এ বারের প্রসঙ্গ বিবাহ বা বিয়ে। মনে রাখতে হবে বিয়ে শুধুমাত্র দুটি নারী-পুরুষের মধ্যেই হয় না, হয় দুই পরিবারের মধ্যেও। তাই বিয়ের আগেই পরস্পরের পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা করা দরকার, যাতে নিজেদের তৈরি করে নেওয়া যায়। তবে সাবধান, কেউ কারও অতীত নিয়ে আলোচনা করবেন না, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। কথা বলুন ভবিষ্যৎ নিয়ে। দু’জন দু’জনকে চিনুন। বিয়ের দু’সপ্তাহ আগেই আইবুড়ো ভাতের নিমন্ত্রণগুলো সেরে নিন। তারপর শুরু করুন বিয়ের জন্য বিশেষ ডায়েটিং।
১) বেশি তেল-মশলা দিয়ে রান্না করা খাবার খাবেন না। খাবেন প্রচুর ফল, ফলের রস, স্যালাড, টক দই। বাইরের খাবার না খাওয়াই ভাল।
২) পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। পেট পরিষ্কার রাখার জন্য প্রয়োজনে ইসবগুলের ভুষি খান।
৩) বিয়ের দিন যদি ত্বক রুক্ষ ও নির্জীব দেখতে লাগে তবে সব মাটি। দু’সপ্তাহ বিশেষ যত্ন নিন।
৪) ত্বক রুক্ষ হলে আধ কাপ জল, দু’ চামচ ওয়াইন, ১ চামচ গ্লিসারিন ১ চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে, সামান্য গরম করে ত্বকে লাগান। ত্বক উজ্জ্বল হবে।
৫) এ ছাড়াও ত্বকে বেলের শাঁস লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। রাতে নারিশিং ক্রিমের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে মাসাজ করুন।
৬) ত্বক স্বাভাবিক হলে তাজা সবুজ বিন, লেটুস পাতা জলে ফুটিয়ে সেই জল ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন সকালে সেই জল দিয়ে মুখ ধোবেন। মুখ হবে তাজা।
৭) ১টি পাঁউরুটি, হলুদগুঁড়ো দু’ চিমটে, মধু, আতপ চাল গুঁড়ো এবং কমলালেবুর খোসা বেটে, তাতে দুধ মিশিয়ে প্যাক বানান। এই প্যাক মুখ ও শরীরে লাগাতে পারেন। এতে মরা কোষ ঝরে গিয়ে ত্বকে নতুন কোষ আসবে। ত্বক মসৃণ হবে।
৮) সাদা মাখন ও চেরি মেশানো সাদা পেস্ট দিয়ে মাসাজ করুন। ত্বক হবে উজ্জ্বল।
৯) মুখে ব্রণ থাকলে ছাতু, নিমপাতা ও পাতিলেবুর রস লাগান। ব্রণ কম হবে।
১০) স্বাভাবিক ত্বক হলে বাদাম বাটা, কমলালেবুর রস ও দু’চিমটে জায়ফল গুঁড়ো নিশিয়ে লাগালে ত্বকে জেল্লা বাড়বে।
১১) চুলে রোজ শ্যাম্পু করবেন এবং সিরাম লাগাবেন।
১২) সপ্তাহে একদিন অশ্বগন্ধা, নিমপাতা গুঁড়ো, রিঠা, বেলগিরি, চন্দন, পুদিনা, কেশুতি পাতা মিশিয়ে, তার সঙ্গে দই ও ডিমের পুরো অংশ মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল হবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
১৩) চুল লাল হয়ে গেলে প্রতিদিন অলিভ অয়েলের সঙ্গে কেশুতপাতা বাটা মিশিয়ে লাগালে চুল কালো হবে।
১৪) মাথায় খুসকি থাকলে আদা, আমলকী, পাতিলেবু, ছাঁচি পেঁয়াজের রস মিশিয়ে রাতে চুলে লাগান। পর দিন শ্যাম্পু করে নিন। খুসকি চলে যাবে।
১৫) কোঁকড়া চুল একটু সোজা করতে চাইলে প্রতিদিন ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে মধু মিশিয়ে চুলে লাগালে চুল সোজা লাগবে।
এ তো গেল কনের কথা। কনের সঙ্গে কনের বোন বা আত্মীয়স্বজনরাও সাত দিনে সুন্দর হয়ে উঠুন।
বিয়ের ঠিক এক সপ্তাহ আগের জন্য সাতটি উপটান।
সব উপকরণই দু’চামচ করে।
প্রথম দিন: গঙ্গার পলিমাটি, মুলতানি মাটি, চন্দনগুঁড়ো, নিমগুঁড়ো, হলুদ বাটা ও দুধ। মুখ ও সারা শরীরে লাগান। আধ ঘণ্টা রেখে গরম জলে স্নান করে নিন।
দ্বিতীয় দিন: ময়দা, সর্ষের তেল, হলুদবাটা, চিনাবাদাম বাটা, দুধের মাঠা বা দই, নারকোল বাটা মিশিয়ে মুখে ও শরীরে লাগান।
তৃতীয় দিন: চালের গুঁড়ো, অলিভ অয়েল, অ্যালোভেরা জেল, কমলালেবুর খোসা বাটা, লেমন জুস, মধু, দই, বেদানাবীচির গুঁড়ো মিশিয়ে লাগান।
চতুর্থ দিন: ভুট্টাগুঁড়ো, ভোজ্য তেল, বাদাম বাটা, পুদিনা বাটা, হলুদ বাটা, ডাবের জল, অপরাজিতা ফুল বাটা লাগান।
পঞ্চম দিন: বার্লিগুঁড়ো, চালের গুঁড়ো, মঞ্জিষ্ঠা গুঁড়ো, নিম, চন্দন, ল্যাভেন্ডার তেল, হলুদবাটা ও দুধ মিশিয়ে মুখে ও শরীরে লাগান।
ষষ্ঠ দিন: ওটমিল গুঁড়ো, সয়াবিন গুঁড়ো, তুলসী বাটা, নিমবাটা, চন্দন, হলুদ গোলাপের পাপড়ি বাটা, ডাবের জল মিশিয়ে মাখুন।
সপ্তম দিন: কাজুবাটা, পোস্তবাটা, মসুর ডাল বাটা, চালের গুঁড়ো, হলুদ বাটা, জাফরান, কর্পূর (এক চিমটে) তুলসী, নিম, চন্দন, মধু, আতর, গোলাপের পাপড়ি গুঁড়ো ও ফ্রেশক্রিম মিশিয়ে লাগালে হয়ে উঠবেন লাবণ্যময়ী।
এ বার আসি স্নানের প্রসঙ্গে—
জ্যাসমিন, নেরোলি, রোজ, স্যান্ডালউড, অ্যাটলাস, সিডারউড, ফ্লেরিসেডা প্রভৃতি তেলের অন্য একটি ক্ষমতা আছে। এরা সেক্সুয়াল ডিজায়ার বৃদ্ধি করে। রোম্যান্টিক করে তোলে। যে সব মহিলা ফ্রিজিডিটির সমস্যায় ভোগেন, তারা এসব দিয়ে স্নান করলে উপকার পাবেন।
এ বার কনের প্রস্তুতি
১) বিয়ের দিন সকালে গায়ে হলুদ পর্ব মেটার পর ওডিকোলন মেশানো জলে স্নান করলে খুব ফ্রেশ লাগবে।
২) দুপুরে একটু ঘুমিয়ে নেবার চেষ্টা করবেন।
৩) ঘুম ভাঙার পর গরম জলে তিন-চারটে তুলসীপাতা ফেলে মুখ ধুয়ে নিন। মুখের ফোলাভাব কমবে।
৪) ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে হাত-মুখ-গলা পরিষ্কার করুন।
৫) মুখে একটু বরফ লাগিয়ে নিন।
৬) ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।
৭) লাগাতে হবে ওয়াটার বেসড্ ফাউন্ডেশন।
৮) একটু ডার্ক বেস দিয়ে নাক ও গলা করেকশন করুন।
৯) কমপ্যাক্ট লাগান।
১০) চোখের উপর আইশ্যাডো লাগাতে হবে। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে আইশ্যাডে লাগান।
১১) মাস্কারা লাগান।
১২) চোখে গাঢ় করে কাজল-পেন্সিল লাগান। আই ভ্রু-র খুঁত থাকলে সেটা সারান।
১৩) আইলাইনার ব্যবহার করুন।
১৪) শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে ব্লাশার দিন।
১৫) লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিন। তারপর লিপস্টিক লাগান।
১৬) কপালে দিন লাল টিপ। চন্দন আঁকুন কলকা নকশা করে। (পোস্টার কালার ব্যবহার করতে পারেন)
১৭) হাত-পায়ে ম্যাচ করে নেলপলিশ লাগান।
১৮) চুলের সাজ হবে সবচেয়ে সুন্দর। ছোট চুল হলে নকল খোঁপা ব্যবহার করুন।
২০) লম্বা চুল হলে খোঁপা বাঁধুন। মাথার সামনের দিকের চুল ব্যাকব্রাশ করে নিয়ে ফুলিয়ে ক্লিপ আটকান। সিঁথি হবে মধ্যিখানে। পেছনের চুলগুলো অল্প নিয়ে রোল করে খোঁপা বাঁধুন।
২১) শাড়ি, গয়না ও ওড়না পরুন।
ব্যস! কনের সাজ শেষ।
কনের বোন বা আত্মীয়স্বজনরা চন্দন ও ওড়না ছাড়া সব মেকআপই করতে পারেন। বিদেশি মেকআপ ব্যবহার করলে ত্বক ভাল থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy