লতার ভাই এসে ওদের বাড়িতে যেতে বলে। যেতেই, লতা বেরিয়ে এসে, টেবিলে কয়েকটা নোট ছুড়ে দিয়ে বলল, সব টাকা শোধ, গুনে নিন। আপনি আর কোনও দিন এ বাড়িতে আসবেন না। পেছনে ওর বাবা, মা, ভাই দাঁড়িয়ে।

প্রবোধ সিংহ, কলকাতা-৪০

প্রথম ব্রেক-আপ ২৬ নভেম্বর ২০০৭, ওকে প্রথম বার ‘হ্যাঁ’ বলার এক দিন পরেই। দিনের পর দিন কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটাকে আর ইগনোর করতে পারলাম না। ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় থেকে সে আমাকে পছন্দ করে। ‘হ্যাঁ’ বললাম প্রায় তিন বছর পর। বাড়ি থেকে মানবে না। তাই এক দিন পরেই তাকে ‘না’ বলে দিলাম। লেকের ধারে একটা বেঞ্চে পাশাপাশি বসে ছিলাম। এ-মাথায় আমি, ও-মাথায় ও। হঠাৎ টুপটাপ বৃষ্টি শুরু হল। ও ওর ছাতাটা খুলে একাই বসে রইল। আমাকে অফারও করল না। আমিও চুপচাপ আমার জায়গাতেই বসে রইলাম, ভাবলাম এখনই থেমে যাবে। কিন্তু এত মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল, বাধ্য হলাম ওর পাশে সরে বসতে। শেষে এত কাছ ঘেঁষে, এক মাইক্রোমিটারেরও ব্যবধান নেই। অস্বস্তি কাটাতে দুজনেই উঠে, গেলাম একটা শেডের তলায়। সেখানে জড়ো হয়েছে লেকের সব কাপ্ল, এমন ভাবে তারা পরস্পরকে জড়িয়ে আছে, আমাদের খুব অস্বস্তি হচ্ছিল। বললাম, চ, বেরিয়ে পড়ি, এ বৃষ্টি সহজে থামবে না। গোলপার্কের মুখে পৌঁছতেই দেখি মেঘ কেটে ঝলমলে রোদ্দুর। পরের ব্রেক-আপ ২০০৮-এ, তার পর ২০০৯-এ, তার পর ২০১০-এ। আজ পর্যন্ত আট বছরে আটশো ব্রেক-আপ হয়েছে, শুধু ব্রেক-আপের মানুষটির পরিবর্তন হয়নি। এখনও আমাদের ব্রেক-আপই চলছে। প্রত্যেকটা ব্রেক-আপের পর ও আমাকে আরও বেশি করে ভালবেসেছে, আর রক্ষণশীল পরিবারে মানুষ হওয়া আমি বাবা-মা’কে কষ্ট দেওয়ার ভয়ে ওর থেকে নিজেকে আরও সরিয়ে নিয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

সে দিনও ছিল দুপুর এমন, ঝকঝকে রোদ অস্থির মন... দুপুরবেলা ক্লাস কেটে কলেজের ঝিলপাড়ে দাঁড়িয়ে তার অপেক্ষায়। না না, প্রেম করতে নয়, আজ এসেছি— প্রেম ভেঙে দেওয়া হবে, সেই ঘা খাওয়ার জন্য। আগের রাতে আসল নাটক হয়ে গিয়েছে, আজ অফিশিয়াল ব্রেক-আপ। একটু কাঁদো-কাঁদো মুখে দাঁড়িয়ে আছি, তার ওপর চাপ, কোনও স্যর ক্যান্টিন থেকে ক্লাসে যাওয়ার পথে দেখে ফেললে পুরো কেস। যাই হোক, সে এল। দেখে তো দুঃখী টাইপ মনে হল না। হাতে আবার ক্যাডবেরি সেলিব্রেশন। কী আদিখ্যেতা, নিজেই দিচ্ছে ল্যাং আবার চকলেট এনে ভালমানুষি। কথা শুরু করল সে-ই: ‘শোন, আমার দেওয়া জিনিসগুলো তোর ফেরত দেওয়ার দরকার নেই, ‘ভাল বন্ধু’র দেওয়া মনে করে রেখে দিস।’ যতটা সম্ভব গম্ভীর মুখে বললাম, ‘হুম।’ দিয়েছিস তো দুটো ঝিনুকের হরিণ, তাও একটার আবার ঠ্যাং ভাঙা। আরও কী সব বলছিল, ঠিক মন দিয়ে শুনছিলাম না। কখন যেন হাতে চকলেটের প্যাকেটটা গুঁজে দিয়ে বলল, ‘না রে, প্রেম আর পড়াটা একসাথে চালাতে পারলাম না।’ কিছু আর না শুনেই সে হাঁটা দিল নিজের ডিপার্টমেন্টের দিকে। সে দিন আর ক্লাস করা হয়নি আমার। S-31’এ ফেরার পথে চোখের জল দিয়ে চকলেটগুলো গিললাম আর ভাবলাম, কুছ আচ্ছা হোনে সে পহলে থোড়া মিঠা হো যায়ে।

