Advertisement
১০ জুন ২০২৪

ফের হাতির দেহ, এ বার রাজগঞ্জে

পূর্ণ বয়স্ক একটি দাঁতাল হাতির দেহ উদ্ধার হল। শুক্রবার সকালে রাজগঞ্জ ব্লকের মহারাজঘাট এলাকায় ধান খেতে ওই বুনোটিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের বাতাসিভিটা জঙ্গল থেকে বার হয়ে হাতিটি ধান খেতে ছড়িয়ে রাখা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গিয়েছে কি না, তা জানতে বন দফতর তদন্ত শুরু করেছে।

উদ্ধার হওয়া হাতিটির দেহ। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া হাতিটির দেহ। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:০৬
Share: Save:

পূর্ণ বয়স্ক একটি দাঁতাল হাতির দেহ উদ্ধার হল। শুক্রবার সকালে রাজগঞ্জ ব্লকের মহারাজঘাট এলাকায় ধান খেতে ওই বুনোটিকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের বাতাসিভিটা জঙ্গল থেকে বার হয়ে হাতিটি ধান খেতে ছড়িয়ে রাখা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গিয়েছে কি না, তা জানতে বন দফতর তদন্ত শুরু করেছে। এ দিকে বুনোদের রক্ষার আবেদন জানিয়ে এ দিনই সকালে জলপাইগুড়ি শহরে ধুমধাম করে হাতি পুজোর আয়োজন করে সমাজ ও নদী বাঁচাও কমিটি। কোতোয়ালি থানা মোড়ে ওই পুজো মণ্ডপে মহারাজ ঘাটের ঘটনার খবর পৌঁছতে শোকের ছায়া নেমে আসে। বৈকুন্ঠপুরের ডিএফও পিআর প্রধান বলেন, “হাতিটি কেমন করে মারা গিয়েছে সেটা ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বন দফতর সূত্রের খবর, এ দিন মহারাজঘাট এলাকার যে ধান খেত থেকে হাতির দেহটি উদ্ধার হয়, সেখান থেকে বাতাসিভিটা জঙ্গলের দূরত্ব মাত্র দু’শো মিটার। ঘটনাস্থলের প্রায় এক কিলোমিটার দূরের ধান খেত থেকে কিছু বিদ্যুতের তার উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, প্রতি রাতে খাবারের খোঁজে হাতি জঙ্গল থেকে বার হয়ে ধান খেতে ঢুকছে। ফসল রক্ষার জন্য অনেকে খেতের আলে লাঠি পুঁতে বিদ্যুতের তার ঝুলিয়ে দিচ্ছে। এদিন উদ্ধার করা মৃত হাতির শুঁড়েও ক্ষত ছিল। কিন্তু বুনোটির আশপাশে বিদ্যুতের তার মেলেনি। বনকর্মীদের সন্দেহ দুর্ঘটনার পরে বিদ্যুতের তার কেউ সরিয়ে ফেলতে পারে। ডিএফও জানান, আজ, শনিবার থেকে এলাকার ধান খেতগুলিতে তল্লাশি চালানো হবে।

দাঁতাল হাতির দেহ উদ্ধারের খবর এদিন সকালেই জলপাইগুড়ি শহরে পৌঁছে যায়। ওই সময় থানা মোড়ে চলছিল হাতি রক্ষার আবেদন জানিয়ে হাতি পুজোর আয়োজন। সচেতনতা বাড়াতে ফ্লেক্স ও ব্যানারে তুলে ধরা হয় বুনোরা কতটা বিপন্ন। তাঁদের হয়ে সমাজ ও নদী বাঁচাও কমিটির তরফে আর্জি ছিল—‘আমাদেরও বাঁচতে দিন’। মঞ্চে ছিল মাটির তৈরি একটি ছোট্ট হাতি। পুরোহিত তাকে পুজো দেন। পুজোর পরে বিলি করা হয় খিচুরি প্রসাদ। কিন্তু মহারাজ ঘাটের খবর পৌঁছতে অভিনব আয়োজনকে ঘিরে আনন্দের ছন্দ কাটে। আয়োজকরা হতচকিত হয়ে পড়েন। কেমন করে ওই হাতি মারা গিয়েছে জানতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন সমাজ ও নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কখনও ট্রেনের ধাক্কায়। আবার কখনও ধান খেতে হাতির মৃত্যু চলতে থাকলে আগামী দিনে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে হাতির দেখা মিলবে না। এটা হতে পারে না। হাতিদের প্রাণ রক্ষার জন্য প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে।” এদিন সংস্থার পক্ষ থেকে মাহারাজঘাটের ঘটনার তদন্তের দাবি করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE