Advertisement
E-Paper

ভুতুড়ে আলো, মানুষের মুখ, অতল খাদ মঙ্গলে? দেখুন সেই ভিডিও

ভুতুড়ে আলো! মানুষের মুখ? পিরামিড! বিষাক্ত কাঁকড়া? বা, পাহাড়ি গুহা? ‘লাল গ্রহে’ কি সে সব ছিল কোনও দিন? কোনও কালে? চমকের পর চমক!

সুজয় চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ১৮:০০

ভুতুড়ে আলো! মানুষের মুখ?

পিরামিড! বিষাক্ত কাঁকড়া? বা, পাহাড়ি গুহা?

‘লাল গ্রহে’ কি সে সব ছিল কোনও দিন? কোনও কালে?

চমকের পর চমক!

মঙ্গল আমাদের বার বার চমকে দিয়েছে।

যাকে এত দিন শুধুই এই সৌরমণ্ডলের একটা রুখু-সুখু পাথুরে গ্রহ বলে ভাবা হত, সেখানে যে এক সময় বইত জলের ধারা, ছিল নদী-নালা, গত বছর তার সরাসরি প্রমাণও মিলেছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে তা ঘোষণাও করেছে নাসা। আর তার পর ‘লাল গ্রহ’ আমাদের কৌতুহলকে আরও বেশি করে উস্‌কে দিয়েছে।

মঙ্গল আমাদের আবারও ভাবাচ্ছে, সত্যি-সত্যিই কি কোনও দিন ‘প্রাণ’ ছিল লাল গ্রহে? কোনও সুদূর অতীতে? এখনও কি সেখানে রয়েছে কোনও ‘বুদ্ধিমান প্রাণী’? বা, অণুজীব? যাদের হদিশ আমরা এখনও পাইনি! যাদের পাঠানো ‘সিগন্যাল’ হয়তো আমরা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি!

যেহেতু মঙ্গলে পাওয়া ওই সব আশ্চর্য বস্তুগুলো আদতে কী জিনিস, কী ভাবেই বা তাদের উদ্ভব হল সেখানে, কত দিন আগে তার উদ্ভব হয়েছিল ‘লাল গ্রহে’, তার কোনও সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি, তাই সেগুলো নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোও সম্ভব হয়নি। কিন্তু, তা বলে প্রায় গত ৫১ বছর ধরে মঙ্গলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বা তার মাটিতে নেমে বিভিন্ন মহাকাশযান, ল্যান্ডার ও রোভার যে সব ছবি তুলে পাঠিয়েছে আমাদের, তাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়াটাও তো বুদ্ধিমানের কাজ নয়!

দেখা যাক, কী কী অদ্ভুতুড়ে জিনিস দেখা গিয়েছে এই সৌরমণ্ডলের ‘লাল গ্রহ’- মঙ্গলে?

ভুতুড়ে আলো!

২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল। মঙ্গলের মাটিতে নামার পর মার্কিন ‘রোভার’ মহাকাশযান ‘মিস কিউরিওসিটি’র সেটা ছিল ৫৮৯ দিন। হঠাৎই ‘কিউরিওসিটি’র ডান দিকের ক্যামেরায় ধরা পড়ল উজ্জ্বল আলোর একটি শিখা। যে আলোর শিখাকে উঠে আসতে দেখা গিয়েছিল মঙ্গলের পিঠ (সারফেস) থেকে। সেখানকার বালিয়াড়ি বা স্যান্ড ডিউনের ঠিক পিছন দিকটায়।

কয়েক সেকেন্ড পরেই ‘কিউরিওসিটি’র বাঁ দিকের ক্যামেরার তোলা ছবিতে কিন্তু ওই আলোর শিখার দেখা পাওয়া যায়নি।

কোথা থেকে এল সেই আলো? তা নিয়ে অনেক জল্পনা হয়েছে। হচ্ছেও। কিন্তু কে ঠিক, আর কেই-বা বেঠিক, জানা যায়নি।

নাসা কী বলছে?

তাদের বক্তব্য, ‘‘খুব ঝকঝকে পাথরের (গ্লিন্টি রক্‌স) ওপরে পড়া সূর্যালোক প্রতিফলিত বা বিচ্ছুরিত হয়েই ওই চোখ-ধাঁধানো ঝলমলে আলোর জন্ম দিয়েছে। এও হতে পারে, সূর্যের আলো কোনও ভাবে কোনও ছিদ্র পথে (ভেন্ট হোল) ঢুকে পড়েছিল ‘কিউরিওসিটি’র ক্যামেরার সেন্সরে। তার ফলেই ওই বিভ্রান্তি।’’

শুধুই বিভ্রান্তি?

পরে মঙ্গলের অন্য প্রান্ত থেকেও, ‘কিউরিওসিটি’র ক্যামেরায় ভিন্ন কৌঁণিক অবস্থানেও কিন্তু ওই ‘ভুতুড়ে’ আলোর শিখা দেখা গিয়েছে!

সেটা কী ভাবে হল, তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি এখনও।

কারও কারও বিশ্বাস (জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ যাঁদের বলেন- ‘কনস্পিরেসি থিয়োরিস্টস্‌’), ওই আলোর শিখা ‘লাল গ্রহে’ কোনও ‘বুদ্ধিমান প্রাণ’-এরই চিহ্ন! আভাস! হয়তো এখনও তা রয়েছে মঙ্গলের পিঠ থেকে অনেকটা গভীরে!

শিলাস্তম্ভ বা মোনোলিথ!

‘মোনোলিথ’ বলতে বোঝায়, একটি পাথর বা শিলাখণ্ড দিয়ে বানানো আস্ত একটা স্তম্ভ। শিলাস্তম্ভ।

এর ছবি প্রথম তুলেছিল মহাকাশযান ‘মার্স রিকনিসিন্স অরবিটার’ (এমআরও) মঙ্গলের ১৮০ মাইল ওপর দিয়ে ‘লাল গ্রহ’কে চক্কর মারতে মারতে। ২০১২ সালে। ওই অদ্ভুতুড়ে বস্তুটিকে (লাল বৃত্তে বোঝানো হয়েছে) দেখা গিয়েছিল যেন সেটি মঙ্গলের পিঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে’! মঙ্গলের পিঠে অন্তত ৫ মিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বস্তুটি।

প্রায় একই রকম বস্তু দেখা গিয়েছিল ২০০১ সালের সায়েন্স ফিকশন ফিল্ম ‘আ স্পেস ওডেসি’-তে। দেখানো হয়েছিল ওই ধরনের অদ্ভুতুড়ে বস্তু ভিনগ্রহীরা ফেলে গিয়েছে পৃথিবী আর চাঁদে!

নাসা কী বলছে?

তাদের বক্তব্য, ‘‘ওটা আসলে বেডরক। মানে, ওপরে মাটি, আর তার নীচে কঠিন শিলা বা পাথর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওই বেডরক ভেঙেচুরে গিয়েই ওই অদ্ভুতুড়ে বস্তুটির জন্ম দিয়েছে ‘লাল গ্রহে’র পিঠে।’’

এটা কোথা থেকে এল? কী ভাবে এল?

জানার অনেক চেষ্টা হয়েছে। চেষ্টা চলছে এখনও। তবে গ্রহণযোগ্য কোনও ব্যাখ্যা এখনও মেলেনি।

মানুষের মুখ!

মহাকাশযান ‘ভাইকিং-১’-এর পাঠানো ছবিতে প্রথম হদিশ মিলেছিল ওই সহ ‘মানুষের মুখ’-এর! সেটা ১৯৭৬ সাল। মঙ্গল গ্রহের পিঠে ‘সিডোনিয়া’ এলাকায়। প্রায় এক মাইল বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ওই সব ‘মা্নুষের মুখ’-এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল মঙ্গলের রুখু-সুখু পিঠে ছড়ানো পাথরের টুকরোর মধ্যেই। অবিকল মানুষের মুখ! এক সময় পাহাড়ে পাহাড়ে যেমন উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন আঁকতেন বিভিন্ন দেবতার ছবি!

কী বলছে নাসা?