সহেলী দে, হলদিয়া টাউনশিপ

কলেজের তিন তলার জানলায় বসে একটার পর একটা সিগারেট শেষ করছি, তাকিয়ে আছি গেটের দিকে। শুকনো ধোঁয়া দলা পাকিয়ে আছে গলায়। হঠাৎ ঝোড়ো হাওয়ার মতো গেট দিয়ে ও ঢুকল, সঙ্গে বান্ধবী। দশ মিনিটে আমরা মুখোমুখি। এসেই আমার হাতে ধরিয়ে দিল আমার দেওয়া কয়েকটা বই। আক্রোশে ফেটে পড়লাম, ছুড়ে ফেলে দিলাম সমস্ত বই; ঘৃণ্য জেদে ওর হাতে গুঁজে দিলাম কিছু টাকা— ভালবাসার মূল্য হিসেবে। আর তার পরই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। কত ক্ষণ পড়ে ছিলাম জানি না। চোখ খুলতে দেখি আমার মাথাটা ওর কোলে, শুনতে পেলাম ওর আকুল চিৎকার; তারই সঙ্গে ছুরির ফলার মতো ওর বান্ধবীর মন্তব্য, ‘উঠে আয়, দেখছিস না নাটক করছে!’ অকথ্য অভিমান নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। কী করে প্রমাণ করব, এই একই নাটকের মহড়া চলছে বেশ কয়েক দিন! তারই একটার ফলস্বরূপ অ্যাক্সিডেন্টে চোট খাওয়া পা-টা টানতে টানতে বাইরে বেরিয়ে এলাম।

কুমারেশ সরকার, রহড়া

সদ্য গ্র্যাজুয়েশন পাশ করে কলেজের ঝুলন্ত প্রেমিকটি সেল্ফ ফাইনান্স-এ এম.এ-তে ভর্তি হয়েছে। আমি ডিস্ট্যান্স-এ। কারণ? ‘আমার বাবা দোকানে কাজ করে।’ এর পর নভেম্বরের এক উজ্জ্বল দুপুরে কলেজের জনা দুয়েক বন্ধুর সঙ্গে সিনেমায়। মহাশয় জানতেন না আগমনীর বার্তা। আগে কোথাও যাওয়ার হলে তার সাধ্যসাধনার পরীক্ষা নিয়েছি রীতিমত। কিন্তু সে দিন মেঘ না চাইতেই জল পেয়েও চাতক মহোদয় বেশ বিরক্ত। পূর্বাভাসেই বুঝেছিলাম ‘পুরানো সেই দিনের কথা’ তার কাছে এখন ঝাপসা। আগেও দু-তিন বার সিনেমায় গেছি। ফিল্ম হ্যাপি এন্ডিং-এর দিকে এগিয়েছে, সমান্তরাল চলেছে আমাদের আলাপ-আলোচনা। সে দিন কেস জন্ডিস। বাইরে রোদ ঝলমল করলেও তার থমথমে মুখ দেখে মনে হচ্ছে টাইফুন এল বলে। পাশাপাশি বসেছি, ঘণ্টাখানেক কেটে গেলেও শব্দের ফুল ফোটেনি এক বারও। যেচে বলতে গেলেও মুখে তালা। অগত্যা সেই আলো-আঁধারির মধ্যে আমার সবটুকু প্রেম, থুড়ি শক্তি দিয়ে চেপে ধরেছিলাম তার হাতটা। নির্জন, নিস্পন্দ, নিথর, একটা ঠান্ডা হাত।

রূপা নস্কর, বেহালা

আমি পুরুলিয়ার খুব সাধারণ একটি মেয়ে। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর, আমাদের বিভাগের এক সিনিয়র ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার পর স্নাতকোত্তর পড়ার জন্য আমার বাড়ির বাইরে যাওয়া। এই সময় লক্ষ করলাম, আমার প্রতি ওর একটা অবহেলা। এক বছর চলার পর, যখন ওর মনে আমার জন্য শুধুই রিজেকশন, এক দিন ও আমাকে ফোনে জানাল ওর নতুন গড়ে ওঠা একটা প্রেমের কথা। সঙ্গে এ-ও বলল, এতে তোমার কোনও অপরাধ নেই, তুমি খুব ভাল মেয়ে, ইত্যাদি। পর দিন পড়ন্ত বিকেলে আমি যখন হস্টেলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে, আমার ‘প্রেমিক’ আমাকে ফোন করল, কনফারেন্সে আর একটি নারীকণ্ঠ। আমি ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছি স্বাভাবিক থাকার, আর ও-পাশ থেকে আসছে আমাকে ভেঙে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা। আমি যাতে ওই মেয়েটির ‘প্রেমিক’কে ফোন করে বিরক্ত না করি, তার হুমকি। মাত্র চার মিনিট সাতাশ সেকেন্ডের কথোপকথন আমার পায়ের তলার মাটি সরিয়ে নিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

আমার ১৫-১৬ বছর বয়স থেকেই সার্থককে চিনতাম। ১৭১টা প্রেমপত্র, হাজার দশেক ফোন আর এসএমএস করেছে ও, দশ বছরের প্রেমপর্বে। আমার মতো কালো মেয়ের মায়ের দুশ্চিন্তা দূর হয়েছিল সার্থকের ব্যবহারে। ওরই উদ্যোগে আমাদের পুরী বেড়াতে যাওয়া স্থির হয়েছিল। মানে, আমাদের পরিবার, আর সার্থক। একসঙ্গে সমুদ্র দেখার স্বপ্ন ছিল। বেরোবার আগের মুহূর্তে জানতে পারলাম, বাবার স্ট্রোক হয়েছে বলে সার্থক যেতে পারবে না। ওর পীড়াপীড়িতেই এক রকম বাধ্য হয়ে আমরা পুরী চলে গেলাম। ফেরার পথে, সার্থকদের বাড়ির ছাদে প্যান্ডেল দেখে রিকশা থেকে নেমে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখলাম, বিয়েবাড়ি— সার্থকের গায়ে-হলুদ হচ্ছে।

বর্ণালী রায়, পানপাড়া

কয়েক মাস আগে থেকেই আমার যাবতীয় সুখদুঃখ, দৈনিক মুহূর্ত সৌমিতাকে ঘিরেই গড়ে উঠছিল, তার পর ও আমাকে প্রোপোজ করল। হঠাৎ, আড়াই দিন পর, দুপুরে সৌমিতার এসএমএস— আমি ওর বহু ‘ইনফ্যাচুয়েশন’-এর একটা, ‘প্রেম’ না, সেটা ও বুঝতে পেরেছে। এতে নাকি আমারই ভাল, কারণ, উপলব্ধিটা আরও পরে হলে আমি নাকি বেশি কষ্ট পেতাম। আমি গতানুগতিক পদ্ধতিগুলোই আপ্রাণ প্রয়োগ করতে লাগলাম— গাদা গাদা মেসেজ, কেটে দেওয়া ঘন ঘন কল। ওর বাড়ির ঠিকানাটা সম্পূর্ণ না জানায় বাঘা যতীন মোড়ে বহু বার ঘোরাঘুরি করেছি। ওর বন্ধুদের মাধ্যমে কয়েক বার নিজের প্রেম জাহিরের চেষ্টা চালালেও, পাখি কোনও মতেই ঘরে ফিরল না। ও ফোন নম্বর চেঞ্জ করে নেওয়াতে আর ফেসবুকে আমায় ব্লক করে দেওয়াতে ভার্চুয়াল যোগাযোগটাও হারালাম। প্রেম আড়াই দিন টিকলেও, বেদনাটা এখনও চলছে।

ঈশান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজপুর

এক দোলপূর্ণিমার দিনে আমরা একে অন্যের কাছে এসেছিলাম। যৌবনের উদ্দাম তাপে, হোলিকা দহনের চাঁচরে হয়েছিলাম তপ্ত। কিন্তু তার পর প্রেমের কথা জানাজানি হতে, কপালে জুটল সমাজের হুংকার। আমি ব্রাহ্মণ, ওরা নিচু জাত। ওরা ছিল বড়লোক, আমি মধ্যবিত্ত। তা সত্ত্বেও ও সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আমায় পেতে চেয়েছিল। আমিও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সমাজের কাছে হার মানব না। শেষে এক দিন আমার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আমায় এসে বলল, ও তোমায় বিয়ে করবে না বলেছে, তোমরা আর্থিক ভাবে দুর্বল, তাই। আমার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। আমার বিয়ের বছরখানেক পরে একটা চিঠি পেয়েছিলাম। তাতে ও লিখেছে, তুমি আমার মতামত না নিয়ে বিয়ে করলে কেন? আমি কিছু বুঝলাম না। কোথায় যেন গোলমেলে ঠেকল। সেই আত্মীয়কে চেপে ধরলাম। সে বলল, তুমি আমায় ক্ষমা করো, যা করেছি তোমার বাড়ির লোকের কথামত করেছি।

রাজ বন্দ্যোপাধ্যায়, রঘুদেবপুর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

valentine’s day anandabazar rabibasariya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE