বেজিং, ২ জুন: টেলিস্কোপে চোখ রাখলেও উপগ্রহের দূরতম এই অংশ কখনও নজরে আসে না। কারণ চাঁদের এই অংশ সবসময়ে পৃথিবীর উল্টো দিকে মুখ করে থাকে। সেই দুর্গম অংশে নামল চিনের মানববিহীন মহাকাশযান চাং’এ-৬। ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (সিএনএসএ) জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৬টা ২৩ মিনিট (বেজিংয়ের সময়) নাগাদ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অ্যাটকিন বেসিন নামে এক বিশালাকার গহ্বরে অবতরণ করেছে চিনা চন্দ্রযানটি।
এই প্রথম নয়। চিন এর আগেও চাঁদের এই দূরতম অংশে মহাকাশযান পাঠিয়েছে। আগের অভিযানটি হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই যানের নাম ছিল চাং’এ-৪। চাং’এ হলেন চিনের চাঁদের দেবী। বস্তুত, চিনই প্রথম দেশ, যার মহাকাশযান দু’বার চাঁদের এই অংশে অবতরণ করল। এ বারের অভিযান শুরু হয় ৩ মে। ওই দিন পাড়ি দিয়েছিল চাং’এ-৬। এ বারের লক্ষ্য, অ্যাটকিন বেসিন থেকে প্রাচীন পাথর সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসা।
সিএনএসএ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘চাং’এ-৬-এর ল্যান্ডার নামতে শুরু করে ৬টা ৯ মিনিট থেকে। এই অবতরণের সময়ে যানে থাকা একটি ‘অবস্ট্যাকল অ্যাভয়েডেন্স সিস্টেম’ চালু হয়ে যায়। সিস্টেমটির কাজ ছিল, সামনে কোনও বাধা থাকলে সেটিকে চিহ্নিত করা। অবতরণের জন্য নিরাপদ স্থান খুঁজে বার করতে সাহায্য করেছে যানে থাকা বিশেষ ক্যামেরা।’’ সিএনএসএ জানিয়েছে, এই দুই সিস্টেম অনুসরণ করে প্রথমে নিরাপদ স্থানের সন্ধান করা হয়েছে। জায়গাটির ১০০ মিটার উপরে ভাসমান থেকেছে যান। তার পর থ্রিডি স্ক্যানারের সাহায্যে সামনে কোনও বাধা আছে কি না, তা দেখা হয়েছে। অবতরণস্থল চূড়ান্ত করার পরে ধীরে ধীরে উল্লম্ব ভাবে নেমেছে যান। ইঞ্জিন বন্ধ হয়েছে। বাধাহীন ভাবে (ফ্রি-ফল) চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে চিনা চন্দ্রযান।
চাং’এ-৬ যানে একটি অরবিটার, একটি রিটার্নার, একটি ল্যান্ডার ও একটি অ্যাসেন্ডার রয়েছে। সব কিছু যদি পরিকল্পনা মতো চলে, সে ক্ষেত্রে চাঁদের অ্যাটকিন বেসিন থেকে পাথর, মাটি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসবে চাং’এ-৬। তবে বিষয়টা খুব সহজ নয়। অনুমান করা হয়, চাঁদের ওই দূরতম প্রান্তে অসংখ্য গহ্বর রয়েছে। অ্যাটকিন বেসিন হল সৌরপরিবারের সবচেয়ে বড় গহ্বর। বিজ্ঞানীদের কথায়, ‘‘এই অভিযান বেশ চ্যালেঞ্জিং।’’ তবে সফল হলে চাঁদের ৪৫০ কোটি বছরের অতীত সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যাবে। সংবাদ সংস্থা
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)