তাদের বক্তব্য, ‘‘আসলে ও সবই আলো আর ছায়ার খেলা। কারসাজি।’’

কারসাজি?

কার কারসাজি?

শুধুই যে ’৭৬ সালে তোলা মঙ্গলের ছবিতে সেগুলো ছিল, তা নয়। পরে ১৯৯৮ এবং ২০০১ সালেও মঙ্গলের পিঠের যে ছবি তুলেছে বিভিন্ন মহাকাশযান, সেখানেও মিলেছে ওই সব ‘মানুষের মুখ’।

কার কারসাজি সেটা? মুখ না কোনও ‘মুখোশে’র?

ক্যাভার্ন্স (পাহাড়ি গুহা)!

মঙ্গল গ্রহ নিয়ে আমাদের কৌতুহল তো আজকের নয়। অনেক দিনের।

গত ৫১ বছর ধরে মঙ্গলের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে একের পর এক মহাকাশযান। মঙ্গলের পিঠের ছবি প্রথম পাঠিয়েছিল মহাকাশযান ‘মেসিনার-৪’। সেটা ১৯৬৫ সাল। তাতেই হদিশ মিলেছিল ওই গভীর ‘পাহাড়ি গুহা’র। যেগুলো রয়েছে অধুনা মৃত কোনও আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের (ক্রেটার) তলায়।

‘লাল গ্রহে’র পিঠে এমনই একটি মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের ছবি প্রথম ধরা পড়ে মহাকাশযান ‘মার্স রিকনিসিন্স অরবিটার’ (এমআরও)-এর ক্যামেরায়। ২০০৭ সালে। যা চওড়ায় ৪৯০ ফুট। এখান থেকেই হয়তো কোনও কালে উত্তপ্ত লাভাস্রোত বেরিয়ে এসেছিল মঙ্গলের পিঠে। তার মানে, কোনও কালে আগ্নেয়গিরি ছিল ‘লাল গ্রহে’। আর তার বেশ কিছু হয়তো জীবন্তও ছিল। একই ভাবে, এই পৃথিবাতেও প্রাণের বিবর্তনে বড় ভূমিকা নিয়েছিল আগ্নেয়গিরি, সুদূর অতীতে।

আরও পড়ুন- ১০,০০০ বছর ধরে এই গাছটা দাঁড়িয়ে আছে! বেড়েও চলেছে

ওই জ্বালামুখের তলায় ‘মুখ লুকিয়ে থাকা’ গুহাগুলোতে কী রয়েছে?

জানা যায়নি, তার বিন্দুবিসর্গও!

কারও কারও অনুমান, হয়তো ভীষণ রুখু-সুখু মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশ থেকে অনেকটা নীচে ‘প্রাণ’-এর বিকাশ হয়েছিল কোনও কালে!

ইয়েতি!

মেঘ দেখে বা পাহাড়ের চুড়ো দেখে আমাদের মনে হয়, এটা মানুষের মুখ বা পাখির ডানা বা মাছের লেজ!

কল্পনার পাখায় ভর দিয়ে খাড়া করা ওই ‘ছবি’গুলোকেই আমরা বলি ‘পারেইডেলিয়া’।

তেমনই ‘লাল গ্রহে’র মাটি ঘুরে-ট্যুরে যে সব ছবি পাঠিয়েছে ‘ল্যান্ডার’ ও ‘রোভার’গুলি, তাদের কোনওটা দেখে মনে হতেই পারে, তা যেন কোনও ‘খরগোশ’ বা রাস্তার ‘ট্র্যাফিক সিগন্যাল’ বা কোনও ‘উড়ন্ত চামচ’। অথবা তা কোনও ‘মহিলা’ বা ভয়ঙ্কর বিষাক্ত কোনও ‘কাঁকড়া’! ২০১০ সালে মঙ্গলের মাটি ঢুঁড়ে-ফুঁড়ে ওই ছবি তুলেছিল মার্কিন ‘রোভার’- ‘অপরচ্যুনিটি’।

5 Most Mysterious Photos Caught By NASA On Mars mystery light on mars monolith on mars
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy