Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
sun

Touching Sun First-Ever: সূর্যকে ছুঁয়ে কী কী দেখতে পেল নাসার মহাকাশযান, দেখুন ছবি, ভিডিয়োয়

দেখল এমন অনেক কিছুই, যা ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরের পৃথিবী থেকে দেখা সম্ভব নয় সে ভাবে। যার কিছু কিছু দেখা যায় কালেভদ্রে। গ্রহণের সময়।

নাসার মহাকাশযান সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকে দেখল খুব শক্তিশালী সৌরকণাদের এই তীব্র আলোড়ল। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

নাসার মহাকাশযান সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকে দেখল খুব শক্তিশালী সৌরকণাদের এই তীব্র আলোড়ল। ছবি- নাসার সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ১২:৫২
Share: Save:

১০ লক্ষ ডিগ্রি কেলভিন তাপমাত্রার সূর্যকে ছোঁয়া তো মোটেই চাট্টিখানি কথা নয়। তবু এই প্রথম সূর্যকেই ছুঁয়ে ফেলল মানব সভ্যতার পাঠানো কোনও মহাকাশযান। নাসার ‘পার্কার সোলার প্রোব’।

সেই অসাধ্যসাধন করে সূর্যকে প্রথম ছোঁয়ার পর কী কী দেখতে পেল নাসার মহাকাশযান?

দেখল এমন অনেক কিছুই, যা ১৫ কোটি কিলোমিটার (বা সাড়ে ৯ কোটি মাইল) দূরের পৃথিবী থেকে দেখা সম্ভব নয় সে ভাবে। যার কিছু কিছু দেখা যায় এই নীলাভ গ্রহ থেকে কালেভদ্রে। গ্রহণের সময় কখনও-সখনও।

নাসার মহাকাশযান এই প্রথম সূর্যকে ছুঁয়ে বোঝার চেষ্টা করল— কেন সূর্যের পিঠের চেয়ে তার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা ১০ লক্ষ গুণ বেশি? সাধারণ যুক্তিতে যা হওয়ার কথা নয়।

সূর্যের পিঠ বা ফোটোস্ফিয়ারের তাপমাত্রা বড়জোর ৬ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার ঠিক নীচেই সূর্যের অন্দরে রয়েছে সুবিশাল পারমাণবিক চুল্লি। সেখানেই তৈরি হচ্ছে যাবতীয় শক্তি। অথচ তার কাছেপিঠে থাকা ফোটোস্ফিয়ারের তাপমাত্রার চেয়ে ১০ লক্ষ গুণ বেশি তাপমাত্রা সূর্যের বায়ুমণ্ডল বা সোলার করোনা-র। যা সূর্যের অন্দরে থাকা পারমাণবিক চুল্লির থেকে রয়েছে লক্ষ লক্ষ কিলোমিটার দুরে।

সেই ‘কেন’-র কোনও স্পষ্ট উত্তর এখনও জানে না আধুনিক সৌরপদার্থবিজ্ঞান। সেই ‘কেন’-র উত্তর খুঁজতেই সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকেছে নাসার মহাকাশযান। পৌঁছে গিয়েছে সূর্যের পিঠ থেকে দেড় কোটি কিলোমিটারের মধ্যে।

ফলে, সূর্যের প্রচণ্ড তাপমাত্রায় জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে যাওয়ার কথা ছিল নাসার মহাকাশযানের। হয়নি, বিজ্ঞানীরা পার্কার সোলার প্রোবকে বিশেষ ধরনের একটি ‘শিল্ড’ বা আবরণীতে মুড়ে দিয়েছেন বলে।

সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকে যা যা দেখল নাসার মহাকাশযান। ভিডিয়ো সৌজন্যে- নাসা।

সূর্যের বায়ুমণ্ডলে অত্যন্ত উত্তপ্ত তড়িতাহিত গ্যাস ও প্লাজমার ভিতরে পৌঁছে গিয়েছিল নাসার মহাকাশযান গত অগস্টে। ফলে দেখতে পেয়েছে, কী ভাবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সূর্যের বায়ুমণ্ডল। সূর্যের বায়ুমণ্ডলকে অত বেশি তাতিয়ে তোলার জন্য মূলত যারা কলকাঠি নাড়ে সেই ‘করোনাল স্ট্রিমার’-দেরও দেখতে পেয়েছে নাসার মহাকাশযান। যারা আদতে ইলেকট্রন কণা। এদের ‘হেলমেট স্ট্রিমার’-ও বলা হয়। এদেরই দ্যুতি ধরা পড়েছে নাসার মহাকাশযানের নজরে। একমাত্র সূর্যের পূর্ণগ্রাস হলেই পৃথিবীর সামান্য কিছু এলাকা থেকে খুব স্বল্প সময়ের জন্য এদের দেখা যায়।

এই অত্যন্ত শক্তিশালী সৌরকণা বা ইলেকট্রনদের ঝড়ের চেয়েও লক্ষ কোটি গুণ বেশি গতিতে ছোটাচ্ছে সৌরবায়ু (‘সোলার উইন্ড’)। যে সৌরবায়ু সূর্যের ত্রিসামীনা ছেড়ে পৌঁছে যাচ্ছে পৃথিবী-সহ সবকটি গ্রহে। সৌরমণ্ডলের সীমান্ত পর্যন্ত।

উৎক্ষেপণ থেকে সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকো পড়া: পার্কার সোলার প্রোবের পরিক্রমা। ভিডিয়ো সৌজন্যে- নাসা।

শুধু তা-ই নয়। নাসার মহাকাশযান সূর্যের বায়ুমণ্ডল থেকে দেখেছে ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ঠিকানা— আকাশগঙ্গা ছায়াপথের একাংশকেও। দেখছে পৃথিবী, বৃহস্পতি, মঙ্গল, শনি, বুধ, শুক্র-সহ সৌরমণ্ডলের বিভিন্ন গ্রহকেও। সেই সময় নাসার মহাকাশযানের গতিবেগ ছিল সেকেন্ডে ১৪৭ কিলোমিটার!

নাসা জানিয়েছে, আগামী চার বছরে এমন আরও ১৫ বার সূর্যের বায়ুমণ্ডলে ঢুকবে নাসার পার্কার সোলার প্রোব।

ফলে, সূর্য থেকে আগে দেখা সম্ভব হয়নি এমন আরও অনেক রোমাঞ্চকর ছবি দেখার অপেক্ষা থাকল মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sun nasa Parker Solar Probe corona
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE