আগামী ৫ বছর ধরে এই শক্তিমানদের ক্ষেতে ফলিয়ে দেখা হবে তারা সত্যি সত্যিই কতটা শক্তিমান। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
যতই ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি হোক একনাগাড়ে, বন্যা হোক না কেন ঘনঘন, গা পোড়ানো তাপমাত্রায় ঝলসে যাক আশপাশ, আলু ফলাতে আর ঘাম ঝরাতে হবে না চাষিদের। এমন আলু ফলানো এ বার সম্ভব হল বিজ্ঞানীদের দৌলতে।
যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপার পট্যাটো’। বা শক্তিমান আলু। বেশি জল, ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি, বন্যা-- যে সব পরিস্থিতি একেবারেই না-পসন্দ আমাদের চেনা-জানা আলুর, সেখানে এই শক্তিমান আলুর ফলনে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়বে না। বৃষ্টিকে কার্যত ‘ডোন্ট কেয়ার’-ই করবে সদ্য উদ্ভাবিত এই শক্তিমান আলু।
উদ্ভাবনের কৃতিত্ব আমেরিকার মাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের। তাঁরা জানিয়েছেন, এই শক্তিমান আলুর জন্ম হয়েছে দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যাতে আলুর ফলন বন্ধ না হয়ে যায় তার জন্য। কারণ, বাড়তি তাপমাত্রা, জল, বৃষ্টিতে আলু বড়ই স্পর্শকাতর! বেশি জলা জমি বা ভারী বৃষ্টি আলুর একেবারেই না-পসন্দ। বরং একটু বেশি তাপমাত্রাই অধিক পছন্দ আলুর। একটু বেশি উষ্ণতা। কিন্তু দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্ব জুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে। বৃষ্টিপাত যেমন পরিমাণে বেড়েছে, তেমন তা অনেক বেশি ঘনঘন হচ্ছে। আর হলেই ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। বেড়েছে বন্যাও। আর এক-দুই দশকের মধ্যে এ সব আরও বাড়বে। তার ফলে, আলু-সহ অনেক শস্য, আনাজপাতির ফলনই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করে শস্য, আনাজপাতির ফলন মোটামুটি স্বাভাবিক রাখতেই বিজ্ঞানীদের এই উদ্ভাবন। যা আগামী দিনে আলুর মতো আরও অনেক ফসলের ফলন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে।
এর আগে আমেরিকায় এই ধরনের আলু তৈরি করেছিলেন অন্য কৃষি গবেষকরা। তৈরি করা হয়েছিল ‘ক্যারিবউ রাসে’ নামের নানা ধরনের আলুবীজ। কিন্তু সেগুলি পরে খুব একটা কার্যকর হয়নি গবেষণাগারের বাইরে। কারণ সেগুলি খুব বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারেনি। অথচ আগামী দিনে পৃথিবীর তাপমাত্রা-বৃদ্ধি আলুর ফলনের পক্ষে অসহ্য হতে পারে।
তাই এই শক্তিমান আলু তৈরির কথা ভেবেছিলেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। যা ফলানো সম্ভব হয়েছে গবেষণাগারে। এ বার আগামী পাঁচ বছর ধরে এই শক্তিমানদের ক্ষেতে ফলিয়ে দেখা হবে, তারা সত্যি সত্যিই কতটা শক্তিমান। আর সেটা করা হবে সেই সব জায়গা্ যেখানকার গড় তাপমাত্রা আমেরিকার অন্য এলাকাগুলির তুলনায় অনেকটাই বেশি। যেমন— ভার্জিনিয়া, উত্তর ক্যারোলাইনা ও ফ্লোরিডায়।
এই মাসেই নাসার একটি গবেষণা জানিয়েছে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন মাত্রাছাড়া ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা আগামী ১০ বছরে এতটাই বেড়ে যাবে যে তাতে ভুট্টার ফলন বছরে ২৪ শতাংশ কমে যাবে। গমের ফলন অবশ্য বাড়বে। ১৭ শতাংশ। তবে আলুর ফলন কমে যাবে উল্লেখযোগ্য ভাবে। বাড়তি তাপমাত্রা ও অতিবৃষ্টিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy